রাঙামাটির কিছু ঐতিহাসিক আলোকচিত্র।।
আমার মাতৃভাষার কমিউনিটি-
বেশ কয়েক মাস প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের পরে বৃষ্টিপাত হওয়ার কারনে প্রকৃতি সেজেছে নতুন ভাবে। পানির অভাবে নিস্তব্ধ হয়ে যাওয়া প্রকৃতি বৃষ্টির পানি পেয়ে জীবন ফিরে পেয়েছে। সেই প্রকৃতির সাথে সময় কাটাতে শহরের মানুষ ছুটছে প্রকৃতির সান্নিধ্যে। পর্যটন এলাকা গুলোতে ভ্রমন পিপাসুদের আনাগোণা বেড়েছে। আমাদের অফিস থেকেও কক্সবাজার ও সিলেটে যাওয়ার প্লান প্রোগ্রাম চলতেছে। আমাদের ম্যানাজার স্যার অলরেডি কক্সবাজার যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৬ই জুন বিকাল সাড়ে তিনটার সময় কক্সবাজরের উদ্যেশ্যে ঢাকা ছাড়বে।
ভ্রমন পিপাসুদের অন্যতম পছন্দময় একটি জেলা হলো পার্বত্য জেলা রাঙামাটি। পাহাড়,ঝর্ণা, লেক,পার্ক সহ নানা ধরনের জিনিষ রয়েছে সেখানে। পানির অভাবে ঘুমিয়ে যাওয়া ঝর্ণা গুলো বৃষ্টির পানি পেয়ে জাগ্রত হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারনে সব গুলো ঝর্ণা প্রাণ ফিরে পেয়েছে। সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পাহাড়ের কোলে ঝর্ণার মধ্যে আনন্দে মেতে উঠছে । বনজঙ্গল,বিভিন্ন লতাপাতার সবুজে ঘেরা পাহাড়ের বুক চিরে অবিরামভাবে সাদা জলপ্রপাত নামছে কাপ্তাই হ্রদে। উঁচু পাহাড়ের গা বেয়ে জলধারা এসে পড়ছে পাহাড়ের নিচে। পানির ধারা আছড়ে পড়ার শোঁ শোঁ গর্জন পাহাড়ের নির্জনতাকে ভেঙ্গে দিচ্ছে। সেখানে শুভলং ঝর্ণা, হাজাছড়া ঝর্ণা, কমলক ঝর্ণা, মুপ্পোছড়া ঝর্ণা, ধুপপানি ঝর্ণা সহ ছোট বড় অনেক ঝর্ণা রয়েছে। তবে দুঃখের বিষয় হলো আমি যখন সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলাম তখন পানির অভাবে সব গুলো ঝর্ণা শুকিয়ে গেছিলো। যার ফলে ঝর্ণার কাছে গিয়েও ঝর্ণার সুন্দর্য দেখতে পারি নাই যায়হোক তারপরও যা কিছু দেখেছি উপভোগ করেছি,তার কিছু আলোকচিত্র আপনাদের মাঝে তুলে ধরছি।
পাহাড়ের নিচ দিয়ে আঁকা বাঁকা রাস্তা পেরিয়ে রাঙামাটি শহরে যাওয়ার পথে এই ফটোগ্রাফিটা ক্যাপচার করেছিলাম। এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় বীরশ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি পাওয়া কোন একজনের ভাষ্কর্য। তবে আমি গাড়ি থেকে সঠিক ভাবে নামটি বুঝতে পারি নাই। আমাদের দেশেরে স্বাধীনতায় তাদের অবদান স্বরুপ রাস্তার মোড়ে তাদের ভাষ্কর্য বানানো হয়েছে।
আমাদের ভ্রমনের শেষ স্পট থেকে ফিরে আসার সময় পলওয়েল পার্ক থেকে এই ফটোগ্রাফিটা ক্যাপচার করেছিলাম। এখানে লেকের দিকে মুখ করে বিশাল বড় একটি চিলের ভাষ্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। ভাষ্কর্যটি এমন ভাবে স্থাপন করা হয়েছে,যেন দেখে বুঝা যায় চিলটি লেক থেকে মাছ শিকার করার জন্য আকাশ থেকে থাবা দিয়ে নিচের দিকে নামছে। চিলের কালারটিও অনেক সুন্দর দিয়েছে। অরিজিনাল কালারের মত।
এই ফটোগ্রাফিটা নিয়েছি পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত আদিবাসি মার্কেট থেকে। একজন পাহাড়ি আদিবাসি আনারস বিক্রয় করার পাশাপাশি তাদের ঐতিহ্যবাহী হুক্কা টানতেছে। আগে আমাদের গ্রাম-গঞ্জে নারিকেলের খোঁসা দিয়ে বানানো হুক্কা দেখতাম। তবে কালের পরিবর্তে বিড়ি সিগারেটের কারনে ঐতিহ্যবাহী হুক্কা হাড়িয়ে যাচ্ছে। এখন পাহাড়ি অঞ্চল ছাড়া এগুলো তেমন দেখা যায় না। তবে পাড়িদের হক্কা গুলো বাঁশ দিয়ে তৈরী করা হয়। হুক্কার মধ্যে উপকরন হিসাবে তামাক পাতা ব্যবহার করা হয়। দেখতে অদ্ভুদ লাগলেও এটা তাদের ঐতিহ্য। তারা তাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে।
এই ফটোগ্রাফিটাও নিয়েছি পলওয়েল পার্ক থেকে। রাঙামাটিতে যারা ঘুরতে যায় তারা পলওয়েল পার্ক দেখা ছাড়া ফিরে আসে না। ঝুলন্ত সেতুর পাশেই এই পার্কটি অবস্থিত। এখানে তারা আপেলের আকৃতিতে একটি কফি কর্ণার তৈরী করেছে। দেখতে খু্বই সুন্দর এই ঘরটি দর্শকদের নজর আকর্ষন করে। যদিও সময়ের অভাবে আমরা এখান থেকে চা কফি কোন কিছু খেতে পারি নাই।
চা কফি খেয়ে ড্রিংক্স করে খোসা বা ময়লা কোথায় ফেলবেন..... এই ব্যঙের ভিতরে। পার্কের ভিতরে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা যাবে না। বিভিন্ন জাগায় এমন অনেক গুলো ব্যাঙ আকৃতির ডাসবিন রয়েছে। এমন কিছু ব্যাঙ আকৃতির ডাসবিন আমাদের রাজধানী শহার ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গেলেও দেখা যায়। আমাদের শহরে ডাসবিনের সংখ্যা যত বাড়বে তত পরিষ্কার থাকবে। মানুষ ডাসবিনের অভাবে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে দেয়।
উপরে দুইটি আলোকচিত্রে দুইটি মাটির চুলা দেখতে পাচ্ছেন। এগুলো পাহাড়িদের তৈরী মাটির চুলা। পাহাড়ের বিভিন্ন জাগায় মাটি কেটে তারা এই চুলা গুলো তৈরী করেছে। পর্যটকরা যখন হাটাহাটি করে ক্লান্ত হয়ে যায় তখন আদিবাসিদের হাতের তৈরী চা কফি খেয়ে পর্যটকরা ক্লান্তি দুর করে। পাহাড়ে গ্যাস না থাকলেও লাকড়ির অভাব নেই। লাকড়ি দিয়ে তারা তাদের জ্বালানির অভাব পুরন করে।
বন্ধুরা দেখতে দেখতে অনেক গুলো আলোকচিত্র শেয়ার করে ফেললাম। আজকে আর বাড়াবো না। এখান থেকেই বিদায় নিবো। আবার আগামীকাল আপনাদের সাথে নতুন কোন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | রাঙামাটির কিছু ঐতিহাসিক আলোকচিত্র।। |
স্থান | কাপ্তাই,রাঙামাটি, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০১/০৩ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
রাঙ্গামাটির ঐতিহাসিক এত সুন্দর আলোকচিত্র দেখে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। সবকিছুর ফটোগ্রাফি আপনার অনেক সুন্দর ভাবে করেছেন। এত বড় দেখতে ঈগলের ভাস্কর্য দেখে আমার কাছে একটু বেশি ভালো লেগেছে। সবকিছুর সৌন্দর্য দেখে সত্যি আমি জাস্ট মুগ্ধ হয়েছি। ময়নাবর্জনা ফেলার জন্য জায়গাটা আমার কাছে একটু বেশি ভালো লেগেছে। পাহাড়ি এলাকাগুলোতে এমনিতেই লাকড়ির অভাব হয় না। যাইহোক এত সুন্দর করে সবগুলো ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালো লেগেছে।
জী আপু ঈগলের ভাস্কর্য টা দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। সবাই সেখানে দাঁড়িয়ে একটি করে সেলফি তুলে। ধন্যবাদ।
রাঙ্গামাটি তো আমার অনেক বেশি পছন্দের একটা জায়গা। রাঙ্গামাটির সৌন্দর্য দেখলেই একেবারে মুগ্ধ হয়ে যাই। আজ আপনি এত সুন্দর করে রাঙ্গামাটির কিছু ঐতিহাসিক আলোকচিত্র আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনার সবগুলো ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়েছে। এত বড় একটি ঈগল পাখির ভাস্কর্যটা দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিলাম। অনেক ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর ভাবে সবগুলো ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জ্বী ভাইয়া রাঙ্গামাটিতে ঘুরে দেখার জন্য অনেক জায়গা রয়েছে। ধন্যবাদ
সত্যিই রাঙ্গামাটি ভ্রমণের জন্য দারুন একটা প্লেস। আমারও ইচ্ছে রয়েছে যাওয়ার জানিনা কবে সেই ভাগ্য হবে। ভালো লাগলো আপনার আজকের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে। চিলের ফটোগ্রাফি টা সত্যিই অনেক সুন্দর হয়েছে। পিছন থেকে করা ফটোগ্রাফি টা দেখে মনে হচ্ছে সত্যিকারের একটা চিল উড়ে এসেছে। কফি কর্নারটা বেশ ইউনিক লেগেছে আমার কাছে। চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
হঠাৎ করে একদিন রাঙ্গামাটি ঘুরতে চলে যাবে। জায়গাটা খুবই সুন্দর,অনেক ভালো লাগবে।
খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করলেন আপনি রাঙ্গামাটি থেকে সংগ্রহ করা। বিশেষ করে রাঙ্গামাটি থেকে নেওয়া পলওয়েল পার্কের ফটোগ্রাফিটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। এই পাখির ফটোগ্রাফিটা খুব সুন্দর ভাবে ক্যাপচার করলেন আপনি। আমিও দেখেছি ভীষণ সুন্দর একটি জায়গা পলওয়েল পার্ক। আসলে ভ্রমণ অনেকটা নেশার মত যারা ভ্রমণ করেন তাদের ভ্রমণ করতে থাকতে হয়। অনেক ভালো লাগলো আপনার লেখা অনুভূতি এবং ফটোগ্রাফি গুলো।
আমাদের পলওয়েল পার্কে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। আরেকটু আগে আসতে পারলে আরো অনেক কিছু দেখতে পারতাম।
ভাইয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গার মধ্যে রাঙ্গামাটি একটি। এ জায়গাতে দূরদূরান্ত থেকে লোক যায় পাহাড়ি এলাকা দেখতে এবং সৌন্দর্য উপভোগ করতে। আপনি দেখতেছি রাঙ্গামাটি ভ্রমণ করতে গিয়ে ভালো ফটোগ্রাফি করেছেন। তবে আপনার পোষ্টের মধ্যে দেখে বোঝা যাচ্ছে জায়গা গুলো অসাধারণ। সামনে থেকে এই জায়গাগুলো দেখতে পারলে নিজের কাছে ভালো লাগতো। আর আপনার ঈগল পাখির ভাস্কর্য ফটোগ্রাফি দেখে আমি হা করে তাকিয়ে রইলাম। নিশ্চয় রাঙ্গামাটি ঘুরতে গিয়ে ভালো সময় কাটিয়েছেন।
জী আপু ভ্রমণ পিপাসুদের অন্যতম একটি জায়গা হলো এই রাঙ্গামাটি। যারা একবার যাই তাদের বারবার যেতে মন চাই ।