তিন ঘন্টার ব্যস্ততা।।
বাংলা ভাষায় প্রকাশ করো নিজেকে-
গতকাল একটি জরুরী কাজে অফিস থেকে এক ঘন্টার ছুটি নিয়ে বের হয়েছিলাম। কিন্তুু কাজ তো আর এক ঘন্টায় শেষ হয় না। বাহিরে গেলে কত কাজ করতে হয়,বলে বুঝানো যাবে না। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে ২০২১ সালে ইসলামী ব্যাংকে একটি সেভিংস একাউন্ট করেছিলাম। ইউটিউবের মাধ্যমে কিছু ডলার ইনকাম করেছিলাম। সেগুলো নিজের হাতে পাওয়ার জন্যই একাউন্টটি করেছিলাম। ইউটিউব থেকে দুইতিনটি পেইমেন্ট পেয়েও ছিলাম। তবে নিজের ভুলের কারনে ইউটিউব চ্যানেলটি হারিয়েছি। যায়হোক সে গুলো অন্য কথা। আজকে সেদিকে যাওয়ার দরকার নেই। আমার সেই ইসলামী ব্যাংকের একাউন্টে কেউ টাকা পাঠালে আমি এটিএম কার্ডের মাধ্যমেই টাকা উত্তোলন করতাম। তবে ২০২২ সালের শেষের দিকে ক্যাশ বইয়ের জন্য আবেদন করেছিলাম। ক্যাশ বইয়ের জন্য আবেদন করে আর ব্যাংকে যায়নি।
প্রায় দুই বছর পরে ব্যাংক থেকে আমাকে ফোন করে জানায়,যে আমার একটি ক্যাশ বই তাদের কাছে জমা পড়ে আছে,আমি যেন গিয়ে সেটা নিয়ে আসি। এক দেড়মাস আগে আমার কাছে ফোনটি এসেছিল। তখন বইটি ব্যাংক থেকে আনতে যাবো যাবো ভাবতে ছিলাম। তবে যাওয়ার সময় পাচ্ছিলাম না। গত পরশুদিন আমার একাউন্টে আমার এক কলিগের দুই লাখ টাকা এসেছে। তার দুলাভাই ব্যবসার জন্য তাকে দুই লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে। সেই টাকা উত্তোলন করার জন্য ব্যাংকে যেতে হয়েছে। আমার এটিএম কার্ডের লিমিট পঞ্চাশ হাজার টাকা। একদিনে পঞ্চাশ হাজার টাকার বেশি উত্তোলন করা যায় না। সেজন্য গতকাল দুপুর বারোটার সময় এক ঘন্টা ছুটি নিয়ে ব্যাংকে গিয়েছিলাম। ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে ক্যাশ বই লাগবে। আমার কাছে তো ক্যাশ বই নাই। সিরিয়াল ধরে অনেক খোঁজাখুজির পরে ক্যাশ বইটি পেয়েছি। সেটা নিয়ে টাকা উত্তোলন করে চলে আসার সময় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বললো আপনি সেলফিন একাউন্ট করে নিন। তাহলে আর ক্যাশ বইয়ের দরকার হবে না।
আমি আবার নিজে নিজে রেজিট্রেশন করে সেলফিন একাউন্ট করেছিলাম। তবে ব্যাংকের কোন ফরম পুরন করি নাই। যার ফলে ব্যাংক আমার সেই সেলফিন একাউন্টের অনুমোদন দেয়নি। আর পাসওয়ার্ড ও ভুলে গেছিলাম। এখন সেলফিন একাউন্ট একটিভ করতে সিরিয়াল ধরতে হলো। বাংলাদশে যেখানে যাওয়া হয়, সেখানেই সিরিয়াল ধরতে হয়। ছোট একটা দেশ জনসংখ্যার অভাব নেই। যায়হোক সেলফিন একাউন্টের জন্য ফরম পুরন করে একাউন্ট একটিভ করতে প্রায় আধা ঘন্টা সময় লাগলো। দেড়টার পরে ব্যাংক থেকে বের হলাম। ব্যাংক থেকে বের হয়ে গেলাম নারায়নগঞ্জ পোস্ট অফিসে। সেখানে আবার আমাদের ম্যানাজার স্যারের দশ লাখ টাকার একটি সঞ্চয় পত্র রয়েছে। সেটা ভেঙ্গে ফেলবে। এখন কি কি স্টেপ অতিক্রম করে সঞ্চয় পত্র ভাঙ্গতে হবে,সেটা জেনে যেতে বলেছে।
গত দুই বছর আগে তিন বছর মেয়াদে আমি নিজে এসে এই সঞ্চয় পত্র করে গেছিলাম। এখন দুই বছর পরে ভেঙ্গে ফেলবে, সেটাও আমার মাধ্যমেই করাতে চাচ্ছে। সেখান থেকে ভেঙ্গে আইএফসি ব্যাংকে সঞ্চয় পত্র করবে। আইএফসি ব্যাংকে পার্সেনটিস হিসাবে ইন্টারেস্ট একটু বেশি দিবে। এই বিষয়েও সকল তথ্য আমিই যোগার করেছিলাম। মানে ম্যানাজার স্যারের যত পারসোনাল কাজ আছে সবই আমাকে দিয়ে করায়। আগামী আঠারই জুলাই কক্সবাজার যাবে,সেই ট্রেনের টিকেটও আমিই কেটে দিয়েছি। যায়হোক পোস্ট অফিসে গিয়ে তথ্য নিয়ে জানতে পারলাম মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গলে প্রতি লাখে ২৫০০ টাকা কেটে রাখবে। অর্থাৎ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গলে লস হবে। তাই একজন কর্মকর্তা সেটা ভাঙ্গার জন্য নিষেধ করলেন। এই নিউজ পেয়ে,তখনই বুঝতে পেরেছি স্যার মেয়াদের আগে সঞ্চয় পত্র ভাঙ্গবে না।
পোস্ট অফিস থেকে সঞ্চয় পত্রের তথ্য নিয়ে অফিসের দিকে রওয়ানা দিলাম। অল্প একটু আসার পরেই হালকা হালকা বৃষ্টি শুরু হলো। বেশি বৃষ্টি নামলে কোন রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে লাঞ্চ করবো ভাবছিলাম। কারন আড়াইটা বেজে গেছে। পেটেও খিদা লেগেছে। তবে বৃষ্টি তেমন পড়ে নি। অল্প কিছু সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি থেমে গেছে। যার ফলে আর সেখানে আর রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করা হয়নি। চাষাড়া মোড় অতিক্রম করে একটি অটো নিয়ে শিবু মার্কেটে এসে একটা বিরিয়ানী হাউজে প্রবেশ করলাম। সেখানে দুই প্রকারের ভর্তা,ভাজি আর ডাল দিয়ে লাঞ্চ করলাম। সাথে ছিল দুই লাখ নয় হাজার ৭৭৫ টাকা তারপরেও বিরিয়ানী খাওয়া হয়নি,হা হা হা। কারন হোটেলের নাম বিরিয়ানী হাউজ হলেও ভিতরে নরমাল খাবার বিক্রয় করে। বিরিয়ানী হাউজ আগে ছিল। এখন বিরিয়ানী বিক্রয় করে না। যায়হোক খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবার অটোতে উঠলাম।
অফিসের সামনের রাস্তায় এত জ্যাম বলে বুঝানো যাবে না। অবশ্য জ্যাম হলো আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গি। যাওয়ার সময় জ্যামে না পড়লেও আসার সময় ঠিকই জ্যামে আটকে গেলাম। বাধ্য হয়ে অটো থেকে নেমে হাটা ধরলাম। দুই পা ভালো থাকতে এত টেনশন কিসের। কিছুক্ষন আগে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়লেও এখন রোদ উঠেছে। হেঁটে হেঁটে অফিসে প্রবেশ করতে করতে প্রায় তিনটা ভেজে গেলো। অফিসে প্রবেশ করার সময় অবশ্য সিকিউরিটি কিছু বলে নাই। লাঞ্চের সময় দেরী করে অফিসে আসলে সিকিউরিটি নাম লিখে রাখে। পরপর তিনদিন লেইট করলে একদিনের হাজিরা কেটে নেয়। যায়হোক অফিসে প্রবেশ করে ঘামে ভিজে থাকা শরীরে এসির বাতাস লাগতেই কেমন একটা শান্তি অনুভব করলাম। বাহিরের তিন ঘন্টার ব্যস্ততা শেষ করে আবার অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। এটাই আমাদের জীবন।।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | তিন ঘন্টার ব্যস্ততা।। |
স্থান | নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০৯/০৭/২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://x.com/ArianKh29670721/status/1810965482364883281?t=-XleJtNJAJIklDIsjH9hDw&s=19
আমাদের দেশে কোন কাজের জন্য হাতে নির্দিষ্ট সময় নিয়ে বের হলে বেশ বিপদেই পরতে হয়! ওই যে সিরিয়াল ধরো, লাইন ধরো- সবজায়গায় ই একই হ্যাপা। তার উপর রাস্তায় জ্যাম সংগী হলে তো কথাই নেই। আপনার তো বেশ সাহস, এতগুলো টাকা, তাও অন্যের আমানত পকেটে নিয়ে দিব্যি লাঞ্চ করে নিলেন, আমি হলে তো টেনশন করতাম 😅। আর প্রাইভেট ব্যাংক গুলোর যে নড়বড়ে অবস্থা আমাদের দেশের, তার চেয়ে সরকারি সঞ্চয়পত্রই বেশি আস্থার জায়গা বলে আমার মনে হয়৷
জী আপু ঠিক বলেছেন, বাংলাদেশে নির্ধারিত সময়ে কোন কিছু হয় না। বিশেষ করে কোথাও যেতে হলে বিভিন্ন ঝামেলার কারণে এক্সটা সময় নিয়ে বের হতে হয়। ধন্যবাদ।
শুনে অনেক ভালো লাগলো আপনি ইউটিউব থেকে ইনকাম করেছিলেন তবে চ্যানেলটি হারিয়ে ফেললেন আফসোস লাগলো। যাক সরকারি কাজকর্মে সিরিয়াল বেশি। সেটা সরকারী হোক কিংবা বেসরকারি হোক কোন জনপ্রিয় জায়গাতে গেলে সিরিয়াল লম্বা হয়ে দাঁড়ায়। আর আমাদের বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংক বেশ ভালো পর্যায়ে আছে। অবশেষে সিরিয়াল ধরে আপনি কাজ করে ফেললেন। বেশি সময় লাগে নাই আপনার শুধুমাত্র তিন ঘন্টা সময় লেগেছে হা হা হা।
তিন ঘন্টা সময় কি আপনার কাছে কম মনে হয়েছে, অফিস থেকে ছুটি দিয়েছে একঘন্টা। সেখানে কাটিয়েছি তিন ঘন্টা। এখন বুঝেন কি ব্যাপারটা। ধন্যবাদ আপু।