সিলেট ভ্রমনের প্রথম পর্ব।।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। প্রতিদিনের মত আজকে আবার চলে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি ধারাবাহিক পোস্ট শুরু করবো। এই ধারাবাহিক পোষ্টের অনেকগুলো পর্ব হতে পারে। তবে কয়টি পর্ব হবে সেটা এখনই নির্ধারিত করে বলতে পারছিনা। পর্ব গুলো হবে সিলেটের ভ্রমন কাহিনী নিয়ে। চলুন নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করছি।
অনেক দিন আগ থেকেই আমাদের সিলেট ভ্রমন করার প্লান ছিল। তবে কখন যাবো সেই দিন তারিখ ঠিক করতে পারছিলাম না। যেহেতো আমি একটি অফিসে জব করি সেহেতো ছুটির একটি ব্যাপার ছিল। প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করলে হুটহাট কোথাও যাওয়া যায় না। প্রাইভেট কোম্পানিতে ছুটি দিতেই চায় না। ঈদের আগে আমার কাছে একটি অফার আসলো যে, যদি আমি ঈদের সময় ডিউটি করে কিছু রিপোর্ট তৈরী করে দিতে পারি। তাহলে ঈদের পরে আমাকে নির্ধারিত একটি এমাউন্টের টাকা সহ চারদিন ছুটি দিবে। এই সুযোগটি আমি হাতছাড়া করতে চাইলাম না। ঈদের সময় যদিও সাতদিন ছুটি থাকে তবে ঈদের সময় ঘুরতে গেল অনেক সমস্যা হয়। তাই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে দেওয়ার চিন্তা করলাম। তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলাম।
আজ শনিবার থেকে আমার অফিসের ছুটি শুরু হয়েছে। গত মাসের সাতাইশ তারিখ সিলেটে যাওয়ার জন্য অনলাইনে টিকেট কেটে ছিলাম। সিলেট মৌলভীবাজারে আমার বড় জেঠাসের বাড়ি। তারাও ঈদের পরে যাওয়ার জন্য খুব রিকুয়েষ্ট করছিলো। সিলেট যাওয়ার ভাল ভাল অনেক গুলো ট্রেন রয়েছে। পারাবত এক্সপ্রেস এগুলোর মধ্যে একটি। পারাবত ট্রেনটি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সিলেটের উদ্যেশ্যে ছেড়ে যায়। আমরা সকাল বেলা ট্রেন পাবো কিনা অনেক টেনশনে ছিলাম। তাই বাসা থেকে সকাল চারটার সময় বের হবো এমন চিন্তা করে সাড়ে তিনটায় মোবাইলে এলার্ম দিয়ে রাত এগারোটার সময় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুমানোর সময়ও টেনশন ছিল যদি মোবেইলের এলার্ম না বাজে তাহলে ট্রেন মিস করবো। রাতে ঘুমানোর পরে সাড়ে বারোটা তথা দেড় ঘন্টা পড়ে প্রথমবার ঘুম ভেঙ্গেছে। তারপর একটা পনের মিনিটে দ্বিতীয়বার ঘুম ভেঙ্গেছে। ঘড়ির সময় দেখে আবার ঘুমিয়েছি তিনটা পনের মিনিটে তৃতীয়বার ঘুম ভেঙ্গেছে। তারপর আর ঘুমায়নি। আজকে আমি একটি জিনিষ খুব ভাল ভাবে ফিল করেছি যে, টেনশন থাকলে মানুষের ঘুম হয় না। আমি ঘুমে খুবই গাদা,রাতে বা দিনে ঘুমানোর পরে ঘরে চুরি বা ডাকাতি হলেও আমার খবর থাকবে না। সেই জাগায় সাড়ে চার ঘন্টায় আমার তিনবার ঘুম ভেঙ্গেছে। যায়হোক মূল কথায় ফিরে আসি।
Time-4.50 am
অবশেষ তিনটা পনের মিনিটে ঘুম থেকে উঠে আমরা ফ্রেশ হয়ে তিনটা পঞ্চান্ন মিনিটে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। বাসা থেকে বের হয়ে মেইন রোডে যাওয়ার পরই একটি অটো রিকশা পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম ভাই সানর্বোড যাবেন..? সে বললো দেড়শো টাকা হলে যাবো। আমি বললাম ২০ টাকার ভাড়া দেড়শো টাকা। ঠিক আছে ভাই আমরা যাবো না। আপনি যেতে পারেন। তারপর একটি সিএনজি পেলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম যাবে কিনা। বললো যাবে,আমি সিএনজিকে সোজা কমলাপুর যাওয়ার অফার দিলাম। সে ৪০০ টাকা চাইলো। আমি তাকে দেড়শো টাকা বললাম পরে দুইশো টাকা দিয়ে রাজি করালাম। মাত্র চল্লিশ মিনিটে কমলাপুর চলে আসলাম। আমরা যখন কমলাপুর আসলাম তখনও অন্ধকার ছিল। আপনারা উপরের দুইটি ফটো লক্ষ করলে বুঝতে পারবেন।
Time-5.00 am
আমাদের টিকেট আগে থেকেই সংগ্রহ করা ছিল তাই আমাদের আর টিকেটের জন্য লাইনে দাড়াতে হয়নি। স্টেশনের বাহিরে দেখলাম অনেক মানুষ টিকেটের জন্য লাইনে দাড়াচ্ছে। তবে ভিতরে মানুষের সংখ্যা খুবই কম ছিল। আমাদের ট্রেনের সময় হলো ছয়টা বিশ মিনিটে। আমরা স্টেশনে পৌছে গেছি ৪টা ৫০ মিনিটে। এখন শুরু হলো আমাদের অপেক্ষার পালা। ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষন অপেক্ষার করার পর পেটে খিদা লেগে গেল। যার জন্য কেক আর পানি খেয়ে খিদা নিবারনের চেষ্টা করলাম। তখন কোন রেস্টুরেন্ট খুলে নাই।
Time-.5.20 am
অবশেষে পাচঁটা বিশ মিনিটে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটি চার নাম্বার লাইনে এসে দাড়ালো। আমরা ধীরে ধীরে ব্যাগ টলি নিয়ে ট্রেনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। প্রথম থেকে শুরু করে ট্রেনের শেষে চলে গেলাম অথচ আমাদের বগি খুজেঁ পাচ্ছিলাম না। আমাদের বগির নাম ছিল ট বগি। ট বগি না পেয়ে টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম। টিকেটে কোন ভুল কি না বা তারিখ ঠিক আছে কিনা বার বার চেক করতে লাগলাম। ভাল ভাবে টিকেট চেক করে দেখলাম সব কিছু ঠিক আছে। দশ মিনিট পরে ট্রেনে দায়িত্বরত কর্মচারীরা আসলেন। তারা হাতে করে বগির নেইম প্লেইট গুলো নিয়ে এসে লাগি দিলেন। তখন দেখলাম আমাদের ট বগি গাড়ির মাঝখানে রয়েছে।
Time-6.00 am
ট্রেনের বগি পেয়ে ঠিক ভাবে সিটে বসতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। ট্রেন নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট লেইট করে স্টেশন ছেড়েছে। আমার জীবনে এই প্রথম দেখলাম বাংলাদেশের ট্রেন ঠিক সময়ে স্টেশন ছেড়েছে। ঠিক সময়ে ট্রেন ছাড়ার কারনে অনেক ভাল লাগলো। ট্রেন ঝক ঝক ঝক ঝক ঝক ঝক করে চলতে লাগলো।
বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। আবার দেখা হবে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। এই কামনা করেই বিদায় নিতেছি। যদি কোন ভুল হয়ে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। সবাইকে ধন্যবাদ । আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
বিষয় | সিলেট ভ্রমন |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
তারিখ | ০৬-০৫-২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ওয়াও শুনে তো অনেক ভালো লাগলো গত ফ্রাইডেতে আপনি বলেছিলেন সিলেটে যাবেন ডিসকোর্ড কথা বলার সময়। কিন্তু ফাইনালি আপনি সিলেটে চলে গেলেন ঘুরার জন্য। তবে এই বছরে সিলেটে যাওয়ার আমার প্ল্যান ছিল কিন্তু অনেক বেশি গরম তাই এই সিজনে যাওয়া হচ্ছে না। আশা করি বর্ষাকালে যখন একটু ঠান্ডা হবে সেই ঠান্ডা পরিবেশে চলে যাব পরিবারের সবাই মিলে সিলেটে। আগে থেকে টিকিট করে নিয়েছেন তাই ভাগ্যিস আপনাকে আর লাইনে দাঁড়িয়ে ঝামেলা করতে হয় নি। আশা করি সুন্দর সুন্দর ব্লগ পাব আপনার কাছ থেকে সিলেটের সৌন্দর্য নিয়ে।
জী আপু অবশেষে সিলেট ভ্রমনে চলে আসলাম। টিকেট আগে কাটা থাকলে টেনশন মুক্ত থাকা যায়। ধন্যবাদ আপু।
আমি নিজেও মাস খানেক পর হয়তো সিলেটে ঘুরতে যাব। তার আগে আপনার পোস্ট গুলো বেশ কাজে দিবে বলে আমার মনে হয়। তবে এই রিক্সা গুলো একটু কায়দা পেলেই ভাড়া বেশি চায়। খুব খারাপ লাগে ব্যাপার গুলো। যাইহোক অবশেষে যে নিজের বগি টা ঠিকমত খুঁজে পেয়েছেন এটাই বড় কথা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।
জী ভাইয়া অটো গুলো সুযোগ বুঝে কোপ মারতে চায়। তবে আমি ফাদেঁ পা দেয়নি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
ভাইয়া আপনার সিলেট ভ্রমণের প্রথম পর্বটি পড়ে বেশ ভালই লেগেছে আমার। আর ঢাকা শহরে ভাড়া নেওয়ার কথাটা আর বলবে না ভাইয়া। ওরা একটু সুযোগ পেলেই এত বেশি ভাড়া চেয়ে বসে যেটা সীমার বাইরে। শেষ পর্যন্ত ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে কমলাপুরে পৌঁছেছিলেন আপনি। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পরে ট্রেনের বুক সিটে বসে স্বস্তি পেয়েছেন জেনে বেশ আনন্দ পেলাম ভাই। আপনার সিলেট ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্বটি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
জী ভাইয়া সবাই সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। তাই সবসময় সতর্ক থাকতে হয়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
সিলেট ভ্রমণে দারুন কিছু দৃশ্য আজ আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। লক্ষ্য করে দেখলাম স্টেশন থেকে শুরু করে অনেক কিছুই আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনি। খুব ভালো লাগলো আপনার আজকের এই পোস্ট এর উপস্থাপনা পড়ে।
জী ভাইয়া প্রথম পর্ব শুরু করলাম। ধীরে ধীরে অরো অনেক কিছু দেখতে পারবেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।