অবশেষে সোনার হরিণ হাতে পেলাম।।
ভালোবাসার এক অনন্য নাম-
আপনারা সবাই জানেন যে, আগামী ১৭ই জুন ২০২৪ রোজ সোমবার বাংলাদেশ, ভারত সহ দক্ষিণ এশিয়াতে মুসলমানদের সবচেয়ে ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করা হবে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশের সরকারি বেসরকার স্বায়ত্তশাসিত সকল প্রতিষ্ঠান কলকারখানা বন্ধ দেওয়া হবে। সে উপলক্ষে আগামী ১৫ই জুন রোজ শনিবার আমাদর অফিস থেকেও নয় দিনের ছুটি ষোষনা করা হবে। আর এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে কেউ নারীর টানে, কেউ জন্মভূমির টানে বাড়ি ফিরে। ঈদের আগে দুই তিন দিনে কোটি কোটি মানুষ রাজধানী শহর ঢাকা ছাড়ে। যার ফলে দেখা দেয় যানবহনের সংকট,পড়তে হয় ভোগান্তিতে। স্থলপথ,জলপথ ও আকাশ পথেও মানুষ যাতায়ত করে।
ছোট এই বাংলাদেশের সীমানা অনুযায়ী মানুষ অনেক বেশি। যার ফলে সারা বছরই রাস্তাঘাটে যানজট লেগেই থাকে। স্থলপথে ঢাকা থেকে বের হতেই দুই তিন ঘন্টা সময় লেগে যায়। একদিকে গরম অন্যদিকে যানজটের কারনে মানুষ ট্রেনে যাতায়ত করতে বেশি আগ্রহ দেখায়। যার ফলে ঈদের সময় ট্রেনের টিকেট পেতে রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। যুদ্ধ করেও অনেক সময় সোনার হরিণ নামক ট্রেনের টিকেট পাওয়া যায় না। আগে স্বশরীরে হাজির হয়ে কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে পারলেও এখন শত ভাগ অনলাইনে টিকেট ছাড়ে। এটার ভালো একটি দিক হলো ঘন্টার পর ঘন্টা কমলাপুর গিয়ে লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হয় না। কাউন্টারে যখন টিকেট ছেড়েছিল তখন মানুষ আগের দিন সন্ধার সময় কাউন্টারে গিয়ে সিরিয়াল দিতো। একটি টিকেটের জন্য সারারাত স্টেশনে কাটাতে হতো।
আমি একবার রমজানের ঈদের সময় বাড়ি যাওয়ার জন্য কাউন্টার থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করতে টিকেট ছাড়ার আগের দিন রাতের বেলা সিরিয়াল ধরেছিলাম। সারারাত না ঘুমিয়ে স্টেশনে কাটানোর ফলে আমার শরীর অসুস্থ হয়ে গেছিলো। ১০৫ ডিগ্রী জ্বর এসেছিল। ১৪৫ টাকার টিকেট সংগ্রহ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে, সুস্থ হতে ছয় সাত হাজার টাকা লেগেছিল। এর পর থেকে আর কোন দিন অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করতে কাউন্টারে যায়নি। কারন একবারের স্মৃতি আমার সারাজীবন মনে থাকবে। তবে ঐ বছর আমি টিকেট পেয়ে ডেইলি স্টার প্রত্রিকায় নিউজ হয়ে গেছিলাম। পরের দিন পত্রিকায় টিকেট সহ আমার ছবি ছাপা হয়। টিকেট সংগ্রহ করতে গিয়ে ইতিহাসের পাতায় স্বাক্ষী হয়ে রইলাম।
গত কয়েক বছর যাবৎ শত চেষ্টা করেও ঈদের আগে অনলাইন থেকে অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করতে পারি নাই। কারন হলো টিকেট ছাড়ার পাঁচ সেকেন্টের মধ্যেই টিকেট শেষ হয়ে যায়। আপনারা ঠিকই পড়েছেন। মাত্র পাঁচ সেকেন্টের মধ্যে টিকেট শেষ হয়ে যায়। আগে সারা বাংলাদেশের টিকেট এক সাথে ছাড়তো। যার ফলে সবাই এক সাথে সার্ভারে প্রবেশ করলে সার্ভার ডাউন হয়ে যেতো। যাদের নেট স্পিড বেশি থাকতো তারাই টিকেট সংগ্রহ করতে পারতো। আর বাকিরা হায় হুতাশ করতো। তবে এখন উত্তরবঙ্গের টিকেট গুলো সকাল আটটার সময় ছাড়ে। আর পূর্ববেঙ্গর টিকেট গুলো দুপুর দুইটার সময় ছাড়ে। এখন আর সার্ভারের প্রবলেম হয় না।
আগামী ১৫ই জুন শনিবারে আমাদের অফিস বন্ধ দিলে আমি ১৬ তারিখ রবিবারে বাড়িতে যাবো ইনশাআল্লাহ। এবার ফেমিলি আগেই বাড়িতে রেখে এসেছি। তাই বাড়তি টেনশন নেই। নিজে সিঙ্গেল মানুষ যেকোন ভাবে বাড়িতে যেতে পারবো। তারপরও গত ছয় তারিখ দুপুরে ১৬ তারিখের টিকেটের জন্য অনলাইনে চেষ্টা করলাম। ট্রেনের অগ্রিম টিকেট সাধারনত দশ দিন আগে দিয়ে থাকে। তাই ছয় তারিখ ষোল তারিখের টিকেট দিয়ে ছিল। দুপুর বেলা দুইটার আগেই লাঞ্চ করে টিকেট কাটার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। ঠিক দুইটার সময় আপসের মাধ্যমে ক্লিক দিলাম। মাত্র পাঁচ সেকেন্টের মধ্যে টিকেট শেষ। আমি হতভাগার একটি ক্লিকও কাজ হয়নি। আমি একটি টিকেটও পেলাম না। আমি এবারও ফেইল হলাম।
আমি জানতাম আমি টিকেট কাটতে পারবো না। সেই জন্য আমার কলিগ সাইফুলকে দিয়েও ট্রাই করালাম। সে একটি ধরতে সক্ষম হয়েছে। আর সেই টিকেট হলো এটি। ফেমিলি থাকলে একটি দিয়ে তো যেতে পারতাম না। টিকেট সেল করে দিতে হতো। তবে এখন যেহেতো সিঙ্গেল একটি টিকেট দিয়েই যেতে পারবো। সাইফুল টিকেট কাটতে পেরেছে সে জন্য তাকে ক্যান্টিনে নিয়ে ফাস্টফুড খাওয়াতে হয়েছে। যায়হোক তারপরও একটি টিকেট তো সংগ্রহ করতে পেরেছি। এখন আর বাসে গিয়ে যানজটের জামেলায় পড়তে হবে না। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী রবিবারে সকাল আটটার সময় মহানগর প্রভাতী ট্রেনে চড়ে জন্মভূমির টানে বাড়ি ফিরবো, ইনশাআল্লাহ।।
ধন্যবাদ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
ভাই বাংলাদেশের জন্য অনেক কিছুই শোনার হরিণ। সামনে ঈদ আসছে সবাই বাড়ি আসার জন্য উদগ্রীব হয়ে রয়েছে। আর এর জন্য প্রায় এক মাস আগে থেকে সবাই টিকিট কাটতে শুরু করেছে। হয়তো এর মাঝে কেউ টিকিট পাবে কেউ পাবে না। তবে আপনি শেষ পর্যন্ত ট্রেনে টিকিট পেয়েছেন এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। কারণ বাড়ি না আসতে পারলে শ্বশুরবাড়ি যেতে পারবেন না 😃। আপনার যাত্রা পথের অগ্রিম শুভকামনা রইলো।
এবার শ্বশুর বাড়ি না গেলে জামাইকে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিবে,হা হা হা।
আসলে ভাই আমাদের দেশের দূরনিতির কথা আর কি বলবো।তবে এই দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে কিছুদিন আগেও ১০ দিন আগেও বুকিং দেওয়া যেতো না কক্সবাজার এর টিকিট কিন্তু এখন পাওয়া যায়।আপনার অনুভূতি ভালো লাগলো।শুভ কামনা আশা করি ভালবাবে বাসায় পোছাবেন।
এখন সিস্টেমটা ভালোই আছে। তবে ব্ল্যাকার গুলোকে দমন করতে পারলেই হয়ে যেতো। ধন্যবাদ।
ইদের টিকিট কাটতে গিয়ে জ্বর বাধিয়ে ফেলা এবং ইতিহাসের পাতায় সাক্ষী হয়ে থাকার বিষয় টি পড়ে হাসবো না কাঁদবো ভাই বুঝতে পারি নি! পরিবারকে আগেই রেখে এসেছেন, এটি বেশ ভালো কাজ করেছেন। নইলে ইদের সময় যারা বাড়িতে ফিরি, তারাই জানি কি পরিমাণ দুর্ভোগ আর ভোগান্তি পোহাতে হয়! তবে আপনার টিকিট যে পেয়েছেন কলিগের মাধ্যমে, তাই ভালো দিক! ভালো ভাবে যেন যেতে পারেন, সেই শুভকামনা।
জী আপু সেই বছর ইতিহাস হয়ে গেছিলাম। এবার অনলাইন থেকেই টিকেট পেলাম। ধন্যবাদ।
আমি চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু আফসোস পাইনি। ভাই কী বলব ২ মিনিটের মধ্যে টিকিট শেষ। আমি ক্লিক করে ঢুকতে ঢুকতেই সব শেষ আফসোস। তবে আপনি যে পেয়েছেন এটা দেখে ভালো লাগছে। আপনি তাহলে খবরের পাতায় নিউজ হয়ে গিয়েছিলেন টিকিট কাটতে গিয়ে। বিষয়টি বেশ দারুণ। আশাকরি বাড়িতে সুস্থ্যভাবে গিয়ে ঈদ করতে পারবেন পরিবারের সাথে।
ভাইয়া দুই মিনিট তো অনেক সময়। দুই সেকেন্টে টিকেট শেষ হয়ে যায়,হা হা হা। কিছু বলার নেই। ধন্যবাদ।