আমাদের সবার প্রিয় সম্মানিত দাদার বাবার মৃত্যুতে আমরা সবাই গভীরভাবে শোকাহত।।
[ব্যানার ক্রেডিট](Admin Hafizullah)
বিদায় শব্দটা খুবই বেদনাদায়ক। আর সেটা যদি চির বিদায় হয় তাহলে অন্তরটা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। আমি যখন বিভিন্ন সময় ছুটিতে বাড়িতে যায়, ছুটি শেষ করে আসতে খুবই কষ্ট হয়,খুবই মায়া লাগে। মা-বাবা ভাইবোনকে ছেড়ে, নিজের মাতৃভূমি, নিজের এলাকা, রাস্তাঘাট, পরিবেশ , আপনজন পাড়া প্রতেবেশিকে ছেড়ে আসতে মন চাই না। তারপরেও জীবিকার তাগিতে সব কিছু ছেড়ে আসতে হয়। ঢাকা আসার পরে মনটা পরে থাকে বাড়িতে। কখন বাড়িতে যাবো, কখন মা-বাবা ভাইবোনদের চেহেরা দেখবো অধির আগ্রহে অপেক্ষা করি। ধীর্ঘদিন পরে হলেও তাদের চেহেরা দেখতে পায়,তাদের সাথে একসাথে বসে খাবার খেতে পারি, তাদের সাথে কথা বলতে পারি, তাদের সুখে দুঃখে সাথি হতে পারি। এটাই অনেক বড় আনন্দ।
আমি আমার দাদা-দাদি, নানা-নানি সবার আদর পেয়েছি। তখন আমি খুবই ছোট ২০০৮ সালের প্রথম দিক দিয়ে আমার দাদা এই দুনিয়া ছেড়ে চিরবিদায় নিয়ে পরপারে চলে যায়। তখন আমি আমার বাবার দিকে তাকিয়ে দেখেছি তিনি কতটা মর্মাহত হয়েছেন,কতটা কষ্ট পেয়েছেন। আমি তখন ছোট, আত্বীয় স্বজন সবার সাথে আমিও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলাম। দাদা চলে যাওয়ার এক বছর পরেই নানাও দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়। তখন মামাদের দেখেছি কিভাবে চোখের পানি ফেলেছে। তারা বড় মানুষ তারপরও তারা চোখের পানি আটকে রাখতে পারে নাই। এর কয়েক বছর পরে আমার দাদি চলে যায়। তখন আমি পুরোপুরি বুঝি। আমি ঢাকাতেই চাকরি করতাম। রাত বারোটার দিকে দাদির মৃত্যুর খবর পায়। সকাল সাড়ে চারটার সময় ঢাকা থেকে রওয়ানা দিয়ে সকাল আটটার সময় বাড়িতে পৌছে গেছিলাম। আত্বীয় স্বজনের কান্নায় এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে গিয়েছিলো। আমিও কান্না থামাতে পারি নাই। মনের অজান্তে চোখের কোণে পানি চলে এসেছিলো। কিছু দিন আগে আমার মামাও দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়। এভাবে ধীরে ধীরে আপনজন গুলো দুনিয়া থেকে চির বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে। সবাইকে আমি নিজ হাতে মাটির নিচে দাফন করেছি। এটা যে কি কষ্ট যাদের আপনজন মারা যায় তারাই সেটা বুঝতে পারে। নানা যেদি মারা গিয়েছিলো ছোট মামাকে নানার কবর থেকে সরানো যাচ্ছিলো না। তিনি বার বার কবরের উপরে পরে যাচ্ছিলেন। তখন বুঝেছি নানার মৃত্যুতে ছোট মামার ভিতরটা কেমন করেছে।
আমার দাদি মারা যাওয়ার পরে আমি বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম। দাদির হাতের একটি লাঠি ছিল, দাদির ঘুমানোর খাট ছিল, পায়ের জুতো এগুলো দেখে বুক ভেঙ্গে কান্না আসতো। আমাদের কান্না দেখে মা দাদা-দাদির সব স্মৃতি লুকিয়ে রাখতেন। স্মৃতি লুকিয়ে রাখলেও আমরা দাদা-দাদি, নানা ও মামাকে কখনো ভুলতে পারবো না। গত শুক্রবারে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই মোবাইলটা হাতে নিয়ে মডারেটর রোপক ভাই ও নুসূরা আপুর মাধ্যমে জানতে পারি আমাদের কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার RME দাদার জন্মদাতা পিতা এই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে। খবরটা দেখার সাথে সাথে শুয়া থেকে উঠে বসে গেলাম। তারপর জেনারেল চ্যাটি গিয়ে দেখি সবাই দুঃখ প্রকাশ করছে। বিশ্বাস করেন এই খবরটা দেখে সকাল বেলা আমি নাস্তা পর্যন্ত করি নাই। পোষ্ট লিখতে গেলেও লেখা আসে না,চ্যাটিং করতে গেলেও ম্যাসেজ আসছিলো।
এই কমিউনিটির প্রতিটি সদস্যকে আমি আমার পরিবারের একজন সদস্য মনে করি। বড় দাদা বৌদি, ছোট দাদা দিদি সবাইকে আমার আপনজন থেকেও বেশি কিছু মনে করি। কমিউনিটির সবার দুঃখে আমিও দুঃখিত হয়, তাদের সুখে আমিও সুখি হয়। আমার মা-বাবাকে সৃষ্টিকর্তা এখনো বাচিঁয়ে রেখেছে,সুস্থ রেখেছে,আলহামদুলিল্লাহ। দাদা দাদি,নানা, মামা মারা যাওয়ার সময় আমি অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। সেখানে সম্মানিত দাদার স্বয়ং বাবা মারা গেছে। দাদার অবস্থাটা কেমন হবে, দাদার ভিতরটা কেমন করবে, সেটা আমার ধারনার বাহিরে। দাদা কতটা মর্মাহত হয়েছেন,দাদা কতটা কষ্ট পেয়েছেন, দাদার হৃদয়টা কতটা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে, সেটা দাদার ছোট ছোট দুইটি ম্যাসেজের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছি। যদিও এটা দুনিয়ার নিয়ম,সবার ক্ষেত্রেই এমন হবে, সবাইকে এটা মেনে নিতে হবে। তারপরেও মেনে নিতে কষ্ট হয়।
বিশেষ করে যখন আপনজনদের স্মৃতি গুলো মনে পড়ে, তাদের ব্যবহৃত জিনিষ গুলো চোখে পড়ে, তাদের ব্যবহৃত চশমা, তাদের ব্যবহৃত লাঠি, জুতো, জামা কাপড় দেখি তখন খুব বেশি কষ্ট লাগে। তাদের জায়গাটা কেউ পূর্ণ করতে পারবে না। তারা যে রুমে ঘুমাতেন, সে রুমটা খালি খালি লাগে। এগুলো ফিল করলে মনের অজান্তে চোখের কোণে পানি চলে আসে। দাদা ও দাদার ফেমিলিকে সান্তনা দেওয়ার মত ভাষা আমার জানা নেই। তারপরও বলতে হয়, এই বিয়োগ অনিচ্ছা সত্তেও সবাইকে মেনে নিতে হয়। কারন এটাই দুনিয়ার রীতি।
জন্ম মৃত্যু সব কিছু সৃষ্টিকর্তার হাতে। তিনিই জানেন কে কখন কোথায় জন্মগ্রহন করবে,কে কখন কোথায় মৃত্যুবরণ করবে। এখানে আমাদের কোন হাত নেই। সব কিছু সৃষ্টিকর্তার ইশায় হয়। পবিত্র কোরআন শরীফে সৃষ্টিকর্তার বাণী রয়েছে,“প্রত্যেকটা প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে” পৃথিবীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যারা জন্মগ্রহন করেছে, সবাই মৃত্যুবরণ করতে হবে, ভবিষ্যতে যারা আসবে তাদেরকেও মৃত্যুবরণ করতে হবে। মৃত্যুর হাত থেকে কেউ রেহায় পাবে না। মৃত্যুই চির সত্য।
আমার বাংলা ব্লগের সম্মানিত দাদার বাবার মৃত্যুতে আমাদের কমিউনিটির সবাই গভীরভাবে শোকাহত। আমরা সবাই যে যার ধর্মমতে ওনার স্বর্গীয় আত্নার শান্তি কামনা করি।
[ব্যানার ক্রেডিট](Admin Hafizullah)
ধন্যবাদ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ভাইয়া, আপনি আপনার কাছের যারা মৃত্যুবরণ করছেন সবার কথাই মোটামুটি তুলে ধরেছেন। আসলে মৃত্যুই সত্য এর চেয়ে বড় সত্য আর কিছু নেই। আপনি হয়তো সবাইকে পেয়েছেন কিন্তু আমি আমার বাবাকে দেখতে পাইনি, এর চেয়ে কষ্ট বা না পাওয়ার বেদনা পৃথিবীতে আর কিছু হতে পারে না যেটা আমি বুঝতে পারি। দাদা আজ তার হারিয়েছে, এটাই স্বাভাবিক।
জী ভাইয়া যারা বাবা নামক ব্যক্তিটিকে হারিয়েছে,তারাই বুঝে তার বেদনা কতটা কঠিন। ধন্যবাদ।
https://x.com/ArianKh29670721/status/1809917873621811557?t=ZQnHRUHnoksE9qtkFze_sA&s=19
প্রত্যেকটা প্রানিকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তবে কিছু কিছু মৃত্যু একদম মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। সেদিন সকাল বেলা হঠাৎ করে খবরটি পেয়ে আমারও খুবই খারাপ লেগেছিল। সত্যি এ শোক ভুলবার নয়। তারপর একটাই চাওয়া যেন দাদার পরিবার যেন এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারে এবং আঙ্কেল পরপারে ভালো থাকুক। 🤲
জী আপু এখন সেই কামনা করি,দাদার পরিবার যেন সেই শোক কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে। ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাইয়া দিনে দিনে আমাদের মাথার সকল বটগাছগুলো ছায়া নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছে। এটা হল আমাদের জন্য অনেক কষ্টকর একটা শোক বার্তা। আমি যেমন বাবা মা হারা নিঃস্ব এক মানুষ। আমি বুঝি এ কষ্ট কি আর কাছের মানুষগুলো হারানোর বেদনা আমরা যেন সহজে ভুলতে পারিনা। আমাদের সম্মানিত দাদার বাবা আমাদের আঙ্কেলের জন্য আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে অসংখ্য হাজারকোটি দোয়া জানাচ্ছি সৃষ্টিকর্তা যেন পরপারে স্বর্গের সর্বোচ্চ স্থানে ভালো রাখে।
জী আপু তাদের জন্য দোয়া কামনা করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই। ধন্যবাদ।
জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে। এই সহজ সত্যটা আমরা জানি কিন্তু মেনে নিতে পারি না ব্যাপার টা খুবই দুঃখজনক। দাদার এই অবস্থা টা আমি বুঝতে পারছি। উনার পরিবার এখন শোকাহত । ধৈর্য্য ধারণ ছাড়া আর কিছুই এখন করার নেই। উনারা যেন এই সময় ধৈর্য ধরতে পারে সেই কামনা করি।
জী ভাইয়া এটাই দুনিয়ার রীতি। এখন ধৈর্যধারন করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। ধন্যবাদ।
প্রথমেই শোক প্রকাশ করছি। আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য হচ্ছে মৃত্যু। আমরা চাইলেই মৃত্যু থেকে বেঁচে থাকতে পারবো না। সকল প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার শক্তি দান করুক।
জী ভাইয়া মৃত্যুর হাত থেকে কেউ বাঁচতে পারবে না। সবাইকে ধৈর্য সহকারে এটা মেনে নিতে হবে। ধন্যবাদ।
দাদার বাবার মৃত্যু দিনটি আমাদের সকলের জন্যই একটি শোকের দিন ছিল।সৃষ্টিকর্তা দাদা এবং তার পরিবারকে এই শোক কাটিয়ে ওঠার তৌফিক দান করুন।এমনটাই প্রার্থনা করি এবং তিনি যেন বেহেশত নসিব করেন।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।