বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের উপর টিকটক ও শর্ট ভিডিওর প্রভাব।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি হলো টিকটক ও শর্ট ভিডিও কনটেন্ট। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও এখন পুরো একটি প্রজন্মের চিন্তা, আচরণ, এবং জীবনধারাকে বদলে দিচ্ছে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব গভীরভাবে পড়েছে, বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে। আগে যেখানে তরুণরা বই পড়ত, খেলাধুলায় অংশ নিত বা কোনো দক্ষতা অর্জনে সময় দিত, সেখানে এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যাচ্ছে স্ক্রিনের সামনে শর্ট ভিডিও বানাতে ও দেখতে।
টিকটক, ইউটিউব শর্টস, ইনস্টাগ্রাম রিলস সব মিলিয়ে তরুণরা এখন নতুন এক ডিজিটাল দুনিয়ায় বাস করছে। কিছুটা ভালো দিকও আছে। অনেকে সৃজনশীল কনটেন্ট তৈরি করে জনপ্রিয়তা ও আয় করছে। কেউ কেউ হাস্যরস, সংগীত, তথ্যভিত্তিক ভিডিও তৈরি করে দর্শকদের বিনোদন দিচ্ছে। এই দিকটি ইতিবাচক, কারণ এটি তরুণদের প্রকাশের সুযোগ দিয়েছে এবং অনেকের জন্য নতুন পেশার দরজা খুলে দিয়েছে।
কিন্তু সমস্যা শুরু হয় তখন, যখন বিনোদনের এই মাধ্যম অতিরিক্ত আসক্তি তৈরি করে। আজকের কিশোর-কিশোরীরা ঘন্টার পর ঘন্টা শুধু ভিডিও স্ক্রল করে সময় নষ্ট করছে। ফলে তারা বাস্তব জীবনের সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলছে।
টিকটক সংস্কৃতির একটি বড় সমস্যা হলো দর্শকসংখ্যা ও লাইক পাওয়ার প্রতিযোগিতা। অনেক তরুণ-তরুণী এখন শুধুমাত্র ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য অশালীন, অপ্রাসঙ্গিক বা অশোভন কনটেন্ট তৈরি করছে। গোপনে অন্যের বিডিও ধারন করে, এতে সমাজে নৈতিক অবক্ষয়, পারিবারিক দ্বন্দ্ব এবং সামাজিক লজ্জার ঘটনা বেড়ে গেছে।
এছাড়া এই শর্ট ভিডিওর অতিরিক্ত ব্যবহার তরুণদের মনোযোগ নষ্ট করছে। পড়াশোনা বা কাজের প্রতি মনোযোগ হারাচ্ছে, ধৈর্য কমে যাচ্ছে, এমনকি কেউ কেউ তুলনা আর ঈর্ষার ফাঁদে পড়ে ডিপ্রেশনে ভুগছে। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের দ্রুতগতির বিনোদন মস্তিষ্কের মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন সচেতনতা। পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং সময় ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করা।
এছাড়া সরকার ও সমাজকেও দায়িত্ব নিতে হবে। ডিজিটাল লিটারেসি শিক্ষা অর্থাৎ অনলাইন সচেতনতা বাড়াতে স্কুল পর্যায় থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। আর কনটেন্ট ক্রিয়েটরদেরও বুঝতে হবে, জনপ্রিয়তার জন্য নয়, বরং দায়িত্বশীল ও ইতিবাচক বার্তা দেওয়াই আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।
টিকটক ও শর্ট ভিডিও একদিকে আমাদের বিনোদন দিয়েছে, আবার অন্যদিকে অনেক তরুণের জীবনে সময়ের অপচয়, নৈতিক অবক্ষয় ও মানসিক চাপের কারণ হয়ে উঠেছে। এখন সময় এসেছে ভারসাম্য খোঁজার। প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে জ্ঞানের জন্য, অনুপ্রেরণার জন্য, সেটা যেন আমাদের জীবন নিয়ন্ত্রণ না করে।
বাংলাদেশের তরুণ সমাজ যদি সচেতনভাবে এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে, তবে এই মাধ্যমগুলো হতে পারে তাদের উন্নয়ন, সৃজনশীলতা ও সাফল্যের সিঁড়ি। কিন্তু যদি অন্ধ অনুকরণ ও আসক্তিতে ডুবে যায়, তাহলে এই শর্ট ভিডিও সংস্কৃতি আমাদের প্রজন্মকে ছোট করে ফেলবে, চিন্তায়, আচরণে, আর ভবিষ্যতের স্বপ্নে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server