সিলেটে গিয়ে ফুচকা খাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা।।
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
হ্যালো আমার প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। মানুষের জীবনে নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতাই থাকে। সেই অভিজ্ঞতা গুলো জানলে বা পড়লে ভালই লাগে। আজকে আমি আপনাদের সাথে ফুচকা খাওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। ফুচকা যেমন সবাই খায়, আমিও খায়। তবে ঐদিন আমার মত এত বাজে অভিজ্ঞতা খুব কম মানুষেরই হয়েছে। চলুন মূল আলোচনাটা শুরু করি।
হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার জিয়ারত করে সুরমা নদীর পারে একটি রেস্টুরেন্টে ফুচকা খেতে গিয়েছিলাম। আমি আগে থেকেই জানি যে সিলেটের ফুচকা তেমন মজা হয় না। তারপরও সাথে যারা গিয়েছে সবার এক মত ফুচকা খাবে। আমি এটাও জানি যে সব জেলার সব ধরনের খাবার মজা হয় না। যে কোন একটি জিনিষের উপর ভিত্তি করে এক জেলার সমালাচনা করা যায় না। আমি কোন সমালোচনা করতেও বসি নাই। জাস্ট আমি আমার অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করছি। সুরমা নদীর দুই পাশে অনেক গুলো ফুচকার দোকান ছিল। আমরা বাহিরের কোন ফুচকার দোকানে না গিয়ে একটি ক্যাফেতে গিয়েছিলাম।
ক্যাফেটির নাম অনেক সুন্দর। নাম হলো “ক্যাফে-২০০০”। আমরা যখন ক্যাফেতে প্রবেশ করেছিলাম তখন তেমন কোন মানুষ ছিল না। তবে ক্যাফের পরিবেশটা ধারুন ছিল। নদী থেকে হালকা হালকা বাতাস আসতেছিল। ক্যাফেতে প্রবেশ করার পরে মেনু বুক দিলো। আমরা মেনু বুক না দেখেই বলে দিলাম সবাইকে ফুচাক দেন। তারা বললো কিছুটা সময় লাগবে। আমরা ফুচকার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। পাচঁ মিনিট পরে আমি এগিয়ে গেলাম,ফুচকা বানানো হয়েছে কিনা দেখার জন্য। গিয়ে দেখলাম এখনো ফুচকা তৈরী হয়নি। ক্যাফের মালিক আমাকে জিঙ্গেস করলেন আমরা কোথায় থেকে গিয়েছি। আমি বললাম আমার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া । আমরা সবাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এসেছি। এমনি যে ফুচকা বানাচ্ছে সে বললো, আমার বাড়িও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। আমি বললাম তাহলে তো ভালই কোন উপজেলা। সে বললো কসবার কুটিতে। আমি বললাম আমার গ্রাম সৈয়দাবাদ। কুটি আমাদের গ্রাম থেকে পাচঁ কিলোমিটার দুরে। ক্যাফের মালিক বললো দেশি মানুষ খুব মজা করে ফুচক বানিয়ে দাও। আমি বললাম জি ভাইয়া সাথে শশুরবাড়ির মানুষ আছে। একটু ভাল করে বানিয়ে দেন। একথা বলে আমি আমাদের টেবিলে চলে আসলাম।
কিছুক্ষন পরে ফুচকা রেডি করে আমাদের টেবিলে দিয়ে গেল। আমি চট করে একটি পিক তুলে সবাইকে ফুচকা খেতে বললাম। সবাই ফুচকা মুখে দিয়ে একজন অপর জনের দিকে তাকাচ্ছে। আমি বললাম কি ব্যাপার কেউ কোন কথা বলছো না কেন। সবাই কথা না বলে হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে আমাকে ফুচকা খেতে বললো। তারপর আমি টক দিয়ে একটি ফুচকা মুখে দিলাম। তারপর আমিও কথা বলা বন্ধ করে দিলাম। এত বাজে ফুচকা আমি আমার জীবনেও খায়নি। মুখের রুচিটাই নষ্ট হয়ে গেল। তারপর যে ফুচাক বানিয়েছে তার কাছে গিয়ে বললাম ভাই এটা কি ফুচকা না কি অন্য কিছু। সে বললো আচ্ছা টকটা চেন্জ করে দিচ্ছি। টক চেন্জ করে দিলে কি হবে,স্বাদ তো বাড়ে নাই। সবাই মাত্র দুইটি করে ফুচকা খেয়েছে। জোর করেও আর কাউকে ফুচকা খাওয়াতে পারিনি। তারপর বিল দিতে গেলাম বললো প্রতি প্লেট ফুচকা ৬০ টাকা । আমি বললাম ভাইয়া যে ফুচকা খাইছি জীবনে ভুলবো না। দুইটি করে ফুচকা খেয়েছি কিন্তুু বিল দিয়েছি ৬০ টাকা করে। প্রতি ফুচকার দাম পড়লো ৩০ টাকা। বিল দিয়ে ক্যাফে থেকে বের হয়ে গেলাম। আর মনে মনে ভাবলাম জীবনে ভুলেও আর কোন দিন এই ক্যাফেতে পা রাখবো না।
ফ্যাফে থেকে বের হয়ে ভেবেছিলাম এই ব্রিজের উপর কিছুটা সময় কাটাবা কিন্তুু ট্রেন আসার সময় হয়ে গেছে তাই তারাতারি করে চলে আসলাম। এই ব্রিজটি সুরমা নদীর উপরে অবস্থিত। ব্রিজটির নাম হলো সেলফি ব্রিজ। ব্রিজটি রাতের বেলা থেকে বিকাল বেলা বেশি সুন্দর লাগে। সময়ের অভাবে ব্রিজটি ভালভাবে দেখতে পারি নাই । বেমজা ফুচকা খেতে গিয়ে সব সময় নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও গেলে একটু সময় নিয়ে যেতে হয়। তা না হলে অনেক কিছু মিস হয়ে যায়।
বন্ধুরা আজকে এপযন্তই। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষন পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। আপনারাও মাঝে মাঝে আপনাদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন। আপনাদের সেই অভিজ্ঞতা গুলো আমাদের জীবনে কোন এক সময় কাজে লাগতে পারে। সবার জন্য শুভ কামনা রইল।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
বিষয় | সিলেটে গিয়ে ফুচকা খাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা।।। |
স্থান | খোজাঁরখলা,মারকাজ পয়েন্ট,দক্ষিণ সুরমা সিলেট। |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
তারিখ | ০৯-০৫-২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
শ্বশুর বউয়ের লোকজন নিয়ে গিয়েছেন তারপর আবার নিজের গ্রামের মানুষ কি ফুচকা দিল । ফুচকা আবার এত খারাপ হয় নাকি ফুচকা তো ভালই লাগে খেতে। জানি না কি দিয়ে তৈরি করেছিল যে এত খারাপ লাগলো খেতে। সেলফি ব্রিজে গিয়ে কি সবাই সেলফি তুলে নাকি যে ওটার নাম সেলফি ব্রিজ।
জী আপু ঐদিনের ফুচকার কথা জীবনে কোনদিন ভুলবো না। ধন্যবাদ আপু।
যদিও সবাই মিলে ফুচকা খাওয়ার জন্য গিয়েছিলেন কিন্তু এমন ফুচকা দিল আপনাদেরকে দুইটার বেশি কেউই খেতে পারেনি। জোর করে ও খাওয়াতে পারছিলেন না কাউকে। আসলে এরকম খাবার যদি সুস্বাদু না হয় তাহলে খেতে একটুও ভালো লাগেনা। আপনি তো একেবারে বলেই ফেলেছেন এই ক্যাপেতে আর কখনো পা ও রাখবেন না। তারপরে ব্রিজের ওখানে গিয়ে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছিলেন দেখে বুঝতে পারছি। আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো এমনিতে ব্রিজে কাটানোর মুহূর্ত টা পড়ে। ফুচকা খাওয়ার এরকম তিক্ত অভিজ্ঞতা পড়ে খারাপ লেগেছে।
ফুচকা খাওয়ার মত মজা আর কোন কিছুতে নেই। আর আপনি সেই ফুচকা খেতে গিয়ে বারোটা বাজে আসলেন। ভাগ্য ভালো যে সবাই মিলে আপনাকে কিছুই বলেনি। যাক তবুও সবাইকে নিয়ে ব্রিজের সামনে ভালই সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ ফুচকা খাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া ভুলেও কোনদিন ঐ ক্যাফেতে যাবো না। ব্রিজের উপরের মূহর্তটা ধারুন ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া।