ঢাকা মেট্রোরেলে প্রথম যাত্রা।।
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে ঢাকা মেট্রোরেলে প্রথম যাত্রা করার অনুভূতি শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি ব্লগটি পড়লে অনেক কিছু শিখতে পারবেন।।
মেট্রোরেল হলো একটি দ্রুতগামী গণপরিবহন ব্যবস্থা। ১৮৯০ সালে লন্ডন শহরে বিশ্বের প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়েছিল। যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরের আন্ডারগ্রাউন্ডে ১৮৬৩ সালে প্রথম ইঞ্জিনচালিত ট্রেন হিসাবে চালু হয়েছিল। ১৮৯০ সালে যখন ইঞ্জিনের বদলে বৈদ্যুতিক লাইনের ট্রেন মাটির নিচ দিয়ে চলা শুরু করে তখন এটি বিশ্বের প্রথম মেট্রোরেল হয়ে ওঠে। তারপর ধীরে ধীরে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে মেট্রোরেল চালু হতে থাকে। এই ট্রেন খুব দ্রুত গতিতে চলে,যানজটের জামেলা নেই। যার ফলে সময় বাচেঁ অনেক। ঢাকা শহরের মত এত ঘনবসতি একটি শহরে আরো অনেক আগেই মেট্রোরেল চালু হওয়ার দরকার ছিল। যায়হোক বাংলাদেশ এখনো দূর্নীতির জন্য বিশ্ব থেকে ৫০ বছর পিছিয়ে আছে। ঐ দিকে আজকে না গেলাম।
২০১৩ সালে পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল ঢাকা মহানগরীর যানবাহন সমস্যা ও পথের দুঃসহ যানজট কমিয়ে আনার জন্য দ্রুতগামী গণপরিবহন ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়। যার অধীনে প্রথমবারের মত ঢাকায় মেট্রোরেল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়। প্রথম দিকে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চালু করা হয়েছে। ধীরে ধীরে সেটা যাত্রাবাড়ী হয়ে নারায়নগঞ্জের সাইনবোর্ড,চিটাংরোড পর্যন্ত নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ঢাকা শহরে ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ সর্বপ্রথম মেট্রোরেল চালু করা হয়ে। আর মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলো “ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড”। প্রথম দিকে মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে মানুষ ধীর্ঘ লাইন ধরে ধরে মেট্রোরেলে ভ্রমন করেছে। আমার আবার এত এনার্জি নেই যে,বিশাল বড় লাইনে দুই আড়াই ঘন্টা দাড়িয়ে মেট্রোরেলে ভ্রমন করতে হবে। যেহেতো বাংলাদেশে আছি,একদিন বাধ্য হয়েই যেতে হবে।
মেট্রোরেলের অফডে দেওয়ার হয়েছে শুক্রবারে। আর আমাদের অফিসের অফডেও হলো শুক্রবারে। তাই চাইলেও অন্যদিন মেট্রোরেলে চড়া সম্ভব নয়। আর আমাদের অফিসও মেট্রোলের আওতার অনেক বাহিরে। তাই ধীর্ঘদিন পরে চিন্তা করলাম একদিন মেট্রোরেল যাওয়া যাক। সেই পরিকল্পনা থেকেই গত মাসের ২৬ তারিখ মেট্রোরেল ভ্রমন করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি আর আমার এক ফ্রেন্ড মিরপুর বিপিএল খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। বিপিএলের টিকেট নিয়ে এক মহাকান্ড হয়েছিল। সেটা অন্যপর্বে শেয়ার করবো। আমরা যাত্রাবাড়ি থেকে পল্টনে চলে গেছিলাম। সেখান থেকে মেট্রোরেলের বাংলাদেশ সচিবালয় স্টেশনে প্রবেশ করলাম।
উপরে উঠে দেখি মানুষ বিশাল লম্বা লাইন ধরে দাড়িয়ে আছে। কয়েকটি মেশিন থেকে টিকেট বিক্রয় করছে। আমি প্রথম মেট্রোরেলের স্টেশনে প্রবেশ করলাম। তাই কোন কিছু বুঝতেছিলাম না। কয়েক জনকে জিঙ্গেস করার পরে জানতে পারলাম সিরিয়াল ধরে টিকেট নিতে হয়। আর না হয় অটোমেটিক টিকেট সংগ্রহ করার বুথ আছে। সেখান থেকেও টিকেট সংগ্রহ করা যায়। আর যাদের মাসিক বা সাপ্তাহিক কার্ড করা আছে তারা সরাসরি উপরে চলে যাচ্ছে। স্টেশন চত্বর খুবই পরিষ্কার পরিছিন্ন,আশ পাশের পরিবেশ দেখে দেখে বিদেশি স্টেশন মনে হয়। হয়তো কয়েক বছর পরে বাঙ্গালীরা আশে পাশে চা,পান বিক্রয় করা শুরু করে দিবে। তখন নিজেরদের ঘর বাড়ি মনে করে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবে। আমাদের নোংরা মান মানুষিকতার পরিবর্তন হোক। এতক্ষনে আমর ফ্রেন্ড টিকেট নিয়ে চলে এসেছে।
টিকেট সংগ্রহ করার বুথ থেকে কিভাবে টিকেট সংগ্রহ করতে হয় সেটা আমি জানতাম না। কারওয়ান বাজার আসার পরে সেই পদ্ধতিটা দেখে কয়েকটি ফটোগ্রাফি করেছি। বুথ থেকে টিকেট সংগ্রহ করা খুব সহজ এবং নিরাপদ। যে স্টেশন থেকে মেট্রোরেলে উঠতে হবে,সে স্টেশন অটোমেটিক সিলেক্ট করা থাকে। যাত্রীদের শুধু তার নিজ গন্তব্যের স্টেশন সিলেক্ট করলেই এমাউন্ট চাইবে। তখন সমপরিমান টাকা অথবা বড় নোট দিলেও টিকেটের মূল্য অনুযায়ী টাকা রেখে বাকি টাকা রিটার্ন বের হয়ে আসে। সিস্টেমটা খুবই সুন্দর। আপনারা ফটোগ্রাফির মাধ্যমে বিষয়টা বুঝতে পারবেন।
এগুলো হলো মেট্রোরেলের টিকেট। মাত্র বিশটাকা দিয়ে আমরা বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত টিকেট নিয়েছিলাম। টিকেট সংগ্রহ করে উপরে যেতে হয়। যাওয়ার সময় গেইটে কার্ডটি পাঞ্চ করলে তখন গেইট অটোমেটিক খুলে যায়। আবার বের হওয়ার সময় কার্ডটি পাঞ্চ করে বের হতে হয়। সুতরাং স্টেশন থেকে বের হওয়ার আগ পর্যন্ত টিকেটটি নিজ দায়িত্বে সংরক্ষন করতে হবে। কার্ড হারিয়ে ফেললে বা নষ্ট করে ফেললে বের হওয়ার সময় জরিমানা গুনতে হবে। তাই সর্তকতার সাথে কার্ড সংরক্ষন করতে হবে।
টিকেট নিয়ে উপরে যাচ্ছি, উপরের পরিবেশটাও অনেক সুন্দর,পরিষ্কার-পরিছন্ন। উপরে উঠার জন্য নরমাল সিড়ি, বৈদ্যুতিক সিড়ি ও লিফট ব্যবহার করা যায়। সম্ভবত লিফট বৃদ্ধ,অসুস্থ আর গর্ভবতী মায়েদের জন্য নির্ধারিত। আমি লিফট ব্যবহার করি নাই তাই বিস্তারিত জানি না। যায়হোক টিকেট নিয়ে উপরে গিয়ে কি কি স্টেপ রয়েছে সে গুলো পরের পর্বে শেয়ার করবো। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | ঢাকা মেট্রোরেলে প্রথম যাত্রা।। |
স্থান | পল্টন ,ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২৬ /০২ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
মেট্রোরেলে প্রথম যাত্রা করার পূর্বের মুহূর্তের অনুভূতির কথাগুলো জেনে বেশ ভালো লেগেছে আমার। আর প্রথমবার মেট্রোরেলে ওঠার অনুভূতিটা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত আনন্দদায়ক এবং উত্তেজনা করা হয়। এখন মেট্রোরেলে উঠে পরবর্তীতে কি হলো সেটা জানার জন্য আপনার পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম।
জী ভাইয়া আগামীকালই দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করবো,ইনশাআল্লাহ।।
ঠিক বলেছেন ভাই ভিতরে জায়গা গুলো সত্যি অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এছাড়াও আপনি যেভাবে ছবি তুলে এই পোস্টটা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন তাতেই বুঝতে পারছি যে আমরা জায়গাটা সত্যি অনেক পরিষ্কার। আমি আজও কখনো মেট্রোরেল এ উঠি নি তবে ইচ্ছা রয়েছে আপনার মত একদিন ভ্রমণ করব ধন্যবাদ আপনার মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া পরিবেশটা খুবই সুন্দর। আপনার অভিজ্ঞতা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।
মেট্রোরেলে প্রথম ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। মেট্রো ভ্রমণের টিকেট ক্রয় পর্যন্ত এর আদি-অন্ত খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। ভালো লেগেছে পোস্টটি। আমার এখন যাওয়া আসা মেট্রোতে। আমার যাওয়ার জায়গা গুলো মেট্রো লাইনের আশেপাশে হওয়ায় খুব সুবিধা হয়েছে আপনার পোস্টের।ছবি গুলো ঝক ঝকে সুন্দর হয়েছে। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনি যদি প্রতিদিন মেট্রোতে যাওয়া আসা করেন,তাহলে আপনি মনে হয় সব থেকে লাকি মানুষ। ধন্যবাদ।
ভাই আপনার পোস্ট দেখে বুঝতে পারছি যে আপনি এই মেট্রোরেল ভ্রমণ করে খুব দারুণ একটা সময় অতিবাহিত করেছেন। ভাইয়া আমিও এই ঢাকার মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেছি। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আজকে আমার আবার সে ভ্রমণ করার কথা মনে পড়ছে। আমার অনুভূতিটি দারুন ছিল এবং বেশ মজা পেয়েছিলাম মেট্রোরেলে ভ্রমণ করে। আপনিও দেখছি মেট্রোরেলে তাহলে ভ্রমণ করেছেন এবং সেখান থেকে বেশ কয়েকটি সুন্দর ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।।
জী ভাইয়া মেট্রোরেলে ভ্রমন করতে দারুন লাগে। ধন্যবাদ।
অবশেষে আপনি ও মেট্রোরেল ভ্রমণ করলেন ভাইয়া। দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লাগলো। বেশ অনেক পরিকল্পনা করার পর আপনার এই মেট্রোরেল ভ্রমণ করার ভাগ্য হয়। আপনার তোলা ফটোগ্রাফী গুলো দেখে বুঝতে পারলাম মেট্রোরেলে এখনো অনেক ভীড়। আসলে আমার কাছে মেট্রোরেল এর টিকেট কাটার বিষয় টি অনেক বেশি ভালো লাগে।
জী ভাইয়া অবশেষে আমিও মেট্রোরেলে পা রাখলাম। ধন্যবাদ।
মেট্রো রেলের কথা অনেক শুনেছি। গত বছর আমাদের দেশে এটা চালু হয়েছে। আপনি প্রথম অনুভূতি আমাদের মাঝে প্রকাশ করেছেন দেখে ভালো লাগলো। কোন কিছু প্রথম পাওয়ার অনুভূতিটা অন্যরকম থাকে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া।
জী ভাইয়া এখন মেট্রোরেল প্রায় মানুষ ব্যবহার করছে। সময় বাঁচে অনেক। ধন্যবাদ।
দুর্নীতি শুধু বাংলাদেশে না, সব দেশেই কম বেশি রয়েছে ভাই । যাইহোক, আপনার প্রথম মেট্রোরেল যাত্রার অভিজ্ঞতা শুনে বেশ ভালো লাগলো । আসলে মেট্রোরেলের সিস্টেম প্রায় সব দেশেই এক। আমাদের এখানেও ওই একই সিস্টেম, হয় কার্ডে টাকা ঢুকাতে হয়, না হলে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হয়। আপনাদের ওখানে ভাড়াও দেখছি খুব একটা বেশি না, মোটামুটি আমাদের এখানকার মতই।