জন্মভূমির টানে বাড়ি ফেরা।।
বাংলা ভাষা ছড়িয়ে দাও সবার মাঝে-
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে জন্মভূমির টানে বাড়ি ফেরার অনুভূতি শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ।
আপনারা সবাই জানেন যে আগামীকাল ১৭ই জুন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা পালন করা হবে। পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে লক্ষ লক্ষ মানুষ রাজধানী শহর ঢাকা ছেড়েছে। ঈদের সময় বাড়িতে যেতে যানজট সহ পরিবহন সংকট দেখা দেয়। যার ফলে গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তারপরও মানুষ পরিবারের সাথে ঈদ করতে নারীর টানে গ্রামে ফিরে যাই।
পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে আমাদের অফিস গতকাল দুপুর ১:০০ টার সময় ৯ দিন ছুটি দিয়েছে। যখন ট্রেনের অগ্রিম টিকেট ছেড়েছিল তখন আমি শনিবারের টিকেট পাইনি। রবিবারে যখন ট্রাই করলাম অনেক কষ্টের পরে একটি টিকেট সংগ্রহ করতে পেরেছি। যার ফলে আমাকে রবিবারে বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিতে হলো। আমার ট্রেন ছিল সকাল ৭ টা ৪৫ মিনিটে। যার ফলে আমি সকাল ছয়টার সময় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে হালকা নাস্তা করে বেরিয়ে পড়ি।
বাসা থেকে বের হয়েই পরিবহন সংকটে পড়ি। আর অটো এবং সিএনজি ওয়ালা মামা ঈদ উপলক্ষে ডাবল ভাড়া দাবি করে। যাত্রীরা সবাই নিরুপায় ছিল। যদিও রাস্তায় তেমন মানুষের সমাগম ছিল না। তারপরও অনেক কষ্ট করে ডাবল ভাড়া দিয়ে সকাল সাতটা ১০ মিনিটে কমলাপুরে পৌঁছায়।
আমি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে দেখি লোকাল ট্রেনের টিকিটের জন্য মানুষ অনেক বড় সিরিয়াল ধরে আছে। আমার অগ্রিম টিকেট থাকার কারণে সিরিয়াল ধরার প্রয়োজন হয়নি। আমি বাহিরে জাস্ট কয়েকটি ফটোগ্রাফি নিয়ে স্টেশনের ভিতরে পৌঁছে গেলাম। কোন মানুষ যেন টিকেট ছাড়া স্টেশনের ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বাঁশ দিয়ে বেরিগেট দেওয়া হয়েছে। তবে গতকাল মানুষের এমন চাপ ছিল, বাঁশের বেরিগেড ও মানুষকে আটকে রাখতে পারেনি। মানুষের চাপের কারণে বাঁশের বেরিগেট ভেঙ্গে গেছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে প্রত্যেক ঈদের সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য পুলিশ , বিজিবি মোতায়ন করা হয়। গতকাল মানুষের চাপ পুলিশ বিজিবি ও কন্ট্রোল করতে পারে নাই।
বন্ধুরা আপনারা উপরের ফটোগ্রাফিতে লক্ষ্য করলে সেই বাসের বেরিকেট গুলো দেখতে পারবেন। এখানে সিরিয়াল ধরে সবার টিকেট চেক করে তারপর স্টেশন এর ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। যাদের কাছে ক্রিকেট নেই ভ্রাম্যমান টিকেট মাস্টার দাঁড়িয়ে থেকে সবাইকে স্ট্যান্ডিং টিকেট দিয়ে মূল স্টেশনের ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে। আমার কাছে টিকেট থাকার কারণে সরাসরি স্টেশনের ভিতর পৌঁছে গেলাম। আমি স্টেশনের ভিতরে পৌঁছে দেখি তখনো আমাদের মহানগর প্রভাতী ট্রেন আসে নাই। তারপর আমি স্টেশনের মধ্যে কিছুক্ষণ বসলাম। ৭ঃ১৫ মিনিটে আমাদের ট্রেন ৫ নাম্বার লাইনে এসে দাঁড়ালো। তারপর আমরা ধীরে ধীরে সিট নাম্বার অনুযায়ী যার যার বগিতে বসে পড়লাম।
আমাদের ট্রেন ছাড়ার সময় হলো ৭ টা ৪৫ মিনিট। যেহেতু আমি প্রায় আধা ঘন্টা আগে স্টেশনে পৌঁছে গেছি, তাই কিছুক্ষণ বসে রেস্ট নিলাম। আমরা বসে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক স্টেশনে এসে বিভিন্ন যাত্রীদের অনুভূতি ও ট্রেনের সিডিউল ঠিক আছে কিনা সেগুলো জানার চেষ্টা করে। এটিএন বাংলা, চ্যানেল ২৪ ও এখন টিভির সাংবাদিক আমার অনুভূতি জানতে চেয়েছে। আমি যথা সম্ভব গুছিয়ে আমার অনুভূতি প্রকাশ করেছি।হয়তো আজকের সংবাদের আমার অনুভূতি প্রকাশ করা হতে পারে। যাইহোক ৭ঃ৪০ মিনিটে আমি ট্রেনের ভিতরে আমার নির্ধারিত ছিটে বসে পড়লাম। ৭: ৪৮ মিনিটে আমাদের ট্রেন ছেড়ে দিলো। তিন মিনিট লেট করে ট্রেন ছাড়লো।
কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর স্টেশনে আসতে তিন চার জায়গার মধ্যে ট্রেনটি বিভিন্ন কারনে থামিয়ে ছিল। তবে স্থায়িত্বকাল ২-৩ মিনিটের বেশি ছিল না। প্রায় আধা ঘন্টা পরে আমরা বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছালাম। কমলাপুর থেকে ট্রেনের মধ্যে যাত্রী কম থাকলেও বিমানবন্দর স্টেশন আসার পরে প্রচুর যাত্রীর চাপ বেড়ে গেলো। যেহেতু আগামীকাল ঈদ উল আযহা তাই সবাই কষ্ট করে হলেও আপনে সাথে ঈদ করতে যাওয়ার চেষ্টা করছে। অবশেষে বিমানবন্দর থেকে আমাদের ট্রেনটি খুব স্পিডে চলতে লাগলো। অনেক শহর বন্দর নদী নালা গ্রাম পেরিয়ে আমাদের ট্রেন চলতে লাগলো। বিমানবন্দরের পরে সোজা ভৈরব স্টেশনে এসে আমাদের ট্রেনটি থামলো। মাঝখানে আর কোন যাত্রা বিরতি দেইনি। দশটা দশ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশন আমি অবতরণ করলাম। সেখান থেকে অটো নিয়ে কাউতলী মোড়ে গেলাম। সেখান থেকে কিছু ফল ফ্রুট কিনে লেবু শশা এগুলো কিনে সিএনজি দিয়ে বাসার দিকে রওয়ানা দিলাম। বাড়িতে আসতে আসতে প্রায় বারোটা বেজে গেলো। সৃষ্টিকর্তার কাছে লাখ লাখ কোটি কোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করি, তিনি সুস্থভাবে আমাদেরকে নিজ জন্মভূমিতে নিয়ে এসেছেন।
বন্ধুরা আজকে এখান থেকেই বিদায়ের নিলাম। আবার আগামীকাল নতুন কোন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সাথে হাজির হবো, ইনশাআল্লাহ। সবাই সুন্দরভাবে নিজের আপন জনদের সাথে ঈদ পালন করুন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | জন্মভূমির টানে বাড়ি ফেরা।। |
স্থান | ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম , ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ১৬/০৬ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
আপনার বাসা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এটা আমার জানা ছিল না। আজকে আপনার এই পোস্ট পড়তে গিয়ে জানতে পারলাম। আসলে ঈদ উপলক্ষে সবাই নিজের বাড়িতে ছুটে যায়। সবাই চেষ্টা করে নিজের আপন জনদের সাথে ঈদ উদযাপন করতে। দোয়া করি শুভ হোক আপনাদের এই যাত্রা এবং ঈদ উদযাপন।
জী আপু শত কষ্ট করেও ঈদের সময় আপনজনদের সাথে ঈদ করতে মানুষ বাড়ী ফেরে। ধন্যবাদ।
ঈদ উপলক্ষে বাড়িতে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। অফিস থেকে নয় দিনের ছুটি পেয়েছেন। তাহলে তো বেশ লম্বা ছুটি পেলেন। ঈদের আগে সবাই চেষ্টা করে কষ্ট করে হলেও গ্রামে গিয়ে সবার সাথে একসাথে ঈদ করতে। আপনার ঈদের দিন ভালো কাটুক এই কামনাই করি। শুভকামনা রইল।
জী আপু ভেবেছিলাম সাত দিন ছুটি দিবে, কিন্তু তিনদিন ছুটি বাড়িয়ে দিলো।আশা করি ছুটিটা অনেক ভালো কাটবে। ধন্যবাদ।
যদিও ঈদের এই সময়ে সবাইকে অনেক কষ্ট করে বাড়িতে শুতে হয় তারপরও বাড়ি ফেরার মধ্যে অন্য রকমের একটা ভালো লাগা কাজ করে। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি ট্রেনে যারা বাড়ি ফেরার চেষ্টা করে তাদের একটু বেশি পরিমাণে কষ্ট করতে হয়। আপনি ভালোভাবে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন এটা জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো।
জি ভাই কষ্ট হলেও বাড়িতে আসতে পারলে শান্তি লাগে। ধন্যবাদ।
ঈদ উপলক্ষে সবাই কম বেশি আপনজনের টানে বাড়ি ফিরছে। আর এই মুহূর্তে রাস্তায় বেশ ট্রাফিক জ্যাম। তবুও ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য আপনজনের টানে নিজের বাড়ির দিকে ছুটে চলেছে সবাই। ঠিক তেমনি আপনিও ছুটে চলেছেন আর সেই মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন কিছুটা। ভালো লাগলো আপনার এই মুহূর্তটা কিছু জানতে পেরে।
বৃহস্পতি শুক্রবার ও শনিবার তিন দিন প্রচুর ভিড় হয়েছিল। তবে রবিবারে তেমন ভিড় হয়নি। ধন্যবাদ।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন জন্মভূমির টানে ঈদের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করতে বাড়িতে ফেরা। আসলে প্রত্যেকটা মানুষ অনেক কষ্ট করে হলেও ঈদের ছুটিতে শুধুমাত্র পরিবারের সাথে সময় কাটানোর জন্য বাড়িতে আসতেছে। কমলাপুর রেলস্টেশনে অনেক ভিড় ভাই দেখলাম। আশা করি বাড়িতে আপনি ঠিক ভাবে পৌঁছে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
জি ভাই ঈদের সময় সবাই একসাথে বাড়ি ফিরে, সেজন্য সব জায়গায় ভিড় হয়। ধন্যবাদ।
ট্রেনের টিকিটের জন্য এত ভিড় বাবা!! আমি ভালো ভালো আগে চলে এসেছি তা না হলে আমিও হয়তোবা এমন একটি সিচুয়েশনে পড়তাম যাই হোক বাড়ি ফেরার অনুভূতিটা অন্যরকম হয়ে থাকে সব সময় কারণ যারা বাইরে থাকে তারা আমার এই কথার মানেটা হয়তোবা ভালোভাবে বুঝতে পারবে। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে ভালো করে ঈদ পালন করুন এটাই কামনা করি ঈদ মোবারক।
জি ভাই দুই এক দিন আগে চলে গেলে তাহলে আর এত চাপাচাপি করতে হয় না। ধন্যবাদ।