করোনার সময়ের হৃদয় বিধায়ক একটি ঘটনা।। 10% beneficary for @shyfox ❤️
আসসালামুআলাইকু/ নমস্কার/ আদাব।
আজকে আপনাদের সাথে একটি হৃদয় বিধায়ক ঘটনা শেয়ার করবো।
জীবনের প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্ত আপনাকে আমাকে শিক্ষা দেয়। আপনি যেখানে যাবেন, যার সাথে মিশবেন, তার থেকেই শিক্ষা নিতে পারবেন। বাস্তব জীবনে আপনি যে শিক্ষা গুলো অর্জন করতে পারবেন সেই শিক্ষা গুলো বই পুস্তক পড়ে অর্জন করতে পারবেন না। মার্কেটে গেলে,বাজারে গেলে,রেস্টুরেন্টে গেলে,গাড়িতে আসা যাওয়ার পথে আপনি আমি কত শিক্ষা অর্জন করি তার কোন হিসাব নেই। সব শিক্ষা বই পুস্তুকে থাকে না। কিছু শিক্ষা মানুষের আচার আচরন কথা বার্তা থেকে নিতে হয়।
চিরন্তন সত্য কথা হলো পৃথিবীতে আপনি একা। আপনি বিশ্বাস করেন আর না করেন এটাই সত্য। আপনার সুখের মুহূর্ত গুলো সবাই শেয়ার করে উপভোগ করবে। কিন্তুু আপনার ব্যথা,আপনার দুঃখ আপনাকে একাই বহন করতে হবে। আপনার চারপাশে যারা আছে তারা সবাই স্বার্থবাদী, সবাই আপনার পর। মা-বাবা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, পুত্র-কন্যা,শশুর-শাশুড়ি, শালা-সম্বন্ধী, বন্ধু-বান্দব সবাই আপনার পর। তারা সবাই স্বার্থের জন্য আপনার পাশে থাকে। কথা গুলো আপনার কাছে অনেক খারাপ লাগতে পারে, আপনার হৃদয়ে কাঁটার মত আঘাত করতে পারে তবে এটাই সত্য। দিন রাত যেমন সত্য, আকাশ বাতাস যেমন সত্য, আপনি আমি যেমন সত্য উপরের কথা গুলোও সত্য।
এখন আপনারা বলতে পারেন আমি এই কথা গুলো আবেগ থেকে বানিয়ে বানিয়ে বলতেছি। আমি বলবো বানিয়ে বানিয়ে বলতেছি না। নিজের চোখে দেখে অভিজ্ঞতা থেকে বলতেছি। আমার উপরের কথা গুলোর প্রমান পাবেন গত দুই বছর আগে করোনা কালীন সময়ের দিকে তাকালে। করোনার জন্য আমরা কষ্ট করেছি আর যায় করেছি। করোনা আমাদের একটি শিক্ষা দিয়ে গেছে। আর সেটা হলো পৃথিবীতে আপন বলতে নিজের শরীর ছাড়া আর কিছু নেই। আপনার শরীর আপনার সাথে কখনো বেইমানি করবে না। এছাড়া আপনার আশে পাশে হৃদয়ে যারা আছে সবাই আপনার সাথে বেইমানি করতে পারে।
করোনার সময় আমার দেখা সব থেকে বড় হৃদয় বিধায়ক একটি ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করতেছি। যেটা শুনলে হয়তো আপনার গাঁয়ের লোম দাঁড়িয়ে যাবে। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার পূর্ব সুহিলপুর গ্রামে। করোনায় অলস সময় পার করতে সহিলপুর খালার বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি শুনেছি।
লোকটির নাম হলো আব্দুল কাইয়ূম। সবাই কাইয়ূম চাচা বলে ডাকে। কাইয়ূম চাচার বয়স ৬০ থেকে ৬৫টি বছর হবে। কাইয়ূম চাচা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এর সুহিলপুর শাখায় সিকিউরিটির চাকরি করতেন। আপনারা সবাই হয়তো জানেন কঠিন করোনার সময়ও বাংলাদেশের ব্যাংক গুলো চালু ছিল। যেখানে সবাই খেয়ে না খেয়ে ঘর বন্দি থেকেছে সেখানে ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারিরা প্রতিদিন ব্যাংকে আসা যাওয়া ও গ্রাহকদেরকে সেবা দিয়ে গেছেন। আর ব্যাংক বন্ধ থাকলেও ব্যাংকের সিকিউরিটিরা ব্যাংকের নিরাপত্তার জন্য পাহারা দিয়ে গেছেন।
কাইয়ূম চাচা একজন অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মচারি ছিলেন। অবসর কালীন সব টাকা উত্তলন করে খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে তিনি একটি বেল্ডিং করেছিলেন। আর পুরাতন ঘরটা আগের জাগায় রেখেছেন। ২০২০ সালের শেষের দিকে কাইয়ূম চাচা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। মাসটা ঠিক মনে পড়ছে না তবে খুব সম্ভবত আগষ্ট মাস হবে। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে প্রমান হলো কাইয়ূম চাচা করোনা পজেটিভ। করোনা পজেটিভ এ কথা শুনার সাথে সাথে কাইয়ূম চাচার জন্য তার সারা জীবনের উপার্জন দিয়ে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে তৈরী করা ঘরটির গেইটে তালা লেগে গেল। অসুস্থ অবস্থায় তিনির স্থান হলো পুরাতন ভাঙ্গা ঘরটিতে। তার শিক্ষিত ছেলে মেয়ে ও বউ তাকে পুরাতন ঘরটি হতে বের হতেও দিতো না। ঘরের জানালা দিয়ে খাবার দেওয়া হতো। ঐপুরাতন ঘরটিতেই তার খাওয়া দাওয়া ও পস্রাব পায়খানা করতে হয়েছিলো।
করোনা পজেটিভ হওয়ার সপ্তম দিনের মাথায় দিনের বেলা কাইয়ূম চাচার পেটে ব্যাথা উঠে। তিনি চিৎকার করে তার ফেমিলির সদস্যদের সেই কথা বলেছিল। কিন্তুু তারা ভেবেছিল কাইয়ূম চাচা বাহিরে বের হওয়ার জন্য পেটের ব্যাথার বায়না ধরেছে। রাতের বেলা পেটের ব্যাথা চরম আকার ধারুন করে। রাতে খুব জোরে জোরে চিৎকার করেছিল। কিন্তুু কাইয়ূম চাচার চিৎকার সাজানো গুছানো ঘরটিতে পৌছে নাই। শেষ রাতের দিকে কাইয়ূম চাচা চিৎকার করতে করতে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে।
কার জন্য সারাজীবন কষ্ট করলো। কার জন্য ব্যাংকে সিকিউরিটির চাকরি করলো। কার জন্য সাজিয়ে গুছিয়ে ঘর তৈরী করলো। দুনিয়াতে আপন কেউ নেই এটাই সত্য। আপনাকে মানতেই হবে। ধন্যবাদ।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে মানুষ কেন যে এত অমানবিক হয় সেটাই বুঝতে পারি না। কাইয়ুম চাচার ঘটনাটা আসলেই অনেক বেদনাদায়ক ছিল। হয়তো সে যখন পেটের ব্যথার কথা বলে চিৎকার করছিল তার পরিবারের লোকজন তার পাশে থাকলে সে বেঁচে যেত।
জী ভাইয়া ঘটনাটা শুনার পরে তাদের মানুষ মনে হয় নি। নিজের বাবাকে কিভাবে কষ্ট দিয়ে মারলো। কিছু বলার নাই। ধন্যবাদ ভাইয়া্
কাইয়ূম চাচার এই ঘটনাটি পড়ে সত্যিই আমার চোখে জল চলে এসেছে। যাদের জন্য তিনি এতসব কিছু করেছেন তারাই শেষ পর্যন্ত ওনার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ালেন। একটা মানুষকে এভাবে বন্দি করে রেখে তার চিৎকার শুনেও যারা পাশে আসেনি তারা কখনো মানবিক মানুষ হতেই পারে না। বলতে হচ্ছে তারা একেবারেই অমানুষ। মহান আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে অবশ্যই তাদের পাপের শাস্তি দিবেন। অনেক বড় হৃদয় বিধায়ক একটি ঘটনা ছিল। ওনার জন্য খুবই খারাপ লাগতেছে। আপনার উপরের কথাগুলো ঠিকই বলেছেন আমাদেরকে এগুলো বিশ্বাস করতে হবে।
জী আপু ঘটনাটি শুনে আমার চোখে জল এসে গেছিলো। ধন্যবাদ আপু।
খুব খারাপ লাগলো পড়ে। কাইয়ুম চাচার জীবনে এমন ঘটনা সত্যি ই অমানবিক।আপনি ঠিক বলেছেন বাস্তব শিক্ষা আর পুঁথিগত শিক্ষা এক নয়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
জী আপু কাইয়ূম চাচার জন্য অনেক খারাপ লেগেছে। সারাটা জীবন কোথায় নষ্ট করলো। ধন্যবাদ আপু।