নতুন মোবাইল কেনার অনূভুতি।।

হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি মোবাইল কেনার অনুভূতি শেয়ার করবো। আশা করি সম্পূর্ণ ব্লগটা মনযোগ সহকারে পড়লে সব কিছু বুঝতে পারবেন।

আমি আমার নিজের ইনকামের টাকা দিয়ে প্রথম এনড্রয়েড ফোন কিনেছিলাম ২০১৬ সালে। সেটি ছিল সিম্পনি ব্রান্ডের মোবাইল। তখন সেই মোবাইলটি কিনেছিলাম ১১ হাজার টাকা দিয়ে। সেই মোবাইলটি বেশ কয়েক বছর ব্যবহার করেছিলাম। ২০১৬ থেকে ২০২২ প্রায় ছয় বছর একটি ফোনই ব্যবহার করেছি। শেষ পর্যন্ত সেটা ডাটা অন করলেই হ্যাং করতো। আর ২০২২ সালেই আমি প্রথম আমাার বাংলা ব্লগের সন্ধান পায়। এই কমিউনিটিতে জয়েন করে সেই মোবাইলটি দিয়েই কাজ চালিয়ে যেতে লাগলাম। প্রায় সময় বৃহস্পতিবারে হ্যাংআউটের সময় বাহিরে থাকতাম। তখন সেই মোবাইল দিয়ে হ্যাংআউট শুনার চেষ্টা করতাম। কিন্তুু শুভ ভাই হ্যাং আউট শুরু করে হাফিজুল্লাহ ভাই কথা শেষ করতে করতে আমার মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে যেত। কি মুশকিলের মধ্যে পড়তাম তখন। চিন্তা করলাম মোবাইলটা পরিবর্তন করা দরকার। এটা দিয়ে আর চলছে না।

আমার অফিসের এক কলিগের মাধ্যমে জানতে পারলাম ঢাকার খিলগাঁও টালতলা এলাকার মসজিদ মার্কেটে পুরাতন মোবাইল ক্রয় বিক্রয় করা হয়। অর্থাৎ কেউ যদি ইচ্ছা করে তার ব্যবহৃত কোন মোবাইল দিয়ে আবার নতুন বা ব্যবহৃত মোবাইল নিতে পারে। তার নিজের মোবাইল দিয়ে ভালো দামি মোবাইল নিতে চাইলে কিছু টাকা দিতে হবে। আর তার মোবাইল থেকে কম দামি মোবাইল নিলে কিছু টাকা পকেটে প্রবেশ করবে। এক কথায় বলা যায় মোবাইল এক্সচেঞ্জ করা। আমি সিম্পনি মোবাইল দিয়ে এক্সচেঞ্জ করতে গেলে মার খেতে হবে,হে হে হে। সে জন্য নিজেই কিছু টাকা ম্যানেজ করলাম। কলিগকে জিঙ্গেস করলাম কত টাকার মধ্যে মোটামুটি কাজ করার মত একটি মোবাইল কিনতে পারবো। সে তখন বললো দশ হাজার টাকা হলেই মোটামুটি ভালে মানের একটি মোবাইল পাওয়া যেতে পারে। কলিগের এক দুর সর্ম্পকের মামার দোকান আছে সেখানে। সেই মামাকে ফোন দিয়ে জানালো দশ হাজার টাকার মধ্যে কোন ভাল মোবাইল হাতে পড়লে যেন জানায়।

সেই মামা এক সাপ্তাহ পড়ে ফোন দিয়ে জানালো রেডমি নোট-৮ একটি মোবাইল হাতে আছে। ১১ হাজার টাকা দাম পড়বে। যদি নিতে চাই,তারাতারি যেন যায়। নিজের কাছে পাঁচ হাজার টাকা ছিল। আর ৬ হাজার টাকা ধার করে মোবাইল আনতে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি মোবাইলের অভাব নেই। শুধু আমার টাকার অভাব। বাজেটের বাহিরে যে মোবাইল গুলো দেখলাম সে গুলো খুবই সুন্দর। কারন যেটা আমার আয়ত্বের বাহিরে সেটা সুন্দরই লাগবে,সেটা স্বাভাবিক। একটু ঘোরাঘুরি করে রেডমি নোট-৮ মোবাইলটি নিয়ে চলে আসলাম। মোবাইলটি খুবই ভাল পড়েছে। এখনো মোবাইলটি চলছে তবে সেটা অন্যের হাতে। আমার হাতে থাকলে নতুন মোবাইল নিতাম না। এখন এনড্রয়েড ফোন ছাড়া কমিউনিটিতে কাজ করতে খুবই সমস্যা হচ্ছিলো। অবশেষে চিন্তা করলাম একটি নতুন মোবাইল নেওয়া খুবই দরকার।

গতমাসের ১২ তারিখে অফিস থেকে চার মাসের ইনক্রিমেন্টের এগারো হাজার টাকা হাতে পেলাম। আর সেই সাথে কিছুদিন আগে কিছু স্টিম উইথড্র দেওয়ার টাকা যোগ করে সর্বমোট সতের হাজার টাকা নিয়ে একটি মোবাইল কিনতে গেলাম সেই খিলগাঁও তালতলা এলাকায় মসজিদ মার্কেটে। চিন্তা ছিল ভাল কোন মোবাইল পেলে সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইলই নিয়ে আসবো। চারটি মোবাইল বাছাই করেছিলাম। প্রথম চয়েজ ছিল রেডমি নোট-১২,তারপর পকো-X5,রিয়েলমি ৫৫ আর টেকনো স্পার্ট ১০ প্রো। কিন্তু সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইলের যে দাম চাই তার সাথে এক থেকে দেড় হাজার টাকা যোগ করলে নতুন মোবাইলই কেনা যায়। কিছুক্ষন ঘোরাঘুরি করে একটি দোকানে যাছাই বাছাই করে সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনার চিন্তা বাদ দিয়ে দিলাম।

তারপর সেই মাকের্টেই কয়েকটি ব্র্যান্ডের শোরুম রয়েছে। সে গুলোতে গিয়ে দেখতে লাগলাম। রেডমি নোট-১২ সাড়ে একুশ হাজার টাকা। বাজেটের বাহিরে। পকো ২৩ হাজার টাকা। বাজেটের অনেক বাহিরে। তারপর রিয়েলমি ৫৫ সাড়ে ১৯ হাজার টাকা। বাজেটের বাহিরে। টেকনো মোবাইল কিনতে গিয়ে কেমন যেন লাগলো। দেখতে সুন্দর হলেও মন চাইতেছিল না। তাই বাজেটের মধ্যে রিয়েলমি ৫৩ পেলাম। এটা ছাড়া আর কোন মোবাইল আমার বাজেটের ভিতরে পড়ে না। অবশেষে এটি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।

রিয়েলমি ৫৩ এর মধ্যে দুইটি কালার ছিল। আমার ব্লাক কালারটি পছন্দ হয়েছে। মোবাইলটি হাতে নিয়ে কয়েকটি ফটোগ্রাফি করলাম। ক্যামেরা মোটামুটি ভালো। বর্তমানে রিয়েলমি ৫৩ ও ৫৫ মার্কেটে ভালোই চলছে। এই দুটি মোবাইলের ক্রেতা বেশি। ৫৩ আটারো হাজার টাকা ছিল। এক হাজার টাকা ডিস্কাউন্টের একটি অফাল ছিল ৩০ তারিখ পর্যন্ত। ম্যানাজার বললো আপনি নিলে আমি ৩০ তারিখ লিখেই বিল করবো। কিন্তুু এক তারিখ পার হয়ে গেলে সেটা আর দিতে পারবো না। অবশেষে সেটাই নিলাম।

মোবাইলটি দেখতেও ভালোই লাগছিলো। আমার কাছেও পছন্দ হয়েছে। এখন যেই পোষ্টি লিখতেছি সেটা নতুন মোবাইল দিয়ে। ব্যবহার করে ভালোই লাগছে। চার্জও মোটামুটি ভালো থাকে। অফিসের কলিগরা সবাই পছন্দ করেছে। আশা করি আপনারাও পছন্দ করবেন। কেউ ব্যবহার করে থাকলে অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন। সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।