বাসার পাশে ওয়াজ মাহফিলে এক সন্ধা ।।

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে বাসার পাশে ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করবো। আশা করি আপনারা সবাই মনযোগ সহকারে ব্লগটি পড়বেন।

photo_2_2024-01-20_12-09-08.jpg

প্রত্যেক ধর্মের মধ্যেই তাদের অনুসারীদের ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে। খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের গীর্জার মধ্যে ধর্ম শিক্ষা ও আলোচনা করা হয়। হিন্দুধর্মে মন্দিরে ধর্মীয় শিক্ষা ও আলোচনা করা হয়। আর মুসলিমরা সাধারনত মসজিদ মাদ্রাসায় ধর্মীয় শিক্ষা পেয়ে থাকে। এছাড়াও প্রত্যেক ধর্মীয় অনুসারীরা নিজরা ব্যাক্তিগত ভাবে বা এলাকার মানুষ মিলে ধর্মীয় শিক্ষার আয়োজন করে থাকে। আমাদের মুসলিম ধর্মেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান,সংস্থার উদ্যোগে বা পাড়া মহল্লার যুবকদের উদ্যোগে বিভিন্ন সময় ওয়াজ মাহফিল,কুরআন তাফসীর,ইসলামী সম্মেলন,জিকির মুনাজাতের আয়োজন করা হয়। আমাদের পূর্বপুরুষদের কথা স্বরন করে তাদের জন্য দোয়া মাগফিরাত কামনা করা হয়। হালাল, হারাম, সুদ,ঘুষ, অন্যায়, অবিচার,জোর জুলুম সহ বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামী বক্তারা আলোচনা করে থাকে। কিভাবে সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করা যাবে,কিভাবে পরকালে শান্তি পাওয়া যাবে এসব বিষয় সহ ইসলামী হুকুম আহকাম গুলো আলোচনা করা হয়।

আমাদের বাসার পাশে লামাপড়া দরগাহ বাড়ি জামে মসজিদের উদ্যোগে তিন দিন ব্যাপী ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। মসজিদের পাশে ঈদগাহ মাঠে মানুষ বসে ওয়াজ মাহফিল শুনার ব্যবস্থা করেছে। সেই ওয়াজ মাহফিলে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে আগত ইসলামী বক্তাগন আলোচনা পেশ করেন। গত বৃহস্পতিবারে মাহফিলের প্রথম দিন আমি সন্ধার ছয়টার পরে অফিস থেকে বের হয়ে সেই মাহফিলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি উক্ত মসজিদের খতীব সাহেব হুজুর বয়ান পেশ করতেছেন। সন্ধার পরে হওয়ার কারনে মাঠে তেমন মানুষ নেই। অল্প কিছু মানুষ বসে তিনির ওয়াজ শুনতেছেন। ধীরে ধীরে মানুষের আগমন বাড়তে থাকে। এশার নামাজ তথা সাড়ে সাতটার পরে মাঠ মানুষে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আমি গত বছরও এখানে বসে ওয়াজ শুনেছিলাম।

photo_6_2024-01-20_12-09-08.jpg

ধর্মীয় বা যে কোন অনুষ্ঠানে যেখানেই মানুষের জমায়েত হয় সেখানেই ছোট খাটো ফুড ব্যবসায়ীদের আগমন ঘটে। আর মানুষ ওয়াজ শুনতে মাঠে যাক বা না যাক বিভিন্ন খাবারের দোকানে ঠিকই ভিড় জমায়। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে জিলাপি,মিষ্টি,নিমকি,ডালের বড়া,চিংড়ি মাছ ফ্রাই,আচাঁর,ছোলা বোট ভাজা,ঝাল মুড়ি,বিভিন্ন ধরনের পিঠা,নুডুলস,বার্গার পটেটো ফ্রাই সহ আরো বিভিন্ন ধরনের খাবার। আমি কিছুক্ষন ঘোরাঘুরি করে ২০ টাকার ডালের বড়া খেলাম। যদিও এসব খোলা জায়গার খাবার স্বাস্থসম্মত না,তারপরও এগুলো দেখলে লোভ সামলানো কঠিন। আর এখন প্রচন্ড শীত। এই শীতে ঝাল তৈলাক্ত খাবার খেতে ভালোই লাগে। নিজেকে আর কত কন্ট্রোল রাখা যায়।

photo_7_2024-01-20_12-09-08.jpg

photo_1_2024-01-20_12-09-08.jpg

নিচে একটি ফটোগ্রাফিতে দেখতে পাচ্ছেন এক হকার বিভিন্ন মাছের আকৃতির বেলুন বিক্রয় করছে। এই জিনিষ গুলো দেখতে খুবই সুন্দর। রাবার দিয়ে তৈরী করে এগুলোর ভিতরে হাওয়া দিলে ফুলে যায়। দেখতে ‍কিছুটা আমাদের জাতীয় মাছ ইলিশের মতই বুঝা যায়। বাচ্ছরা এগুলো দেখলে কেনার জন্য পাগল হয়ে যায়। হকার ভাই এগুলো প্রত্যেকটা একশো থেকে দেড়শো টাকায় বিক্রয় করে। এক সাথে বিশ থেকে ত্রিশটি মাছের বেলুন নিয়ে হাটে। হাওয়ার উপরে থাকে বিদায় বিক্রেতার বহন করতে তেমন কোন কষ্ট হয় না।

photo_9_2024-01-20_12-09-08.jpg

এছাড়াও বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে ছোটখাটো কসমেটিক্সের পন্য বিক্রয় করে থাকে। খাবার দোকানের পাশা পাশি কসমেটিক্সের দোকানেও মানুষের ভিড় দেখা যায়। এসব দোকানের ক্রেতা হলো ছোট বাচ্ছা মেয়েরা। এছাড়াও আরো লক্ষনীয় বিষয় হলো বাচ্ছাদের খেলনা দেখা যায় প্রচুর। খাবারের পরে সব থেকে বেশি বিক্রয় হয় খেলনার জিনিষ। তার কারন হলো খেলনা গুলো দেখে বাচ্ছাদেরকে কিনে না দিলে তারা কান্না শুরু করে দেয়। এমনকি মাটিতে নেমে জড়-তুফান শুরু করে হা হা হা। যার ফলে গার্জিয়ানরা বাধ্য হয়ে কিনে দিতে হয়। তবে আমার সাথে কোন বাচ্ছা ছিল না। তাই খেলনার দোকানের দিকে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

photo_3_2024-01-20_12-09-08.jpg

photo_8_2024-01-20_12-09-08.jpg

আমি বিভিন্ন দোকানে পই পই করে ঘোরাঘুরি করে কিছু ফটোগ্রাফি করে বাসায় চলে আসলাম। ইচ্ছা ছিল রাতে দশটা দিকে আবার মাহফিলে যাবো। কিন্তুু রাতে এমন শীত পড়লো যে কম্বলের নিচ থেকে বের হতে মন চাইলো না। যার ফলে আর যাওয়া হলো না। আজকে মাহফিলের শেষ দিন। চিন্তা করেছি যাবো। তবে কতুটু যেতে পারে সেটা নির্ভর করবে শীতের উপরে। যদি আজকেও আলসেমি পেয়ে বসে তাহলে তো শেষ। তবে আজকে শক্ত ইচ্ছা পোষন করেছি। যে কোন মূল্যে মাহফিলে ওয়াজ শুনতে যাবো।

বন্ধুরা আজকে এখান থেকেই বিদায় নিতে হবে। ব্লগটি আর বাড়াবো না। আগমীকাল আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো। ততক্ষন সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার সুস্বাস্থের জন্য দোয়া করি ও দোয়া চাই।

সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলrealme-53
শিরোনামবাসার পাশে ওয়াজ মাহফিলে এক সন্ধা ।।
স্থানলামা পাড়া,নারায়নগঞ্জ, ঢাকা,বাংলাদেশ।
তারিখ১৮/০১/২০২৪
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@joniprins

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG_20190907_175336_618.JPG

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।

FNeY1coMNUL9WkErUPeUKmtGszS37qoEdLJEhh8bj8LkMZg4ZnLbSCPtsqdFwbPFaU6vxamfJRhKsAXwWBZmAwtf2KFjktn9asDsnKpUF6cbBcNYFzwcTbFb5dfFf7N5Lt5j8KUqpB64Bhu5yFCR9Qn5uG4sQo8t4PYbc7VJq37PW7258mLRbFTrsBTtbAnos9AJnU46Lv3HqXsN7s.gif

Zskj9C56UonWToSX8tGXNY8jeXKSedJ2aRhGRj6HDecqrigHRpcui9esXgmzET2bzsQeMg4RmCSqymiE62YF9FX9CSeYHcZbStqFqiFen18HjyXNbtXG.png

KNoz79cGRt58XHcjM3shjWsSEtKgRtxoVdChppmw4FvW2CQtZxVJGen4yBCeRMj2Y2h9ttHevCs9rtWncvn3FXAHo5MrkNBCbLay5LtH7wgCA27mBRvWM5GDKNQKzJk62Dz8KRvqdiFsZ66guzvyhyBYqJu6KB21dLiPDmtFGR2yvqBCtUPp3Rscm37PwtDEWYMtuKM5v3qhNod24L.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9VRjuxKSTKuNvqEk1nfiYiKKnHbcTuABq9Fu2qE77V9BjGsoqkb23ngKUAk2mCBmjpG3wz3go7Vd2YW.png

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WP87ckB6VoL3UD42BtkosJzLXYjuCC4ws3sxuihZ3nhDfd815qMJiiETpWAiutfN7bjurhaBbivMFVTYEDiv.png

download-03.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য

download-044.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP

RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png

Click Here For Join Heroism Discord Server

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7J8W9NZEbNsUTLEMkrtgqwUMHmRbAh6UqX4xVw4ivcS7bbpBquT2w2543nYruerj3XBGzuKvCPijibJe6h1hHzcjF.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 6 months ago 

শীতকালে ওয়াজ মাহফিল গুলো অনেক বেশি হয়ে থাকে।আমার ছোটবেলা থেকে দেখতাম ওয়াজ মাহফিল মানেই বেশ একটা আনন্দ উৎসবের মতো।পাশের বাড়িতে প্রতিবছর বাৎসরিক ওয়াজ মাহফিল হতো আমরা দেখতে যেতাম এবং রাতএ শুয়ে শুয়ে ওয়াজ শুনতাম কিছু কিছু কথা খুবই ভালো লাগতো।ওয়াজ মাহফিলের সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 6 months ago 

জী আপু কিছু কিছু ওয়াজ মাহফিলকে সবাই উৎসবের মতই পালন করে থাকে। ভালোই লাগে। ধন্যবাদ।

 6 months ago 

আপনার বাসার পাশে ওয়াজ মাহফিল নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। শীতের আগমনের সাথে সাথে এরকম ওয়াজ মাহফিল এখন সর্বত্র দেখা যায়। ওয়াজী হুজুরদের ব্যস্ততাও বৃদ্ধি পায়। এরকম ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল এখন রেওয়াজে পরিনত হয়েছে। মাহফিল সহ বিভিন্ন দোকানপাটের ছবি গুলোও সুন্দর হয়েছে। আপনার এলাকার ওয়াজ মাহফিল সফল হোক। লেখাটি শেয়ার দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদা আপনাকে।

 6 months ago 

জী আপু শীত কাল ছাড়া তো ওয়াজ মাহফিল করতে পারে না। কারন বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। ধন্যবাদ।

 6 months ago 

আপনার বাসার পাশে ওয়াজ মাহফিলের ব্যবস্থা করেছে দেখে ভালো লাগলো। আসলে ওয়াজ মাহফিলের ব্যবস্থা করলে ছোট বাচ্চারা বেশ খুশি হয় বিশেষ করে। কারণ ওখানে গিয়ে তারা অনেক ধরনের খাওয়া দাওয়া করতে পারে। যেমন ফুচকা চটপটি ঝালমুড়ি এসব কিছু খেতে পারে। তাছাড়া আমরা বাড়িতে বসে ওয়াজ শুনি যখন তখন নিজের মনটা অনেক শান্তিতে ভরে যায়। আপনারাও ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে অনেক ভালো সময় কাটিয়েছেন। হুজুররা যত বেশি আল্লাহর কথা বলে তা তুই শুনতে ভালো লাগে। আমাদের এদিকেও প্রায় প্রতিবছর ওয়াজ মাহফিলের ব্যবস্থা হয়। আপনার পোস্টে পড়ে আসলেই বেশ ভালো লাগলো ভাইয়া।

 6 months ago 

জী আপু মাহফিল হলে বাচ্ছারা বেশি খুশি হয়। অনেক কিছু কিনতে ও খেতে পারে। ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57610.17
ETH 3118.28
USDT 1.00
SBD 2.39