“হিসেবি বউ” নাটক রিভিউ ।। 10% beneficary for @shyfox ❤️
"আমার বাংলা ব্লগ" এর নতুন একটি পোষ্টে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।।
হ্যালো ডিয়ার ফ্রেন্স,
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আপনাদের সাথে একটি নাটক রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকটি গত কালকে রিলিজ হয়েছে। সে হিসাবে নাটকটি একেবারে নতুন। নাটকের কাহিনীটা অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে। নাটকটি দেখার আগে যেভাবে চিন্তা করেছিলাম বাস্তবে তার উল্টা হয়েছে। নাটকের শেষটা খুব সুন্দর ভাবে মিল হয়েছে। চলুন নিচে বর্ণনা করছি।
| নাম | হিসেবি বউ |
|---|---|
| পরিচালনা | মাহমুদুর রহমান হিমি |
| প্রযোজনা | শাহরিয়ার শাকিল |
| সম্পাদনা | রাকিবুল রওশন |
| অভিনয়ে | জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, সাফা কবির, আনন্দ খালেদ, পায়েল এবং আরও অনেক। |
| দৈর্ঘ্য | ৪0 মিনিট |
| মুক্তির তারিখ | ০২ এ মে ২০২৩ ইং |
| ধরন | ড্রামা |
| ভাষা | বাংলা |
| দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
- জিয়াউল ফারুক অপূর্ব
- সাফা কবির
আজকের নাটকটি অন্যান্য নাটক থেকে একটু অন্যরকম ভাবে শুরু করা হয়েছে। নাটকের শুরুতে দেখা যায় অপূর্ব একটি রেস্টুরেন্টে বসে তার বন্ধুর সাথে কথাবার্তা বলতেছে। এমন সময় অপূর্ব তার বন্ধুকে জিজ্ঞেস করে তুই কি জানিস আমাদের দেশে সবচেয়ে দামি জিনিস কি..? অপূর্বর বন্ধু রাহাত বলে ভোজ্য তেল। অপূর্ব বলল তোর শরীর অনেক মোটা কিন্তু সে অনুযায়ী তুই চিন্তা করতে পারিস না। রাহাত বলল আচ্ছা ঠিক আছে, তুই বল কি। অপূর্ব বলল বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি জিনিস হলো সংসার। রাহাত বলল কথাটা ঠিক বুঝলাম না একটু বুঝিয়ে বল। অপূর্ব বললো বাংলাদেশে একটি ছেলে বিয়ে করার পূর্বেই তার খরচ শুরু হয়ে যায়। যেমন সে যদি কাউকে পছন্দ করে বা ভালবাসে তাকে বিভিন্ন দিবসে দামি দামি গিফট করতে হয়। রেস্টুরেন্টে নিয়ে যেতে হয়। এখানে সেখানে ঘুরে অনেক টাকা ব্যয় করতে হয়। তারপর বিয়ের খরচ, সংসারের খরচ অনেক টাকা অনেক এমাউন্ট। রাহাত বলল তুই বাংলাদেশের প্রেমিকদের নিয়ে এত চিন্তা করিস কেন..? তোর তো এরেঞ্জ মেরেজ হয়েছে। তোর তো তেমন বেশি টাকা খরচ হয় নাই। তাহলে তুই এমন ভাবে কথা বলছিস কেন। অপূর্ব বললো আমি এরেঞ্জ মেরেজ করেছি ঠিক আছে । তবে লাভ মেরেজ করলে ভাল হত। তাকে বিয়ের আগে ভালভাবে জানতাম, বুঝতাম। সেও আমাকে জানতো বুঝতো, আমি কেমন। কিন্তু এখন আমি বিয়ে করে ফেঁসে গেছি। রাহাত বললো কিভাবে..? সেটা আপনারা নাটকটি না দেখলে বুঝবেন না।
নাটকের সবথেকে সুন্দর এবং রোমান্টিক দৃশ্য হলো এটি। অপূর্ব তার বউকে নিয়ে গাড়ি দিয়ে দামি কোন ফাইভ স্টার হোটেলেন নিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু অপূর্বর বউ বলল আমি কোন গাড়িতে যাব না। আমি রিকশা করে ঘুরবো। শহরটাকে দেখবো। শহরের প্রাকৃতিক বাতাস শরীরে লাগাবো। তারপর হঠাৎ করে একটি ফুচকা মামাকে দেখে অপূর্বর বউ বললো আমি এখান থেকে ফুচকা খাবো। অপূর্ব বললো না এখানে রাস্তার মধ্যে ফুচকা খাওয়ার দরকার নেই। তোমার যদি খিদে লাগে তাহলে আমি দামি কোন রেস্টুরেন্টে তোমাকে নিয়ে যাবো। অপূর্বর বউ বললো রেস্টুরেন্টের খাবার কি স্বাস্থ্যসম্মত..? সেখানেও তো পুরাতন তেল দিয়ে রান্না করা হয়। সুতরাং আমরা এখানে ফুচকা মামার ফুচকা গুলো টেস্ট করে দেখি। এখানে প্রথম এক প্লেট ফুচকা নিয়ে অপূর্ব তার বউকে খাইয়ে দিচ্ছে। আমার কাছে এই দৃশ্যটা খুবই ভালো লেগেছে।
তারপর নাটকের মধ্যে আরো একটি সুন্দর দৃশ্য দেখলাম সেটা হল অপূর্ব তার বউকে তার জন্মদিনে দামি একটি গাড়ি গিফট করে। তবে অপূর্বর বউ বলে এত টাকা দিয়ে গাড়ি কিনার কি দরকার ছিল। সে তার হাসবেন্ড থেকে দামি কোন গিফট চাই না। সে ভালবেসে একটি গোলাপ পেলেই খুশি। একটি দামি শাড়িও কিনেছে। অপূর্ব চেয়েছিল তার বউকে দামি কোন রেস্টুরেন্ট নিয়ে গিয়ে পার্টি দিবে। তবে অপূর্বর বউ পথের কিছু টুকাই ছেলে পেলে নিয়ে পার্টি করেছে। তাদের সাথে কেক কেটেছে,তাদেরকে পুলাউ,রোস্ট,মাংস রান্না করে খাইয়েছে। তাদের সাথেই সে আনন্দ করেছে।
নাটকের মধ্যে আরেকটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আর সেটি হলো অপূর্ব আর তার বন্ধু যে টেবিলে বসেছে তার পিছনে একটি মেয়েকে তার বয়ফ্রেন্ড একটি দামি আংটি গিফট করেছে। সেই আংটি পেয়ে মেয়েটি তার বয়ফ্রেন্ডকে অনেক ভালবাসেছে। এটা অপূর্বর তার বন্ধু রাহাত কে দেখিয়ে বলে দেখ,এভাবে করলে খুব ভাল লাগে। এমন সময় হঠাৎ করে আরো চারজন ছেলে সেই মেয়েটিকে ফুল দিয়ে ইউস করে। তখন মেয়েটি কান্না করতে থাকে। রাহাত বলে আপনি কাধঁছেন কেন..। ছেলে গুলো বলে আমরা সবাই তার বয়ফ্রেন্ড,হা হা হা। একটি মেয়ে ছয় সাতজন বয়ফ্রেন্ড রাখে। বর্তমানের অবস্থাটা ঠিক এমন চলতেছে।
নাটকের মধ্যে সর্বশেষ যে বিষয়টি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে সেটি হল অপূর্ব একসময় ব্যবসার জন্য দশ লাখ টাকার খুব প্রয়োজন অনুভব করে। যারজন্য অপূর্ব তার বড় ভাই এবং তার যৌথ একাউন্ট থেকে দশ লাখ টাকা উত্তোলন করে সেই ব্যবসার কাজে ইনভেস্ট করে ফেলে। বড় ভাইয়ের অনুমতি ছাড়া টাকা উত্তলন করা নিয়ে অপূর্বর বউ তার হাসবেন্ডের সাথে রাগ করে বাবার বাসায় চলে যায়। ওই দিন রাত্রে হঠাৎ করে অপূর্বর বড় ভাই ফোন দিয়ে বলে যে তাদের মা খুব অসুস্থ। মায়ের অপারেশন করতে হবে। সুতরাং অপূর্ব যেন সকালবেলা তাদের যৌথ একাউন্ট থেকে দশ লাখ টাকা উত্তোলন করে তাড়াতাড়ি চলে আসে। এমন সময় অপূর্ব টেনশনে পড়ে গেল। যৌথ একাউন্ট এর টাকা সে তুলে ব্যবসার কাজে ইনভেস্ট করে ফেলেছে। এখন সে টাকা কোথায় পাবে। অপূর্ব তার কয়েকজন ফ্রেন্ডের কাছে ফোন দিয়ে টাকা চাই। কিন্তু তারা এক সপ্তাহ সময় অপেক্ষা করতে বলে। এমন সময় অপূর্বর বউ অপূর্বকে ফোন দিয়ে বলে আমি সারাদিন বাসায় ছিলাম না। তোমার সাথে রাগ করে বাবার বাসায় চলে এসেছি। অথচ তুমি একটিবারও আমাকে ফোন দেও নি। তখন অপূর্ব বলে এখন আমি অনেক টেনশন এ আছি তোমার সাথে কথা বলতে পারবোনা। অপূর্বর বউ জিজ্ঞেস করে কিসের টেনশন। তারপর অপূর্ব টাকার সমস্যার কথাটা বলে। এর কিছুক্ষণ পরে অপূর্বর বউ ব্যাগের মধ্যে দশ লাখ টাকা নিয়ে হাজির হয়। অপূর্ব জিজ্ঞেস করে এতো টাকা সে কোথায় পেয়েছে। তারপর অপূর্বর বউ বলে এগুলি তোমারি টাকা। তুমি আমাকে যে টাকা দিতে সে গুলো আমি অযথা খরচ না করে জমিয়ে রেখেছি। আমি কিপ্টা বউ না আমি হিসেবি বউ। তারপর অপূর্বর বড় ভাই আবার ফোন দিয়ে বলে ডাক্তার বলেছে তাদের মায়ের অপারেশন লাগবে না। ওটা গ্যাসের ব্যাথা ছিল।
এক কথায় বলতে গেলে নাটকটি অনেক সুন্দর হয়েছে। বাস্তব অনেক দৃশ্য নাটকে ফুটিয়ে তুলা হয়েছে। অতিরিক্ত খরচ করা ভাল নয়। কারন কখন কার কি হয় সেটা কেউ বলতে পারবে না। আর কেউ যদি হিসাব করে চলে তাকে কিপ্টা বা এমন কিছু বলে সংবোধন করা যাবে না। কারন আমরা কোন মানুষের উপরের দিক দেখে তার বিচার করতে পারি না। অপূর্ব কিন্তুু তার বউকে অতিরিক্ত টাকা খরচ না করার কারনে অনেক কথা শুনিয়েছে। অথচ লাষ্ট পর্যায়ে সেই বউয়ের জমানো টাকা পেয়েই মুখে হাসিঁ ফুটেছিল। আপনরা যারা নাটকটি দেখেননি একবার হলেও দেখার চেষ্টা করবেন। অন্যান্য নাটক থেকে আলাদা একটি নাটক। অনেক কিছু শিখার আছে নাটকটি থেকে।
ধন্যবাদ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
















মুভি থেকে নাটক দেখতে আমার বেশি ভালো লাগে কম বেশি নাটক দেখা হয়ে থাকে। এই নাটকটির গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে হিসেব যে কোন কাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেটা সুফল বয়ে আনে অনেক ভালো লাগলো।
জী ভাইয়া ঠিক ভাবে হিসেব করে চললে যে কোন কাজেই সুফল আসে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
গতকালও ভেবেছিলাম এই নাটক দেখবো কিন্তু সময় হয়ে ওঠেনি।আজ আপনার রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। এমন কিছু কিছু নাটক রয়েছে যার কাহিনি একদম বাস্তবের সাথে মিলে যায়।অপূর্বর নাটক আমার খুব ভালো লাগে। টকা কম খরচ করা আর জমিয়ে রাখাকে কিপ্টে বলে না। কখন কার কিভাবে খারাপ সময় চলে আসে কেউ বলতে পারেনা। তারজন্য সঞ্চয় করে রাখা ভালো। ধন্যবাদ এত সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
জী আপু আপনি ঠিক বলেছেন টকা কম খরচ করা আর জমিয়ে রাখাকে কিপ্টেমি বলে না। ভবিষ্যতের চিন্তাও করতে হবে। ধন্যবাদ আপুু।
হিসেবি বউ নাটকের রিভিউ দেখে বেশ ভালো লাগলো ৷ সুন্দর ভাবে সম্পূর্ণ নাটকটি রিভিউ করেছেন ৷ নাটকটি অনেক সুন্দর জেনে ভালো লাগলো ৷ অবশ্যই চেষ্টা করবো সময় পেলে নাটকটি দেখার ৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ভাবে নাটকটির রিভিউ করার জন্য ৷
জী ভাইয়া নাটকটি সত্যিই অনেক সুন্দর। সময় পেলে দেখে নিবেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
বাংলাদেশের নাটকগুলো বরাবরই আমার কাছে ভালো লাগে।তবে অপূর্ব এর নাটকগুলো বেশ ভিন্ন ধরনের।যাইহোক এই নাটকের মূল বিষয় সম্পর্কে জেনে ভালো লাগলো।আসলে একদম কম বা বেশি খরচ করা উচিত নয়।সবকিছু প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যয় করা উচিত ।এছাড়া সঞ্চয়ী হওয়াটাও জরুরি, ধন্যবাদ ভাইয়া।সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন।
জী আপু আপনি ঠিক বলেছেন,প্রয়োজন ছাড়া খরচ করা ঠিক না। ধন্যবাদ আপু।
অপূর্ব ভাইয়ার কোন নাটক আমি মিস করি না ভাইয়া। গত দুদিন আগে আমি এই নাটকটি দেখেছি। আপনার মত আমিও নাটকটি যেভাবে ভেবেছিলাম ঠিক তার উল্টো হয়েছে। নাটকের শেষটা অনেক সুন্দর ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর এই নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে দেওয়ার জন্য।
জী আপু কভার ফটো দেখে যা ভেবেছিলাম ভিতরে তার উল্টো হয়েছে। ধন্যবাদ আপু।