পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন- অষ্টম পর্ব ( রাঙামাটির ট্রেডিশনাল ফুড দিয়ে ভুড়ি ভোজন )।।
বাংলা ভাষায় মনের আনন্দে ব্লগিং করো-
হ্যালো বন্ধুরা,
আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন- অষ্টম পর্ব শেয়ার করবো। আজকে রাঙামাটির ট্রেডিশনাল ফুডের ফটোগ্রাফি দেখতে পারবেন ও অনুভূতি জানতে পারবেন। লাঞ্চ করার সময় শুধু গ্রুপের এডমিনের কথার অমিল পেলাম। বাকি সব কিছু ঠিক ছিল। নিচে বিস্তারিত প্রকাশ করছি।
আমরা পাহাড়ি আদিবাসি গ্রাম পরিদর্শন করে ধীরে ধীরে নৌকায় চলে আসলাম। তখন সূর্য মামা মাথার উপর থেকে নেমে গেছে। তবে রোদের তাপ কমে নাই,বরং বেড়েছে। ঐদিন শুক্রবার হওয়ার কারনে অনেক মানুষ নৌকার ছাদে নামাজ আদায় করে নিলো। কারন আশে পাশে কোথাও মসজিদ দেখতে পায়নি। দুইটার মধ্যে আমাদের নৌকা ছেড়ে দিলো। এবার আমাদের এনার্জির প্রয়োজন। কারন সারাদিন রোদের মধ্যে পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরেছি। অনেক এনার্জি ক্ষয় হয়েছে। যদি আনারস খেয়ে কিছুটা এনার্জি পেয়েছি। তবে সেটা দিয়ে আর চলছে না। আমাদের নৌকা দ্রুত ঐ রেস্টুরেন্টের দিকে চলতে লাগলো,যেখানে আমরা সকালে নাস্তা করেছিলাম। এখন মোটামুটি সবাই টায়ার্ড। রেস্টুরেন্টের কাছে গিয়ে কয়েকজন বললো আমরা গোসল করবো। যে গরম পড়ছে গোসল করলে ভালোই হবে। তাছাড়া কাপ্তাই লেকে জীবনে আর আসা হবে কি না জানি না। তাই আমিও গোসল করার সিদ্ধান্ত নিলাম। নৌকা একটি চরের মধ্যে থামলো। মহিলা ও মেয়েরা নৌকায় বসে রইল। আর ছেলেরা সবাই নিজের প্রয়োজন মত লুঙ্গি গামছা নিয়ে পানিতে ঝাপিয়ে পড়লো।
কাপ্তাই লেকের পানি খুবই পরিষ্কার ও ঠান্ডা। আমার ব্যাগে থ্রি কোয়াটার পেন্ট ছিল,আমি সেটা পড়ে পানিতে ঝাপ দিলাম। শুধু যে আমরা গোসল করেছি তা নয়,যারা ঘুরতে এসেছে অধিকাংশ মানুষ গোসল করেছে। কারন কাপ্তাই লেকে গোসল করাটাও একটা স্মৃতি। কোন এক সময় হয়তো বলা যাবে,কাপ্তাই লেকে গোসল করেছিলাম। আমি আর আমার এক কলিগ গোসল করলাম এক দিক দিয়ে,আর বাকিরা গোসল করলো অন্য দিক দিয়ে। আমরা ঐদিকে যায়নি কারন সবাই গোসল করার কারনে পানিটা ঘোলাটে হয়ে গেছিলো। প্রায় আধা ঘন্টা গোসল করলাম। পাহাড়ের ঠান্ডা জলে গোসল করে শরীরটা শীতল হয়ে গেলো। গোসল করতে করতে হঠাৎ করে মাথায় আসলো,যদি লেকে কুমির থাকে। তাই তারাতারি করে উঠে গেলাম,হা হা হা। 😂 তারপর কাপড় চেইন্জ করে খাবার খেতে গেলাম।
খাবার খেতে গিয়ে তো সিরিয়ালই পাচ্ছি না। আমাদের আগে অনেক গুলো গুরুপের মানুষ সেখানে খাবার খাচ্ছে। আমাদের এডমিন আমাদেরকে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে বললেন। আমরা দ্বীপের চার পাশে কিছুক্ষন ঘুরলাম। দ্বীপের মধ্যে একটি মাত্র রেস্টুরেন্ট ছিল। যার ফলে এটাতে সবসময় চাপ থাকে। রেস্টুরেন্টের পাশে ছোট একটি টং দোকান ছিল। সেটাতে বিড়ি সিগারেট,কোল্ড ড্রিংকস সহ অনেক কিছু পাওয়া যাচ্ছিলো। এখানে যদিও বিদ্যুতের সংযোগ নেই,তারা সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে সব কিছু ম্যানেজ করে চলছিলো। পনের বিশ মিনিট পরে আমাদের খাবারের সিরিয়াল আসলো।
এখানে একটি বিষয় বলে রাখি। আমরা যে ফেসবুক গ্রুপের সাথে সেখানে ঘুরতে গেছিলাম। (ভ্রমন প্রিয় পর্যটক, ফেসবুক গ্রুপের নাম) তারা বলেছিলো আমাদেরকে লাঞ্চের সময় রাঙামাটির ট্রেডিশনাল ফুড দিবে। আর সে জন্য আমাদের থেকে নির্ধারিত ফি থেকে একশো টাকা বেশি নিয়েছিল। এখন রাঙামাটির ট্রেডিশনাল ফুড হিসাবে কি দিবে..? পাহাড়ি মুরগি, পাহাড়ী বাঁশের ভিতরে দিয়ে বাঁশ পুড়িয়ে রান্না করে দিবে। আমরা এমন ভেবেছিলাম। আর আমাদেরকে এমন খাবারের ছবিই দেখিয়েছিল। কিন্তু খাওয়ার সময় তাদের এই ওয়াদার মিল পেলাম না। খাবারের আইটেম ছিল আলু ভর্তা,পাতলা ডাউল আন লিমিটেড,সবজি, কাচকি শুটঁকি ভাজি, মুরগি ভুনা। মুরগি ভুনাটা তারা বাঁশ দিয়ে পরিবেশন করেছে,তবে সেটা পাহাড়ির মুরগির পরিবর্তে পল্টি মুরগি পাতিলের মধ্যে রান্না করে বাশঁ দিয়ে পরিবেশন করেছে। যায়হোক খাবারের স্বাদ মুটামুটি অনেক ভালো ছিল।
এখানে আরেকটি কথা রয়েছে যে,এখানে যে খাবার গুলো দেখতে পাচ্ছেন এর মধ্যে ভাত আর ডাউল ছিল আনলিমিটেড। বাকি যে খাবার গুলো ছিল সে গুলো চারজন মিলে খেতে হয়েছে। প্রতি চারজনে এমন খাবার দেওয়া হয়েছিল। আমরা খাবার মোটামুটি ভালোই খেয়েছি। খাবারের বিষয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। রিজিকে যা ছিল সেটাই খেতে পেরেছি। আমরা মূলত ঘুরতে গেছি,আনন্দ করতে গেছি। সেটাই আমাদের মূল বিষয়। সব মিলিয়ে আমাদের খাওয়ার দাওয়ার পর্ব ভালোই ছিল। খাওয়া দাওয়া করে কিছুক্ষন রেস্ট নিলাম। আমাদের পরবর্তি স্পট রাঙামাটির ঝুলন্ত ব্রিজ। যেটা পরের পর্বে দেখতে পারবেন..... চলবে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন- অষ্টম পর্ব ( রাঙামাটির ট্রেডিশনাল ফুড দিয়ে ভুড়ি ভোজন )।। |
স্থান | কাপ্তাইলেক, রাঙামাটি, চট্রগ্রাম, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০১ /০৩ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
রাঙামাটির ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ও সেখানকার ট্রেডিশনাল ফুডের বর্ণনা পড়ে আমার নিজেরও সেখানে যেতে ইচ্ছা করছে। আপনার লেখনীর মাধ্যমে আপনি যে জীবন্ত চিত্র তুলে ধরেছেন তা অসাধারণ। আপনার ফটোগ্রাফির দক্ষতা ও বিবরণ প্রশংসনীয়। এই ধরনের পোস্ট পড়ে আমাদের দেশের সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য সম্পর্কে আরও জানতে ও উপভোগ করতে ইচ্ছা করে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
আপনার কমেন্ট পড়ে অনেক ভালো লেগেছে ভাইয়া। ব্লগিং করার উৎসাহ বেড়ে গেলো। ধন্যবাদ।
রাঙামাটির ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভাইয়া আপনার পোস্টে গোসল করার মুহূর্ত দেখে অনেক ভালো লাগলো। আর খাবারের মান ভালো ছিল জেনে অনেক ভালো লাগলো। যদিও পাহাড়ি মুরগির পরিবর্তে ব্রয়লার মুরগি দিয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর কাটানো মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জী আপু পাহাড়ি মুরগি দিবে বলে নিয়ে ব্রয়লার মুরগি দিলো,হা হা হ।😄
আসলে আমি মনে করি জীবনের ব্যস্ততার মাঝে মাঝে এরকম সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করা উচিত। যারা ঘুরাঘুরি করে তারা এসেই সুন্দরময় মুহূর্ত বুঝতে পারে উপলব্ধি করতে পারে। রাঙ্গামাটি আমিও দুইবার গিয়েছি কাপ্তাই লেক যেখানে নৌকা ভাড়া করে অনেক সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছিলাম । আপনিও দারুন সময় কাটিয়েছেন তার পাশাপাশি সেখানে গোসল করেছেন। মনে হয় মিস করলাম গোসল। খাওয়া দাওয়ার বিষয় ভালো লাগলো রাঙ্গামাটির ট্রেডিশনাল খাবার। আবার যদি যাওয়া হয় অবশ্যই সেই খাবার উপভোগ করব। আমাদের সাথে এত সুন্দর ভ্রমণের মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জী ভাইয়া আমরা লেকের পানিতে গোসল করলাম। ভালোই লেগেছে। ধন্যবাদ।
এটা শিকার করতেই হয় আপনার ফটোগ্রাফির দক্ষতা বেশ দারুন। তবে আপনি যে খাবারের ফটোগ্রাফিগুলো করেছেন দেখে তো বেশি লোভনীয় লাগছে। আপনার পোস্টের বর্ণনা এবং ফটোগ্রাফি দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনি রাঙ্গামাটি ভ্রমণে বেশ ইনজয় করেছেন। রাঙ্গামাটি ভ্রমণের পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
যাক কুমির আসার আগেই কথাটা আপনার মনে পড়েছে হা হা। এটা বেশ খারাপ লাগল। বলল পাহাড়ি মুরগি বাঁশের মধ্যে রান্না করা হবে কিন্তু পোল্টি মুরগি হাড়িতে রান্না করে শুধুমাত্র বাঁশের উপর পরিবেশন করল। এটা মোটেও ঠিক হয় নাই।
আপনারা তো দেখছি রাঙ্গামাটিতে বেশ ঘুরাঘুরি করলেন। তবে যে রেস্টুরেন্টে খেলেন এটা মনে হয় সাংপাং রেস্টুরেন্ট? আমরাও তো গিয়েছিলাম এই রেস্টুরেন্টের খাবার গুলো খুবই মজার হয়। বিশেষ করে পুরো লেকের মাঝেই একটিমাত্র রেস্টুরেন্ট মাঝ পথেই। সবাই এখানে এসে খাওয়া দাওয়া করে। আর আপনারা তো গোসল করলেন বেশ ভালো আনন্দ করতে পেরেছেন। সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করলেন অনেক ভালো লাগলো আপনার বর্ণনা গুলো বিস্তারিত পড়ে।
কাপ্তাই লেকে গোসল করে ভালোই করেছেন ভাই। একটা স্মৃতি হয়ে থেকে গেল আর কি। আমিও অবশ্য কুমিরের কথাটা ভাবছিলাম, তবে তার আগে দেখলাম আপনি অলরেডি বলে দিয়েছেন ব্যাপারটা। হা হা হা....🤭🤭 যাইহোক, আনন্দ করতে গেলে খাবারের ব্যাপারটা অতটা গুরুত্ব না দিলেও হয়। কিন্তু আপনাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যে ধরনের খাবার দেবে তার পরিবর্তে টাকা বেশি নেওয়ার পরেও কেন তারা সেই খাবার দেয়নি, এটা বুঝলাম না। এটা তো তারা অন্যায় করেছে।