আজকের গল্পটা একটু ভিন্ন।।
বাংলা ভাষায় শেয়ার করো,তোমার মনের অনুভূতি।।
কিছু কিছু বিষয় আছে,যেটা না ঘটা পর্যন্ত আমরা কিছুই জানি না। বিশেষ করে জন্ম মৃত্যুর ব্যাপারে কেউ কোন ধারনা রাখতে পারে না। কখন কার কোথায় জন্ম হবে,কখন কার কোথায় মৃত্যু হবে সেটা একমাত্র সৃষ্টিকর্তায় জানেন। আরেকটি বিষয় হলো রিজিক। কার রিজিক কখন কোথায় আছে,সেটাও কেউ বলতে পারে না। কত মানুষ আছে চোখের সামনে খাবার আছে অথচ খেতে পারে না। আবার কেউ আছে যেটা সে কল্পনাও করে না,সেটা দিয়েই তার বুড়ি ভোজন হয়।
গত বুধবার পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস, সরকারি বন্ধের সাথে বৃহস্পতিবার সম্বনয় সাপেক্ষে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার সহ মোট তিন দিন আমাদের অফিস বন্ধ দেয়। টানা তিন দিন বন্ধ পেয়ে কেউ গ্রামের বাড়িতে গেছে আবার কেউ বন্ধু বান্দবের বাড়িতেও বেড়াতে গেছে। আমাদের পাশের ফ্লাটে যে থাকেন, তিনি আমাদেরই অফিসে অন্য একটি সেকশনে কাজ করে। তার নাম মামুন পাশা,বাড়ি কিশোগঞ্জ। সে আমার কলিগ না হলেও সাবেক রুমমেট ছিল। তার সাথে আমার অনেক আগে থেকেই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সম্পর্কটা এমন গড়িয়েছে যে,আমাদের বাসায় কোন ভালো মন্দ খাবার রান্না হলে তার বাসায় খাবার যায়। আবার তার বাসায় ভালোমন্দ কিছু রান্না হলেও আমাদের বাসায় খাবার দাবাড় আসে। তবে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার যা ঘটেছে,সেটা পুরোপুরি অকল্পনীয় ছিল।
বুধবার বিকালের দিকে আমরা একটি পার্কে ঘুরতে গেছিলাম। মামনু ভাই তার ফেমিলি নিয়ে আগে চলে গেছিলো, আর আমরা রোদ থাকার কারনে কিছু সময় পরে গেছিলাম। পার্কে সারাক্ষন তাদের সাথেই ছিলাম। কিন্তুু হঠাৎ করে বাবু কান্না শুরু করার কারনে আমরা একটু আগে বাহির হয়ে বাসায় চলে এসেছিলাম। পরেরদিন বৃহস্পতিবার রাতের বেলা হঠাৎ করে মামুন ভাইদের বাসা থেকে অনেক খাবার দাবাড় চলে এসেছে। বিষয়টা নিয়ে আমি একটু চিন্তা করলাম। আমি তার অবস্থা ও ভিতরের খবর পর্যন্ত জানি। এই সময় তার বাসায় এই খাবার রান্না হওয়ার কথা ছিল না। সম্ভবত কোন মেহমান এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম তার অফিসের একজন কলিগ আজকে তার বাসায় বেড়াতে এসেছে।
ভালোই খাবার দাবাড় রান্না করেছে,মুরগির মাংস,গরুর মাংস, কৈ মাছ ভুনা,ডিম ভুনা, করলা ভাজি,পুলাউ। এর সব কিছুই আমাদের বাসায় এসেছে। অথচ ঐদিন আমাদের বাসায় রান্না করা হয়েছিল,টমেটো দিয়ে বেলে মাছ,কলমি শাক,আর ডাউল ভুনা। অথচ ঐদিন আমারা খেলাম মাংস পুলাউ। মামুন ভাইয়ের বাসা থেকে একটু বেশি পরিমানেই খাবার এসেছিল। আমরা সন্ধার পরে কিছু ফ্রুট আর স্যুপ নুডুলস এসব খেয়েছিলাম। যাল ফলে সম্পুর্ণ খাবার আমরা খেতে পারি নাই। কিছু খাবার ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলাম। পরের দিন তথা শুক্রবারে সকালে গরম করে সেই খাবার খেয়েছি। আমি আমার যথা সম্ভব খাবার নষ্ট করতে রাজি নয়। পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ খাবারের জন্য কষ্ট করে। এই খাবারের জন্য মানুষ মা-বাবা,আদরের সন্তান,বউ বাচ্ছা ফেলে বছরের পর বছর বিদেশের মাটিতে কাটায়। এই খাবারের জন্য মানুষ মাথায় ঘাম পায়ে ফেলে অর্থ ইনকাম করে। খাবার নষ্ট হলে আমার খুবই কষ্ট লাগে। খাবার হলো আল্লাহ নেয়ামত। এটা নষ্ট করা অনেক বড় গুনা হয়।
পরের দিন লাঞ্চের সময় বউ বিরিয়ানি রান্না করার প্লান করে ফ্রিজ থেকে মাংস বাহিরে করে ভিজিয়ে রেখেছে। যেহেতো শুক্রবার অফিস বন্ধ,আর আমি নিজে থেকে বিরিয়ানি খুব পছন্দ করি। তাই লাঞ্চের সময় বিরিয়ানী খাওয়ার প্লান করেছি। সে জন্য বাজার থেকে শষা,লেবু,টমেটো সহ সালাদের আইটেম নিয়ে আসলাম। বউ বিরিয়ানী রান্না করছে আর আমি বাবুকে নিয়ে বারান্দায় শুয়ে আছি। বারোটার দিকে বাবুকে গোসল করিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি কিছু কাজ করে জুম্মার নামাজের আজান হলে, গোসল করে নামাজ পড়তে চলে গেলাম।
নামাজ পড়ে আসতে আসতে আড়াইটা বেজে যায়। মসজিদ থেকে এসে ড্রেস চেইন্জ করে বিরিয়ানি খেতে গিয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম। খাবার টেবিলে বিরিয়ানির বদলে অন্য খাবার দেখে আমি আশ্চর্য হয়ে বউকে জিঙ্গেস করলাম সকাল থেকে দেখলাম বিরিয়ানি রান্না করছো আর এখন দেখছি,পুলাউ,মুরগির মাংস,গরুর মাংস, শিং মাছ ভুনা,মাঙ্গাস মাছ ভুনা। কারনটা বুঝলাম না। তারপর বউ বললো বিরিয়ানি রান্না শেষ হলে,বিরিয়ানি নিয়ে মামুন ভাইয়ের বাসায় দিয়ে আসতে গেলাম,তারা বিরিয়ানি রেখে এই খাবার গুলো দিয়ে গেছে। আমি বসে বসে খাবার খাচ্ছি আর চিন্তা করছি কি খাবার খাবো প্লান করলাম,আর এখন কি খাচ্ছি। সৃষ্টিকর্তা কখন কি খাবার কাকে খাওয়ায় কেউ বলতে পারে না। সৃষ্টিকর্তার খেলা কেউ বুঝে না।
রাতের বেলা বাসার ছাদে গিয়ে মামুন ভাইকে জিঙ্গেস করলাম,মেহমান আছে না কি চলে গেছে। তিনি জানালেন বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুইদিন দুই কলিগ তার বাসায় বেড়াতে এসেছিল। মেহমান আসার সময় রসমলাই,দই, আইসক্রিম,মিষ্টি এগুলো নিয়ে এসেছিল। সে গুলোও আমাদের বাসায় এসেছে। আসলে রিজিক নিয়ে আমি মাঝে মাঝে চিন্তা করলে অবাক হয়ে যায়। গত মঙ্গলবারে সন্ধার পরে অফিসে থেকে সবাই বাসায় চলে গেছে। আমি বাসায় চলে আসবো,এমন সময় হঠাৎ করে স্যারের কাছে এক মেহমান চলে আসলো। স্যার আবার তার জন্য অনেক নাস্তার ব্যবস্থা করলেন। অনিচ্ছা সত্বেও নাস্তা করে আটটার সময় অফিস থেকে বের হতে হলো। যেটা খাওয়ার কল্পনাও করি না,অনেক সময় সেটাই খাওয়ার জন্য সামনে চলে আসে। এটাই সৃষ্টিকর্তার খেলা।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | আজকের গল্পটা একটু ভিন্ন।। |
স্থান | নিজ বাসা,নারায়নগঞ্জ,ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০৩ /০৫ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
খুব সুন্দর লাইফ স্টাইল আমাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন। বেশ ভালো লাগলো বিস্তারিত জানতে পেরে। আর খাবার-দাবারের আইটেমটা তো বেশ দারুন ছিল। আসলে মেহমানদারী বলে কথা। আপনার আজকের এই পোস্ট পড়ার মধ্য দিয়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম।
জী ভাইয়া খাবার খেয়ে অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ।
আপনি কথা গুলো অনেক সুন্দর গুছিয়ে বলেছেন ভাইয়া। আল্লাহ তোহ আমাদের জন্য রিজিক কোথায় কিভাবে নির্ধারিত করেছেন,আমরা জানি নাহ। অথচ আমরা দিনের পর দিন রিজিক এর জন্য পেরেসান হয়ে যাই। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা মানুষ থেকে শুরু করে সমুদ্রের তিমি পর্যন্ত সকলের রিজিক সঠিক সময় কোনো নাহ কোনোভাবে পৌঁছে দিয়ে থাকেন।
আপনারা একটা বিষয় ভালো লেগেছে খুব, সেটা হলো আপনি খাবার নষ্ট করাটা পছন্দ করেন নাহ আমাদের সবারই এমন হওয়া উচিত। আজকাল তো খাবার নষ্ট করা একটা ফেশান এ পরিনত হয়েছে। খাবার শেষে খাওয়া ছেড়ে রাখা নাকি ভদ্রতা বলে,,,আল্লাহ সকল কে বুঝার তৌফিক দান করুক।
জী ভাইয়া বিশেষ করে হোটেল রেস্টুরেন্টে গেলে দেখা যায়,কিভাবে মানুষ খাবার নষ্ট করার প্রতিযোগিতা করছে। আর বাংলাদেশের অধপতন এক মাত্র এই কারনেই। ভদ্রতা দেখাতে গিয়ে খাবার নষ্ট করে,অথচ কত মানুষ পেটে ধিদা নিয়ে রাতে ঘুমাতে যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ওয়েলকাম ভাইয়া।
আমাদের রিযিক কোথা থেকে আসবে এটা একমাত্র আল্লাহই জানে। তিনি সবকিছুর ব্যবস্থা সুন্দরভাবেই করে রেখেছেন। তবে তাও আমরা নিজেদের নিয়ে চিন্তায় থাকি। তবে একটু গভীর ভাবে এই ব্যাপারগুলো চিন্তা করলেও খুবই ভালো লাগে। অফিস থেকে তিন দিনের ছুটি পেয়েছিলেন। ছুটিতে ভালই খাওয়া-দাওয়া হলো আপনাদের। আপনাদের সেদিনের খাবারের রিযিক তাদের সেখানেই ছিল তাই খাবারগুলো এলো। ভীষণ ভালো লাগলো আপনার লেখা গুলো পড়ে।
জী আপু রিজিকের ব্যপারটা সত্যিই আলাদা। কখন কোথায় মানুষের রিজিক লেখা আছে। সেটা কেউ জানে না। ধন্যবাদ।
কোন খাবার নষ্ট করা আমিও পছন্দ করিনা।আসলে রিজিক আল্লাহর নেয়ামত।আমরা চাইলেই কিছু করতে আসলে পারিনা।আমাদের চাওয়া না চাওয়ায় কিছু হয়না।সবই মহান আল্লাহর ইচ্ছে।ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভুতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো।
খাবার নষ্ট করা খুবই খারাপ বিষয়। এটা আমি কখনোই সাপার্ট করি না। ধন্যবাদ।
এটা একেবারেই ঠিক কথা ভাই, আমরা কখন কি খাব বা আমাদের ভাগ্যে কখন কি আছে, সেটা পুরোটাই সৃষ্টিকর্তার হাতে। তবে নিঃসন্দেহে বলতে হয় যে, আপনার মামুন ভাই কিন্তু লোক হিসাবে অনেক ভালো। এজন্য হয়তো তারা যা কিছু রান্না করে আপনাদের দিয়ে যায় এবং আপনারও তার পরিবর্তে তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেন। আসলে প্রতিবেশীদের সাথে কিংবা কলিগদের সাথে এরকম ভালো সম্পর্ক রাখাটা অত্যন্ত জরুরি।
জী ভাইয়া তিনির সাথে আমার ভালোই একটা সম্পর্ক আছে। ধন্যবাদ।