অসাধু মধু ব্যবসায়ী
আজ--১০পৌষ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | সোমবার | শীতকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- অসাধু মধু ব্যবসায়ী।
- আজ--১০ম পৌষ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- সোমবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ দুপুর সবাইকে......!!
বর্তমান শীতকাল আর শীতের মৌসুমে সরিষা ফুলের মধু চারিদিকে পাওয়া যায়। আপনারা হয়তোবা অনেকেই জানেন যে সরিষা ফুলের মধু সবথেকে বেশি সুস্বাদু হয়ে থাকে অন্যান্য মধুর থেকে। আর শীতের সময় মধু খেতে অনেক বেশি ভালো লাগে শীত বাদেও অন্যান্য সময়ে মধু খেতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। বর্তমান সময়ে খাঁটি মধুর খুবই অভাব। যদিও অনেক অসাধু ব্যবসায়ী আছে যারা কিনা মধুর সঙ্গে চিনি মিশিয়ে সেটা খাটি মধু বলে চালিয়ে দিচ্ছে। এখন যেহেতু মাঠে সরিষা চাষ করা হয় আর অনেক মধু আহরণকারী মানুষেরা সেই সরিষা ফুলের কাছে গিয়ে অনেক রকম প্রক্রিয়া অবলম্বন করে মধু আহরণ করে থাকে। যারা মধু আহরণ করে তারা মূলত এ ব্যাপারে অনেক বেশি দক্ষ কিরকম ভাবে কোন প্রক্রিয়ায় খাঁটি মধু থেকে তারা ভেজাল মধু উৎপাদন করে সেটা কেউ বুঝতেই পারে না। আপনি কোনভাবেই বুঝতে পারবেন না যে তারা খাঁটি মধুর কথা বলে কখন আপনাকে ভেজাল মধু দিয়ে দেবে।
এর আগে আমি আমাদের এলাকার একজনের থেকে এক কেজি মধু নিয়েছিলাম ৭৫০ টাকা দিয়ে। মধুটা আসলেই খাটে ছিল যেটা আমি বুঝতে পেরেছিলাম কারণ মধুটা আমি অনেকদিন রেখে খেয়েছিলাম, কিন্তু মধুতে তেমন কোন গন্ধ হয়নি। আর খাঁটি মধুর স্বাদ সবসময়ই আলাদা। যদিও আমি তাকে বলেছিলাম যে টাকা বেশি দিব কিন্তু আমি একদম খাঁটি মধুটাই নিব যদি খাঁটি মধু থাকে তাহলে আপনি আমাকে দিবেন কোন রকম দুই নাম্বারী বা ছলচাতুরি আমার সাথে করা যাবে না। সেদিন সে আমাকে ভালো এবং খাঁটি মধুটাই দিয়েছিল যার কারণে কেউ আমার কাছে মধু কেনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে আমি তার কথাই বলে দিই। কিন্তু সে অনেকদিন যাবত এই মধুর ব্যবসাটা বাদ দিয়েছে যার কারণে মধু কিনতে গেলে সব সময়ই বিপাকে পড়তে হয়।
গত পরশুদিন এক চাচাতো ভাই ফোন দিয়ে বলল যে বিকেল বেলা রেডি থাকিস একটা জায়গায় যাব। যদিও সেই জায়গাটা আমাদের বাসা থেকে খুব একটা বেশি দূরে নয় হেঁটে গেলে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট সময় লাগবে। আমি আমার ফুপার বাইক নিয়ে সেই চাচাতো ভাইয়ের সাথে নিয়ে গেলাম সেই মধু বিক্রেতার বাড়ি মূলত সেই চাচাতো ভাই এক কেজি মধু কিনবে। আমি সাথে গিয়েছিলাম যদি খাঁটি মধু পাই তাহলে আমিও এক কেজি মধু নিব। যথারীতি সেই মধু বিক্রেতার বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করাতেই মধুর গন্ধ নাকি এসে লাগলো।
এরপরে তার কাছে গিয়ে মধু কেনার কথা বললেই সে খুবই ভালো এবং সদাচরণ করে আমার সঙ্গে এবং এমন ভাবে কথা বলে যে তার কাছে খাঁটি মধু ছাড়া ভেজাল কোন মধুই নেই। এরপরে আমার চাচাতো ভাই এক কেজি মধু কিনলো যদিও মধুটা আমি মুখে দিয়েছিলাম তবে আমি ভালো একটা বুঝতে পারেনি যে এটা আসলে খাঁটি মধু নয় এটা ছিল ভেজাল মধু। আমরা তো আর মধু চাষ করিনা বা মধু বিক্রি করি না যে মধু দেখেই বুঝতে পারব যে কোনটা ভালো মধু আর কোনটা ভেজাল মধু। আমি তাকে এ কথাই বলেছিলাম যে আপনি প্রয়োজনে ১০০ টাকা বেশি রাখেন কিন্তু খাঁটি মধুটাই আপনি আমাদেরকে দেন,খাঁটি মধু যদি না থাকে তাহলে মধু দেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু সে আমাদের বলল না আমার কাছে সবই খাঁটি মধু আমি ২ নাম্বার ব্যবসা করি না।
আমি এই কথা শুনে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছিলাম ভেবেছিলাম সে হয়তো বা মিথ্যে কথা বলছে না আমাদের সঙ্গে। আর আমাদের সঙ্গে মিথ্যে কথা বলে সে পার পেয়ে যাবে এমনটা কখনো হতেই পারে না। যথারীতি মধু নিয়ে এসেছিলাম। আমি এক কেজি নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু পরবর্তীতে ভাবলাম আগে এটা যেহেতু ও কিনেছে কিছুদিন দেখি যদি ভাল মধু হয় তাহলে আমিও এসে এক কেজি মধু নিয়ে যাব। মধু নিয়ে সে তার পরের দিন চলে গিয়েছে কুষ্টিয়া কারণ সে কুষ্টিয়া থেকে লেখাপড়া করে। গত কয়েকদিন আগে আমাকে ফোন দিয়ে বলছে যে মধু ভেজাল। কথাটা শুনে রীতিমতো চমকে গেলাম ভেজাল মানে..!!
এবার আমি তাকে বললাম যে মধুটা যে ভেজাল তুই কিভাবে বুঝলি। সে আমাকে বলল যে মধুর ভেতরে কেমন যেন একটা গন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রথমে যে গন্ধটা ছিল সেই গন্ধটা এখন একদমই নেই। আর আমি খেতে পারছি না। এই কথা শুনে আমার তো সকাল সকাল মেজাজটা খুব খারাপ হয়ে গেল। এরপর আমি তাকে বললাম যে তুই বাসায় আসবি কবে। সে বলল আজ বিকেলে বাসায় যাব,আমি তখন তাকে বললাম ঠিক আছে তুই তাহলে মধু নিয়ে বাসায় চলে আয় তারপরে ব্যাপারটা দেখছি কি করা যায়। চাচাতো ভাই বিকেলবেলা বাসায় এসে আমাকে ফোন দিল আমি আবার হাঁটতে হাঁটতে তার বাসার সামনে গেলাম তাকে নিয়ে চলে গেলাম সেই মধু বিক্রেতার বাড়ি।
মধু বিক্রেতার বাসায় গিয়ে দেখি সে বসে মধুর যে চাক টা আছে সেটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে। আমাদেরকে দেখে বলছে,কি বাবা তোমরা আবার আসছো মধু কিংবা নাকি। তখন আমি তার সামনেই বললাম যে দুষ্টু লোকের মিষ্টি কথা। একথা শুনে তার স্ত্রী আমার মুখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি তখন তাকে বললাম যে আমি আপনাকে বলেছিলাম যে আপনি টাকা বেশি রাখেন কিন্তু খাঁটি মধুটা আমাদের দেন কিন্তু আপনি টাকা ঠিকই নিয়েছেন মধুটা আর ভালো দেননি। এরপরে যথারীতি সে পুরো ব্যাপারটা অস্বীকার করল কিন্তু আমি তাকে দেখালাম যে মধুটা কেমন যেন একটা গন্ধ হয়ে গিয়েছে খাওয়া যাচ্ছে না।
যথারীতি সে মধুটা দেখল এবং সেও বুঝতে পেরেছে যে মধুটা আসলেই কেমন যেন গন্ধ হয়ে গিয়েছে আর এই মধু খাওয়াটা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তখন সে আমাকে বলছে ঠিক আছে এটা রেখে যাও অন্য আরেকটা মধু নিয়ে যাও। তখন আমি তাকে বললাম আমি আপনার থেকে আর মধু নেব না এই মধুটা রেখে টাকা ব্যাক করেন, আপনার কথা এবং কাজে মিল নেই। আপনার কাছ থেকে মধু কিনব না। প্রথমে সে টাকা ফেরত দিতে না চাইলেও পরবর্তীতে তার কাছ থেকে টাকা ফেরত নিয়ে এসেছিলাম। যদিও সম্পূর্ণ টাকা আমি ফেরত নেইনি যতটুকু মধু খেয়েছে ততটুকু দাম রেখে বাকি টাকা ফেরত নিয়ে এসেছি।
বর্তমান সময়ে আসলে এরকম অনেক মধু ব্যবসায়ী আছে যারা খাঁটি মধু বিক্রি তো দূরের কথা মধুর সঙ্গে অনেক কিছু মিশিয়ে সেটাকে খাঁটি বলে চালিয়ে দিচ্ছে। আমি হয়তোবা খুব কাছ থেকে মধু কিনে নিয়েছিলাম যার কারণে আমি টাকা ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পেরেছি কিন্তু যারা দূর-দূরান্ত থেকে মধু কিনছে তাদের কি অবস্থা হচ্ছে একবার ভাবুন..?? যারা দূরদূরান্ত থেকে মধু কিনছে তাদের পুরোটাই লস, তারা না সেই মধুটা খেতে পারছে না টাকাটা ফেরত নিতে পারছে। আমি মনে করি এ সকল ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। যাতে করে পরবর্তীতে এরকম করার সাহস কেউ না পায়।
এটাই ছিল আমার আজকের পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | অসাধু মধু ব্যবসায়ী |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আসলেই বর্তমানে খাটি মধু পাওয়া মুসকিল। অসাধু ব্যবসায়ীরা খাটি মধুতে চিনি মিশিয়ে নকল মধু বানিয়ে খাটি মধু বলে চালিয়ে দেয়।জেনে ভালো লাগলো যে বেশি টাকা নিলোও খাটি মধুই পেয়েছিলেন আপনি। আপনার চাচাত ভাই কে ভেজাল মধু দিয়ে ঠকিয়েছে খুব খারাপ লাগলো জেনে।
আমি খাঁটি মধু পেলেও আমার চাচাতো ভাই খাঁটি মধু সেদিন পাইনি তবে টাকা নিয়েছিল খাঁটি মধুর। পরবর্তীতে অবশ্য ফেরত দিয়ে দিয়েছিলাম টাকা নিয়ে নিয়েছিলাম। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
মধু জিনিসটা নিয়ে খুব বেশি ভেজাল দেয়া হয়, কারণ অনেক মানুষের আসল মধুর সম্পর্কে অবগত নয় এজন্য কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই বিজনেস করতে পারছে।
বর্তমান সময়ে আসলে খাঁটি মধু খুব একটা ভালোভাবে পাওয়া যায় না সবসময়ই ভেজাল মধু দেওয়া হয় মানুষদের। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
এখন খাটি মধু পাওয়া আর আকাশের তারা খুঁজে পাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে গিয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের বেশি লাভের আশায় খাটি মধুর সাথে চিনি মিশিয়ে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে যাতে করে মধু আসল না নকল তা বুঝা না যায়। খুব ভালো লাগলো আপনি খাটি মধু পেয়েছেন৷ তবে আপনার চাচাতো ভাইকে তারা ঠকিয়েছে শুনে খুব খারাপ লাগলো৷ অনেকে তার মতো প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে।
প্রথম অবস্থায় আমাদেরকে মিথ্যে কথা বলে চিনি মিশানো মধু দিয়েছিল কিন্তু আমরা তখন সেটা বুঝতে পারিনি পরবর্তীতে অবশ্য বুঝতে পেরেছিলাম। পরবর্তীতে অবশ্য তার মধু ফেরত দিয়ে দিয়েছিলাম আর মধু পরবর্তীতে অবশ্য তার মধু ফেরত দিয়ে দিয়েছিলাম আর মধু ব্যবসায়ীরা বরাবরই অনেক বেশি চিটারি করে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
গার্লফ্রেন্ডকে বিশ্বাস করা গেলেও মধু ব্যবসায়ীকে বিশ্বাস করা যায় না তারা তাদের মধুর মধ্যে ভেজাল মেশাবেই। দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য
আপনি খুবই সুন্দর একটা মন্তব্য করেছেন আপনার এই মন্তব্যের সঙ্গে আমিও একমত পোষণ করছি। বর্তমান সময়ের মধ্যে ব্যবসায়ীগুলোদের একদম বিশ্বাস করা যায় না এরা সর্বদা মানুষের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।