আজ--১৬ই অগ্রহায়ণ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | হেমন্তকাল |

আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

তো চলুন শুরু করা যাক...!

শুভ বিকেল সবাইকে......!!

গত পর্বে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে আমার এক বন্ধু মা-বাবাকে না জানিয়ে একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে যার কারণে তার মা আমার কাছে কিছুদিন আগে ফোন দিয়ে অনেক কান্নাকাটি করছিল। সেই গল্পটাই আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছিলাম এখন পরবর্তী অংশটুকু আবার তুলে ধরবো। যখন আমি আন্টিকে প্রশ্ন করেছিলাম সে এরকম কাজ কিভাবে করল তখন আন্টি তাকে বলল যে তার দুলাভাই এর বাসা চট্টগ্রাম। সেখানে গিয়ে সে কিছুদিন তার দুলাভাইয়ের ওষুধের দোকানে কাজ করত আর সেখান থেকেই নাকি সেই মেয়ের সাথে তার পরিচয় হয়। মেয়ের সাথে পরিচয় হওয়ার পরে তারা দুজন একে অন্যের সঙ্গে রিলেশনে আবদ্ধ হয়। দুজন দুজনকে নাকি অনেক ভালোবাসে কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারবে না এরকম কথা নাকি সে তার মাকে বলেছে। একথা শুনে আমি আন্টিকে বললাম ও এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনাদের কথা একবারও ভাবেনি। এটা খুবই অন্যায় করেছে।

এই কথা শোনার পরে আন্টি কান্না করছিল আর বলছিল যে তোমার আংকেল তো এখন খুব একটা কাজ করতে পারে না ছোটখাটো একটা দোকান আছে সেটাই চালায়। যদিও তোমার আংকেল তাকে বলেছে যে বাসায় এসে দোকানে বসতে পরবর্তীতে আমি দোকানটা আরেকটু বড় করব তাদের বড় একটা ওষুধের দোকান আছে বলে আমি জানতাম। তারপরে আন্টি আমাকে বলে রকি কারো কথা না শুনে এখন ঢাকাতেই আছে। এরপরে আমি আন্টিকে বললাম ওরা বিয়ে করেছে কবে আর ওই মেয়েটার একটা বাচ্চা আছে সেই বাচ্চাটাকেও নিয়েছে নাকি অন্য কোথাও রেখেছে..? আন্টি তখন বলল ওই বাচ্চাটা ওদের সাথেই আছে।একথা শুনে যদিও আমি খুব একটা বেশি অবাক হইনি কারণ, ছোট্ট একটা বাচ্চা সে তো তার মায়ের সাথে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

যদি সে তার মায়ের সঙ্গে না থাকে তাহলে তার শৈশবটা নষ্ট হয়ে যাবে। এরপরে আন্টির সাথে যখন কথা বলছিলাম আমার নিজের কাছেই অনেক বেশি খারাপ লাগছিল। আমি আন্টিকে যদিও শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম কিন্তু আন্টি কান্না করেই যাচ্ছিল। এরপরে আন্টি আমাকে বলল ওর কোন বন্ধুর সঙ্গে আমার তেমন কোন যোগাযোগ নেই তুমি মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় আসতে আমি অনেক আগেই রকির ফোন থেকে তোমার নাম্বারটা নিয়ে রেখেছিলাম যার কারণে আজ তোমাকে ফোন দিলাম। এরপরে আমি আন্টিকে বললাম আন্টি আপনার যখন মন খারাপ হবে আপনি আমাকে ফোন দিতে পারেন সমস্যা নেই যে কোন সময়। আর আমি রকির সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলব।

এবার আমি আন্টিকে বললাম ও যে সেই মুসলিম মেয়েটাকে বিয়ে করেছে মেয়েটাকে হিন্দু ধর্ম গ্রহন করছে নাকি..? আন্টি এটা শোনার পরে বলল সেটা আমি এখন পর্যন্ত জানিনা। মূলত আমার বন্ধু হঠাৎ করেই যে এরকম পরিবর্তন হয়ে যাবে সেটা আমি কখনো কল্পনাও করতে পারি না। সে খুবই ভদ্র একটা ছেলে ছিল আমি তাকে নিউটনের নাতি বলে ডাকতাম কারণ সে মাঝে মাঝে এমন কিছু তৈরি করত বা এমন কিছু কথা বলতো যার কারনে তাকে আমার অনেক বেশি পছন্দ হতো। সে যে রকম একটা কাজ করবে আমি ভাবতেই পারিনা।

source

এরপরে আমি আন্টিকে বললাম আপনার সঙ্গে রকির যোগাযোগ আছে নাকি..?? আন্টি আমাকে বলল মূলত ওর সঙ্গে আমার তেমন একটা যোগাযোগ হয় না ওর আগের ফোন নাম্বারটাও অফ করে রেখেছে যার কারণে যোগাযোগ করতে পারি না। এরপরে আন্টি আমাকে যে কথাটা বলল সে কথাটা শুনে আমি আরো বেশি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আন্টি আমাকে বলল ও মূলত ওর বাবার কাছে টাকা চেয়েছে ব্যবসা করার জন্য কিন্তু ওর বাবা টাকা দিতে রাজি না। যেহেতু ওর বাবার একটা দোকান আছে ওর বাবা চাচ্ছিল যে ও নিজের বাবার দোকানে বসুক এবং নিজের মতো করে সবকিছু গুছিয়ে নিক। কিন্তু রকি যে এরকম হঠাৎ করেই এরকম একটা কাজ করে ফেলবে সেটা কে জানতো..!! তাছাড়া ও আমাদের সঙ্গে এখন কোন রকম যোগাযোগ করে না সে মূলত আমাদের কোন খোঁজখবর নেয় না। ঢাকাতে সেই মেয়েটার সঙ্গেই থাকে।

এরপরে পাশ থেকে তার বাবা বলছিল যে অমূল্য তো আমার মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছে। যেহেতু তার কোন ভাই বোন নেই সে শুধুমাত্র একাই। এবার তাহলে আপনারা একটু ভাবুন যে একটা ছেলে যার কিনা কোন ভাই বোন নেই মা বাবার একমাত্র সন্তান, সে ছাড়া তার মা-বাবার দেখার মত কেউ নেই আর সেই মানুষটাই যদি মা-বাবার থেকে আলাদা হয়ে যায় তাহলে মা-বাবা কতটা কষ্ট পায়। রকির মা-বাবা ঠিক তেমনটাই কষ্ট পাচ্ছে। মূলত আঙ্কেলের সেই কথা শুনে আমি বুঝতে পারলাম আঙ্কেলের যেহেতু একটা দোকান আছে এবং টাকা-পয়সাও আছে যেহেতু আঙ্কেল আগে ভালো একটা জব করত বলে শুনেছিলাম। তার বাবা মারা যাবার সাথে সাথেই সে বাসায় চলে আসবে। মাকে হয়তো বা একটু দেখাশোনা করবে আবার দেখাশোনা করবেও না।

মূলত ছেলে হিসেবে মা-বাবার প্রতি যে দায়িত্ব যে কর্তব্য আছে সে সেটা হয়তো বা খুব একটা ভালোভাবে পালন করবে না। তার বাবার মৃত্যুর পরে তার মাকে দেখাশোনা করার জন্য সে হয়তো বা বাসায় আসবে কিন্তু আসলেও কি সে তার মাকে দেখাশোনা করবে..?? এ ব্যাপারে আমি এখন পর্যন্ত কনফিউজড। মা বাবা আমাদের আপনজন আর এই আপনজনদেরকে কষ্ট দেওয়া সত্যিই অনেক বেশি বোকামি বলে আমি মনে করি। এদেরকে কষ্ট দিয়ে কেউ কখনো সুখী হতে পারে না।

source

মেয়েটা হয়তোবা তার প্রথম হাসবেন্ডকে ছেড়ে তার কাছে এসেছে একটু সুখে থাকার জন্য। কিন্তু মানুষ এটা হয়তো জানে না যে প্রথম জনের থেকে যখন কেউ দ্বিতীয় জনের কাছে যায় তখন সেই ভালোলাগাটা ক্ষণিকের জন্য হয়। ক্ষণিকের জন্য দুজন দুজনকে প্রচন্ড রকম ভাবে ভালবাসে কিন্তু যখন সেই মোহ কেটে যায় তখন দুজনারি অসহ্য অস্বস্তিকর মনে হয়। প্রথমজন সবসময়ই অনেক এক্সেপশনাল অন্য সবার থেকে। এর মানে আমি এটা বলছি না যে আমার বন্ধুরা রকি ভবিষ্যতে কষ্টে থাকুক। বন্ধু হিসেবে আমি চাইবো সব সময় সুখে-শান্তিতে থাকুক তবে অবশ্যই সেটা মা-বাবাকে সাথে নিয়ে।

এটাই ছিল আমার আজকের দ্বিতীয় পর্ব। আশা করছি এই দ্বিতীয় পর্বের গল্পটি আপনাদের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। একটা ছেলে কিভাবে ভালোবাসার জন্য মা-বাবার থেকে আলাদা হতে পারে এটা আমার এই ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে ধরে না। যাইহোক আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি। সকলেই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!

আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

_{Posted using SteemPro Mobile}