আজ--১৭ অগ্রহায়ণ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | হেমন্তকাল |

আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

তো চলুন শুরু করা যাক...!

শুভ বিকেল সবাইকে......!!

ছবিঃ- ইউটিউব থেকে স্কিনশট নেওয়া।

source

নাটকের কিছু তথ্য

নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনীঃ-

পিতা বনাম পুত্রগং নাটকের ৫০ পর্বের রিভিউ এর প্রথম অংশ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, চঞ্চল চৌধুরীর ছোটমা অর্থাৎ বাসার সাহেবের ছোট বউ চঞ্চল চৌধুরীর কাছে গিয়ে তার বোন এবং তার ফুফুর নামের নালিশ করছে। মূলত এখানে চঞ্চল চৌধুরীর বোন বাসার সাহেবের ছোট বউকে বাসা থেকে বের করে দিতে চাই সেই সাথে চঞ্চল চৌধুরীর বোন সম্পত্তির উপর নজর দিয়েছে। চঞ্চল চৌধুরীর বোন সে চায় যে তার বাবা তার নামে যতটুকু সম্পত্তি আছে ঠিক ততটুকু সম্পত্তি লিখে দিক এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাসা থেকে বের করে দিখ। কিন্তু চঞ্চল চৌধুরী এটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না যার কারণে সে মোটামুটি তার ছোট মায়ের পক্ষেই আছে। এবং তার ছোট মাকে বরাবরই সে সবসময়ই সাপোর্ট করছে একমাত্র চঞ্চল চৌধুরী সেই ব্যক্তি যে কিনা তার ছোট মায়ের পক্ষে সব সময় কথা বলে। চঞ্চল চৌধুরী তার ছোট মায়ের পক্ষে কথা বলার যথেষ্ট কারণ রয়েছে কারণ তার ছোট মাথাকে অনেক বেশি ভালোবাসে এবং তাকে যে বিয়ে করিয়ে দেবে এটা ভেবেই চঞ্চল চৌধুরী অনেক বেশি খুশি।

যেহেতু চঞ্চল চৌধুরীর ছোটমা তার কাছে কান্নাকাটি করছে যার কারণে চঞ্চল চৌধুরী থাকে কিছুটা শান্ত করার চেষ্টা করে এবং বলে যে পুরো ব্যাপারটা সে দেখবে। এরপরের অংশের লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে আরফান হঠাৎ করেই শাহনাজ খুশির কাছে গিয়ে নাদিয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। নাদিয়া সম্পর্কে আপনারা অনেক আগে থেকেই জানেন যে প্রথম অবস্থায় নাদিয়া আরফানকে ভালোবাসতো এখন বর্তমান সে চঞ্চল চৌধুরীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। মূলত সে শাহনাজ খুশির কাছে যায় সে যেন নাদিয়াকে একটু বুঝায় যেন সে তাকে ভালোবাসে কিন্তু শাহনাজ খুশি তাকে ছাপ কথা বলে দেয় সে এ ব্যাপারে কোনরকম সাহায্য করতে পারবে না।

আরফান যে আসলে সত্যিকারের একজন প্রেমিক সেটা তার কথা এবং চাল চলন দেখলেই বোঝা যায় সে আসলেই নাদিয়াকে অনেক বেশি ভালোবাসে এবং মন থেকে। সে মাঝে মাঝে অনেক রকম উপায় অবলম্বন করে না দিয়াকে পাওয়ার জন্য কিন্তু কোন উপায় বা অবলম্বন তার কাজে লাগছে না যার কারণে সে বারবার ছুটে যায় শাহনাজ খুশির কাছে। এদিকে আবার শাহনাজ খুশির সঙ্গে নাদিয়ার খুব ভালো সম্পর্ক যার কারণে সে বারবার তার কাছে ছুটে যায়।

আপনারা সকলেই জানেন যে বাসার সাহেবের মেয়ে এবং তার জামাই তার বাসায় এসে উপস্থিত হয়েছে। এদিকে বাসা সাহেবের জামাই সে বরাবরই অনেক চালাক চতুর একজন মানুষ সে তার প্রত্যেকটা সন্তানের মাথার মধ্যে এটা ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে যে আপনারা যদি সম্পত্তি ভাগাভাগি করে নেন তাহলে খুব দ্রুতই আপনারা বিয়ে করতে পারবেন। আর এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সে বাসার সাহেবের বড় দুই সন্তানকে ডেকে নিয়ে গিয়েছে নির্জন এক জায়গাতে। সেখানে গিয়ে সে তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে তার বাবার কাছ থেকে সম্পত্তি নিয়ে নিতে।

যদিও তার বড় ছেলে তাকে বলে দিয়েছে যে বাবা কখনোই সম্পত্তি দেবে না আর এদিকে বাসার সাহেবের মেজো ছেলে এখন বিয়ে করার দিকে তেমন একটা মন নেই সে বরাবরই এখন একটা মোটরসাইকেল কেনার জন্য ইচ্ছে পোষণ করেছে। কিন্তু তার বাবা তাকে সেই মোটরসাইকেল কিনে দিতে রাজি হচ্ছে না যার কারণে সে অনেক বেশি কষ্ট পাচ্ছে এবং সে এটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না। পছন্দের জিনিস যদি না পাওয়া যায় তাহলে খারাপ লাগাটা স্বাভাবিক।

এরপরে চঞ্চল চৌধুরী তার বোনের কাছে যায় মূলত তার বোনের কাছে যায় এ কারণে যে সে কেন তার ছোট মায়ের সঙ্গে এরকম ভাবে খারাপ ব্যবহার করেছে। কিন্তু তার বোন বরাবরই অনেক বেশি রাগান্বিত এবং তার বোনকে দেখে ভাইয়েরা খুবই ভয় পায়। তার বোনের কাছে গিয়ে এসে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়াতে তার বোন আরো বেশি রাগান্বিত হয়ে যায় এবং বলে যে এই বাসা থেকে তোকে সহ তোর ছোট আমাকে বের করে দেব। এ কথা শুনে চঞ্চল চৌধুরী আরো বেশি রাগান্বিত হয়ে যায় এবং তার ছোট মা তার কাছে যা যা বলেছে সেটা মিলে যায়। আর এ কথা শোনার পরে চঞ্চল চৌধুরী বলে যে বাবার সাথে কথা বলে তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়। আসলে সম্পত্তির জন্য যে ভাই এবং বোনের মাঝে মারামারি ঝগড়া হয় সেটা এই অংশে গভীরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

হঠাৎ করে একদিন রাত্রেবেলা বাসার সাহেব তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ করে মূলত ঘরে প্রবেশ করেছে সে তাকে খুন করার জন্য আর এদিকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী তাকে দেখে তো মহা খুশি। যদিও বাসার সাহেবের চলন বলন দেখলে এখন পর্যন্ত মনে হয় যে সে বিয়ে করেনি হয়তোবা মৌসুমী হামিদ তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে কোনো একভাবে। এরপরে বাসার সাহেব অনেক বেশি রাগান্বিত হয়ে যায় যার কারণে সে তার গলা চেপে ধরে আর তখনই মৌসুমী হামিদ চিৎকার করতে থাকে। তার এই চিৎকার শুনে বাসার সাহেব তার রুম থেকে দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায় আর এটা দেখে মৌসুমী হামিদ জোরে জোরে হাসতে থাকে।

নাটকের এই অংশটা দেখে আমি সত্যিই অনেক বেশি হেসে এসেছে কারণ বাসার সাহেবের দৌড়ে চলে যাওয়ার দৃশ্যটা সত্যিই অসাধারণ ছিল। বৃদ্ধ বয়সে যে মানুষ এতটা ভয় পায় সেটা খুব কাছ থেকে এরকম ভাবে দেখে খুবই ভালো লেগেছে।

এর পরের অংশের লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে চঞ্চল চৌধুরী তার দুলাভাইয়ের সঙ্গে তার প্রেমের ব্যাপারে কথা বলছে এবং তার দুলাভাই তাকে এ ব্যাপারে বুদ্ধি দেয় যে যত দ্রুত সম্ভব তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলতে হবে। আর এ কথা শুনেই চঞ্চল চৌধুরী নাদিয়ার জানালার সামনে চলে যায়। নাদিয়া প্রথম অবস্থায় ভেঙেছে যে এখানে হয়তোবা আরফান এসেছে তাকে ডিস্টার্ব করার জন্য। যার কারণে সে গরম পানি নিয়ে এসেছে তার মুখে ছুড়ে মারার জন্য তাহলে ব্যাপারটা বুঝতেই পারছেন যে গ্রাম গঞ্জের মেয়েরা কতটা ডেঞ্জারাস। গরম পানি নিয়ে এসেছে তার মুখে ছুড়ে মারার জন্য হাহাহা।

এরপরে নাদিয়া চঞ্চল চৌধুরীকে দেখে বলে যে এবার বলো তাহলে কেন এখানে এসেছ। এ কথা শোনার পরে চঞ্চল চৌধুরী তাকে বলে যে দুলাভাইয়ের সঙ্গে তোমাকে নিয়ে কথা বলছিলাম তাই তোমাকে দেখতে আসলাম আর এই কথা শুনে নাদিয়া খুবই খুশি হয়। এবং চঞ্চল চৌধুরী তাকে এটা জানায় যে দুলাভাই তাকে বলেছে যে যত দ্রুত সম্ভব বিয়ে করে নিতে। একটা মেয়েকে যখন তার প্রিয় মানুষ বিয়ে করতে চায় এবং তার আশেপাশের মানুষও তাকে সাপোর্ট করে তখন সেই মেয়েটা কতটা খুশি হতে পারে আপনারা হয়তো বা বুঝতেই পারছেন। আর এর মাধ্যমে পিতা বনাম পুত্রগং নাটকের ৫০ পর্বের শেষ হয়ে যায়।

আশা করছি আমার এই ৫০ পর্বের রিভিউ আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজার নয় এখানেই শেষ করছি সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ‌ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে.....!!

শিক্ষণীয় দিক-

পিতা বনাম পুত্রগণ নাটকটি মূলত একদম বাস্তবতা অবলম্বনে নির্মিত করা হয়েছে। ‌ অনেক আগে গ্রাম অঞ্চলের লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে পিতা মাতারা তাদের সন্তানদেরকে বিয়ে দিতে মোটেও চাইত না। মূলত তারা বিয়ে দিতে চাইতো না কারণ তারা ভাবতে হয়তো অন্য ঘরের মেয়েরা সংসারে আসলে তারা সংসারটা নষ্ট করে দেবে বা তাদের ছেলেরা তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে। কিন্তু ছেলেদেরকে বিয়ে না দিলে তারা যে কতটা উতোলা হয়ে পড়ে সেটা এই নাটকটা দেখলে বোঝা যায়। নাটকের মধ্যে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বিয়ে করার জন্য বাসার সাহেবের পাঁচ সন্তান খুবই উৎফুল্ল কিন্তু বাসার সাথে তাদেরকে বিয়ে দিচ্ছে না। মূলত এই নাটকের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, সন্তানদেরকে পর্যাপ্ত বয়সে বিয়ে না দিলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

ব্যক্তিগত মতামত-

প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই সকাল আহমেদ স্যারকে এত সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। পিতা বনাম পুত্রবাগ নাটকের মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি এবং শিখছি। আমার মনে হয় এটা একটা বাস্তবধর্মী নাটক যেটা কিনা বর্তমান সময়ের সঙ্গেও কিছুটা মিল রয়েছে। বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যারা কিনা সন্তানদেরকে দিয়ে দেয় না কিন্তু তার সন্তানেরা বাবা মার কাছে বলতেও পারে না যে তারা বিয়ে করবে। এটাই মূলত নাটকের মূল বিষয়বস্তু। আমি মনে করি এই নাটকটি সকল পিতা-মাতার দেখা উচিত এতে করে তারা এই নাটকের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবে।

ব্যক্তিগত রেটিং-