নদীর ঘাটে নৌকা নেই..!!

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আজ--০৭ পৌষ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | শীতকাল|



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে একটা জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করব, যে পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন যে হঠাৎ ঘাটে নৌকা না থাকায় কি ধরনের বিপত্তিকর ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলাম। এই ব্যাপারটা নিয়ে আপনাদের মাঝে নতুন একটা পোস্ট শেয়ার করব, আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • ঘাটে নৌকা নেই।
  • আজ-০৭ পৌষ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  • শুক্রবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ রাত্রি সবাইকে......!!


কিছুদিন আগেই বাসায় চলে এসেছি আর বাসায় আসলেই ভাই ব্রাদারের সঙ্গে সবসময়ই ঘোরাঘুরি অনেক বেশি হয়। আমরা সকলেই প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে অনেক বেশি ভালবাসি কারন প্রকৃতি যে কতটা সুন্দর সেটা প্রকৃতির সান্নিধ্যে না গেলে কেউ কখনোই বুঝতে পারে না। এজন্যই আমরা মাঝে মাঝে বিকেল বেলা চলে যাই নদীর ধারে আমাদের এলাকার পাশে ছোট্ট একটা নদী আছে আর এই নদীতে বর্ষা মৌসুমে প্রচুর পানি থাকে যখন বর্ষা মৌসুম শেষ হয়ে যায় তখন পানিটা অনেকটাই শুকিয়ে যায়। আর সেই শুকনো জমির উপর কৃষকেরা তাদের সবজি চাষ করে সে সাথে অনেক ফসল জন্মায়। বর্তমান সময়ে যেহেতু পানি নেই তাই তাদের জমিতে সরিষা বপন করেছে সরিষাতে এখন চারিদিকে ফুল ফুটেছে। পুরো মাঠ হলুদের ছেয়ে গেছে, মাঠের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে মনে হয় যেন চারিদিকে শুধু হলুদ আর হলুদ। আর সেই সরিষা ফুলের মাঝখানে গিয়ে বসে থাকতে কতটা ভালো লাগে আপনারা একবার ভাবুন..!!

প্রতিবছর সরিষা গাছে যখন ফুল ফোটে তখনই আমরা বেশ কয়েকবার সেই সরিষা জমির কাছে গিয়ে মাঝখানে বসে গল্প করি প্রায় সন্ধ্যে অব্দি। এবার বাসায় তেমন কেউ নেই হাতে গোনা আমরা তিন থেকে চারজন বাসায় এসেছি সকলেই যে যার কাজে ঢাকায় এবং অন্যান্য জায়গায় অনেক বেশি ব্যস্ত রয়েছে তবে নির্দিষ্ট একটা সময় সকলেই একত্রিত হবে। যেহেতু আমার পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে তাই আমি অনেক আগে আগেই বাসায় চলে এসেছি বাসায় এসেই গত পরশুদিন গিয়েছিলাম মাঠ ভ্রমণ করতে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে। এবার আমরা চার থেকে পাঁচ জন মাঠ ভ্রমণ করতে গিয়েছিলাম প্রতিবার বাইক নিয়ে মাঠ ভ্রমণ করতে যায় কিন্তু এবার যেহেতু মানুষ কম যার কারণে আমরা হেঁটে হেঁটেই মাঠ ভ্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।

বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা করে প্রথমে আমরা বড় একটা মাঠ পাড়ি দিয়ে চলে গিয়েছিলাম আরেক মাঠে। মাঠে যখন আমরা পরে দিয়েছিলাম দুপাশে সরিষার ক্ষেত আর মাঝখানের অইল ধরে আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম। এরপরে চলে যাই আমরা অন্য আরেক নদীর ধারে ওই নদীটা আমরা পার হয়েছিলাম নৌকায়। যদিও সেখানে নৌকা ছিল না একটা মাত্রই নৌকা ছিল তবে কার নৌকায় আমরা সেটাও জানি না। যেহেতু নদী পার হতে হবে তাই আমরা কোন কিছু না ভেবে ওই নৌকাটা নিয়ে নদী পার হয়ে গিয়েছিলাম।

field-213364_1280.jpg

source


নদী পার হয়ে মস্ত বড় একটা ফসলি জমি এই ফসলি মাঠে কৃষকেরা তাদের অনেক ফসল ফলায় এবং এই ফসল দিয়েই তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। এই মাঠে আমাদের অনেক জমি রয়েছে। এরপরে আমরা হাটতে হাঁটতে দূর থেকে বহু দূরে চলে যাই যেহেতু অনেকটা সময় হাতে রেখেই আমরা মাঠ ভ্রমণ করতে বের হয়েছে যার কারণে আমাদের বাড়ি ফেরার অত তাড়া নেই। অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে আমরা চলে যাই একটা তাল গাছের নিচে। চারিদিকে ফসলি জমি আর মাঝখানে মস্ত বড় এক তালগাছ সেখানেই বসে চৈত্র মাসে কৃষকেরা কিছুটা স্বস্তি পায়। কাজ করতে করতে যখন তারা হাঁপিয়ে যায় তখন তারা সেই তাল গাছের নিচে গিয়ে কিছুটা রেস্ট করে। যেহেতু আমরা অনেকটা পথ হেঁটেছি তাই আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে এই তাল গাছের নিচে কিছুটা সময় রেস্ট করব।

আমরা সেখানে বসে অনেকটা সময় গল্প করছিলাম, বুঝতেই পারছেন অনেকদিন পরে ভাই ব্রাদারের সঙ্গে দেখা কত দিনের গল্প জমে আছে এক একজনের মনে। গল্প করতে করতে অনেকটা সময় পার হয়ে গিয়েছিল এরপরে পাশে থাকা একজনের ফোনে একটা ফোন আসে এবং তাকে খুব দ্রুতই বাসায় যাওয়ার জন্য বলা হয়। এরপরে আমরা তাকে অনেকবার রিকোয়েস্ট করেছিলাম থেকে যাওয়ার জন্য কিন্তু সে বলল তাকে নাকি যেতেই হবে যার কারণে তাকে আর ধরে রাখেনি বললাম ঠিক আছে তাহলে চলে যাও। কিন্তু তাকে এই শর্তে যেতে বলেছিলাম যে নৌকা যেহেতু আমরা এই পাড়ে নিয়ে এসেছি তোমাকে নৌকা ছাড়া ঘুরে বাসায় যেতে হবে।

boat-164977_1280 (1).jpg

source


সেই সময়টাতে সে রাজি হয়েছিল সে বলেছিল যে নৌকা নিয়ে এসে যাবে না সে অন্য পথ ঘুরে একটু দেরি হলেও অন্য পথ দিয়ে যাবে। আমরা মনে মনে এটাই ভেবেছিলাম সে হয়তো বা নৌকা নিয়ে যাবে না। যখন মাগরিবের আজান হয় তখন আমরা সেই তাল গাছের নিচ থেকে উঠে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিব ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। মাঠে একটা মানুষ জন কিছুই নেই শুধুমাত্র আমরা চারজন। হাঁটতে হাঁটতে আমরা যখন নদীর কাছে এসে দাঁড়ালাম তখন দেখলাম যে সেখানে নৌকা নেই, এবার তাহলে ভাবুন কতটা রাগ হচ্ছিল সেই সময়টাতে।

যেহেতু নৌকা ওপারে কেউ নিয়ে গিয়েছে যার কারণে আমাদেরকে প্রায় দু থেকে তিন কিলো পথ ঘুরে হেঁটে বাসায় যেতে হবে। খুবই খারাপ লাগছিল সেই সময়টাতে। কিন্তু যেহেতু আমাদেরকে বাসায় যেতেই হবে তাই কিছু করার ছিল না যার কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে দুই থেকে তিন কিলো পথ ঘুরে হেঁটে হেঁটে আমরা বাসায় যাব। আর মনে মনে ভাবছিলাম যে বাসায় গিয়ে ওকে আচ্ছা মত কথা শোনাবো। বাসায় গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করা তো সে বলল আমি নৌকা নিয়ে আসেনি আমি ঘুরে বাসায় এসেছি।

people-7375714_1280.webp

source


একথা শুনে আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম সে হয়তোবা মিথ্যে কথা বলছে কিন্তু পরবর্তীতে সে এমন ভাবে বলছিল মনে হচ্ছিল যে সে আসলেই নৌকা নিয়ে আসেনি তখন আমরা ভেবেছিলাম হয়তোবা অন্য কেউ অন্যকার নিয়ে এসেছে। সেদিন নৌকাটা আমরাই মূলত এপার থেকে ওপারে নিয়ে গিয়েছিলাম যাতে করে আমরা খুব দ্রুতই নৌকাতে করে আবার বাসায় চলে আসতে পারি। কিন্তু নৌকাটা যেহেতু ওপারে ছিল না যার কারণে আমাদেরকে অনেকটা সময় নিয়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় আসতে হয়েছে অনেকটাই কষ্ট হয়েছিল। বাসায় আসতে আমাদের হেঁটে হেঁটে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় লেগেছিল। তাহলে বুঝতেই পারছেন কতটা কষ্ট হয়েছিল।

কষ্ট হলেও আমরা হেঁটে হেঁটে অনেকটা সময় নিয়ে গল্প করতে করতে এসেছিলাম বেশ ভালই লেগেছিল আকাশে জোসনা ছিল। জোসনা টা বেশি আলোকময় ছিলনা। নিকষ কালো অন্ধকার আর সেই সাথে জোছনার এক ফালি আলো বেশ ভালই লাগছিল। যার কারণে এই দিনটা আমাদের কাছে একটা স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে। বেশ এনজয় করেছিলাম সেদিন আর সেদিনের সেই ইনজয়ের মুহূর্ত সহ দুঃখ কষ্টের মধ্যে কাটানো মুহূর্তের গল্পটাই আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।

এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়নদীর ঘাটে নৌকা নেই..!!
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 6 months ago 

আপনারা সবাই মাঠ ভ্রমণে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো।আসলে হয়তো আপনারা অন্যের নৌকা না বলে নিয়ে আসার কারনেই যার নৌকা সে নিয়ে চলে গিয়েছিল।আপনারা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরে ছিলেন রাতের অন্ধকারে এই অনুভূতিটা আসলেই ভিন্ন রকমের।গরমকালে তালগাছগুলি বেশ কাজে দেয় চাষীদের।আর কার নৌকা সেটা কি আপনারা জানতে পেরেছিলেন ভাইয়া?ধন্যবাদ আপনাকে।

 6 months ago 

নৌকাটা যে কার ছিল সেটা আমরা এখন পর্যন্ত জানতে পারিনি। আসলেই নৌকা ওপারে থাকার কারণে আমরা অনেকটা পথ হেঁটে বাসায় ফিরেছিলাম তবে চাঁদনী রাতে হালকা কুয়াশার মাঝে হাঁটতে বেশ ভালই লাগছিল। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 54635.52
ETH 2893.76
USDT 1.00
SBD 2.03