হঠাৎ গভীর রাতে বাসার ফেরা
আজ--২৯ বৈশাখ| ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রবিবার | গ্রীষ্মকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- গভীর রাতে বাসায় ফেরা।
- আজ--২৯শবৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
- রবিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ রাত্রি সবাইকে......!!
আমরা যারা বাসার বাহিরে থাকি তারা সবসময়ই বাসায় যাওয়ার জন্য অনেক বেশি মরিয়া হয়ে থাকি। অনেকেই হয়তোবা লেখাপড়া করার উদ্দেশ্যে বাহিরে থাকে আবার অনেকেই কাজকর্ম করার উদ্দেশ্যে বাহিরে থাকে। মূলত আমি আগে লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে বাহিরে থাকলেও এখন মোটামুটি কিছুটা কাজকর্ম করার উদ্দেশ্যেও বাইরে থাকি। তবে আজ আমি আপনাদের মাঝে যে পোস্টটা শেয়ার করব এটা যখন লেখাপড়া করার উদ্দেশ্যে বাইরে থাকতাম তখনকার। বলতে পারেন এটা কয়েক মাস আগের একটা পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করব করব বলে আর করা হয়ে ওঠেনা। হঠাৎ করেই আজকে গ্যালারি করতে গিয়ে সেই ফটোগুলো যখন সামনে চলে আসো তখন সিদ্ধান্ত নিলাম তাহলে আজকে এই পোস্টটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করি। অনেকদিন আগে ছোট বোনের জন্মদিন ছিল ছোট বোনের জন্মদিন উপলক্ষে তাকে উইশ করার কথা আমার খুব একটা মনে ছিল না। আর আমি কার কবে জন্মদিন এটা খুব একটা মনে রাখি না সত্যি বলতে এসব কিছু আমার মনে থাকে না। যেহেতু তার জন্মদিন ছিল আর আমি তাকে উইশ করিনি যার কারণে তার মনটা অনেক বেশি খারাপ ছিল। সত্যি বলতে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে এই তারিখে আমার ছোট বোনের জন্মদিন।
সারাদিন আর বাসায় ফোন দেওয়া হয়নি কারণ ভার্সিটিতে ক্লাস থাকার কারণে অনেকটাই ব্যস্ত ছিলাম। সন্ধের আগ মুহূর্তে বাসায় যখন ফোন দিলাম তখন আম্মু আমাকে বলল যে, আজকে একটা দিন ছিল তুই কি ভুলে গিয়েছিস..?? আম্মুর এই কথাটা শুনে আমি রীতিমতো অবাক হচ্ছিলাম এবং মনে মনে ভাবছিলাম যে আজকে আবার কোন স্পেশাল দিন আছে নাকি মনে মনে চিন্তাভাবনা করছিলাম যে আজকে কি এমন স্পেশাল দিন যেটার কথা আম্মু আমাকে বলছে সত্যি বলতে তখন পর্যন্ত আমার মনে নেই যে আজকে আমার ছোট বোনের জন্মদিন ছিল। এবার আমি যখন আমার ছোট বোনের সাথে কথা বলার জন্য আম্মুকে ফোনটা দিতে বললাম তখন আমার ছোট বোন বলল যে আমি কথা বলবো না। যখনই সে বলল যে আমি কথা বলবো না ঠিক তখনই আমার মনে পড়েছে ওহহ আজকে তো তার জন্মদিন ছিল কিন্তু আমি উইশ করিনি যার কারণে সে কিছুটা মান অভিমান নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইছে না।
আমি অনেকবার আম্মুকে বললাম যে ফোনটা ওর কাছে দিতে কিন্তু আমার ছোট বোন কোন ভাবেই ফোনটা নিল না মূলত সে অনেকটাই অভিমান করেছে আমার উপর। যখন কথা হচ্ছিল তখন প্রায় সন্ধ্যের আগ মুহূর্তেই কথাটা বলছিলাম। এরপরে আমি আম্মুর সঙ্গে কথা বলে ফোনটা কেটে দিয়েই দ্রুত রেডি হয়ে নিলাম বাসায় যাব বলে। আমি তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমাকে এখনই বাসায় যেতে হবে কেন জানি খুবই খারাপ লাগছিল কারণ বড় ভাই হিসেবে আমার এটা দায়িত্ব ছিল যে তাকে ফোন দিয়ে উইশ করা, যেহেতু আমি উইশ করিনি যার কারণে সে অনেকটাই দুঃখ পেয়েছে। ছোট বোনের দুঃখ দেখে কি আর বড় ভাই স্থির থাকতে পারে আপনারাই বলুন..?? আমি দ্রুত রেডি হয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে পড়লাম সন্ধ্যা হবার আগ মুহূর্তে। মনে মনে এটাও ভাবছিলাম যে হয়তোবা এত রাত্রে গাড়ি পাবনা তবে যেহেতু বের হয়ে পড়েছি সেহেতু আমাকে বাসায় যেতেই হবে সেটা যেভাবেই হোক।
এদিকে বাসায় এক বড় ভাইকে ফোন দিয়ে বলে দিলাম যে আমি আজকে রাত্রে বাসায় আসছি সে যেন বাসস্ট্যান্ডে এসে আমাকে নিয়ে যায়। সে আমাকে বলল ঠিক আছে তুই বাসস্ট্যান্ডে আসার আগে আমাকে ফোন দিস আমি বাইক নিয়ে গিয়ে তোকে নিয়ে আসব সে যত রাতই হোক। আসলে কিছু কিছু ভাই ব্রাদার আছে যেগুলো নিজের মনের মত এরা আসলে নিজের মনের দুঃখ কষ্ট গুলো বুঝতে পারি এ ধরনের মানুষগুলো যখন পাশে থাকে তখন নিজের কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। আর আমিও চাই এ ধরনের মানুষগুলো আমার জীবন থেকে যেন কখনোই হারিয়ে না যায়। সমস্ত রকমের বিপদে-আপদে দুঃখে সুখে এই মানুষগুলোকে আমি পাশে পাই। এ ধরনের মানুষ আমাদের জীবনে থাকাটা খুবই জরুরী বলে আমি মনে করি। যাইহোক খুব দ্রুতই গাবতলী গিয়ে বাসে উঠে ডাইরেক্ট একটা টিকিট কেটে ফেলি খোকসা বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য। সত্যি বলতে সেদিন যে ডাইরেক্ট টিকিট পাব এটা কখনোই ভাবেনি কিন্তু ভাগ্যের জোরে ডাইরেক টিকিটটা পেয়ে গিয়েছিলাম যার কারণে খুব একটা বেশি চিন্তিত পেলাম না।
দু থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যেই চলে গিয়েছিলাম পাটুরিয়া ফেরিঘাটে। এই পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে গিয়েই বিপাকে পড়তে হয়েছিল। ফেরি ঘাটে যাওয়ার আগ মুহূর্তেই পড়ে গেল লম্বা এক সিগনাল। এত বেশি জ্যাম ছিল সেদিন রাতের বেলা আমি আপনাদেরকে বলে বোঝাতে পারবো না। ফেরি ঘাট থেকে শুরু করে প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা পর্যন্ত জ্যাম ছিল কিন্তু কেনই বা সেদিন রাতে জ্যাম ছিল সেটা বুঝতে পারলাম না হঠাৎ করেই দেখি রাস্তার দুপাশ দিয়ে বাস ট্রাক লরি এসব কিছু দাঁড়িয়ে রয়েছে বিন্দুমাত্র নড়াচড়া করছে না। সেদিন প্রায় দেড় থেকে দু'ঘণ্টা মতো জ্যামে পড়েছিলাম। এদিকে সেই বড় ভাই ফোন দিচ্ছিল বারবার যে কতদূর পর্যন্ত পৌঁছেছি কিন্তু যখন তাকে বললাম যে জ্যামের কারণে আটকে রয়েছে তখন সে আমাকে কিছুটা আসক্ত করে বলল সমস্যা নেই যত রাতই হোক যে নিয়ে আসবো টেনশন করিস না। এ কথাটা শুনে আমি আর বিন্দুমাত্র টেনশন করিনি।
এরপরে যখন ফেনীতে উঠলাম তখন কিছুটা দীর্ঘশ্বাস ফেলছিলাম। বারবার শুধু এটাই ভাবছিলাম যে কখন ফেরিঘাট পার হব ফেরি পার হবার পরেও আমাকে আবার দু'ঘণ্টা মতো বাসের মধ্যে থাকতে হবে। কারণ খোকসা বাসস্ট্যান্ডে যেতে পাটুরিয়া ঘাট থেকে প্রায় দু থেকে আড়াই ঘন্টার মত সময় লাগে। তবে সেদিন যেহেতু অনেকটাই রাত হয়ে গিয়েছিল যার কারণে বাস ড্রাইভার এত স্পিডে বাস চালাচ্ছিল যে খুব দ্রুতই খোকসা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে গিয়েছিলাম। মোটামুটি ভাবে আমি রাত দুটোর মধ্যে খোকসা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে গিয়েছিলাম আর এদিকে বড় ভাইকে আগেই ফোন দিয়ে রেখেছিলাম গিয়ে দেখি সে বাসস্ট্যান্ডে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সাথে আরো একজন নিয়ে এসেছে। অনেকদিন পরে তাদের সঙ্গে দেখা হলো সেখানে কিছুটা সময় বসে টং দোকান থেকে চা খেয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আর ছোট বোনের জন্য কিছু চকলেট কিনে নিয়েছিলাম। এত রাত্রে কোন বেকারের দোকান খোলা না থাকায় কেক আর নিয়ে যেতে পারেনি।
বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় তিনটা বেজে গিয়েছিল। তিনটার সময় বাসায় গিয়ে দেখি সকলেই ঘুমিয়ে পড়েছে। সকলকে ঘুম থেকে জেগে উঠানোর পরে সকলেই আমাকে দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে গেল। বেশি অবাক হয়েছে আমার ছোট বোন, যখন সে আমাকে দেখলো তখন সে আমাকে বলছে যে আমি মনে মনে ভাবছিলাম যে তুই হয়তো তুই বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিস। আমি তখন বললাম যে তুই মন খারাপ ছস বলেই তো এত রাত্রে আমাকে আসতে হলো, ফোনে যদি একটু কথা বলতি তাহলে হয়তোবা আর এত রাত্রে আসতে হতো না কালকে চলে আসতাম। এরপরে আব্বু আম্মু এবং ছোট বোনের সঙ্গে কিছুটা সময় গল্প করে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
সত্যি বলতে সেদিনের সেই জার্নি টা আমার কাছে অনেকটাই অন্যরকম ছিল। অন্যান্য জার্নি থেকে সেদিনের সেই জার্নিটা খুব একটা বেশি আরামদায়ক ছিল না সবসময়ই মনের মধ্যে এক অশান্তি কাজ করছিল যে কখন বাসায় পৌঁছাবে। যাইহোক অনেক সাধনার পরে বাসায় পৌঁছে গিয়েছিলাম এটাই অনেক বড় কথা। রাতের বেলা এভাবে কখনো জার্নি করা হয়নি সেটাই ছিল প্রথম রাতের বেলা একা একা জার্নি তবে বেশ উপভোগ করেছিলাম। এটাই ছিল আমার আজকের পোস্ট আশা করছি আপনাদের ভালো লেগেছে, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | হঠাৎ গভীর রাতে বাসার ফেরা |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
বাড়ি ফেরার বিস্তারিত বিষয়গুলো আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে ব্লগ করে শেয়ার করেছেন। খুবই ভালো লাগলো আপনার সুন্দর এই পোস্ট দেখে। আসলে রাত্রে বেলায় মুহূর্তে এভাবে বাড়ি ফেলাটাও কিন্তু বেশি ঢাকা শহর থেকে। তারপরে আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন তাই অনেক কিছু জানতে পারলাম।
সত্যি বলতে আপনি কি কমেন্ট করেছেন সেটা আমার বোধগম্য নয়। একটু চেক করে নিবেন প্লিজ। ধন্যবাদ......