অনেকদিন পরে প্রিয় শহরে
আজ - ২১ আষাঢ় | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বুধবার | বর্ষাকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- অনেকদিন পর প্রিয় শহরে
- আজ ২১শ আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- বুধবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ দুপুর সবাইকে......!!
জন্মগ্রহণ করার পরে আমরা যেখানে বড় হই সে জায়গার প্রতি আমাদের অন্যরকম এক ভালোলাগা ভালোবাসা কাজ করে সব সময়ই। আরে এই ভালোবাসাটা কখনোই শেষ হয় না ভালোবাসাটা তৈরি হয় খুব ছোটবেলা থেকে। যেহেতু খুব ছোটবেলা থেকেই এই ভালোবাসা তৈরি হয় তাই এই ভালোবাসা কখনো মিথ্যে হয়ে যাবে বা কখনো শেষ হয়ে যাবে এটা কখনোই কল্পনা করা যায় না। অনেক রকম ভালোবাসাই আছে যে ভালবাসাগুলো একটা সময় পড়ে শেষ হয়ে যায় কিন্তু মাতৃভূমি বা জন্মস্থানের প্রতি এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে সব সময়ই। হয়তোবা আমরা জীবিকার তাগিদে অনেকেই নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাই হয়তো বা কেউ কেউ বিদেশ পারেনি তবুও অনেক দূরে থেকেও নিজ মাতৃভূমির প্রতি এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। অনেকদিন পরে যখন মাতৃভূমির কাছে ফেরা হয় তখন নিজের কাছে যে কতটা ভালো লাগে সেটা তারাই বুঝতে পারবেন যারা মাতৃভূমি ছেড়ে দূরে গিয়েছেন আবার হয়তোবা কখনো কোন একটা কারণে ফিরে এসেছেন সেই একই জায়গায়।
ছোটবেলা থেকেই গ্রামে বড় হয়েছি শহরকেন্দ্রিক জীবন যাপন করছি এইতো ছয় থেকে সাত বছর। যত দূরেই থাকি না কেন সব সময় প্রিয় জন্মভূমিকে অনেক বেশি মিস করি। যখন ছুটিতে বাসায় ফেরা হয় তখন নিজের কাছে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে কিন্তু যখন আবার এই জনভূমি ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় হয় তখন এতটা বেশি খারাপ লাগে যে বলে বোঝানো যাবে না কখনো ছেড়ে যেতে মন চায় না সবসময়ই মনে হয় এখানেই যদি আমার সকল কিছু হয়ে যেত তাহলে কতই না ভালো হতো। কিন্তু আফসোস চাইলে আমরা সব কিছুই পাই না। আর এক জীবনে মানুষ সবকিছু পাবে এমন কোন কথা নেই অনেক কিছুই আছে যেগুলো আমরা পাব না। অবশ্যই দুঃখ থাকবে তবে এই দুঃখ নেই আমাদেরকে বেঁচে থাকতে হবে।
ঈদের ছুটিতে বাসায় এসেছি অনেক আগেই যেহেতু আমার ভার্সিটি অনেক আগেই ছুটি হয়ে গিয়েছিল তাই শুধু শুধু শহরে থাকার কোন প্রশ্নই আসে না। যদিও আরো কিছুদিন শহরে থেকে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু বিশেষ একটা কারণে আমাকে খুব দ্রুতই বাসায় চলে আসতে হয়। যেদিন বাসায় আসলাম সেদিন আমার মনটা অনেক বেশি খারাপ ছিল কিন্তু কেন খারাপ ছিল এ ব্যাপারে আমি নতুন একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে নিয়ে হাজির হব সেটা অনেক বড় এক কাহিনী। যাই হোক বাসায় আসলাম বাসায় আসার পরের দিন দুপুর বেলা রওনা করলাম প্রিয় শহর কুষ্টিয়াতে।
কুষ্টিয়াতে আমি আমার মধুর সময় গুলো কাটিয়েছি আমার জীবনের সবথেকে সুন্দর মুহূর্ত ছিল কুষ্টিয়া শহরে। সেখানে চার বছর কাটিয়েছি, এই চারটি বছর আমার কাছে সবসময়ই অনেক বেশি রঙিন মনে হয়েছে কখনো খারাপ লাগেনি। মূলত সেখান থেকেই ভালো লাগা তৈরি হয়ে গিয়েছিল আরো ভালোবাসাটা এখন পর্যন্ত বিদ্যমান। কুষ্টিয়া তে গিয়েছিলাম ফোনের কিছু কাজ করানোর জন্য পাশাপাশি অনেকদিন ঘুরাঘুরি হয় না একটু ঘুরাঘুরি করার জন্য। যথারীতি আমি বিকেল সাড়ে পাঁচটায় খুব স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলাম অনেক আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলাম ট্রেনে করে কুষ্টিয়াতে যাব।
Location |
---|
Device :realme 6i |
যখন বাসায় থাকতাম তখন কুষ্টিয়াতে যাওয়ার সময় হলে সব সময় ট্রেনে যাওয়ার চেষ্টা করতাম আর টেনে যাওয়ার সময় এলাকার অনেকের সঙ্গে দেখা হয়ে যেত পুরোটা সময় আনন্দের সঙ্গে কাটতো এই ব্যাপারটা আমার কাছে সবসময়ই অনেক বেশি ভালো লাগ। কিন্তু এবার যখন কুষ্টিয়াতে গেলাম তেমন কারো সঙ্গে দেখা হয়নি পুরোটা পথ একা একা গিয়েছি কারো দেখা পায়নি। অনেকটা সময় স্টেশনে বসে ছিলাম ট্রেন স্টেশনে আসার কথা ছিল বিকেল ছয়টায় কিন্তু ট্রেন প্রায় দেড় ঘন্টা লেট করেছিল যার কারণে স্টেশনে বসে অনেক বিরক্তিকর একটা সময় পার করছি না। কোথাও যাওয়ার সময় যদি গাড়ি সঠিক সময়ে এসে না পৌঁছায় তাহলে কতটা যে খারাপ লাগে এটা হয়তোবা আপনারা অনেকেই জানেন এবং বোঝেন নতুন করে আর এ ব্যাপারে কি বলবো..!! যাইহোক প্রায় সাড়ে সাতটার দিকে ট্রেন স্টেশনে এসে থামল যথারীতি ট্রেনে উঠে পড়লাম কুষ্টিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে। অনেকদিন পরে আবার সেই আগের মত অনুভূতি খুঁজে পেয়েছিলাম অনেক আগে ঠিক এরকম ভাবেই সকলে মিলে একত্রে কুষ্টিয়া যেতাম ট্রেনের মধ্যে আনন্দ করতে করতে।
আজও সেই একই ট্রেন একই সময় কিন্তু সেই মানুষগুলো আর নেই সকলেই এখন অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে নিজেদের জীবন যাপন নিয়ে। যে যার মত ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কেউই আর আগের মত তেমন একটা সময় দিতে পারে না। যাই হোক ট্রেনে করে কুষ্টিয়াতে যেতে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘন্টা মত কিন্তু সেদিন ট্রেন অনেকটাই লেট করেছিল যার কারণে ট্রেন অনেক জোরে যাচ্ছিল আমরা একঘন্টার মধ্যেই কুষ্টিয়াতে পৌঁছে গিয়েছিলাম। কুষ্টিয়া স্টেশনে নেমে আমি যে কাজগুলো করার জন্য কুষ্টিয়াতে এসেছি সেগুলো খুব দ্রুতই শেষ করে দিতে চাচ্ছিলাম কারণ, কুষ্টিয়া থেকে খোকসার উদ্দেশ্যে যে ট্রেন যায় সেটা ঠিক দেড় ঘন্টা পরে মূলত এই ট্রেন আবার পেছনদিকে ব্যাক করে।
যেহেতু আমি একা একা এসেছিলাম আর ট্রেন অনেকটা লেট থাকার কারণে আমার কাজগুলো করতে অনেকটা রাত হয়ে যাবে আর বেশি রাত হয়ে গেলে তখন গাড়ি পাবনা। এটা ভেবেই আমি আগে থেকেই ভেবে দেখেছিলাম পরবর্তী ট্রেনে করে আমি বাসায় চলে যাব তাই খুব দ্রুতই আমি কাজগুলো করার চেষ্টা করছিলাম। যেহেতু ঈদের সময় ছিল তাই রাস্তাঘাটে অনেক ভিড় ছিল আর কুষ্টিয়া শহরে ঈদের সময়ে অনেক বেশি যানজট দেখা দেয়। যানজটের কারণে পথচারীরা চলাচল করতে অনেকটাই কষ্ট করতে হয় তবুও আমি খুব দ্রুতই হাটাহাটি করছিলাম।
Location |
---|
Device :realme 6i |
মূলত আমি কুষ্টিয়া গিয়েছিলাম আমার ফোনের গ্লাস পেপার লাগানোর জন্য এবং ক্যামেরা প্রোটেক্টর টাও অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল সেটা ঠিক করতে পাশাপাশি কিছু কেনাকাটা করার জন্য। কিন্তু এই ঈদের সময়ে যে কুষ্টিয়ার শহরে এত ভিড় হয় সেটা আমার কখনোই জানা ছিল না এর আগে আমি দেখেছি কুষ্টিয়াতে ঈদের সময় ভিড় হয় তবে এরকম ভিড় কখনোই দেখিনি। ফোনের দোকানে গিয়ে রীতিমতো আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল এত মানুষজন যার কারণে নিঃশ্বাস নিতেই খুবই কষ্ট হচ্ছিল। পকেট থেকে ফোনটা বের করে যে আমি দুটো ছবি তুলব সেই সুযোগটা পাচ্ছিলাম না এত মানুষ একেকজনের গায়ের সঙ্গে একেক জন লেগে আছে একদম আঠার মত। খুব দ্রুতই আমি সেখান থেকে কাজ শেষ করে চলে যাই ফুলের দোকানে কিছু ফুল কেনার জন্য। ফুলের দোকানে গিয়ে ফুলের দাম শুনে তো আমার মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল প্রায়। এরপরেও কয়েকটি ফুল কিনলাম ব্যাগে রেখে আমি খুব দ্রুতই স্টেশনের দিকে রওনা করলাম।
আমি যখন রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম ঠিক তখনই দেখলাম যে ট্রেন স্টেশনে এসে থামল আমি একদম সঠিক সময়ে আমার কাজগুলো শেষ করতে পেরেছি যার কারণে ট্রেনে উঠতে পেরেছিলাম আর দুই থেকে তিন মিনিট লেট করলে হয়তো বা আমি ট্রেন মিস করতাম। ভেবেছিলাম ট্রেনের মধ্যে হয়তোবা তেমন একটা ভিড় হবে না কিন্তু প্রতিটা বগিতে এত বেশি ভিড় ছিল যে নিজেকে এই ভিড়ের মধ্যে প্রবেশ করাতে কিছুতেই মন চাচ্ছিল না কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না ওভাবেই যেতে হবে। এরপরের ট্রেনে উঠে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। বাসায় এসে যখন পৌছালাম তখন ঠিক রাত্রি বাজে সাড়ে বারোটা....!!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | অনেক দিন পর প্রিয় শহরে |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
জন্মভূমি যেমনি হোক না কেন কিন্তু নিজস্ব একটা টান পড়ে থাকে। ঈদের সময় নিজের জন্মভূমিতে কুষ্টিয়া জেলাতে বেশ সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলেন বিস্তারিত জানতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে। কারণ যতই টাউনে কিংবা যতই ডিজিটাল পদ্ধতিতে থাকিনা কেন ছোটবেলার সেই স্মৃতি গুলো কখনো মুছে ফেলা যায় না বারবার কাছে টানে পিছু টানে। সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আপনি আমাদেরকে বিস্তারিত শেয়ার করলেন অনেক ধন্যবাদ জান তে পেরে ভালো লাগলো।
সত্যিই ছোটবেলার স্মৃতি কখনো মুছে ফেলা যায় না, ছোটবেলার স্মৃতিগুলো বার বার পিছুটানে। কিছু কিছু স্মৃতি আছে যে স্মৃতিগুলো কখনো মুছে ফেলা সম্ভব নয়। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাই আপনি ঠিক বলেছেন, যার যেখানে জন্ম তার সেই স্থানের প্রতি আলাদা একটা ভালোবাসা অনুভূত হয়। আর এরকম ভালো ভালোবাসা আমার মনে হয় প্রত্যেকের হৃদয়ে রয়েছে। এরই নাম হচ্ছে নাড়ির টান। যতই শহরকেন্দ্রিক জীবনযাপন উন্নত হোক না কেন, নিজের জন্ম স্থানের প্রতি ভালবাসা অনেক অনেক বেশি। আর তাই হয়তো ছুটিতে বাড়িতে আসলে আপনার আর ফিরে যেতে ইচ্ছে করে না। যাইহোক ভাই, আপনার প্রিয় শহরকে নিয়ে আপনার সুন্দর অনুভূতিটুকু তুলে ধরার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
যতই শহরে থাকি না কেন নিজ জন্মস্থানের প্রতি কোন রকম ভালোবাসা সব সময় কাজ করে। সেদিন খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলাম প্রিয় শহরে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া যেখানেই ভার্সিটি বা কলেজ লাইফ অতিবাহিত হয় সেই জায়গার প্রতি আলাদা একটি টান থাকে। আপনি কুষ্টিয়াতে চার বছর অতিবাহিত করেছেন সে জন্য কুষ্টিয়ার প্রতি আলাদা একটি মায়া কাজ করে। ধন্যবাদ ভাইয়া
কুষ্টিয়াতে যে কতটা স্মৃতি আছে সেটা হয়তোবা বলে কখনো বোঝানো সম্ভব নয় আর এই মুহূর্তগুলো এখন সত্যি একা রঙিন অতীত যা চিরদিন থেকে যাবে আমার সাথে। ধন্যবাদ আপনাকে।