"পিতা বনাম পূত্রগং"পর্বঃ-৩৪//নাটক রিভিউ
আজ - ২৫ আষাঢ় | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | বর্ষাকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- নাটক রিভিউ (পিতা বনাম পূত্রগং--৩৪)
- আজ ২৫শ আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- রবিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ দুপুর সবাইকে......!!
ছবিঃ- ইউটিউব থেকে স্কিনশট নেওয়া।
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | পিতা বনাম পূত্রগং । |
---|---|
পরিচালনা | সকাল আহমেদ। |
প্রযোজক | কাজী রিটন |
রচনা | বৃন্দাবন দাশ |
গল্প | রমজান আলী |
আবহ সংগীত | অধ্যায়ন ধাড়া (কলকাতা)মেহেদি হাসান তামজিদ |
চিত্রনাট্য | শামসুল আলম লেলিন। |
অভিনয়ে | মাসুম বাসার,আজিজুল হক,নাদিয়া আহমেদ,শাহনাজ খুশি,প্রাণ রায়,আরফান আহম্মেদ,মৌসুমি হামিদ,শিরিন আলম,ইকবাল হোসেন,আশরাফুল আর্শিষ,শেলি আহসান,সৌম,সেতু,তৌহিদুল ইসলাম তায়েব এবং চঞ্চল চৌধুরী,সহ আরও অনেকে । |
দৈর্ঘ্য | ২০ মিনিট ১০ সেকেন্ড |
পরিবেশনায় | Maasranga TV Official |
মুক্তির তারিখ | ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ ইং |
ধরন | সামাজিক,বাংলা ড্রামা সিরিয়াল |
পর্ব | ৩৪ |
ভাষা | বাংলা। |
দেশ | বাংলাদেশ |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনীঃ-
পিতা বনাম পুত্রগং নাটকের ৩৪ পর্বের রিভিউ এর প্রথম অংশ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বাসার সাহেবের বড় ছেলে শাহনাজ খুশির ভাইকে এবার আঁকড়ে ধরেছে কারণ সে শাহনাজ খুশির বিধবা ননদকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু এখানে বর বাধা হচ্ছে কোনভাবেই বাসার সাহেবের বড় ছেলের শাহানাজ খুশির ননদের সঙ্গে দেখা করতে পারছে না যার কারণে সে শাহনাজ খুশির ভাই এর সাহায্য চায়। কিন্তু শানাজ খুশির ভয় থাকে কোনভাবেই সাহায্য করতে রাজি না কারণ সে হয়তো বা ভাবছে তার আপু এ কথা জানলে তার সঙ্গে রাগারাগি করবে।
আসল কথা হচ্ছে বাসার সাহেবের বড় ছেলের বয়সটা একটু বেশি আর কিছুদিন পরে হয়তোবা তার চুলগুলো অনেক বেশি পেকে যাবে দেখতেও অনেকটা বেশি বুড়া বুড়া লাগবে। যার কারনে সে বিয়ে করার জন্য একদম মরিয়া হয়ে উঠেছে খুব দ্রুতই সে বিয়ে করতে চায়। এদিকে বাসার সাহেবের বড় ছেলে শাহনাজ খুশির ভাইকে অনেকবার অনুরোধ করার পরে সে শেষমেশ রাগী হয় যে সে তার সঙ্গে শাহনাজ খুশির ননদকে দেখা করিয়ে দেবে। বিয়ে করার জন্য যে মানুষ কত কিছু করে সেটা এই নাটকের এই অংশের দৃশ্যটা দেখলেই বুঝতে পারবে।
এদিকে বাসার সাহেব অনেকটাই চিন্তিত, যদিও তার চিন্তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বাসার সাহেব ইতোমধ্যে কবিরাজের সঙ্গে একটা অসুস্থ খেলায় মেতে উঠেছে সেটা হচ্ছে যে সে চেয়েছে যে জিন অথবা ভুত দিয়ে শাহনাজ খুশি কে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেবে। কিন্তু এটা চঞ্চল চৌধুরী অনেক আগেই জেনে গিয়েছে যার কারণে সে কবিরাজকে প্রশাসনিক ভয় দেখিয়েছে আর কবিরাজ থাকে সমস্ত সত্য ঘটনা বলে দিয়েছে আর এটা বাসার সাহেব মাত্রই জেনেছে যার কারণে সে চঞ্চল চৌধুরীর উপর অনেক বেশি রাগান্বিত। চঞ্চল চৌধুরী এদিকে তার ছোট মায়ের পক্ষ নিয়েছে কারণ সে ভেবেছে তার মায়ের পক্ষ নিলে হয়তো বা তার মা তাদেরকে বিয়ে দিয়ে দেবে কিন্তু ভবিষ্যতে কিভাবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সন্তানদেরকে সঠিক সময়ে বিবাহ না করালে সন্তানেরা যে কতটা বেপরোয়া হয়ে যায় সেটা এই নাটকের এই দৃশ্যে বিদ্যমান। তাদের এই খারাপ লাগাটা সত্যিই অনেক বেশি কষ্টের যদিও বাসার সাহেব চাইলেই তাদেরকে বিয়ে দিয়ে দিতে পারে কিন্তু সে তাদের সন্তানদেরকে বিয়ে করাবে না কখনোই যার কারণে তারা একেক জন একেক পন্থা অবলম্বন করেছে। এদিকে বাসার সাহেবের ছোট ছেলের প্রেমিকা এখন আর তাকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না কারণ বাসার সাহেব এই বৃদ্ধ বয়সে বিয়ে করেছে এটা তার পরিবারের জেনে গিয়েছে। সত্যিই এমন পরিবারের সঙ্গে কেউই আত্মীয়তা করতে চায় না যে বৃদ্ধ বয়সে এরকম যুবতী একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে তার বাবা।
এ পর্যায়ে এসে এই দৃশ্যটা দেখে আমার কাছে একদম বাস্তবিক মনে হয়েছে একদম বাস্তবতা অবলম্বন করেই এখানে পরিচালক পুরো ব্যাপারটা বোঝানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু শাহনাজ খুশির ভাই এর কাছে এ ব্যাপারে জানতে গেলে শাহনাজ খুশির ভাই তার সঙ্গে কোন রকম কথা বলতে চায় না।
এর পরের অংশে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে শাহনাজ খুশি এবং আরফান একটা জায়গায় বসে তাদের কথাবার্তা বলছে মূলত আর ফোনের কথা সবসময়ই নাদিয়াকে ঘিরে হয়। আরফান এখন পর্যন্ত বিশ্বাস করে যে চঞ্চল চৌধুরী নাদিয়াকে কবিরাজের কাছে গিয়ে তাবিজ করেছে কিন্তু এটা কখনোই সাহানাজ খুশি মেনে নিচ্ছে না। এখানে আরফান কে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে সে এক নারীতে আসক্ত যদিও তার ছোট মা তাকে অন্য আরেকটা মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছে কিন্তু আরফান নাদিয়া ব্যতীত অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করতে চাচ্ছেনা এবং করবেও না। এই ব্যাপারটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে কিছু কিছু মানুষ আছে যারা সবসময়ই একজনকেই ভালোবাসা দ্বিতীয় যত অপশন আসুক না কেন তারা কখনোই সেই অপশনের দিকে তাকায় না। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় এক নারীতে আসক্ত পুরুষ বরাবরই অনেক বেশি কষ্ট পায়।
এরপরের দৃশ্য লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে চঞ্চল চৌধুরী এবং নাদিয়ার প্রেমলীলা। একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বসে তারা একে অপরের সাথে প্রেমলীলা এমনিতে ওঠে তাদের ভালোবাসাটা দেখে খুবই ভালো লাগছে তবে আরফানের জন্য খুবই কষ্ট হচ্ছে কারণ না দিয়ে প্রথম অবস্থায় আরফানকে অনেক বেশি পছন্দ করত দ্বিতীয় পর্যায়ে এসে সে চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে। ব্যাপারটা এক দিক দিয়ে যেমন ভালো লেগেছে অন্যদের দিয়ে একটু খারাপ লেগেছে বটে।
নাটকের শুরু থেকেই আমরা একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি যে বাসার সাহেব কখনোই মৌসুমী হামিদকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। আর এটা এখন পর্যন্ত এই স্পষ্ট নয় যে মৌসুমী হামিদ আসলেই বাসার সাহেবের দ্বিতীয় স্ত্রী কিনা..!! বরাবরই বাসার সাহেব মৌসুমী হামিদকে দেখে অনেক বেশি রেগে যায় এবং রাগান্বিত হয়ে যায়। কিন্তু মৌসুমী হামিদ বরাবরই বাসার সাহেবকে অনেক বেশি রাগিয়ে তোলে। এবার মৌসুমী হামিদ হঠাৎ বাসার সাহেবের রুমে এসে তাকে বলে সে নাকি হঠাৎ করেই বাবা হতে যাচ্ছে এটা শুনে বাসার সাহেব অজ্ঞান হয়ে যায়। এই অংশটুকু দেখে আমি অনেকটাই হেসেছি কারণ এটা শোনা বা দেখার জন্য কখনোই প্রস্তুত ছিলাম না। নাটকের কিছু কিছু দৃশ্য দেখে মনে হবে এটা একদম বাস্তবতা অবলম্বন করেই তৈরি আবার কিছু কিছু দৃশ্য দেখে মনে হবে খুবই রোমাঞ্চকর এবং হাসির। সত্যি বলতে গ্রাম বাংলার এরকম নাটক দেখতে খুবই ভালো লাগে।
এরপরে বাসার সাহেবের বড় দুই ছেলে অর্থাৎ বড় এবং মেজ দুই ছেলের একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া শুরু হয় কারণ তারা দুজনেই সাহানাজ খুশির ননদকে বিয়ে করতে চায়। মূলত এটাই তাদের সমস্যা তারা যখন যে মেয়ের কথা ভাবে তারা তখনই সেই মেয়েকেই বিয়ে করতে চায় আসলে বয়স বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে তাদের মন মানসিকতা অনেক বেশি পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। যেহেতু অনেক বড় হয়ে গিয়েছে বয়স বৃদ্ধি পেয়েছে তাই ভাবে এই মেয়েটা হাতছাড়া হয়ে গেলে হয়তোবা আর কোন মেয়ে তারা পাবে না যার কারণে তারা কোন যুবতী অথবা বিধবা মেয়ে দেখলেই তারা বিয়ে করতে চায়।
কিন্তু এদিকে বাসার সাহেব মোটামুটিভাবে চিন্তা-ভাবনা করে রেখেছে তাদের সন্তানদের কখনোই বিয়ে দেবে না। মূলত এটাই নাটকের মূল কেন্দ্রিক বিষয় যে ছেলেরা বিয়ে করতে চায় অথচ বাবা তার সন্তানদেরকে বিয়ে দেবে না। ব্যাপারটা যেমন হাস্য রসিক ঠিক তেমনি ভাবে অনেকটাই দুঃখজনক।
শিক্ষণীয় দিক-
পিতা বনাম পুত্রগণ নাটকটি মূলত একদম বাস্তবতা অবলম্বনে নির্মিত করা হয়েছে। অনেক আগে গ্রাম অঞ্চলের লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে পিতা মাতারা তাদের সন্তানদেরকে বিয়ে দিতে মোটেও চাইত না। মূলত তারা বিয়ে দিতে চাইতো না কারণ তারা ভাবতে হয়তো অন্য ঘরের মেয়েরা সংসারে আসলে তারা সংসারটা নষ্ট করে দেবে বা তাদের ছেলেরা তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে। কিন্তু ছেলেদেরকে বিয়ে না দিলে তারা যে কতটা উতোলা হয়ে পড়ে সেটা এই নাটকটা দেখলে বোঝা যায়। নাটকের মধ্যে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বিয়ে করার জন্য বাসার সাহেবের পাঁচ সন্তান খুবই উৎফুল্ল কিন্তু বাসার সাথে তাদেরকে বিয়ে দিচ্ছে না। মূলত এই নাটকের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, সন্তানদেরকে পর্যাপ্ত বয়সে বিয়ে না দিলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
ব্যক্তিগত মতামত-
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই সকাল আহমেদ স্যারকে এত সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। পিতা বনাম পুত্রবাগ নাটকের মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি এবং শিখছি। আমার মনে হয় এটা একটা বাস্তবধর্মী নাটক যেটা কিনা বর্তমান সময়ের সঙ্গেও কিছুটা মিল রয়েছে। বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যারা কিনা সন্তানদেরকে দিয়ে দেয় না কিন্তু তার সন্তানেরা বাবা মার কাছে বলতেও পারে না যে তারা বিয়ে করবে। এটাই মূলত নাটকের মূল বিষয়বস্তু। আমি মনে করি এই নাটকটি সকল পিতা-মাতার দেখা উচিত এতে করে তারা এই নাটকের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবে।
ব্যক্তিগত রেটিং-
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | নাটক রিভিউ |
---|---|
বিষয় | পিতা বনাম পূত্রগং (৩৪ তম পর্ব) |
রিভিউ এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.