অনেকদিন পরে শারীরিক পরিশ্রম

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

আজ - ১৯ কার্তিক | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | হেমন্তকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে শারীরিক পরিশ্রমের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি, শারীরিক পরিশ্রম বলতে যেহেতু নিজেদের মাঠে জমি আছে ছোটবেলায় অনেক কাজ করতাম কিন্তু বড় হবার পরে আর তেমন একটা মাঠে কাজ করিনি। অনেকদিন পরে একটু মাঠে কাজ করলাম এই ব্যাপারটা নিয়ে আপনাদের মাঝে একটা পোস্ট শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • অনেক দিন পরে বাড়ি ফেরা
  • আজ ১৯ কার্তিক, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  • শনিবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ দুপুর সবাইকে......!!


Picsart_23-11-04_11-30-13-377.jpg

কভার ফটো তৈরিতে--@jibon47



আমি মনে করি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য শারীরিক পরিশ্রম করাটা খুবই জরুরী। শারীরিক পরিশ্রম করলে আমাদের মন মানসিকতা অনেক বেশি ভালো থাকে বিশেষ করে রাত্রের ঘুমটা অনেক বেশি ভালো হয়। যদিও আমরা মানুষেরা বরাবরই আরাম প্রিয় লোক আমরা বরাবরই আরাম খুঁজে শুয়ে বসে দিন কাটাতে অনেক বেশি পছন্দ করি। আর যারা বেশি বেশি শুয়ে বসে দিন কাটায় একটা সময় যে তাদের শরীরের মধ্যে অনেক রকম অসুখ-বিসুখ বাসা বাঁধে। এ থেকেই অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয় আমাদের শরীরে। নিজেদেরকে সুস্থ এবং স্বাভাবিকভাবে বাঁচিয়ে রাখার জন্য অবশ্যই আমাদের সকলের কিছুটা হলেও প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি সময়ে অথবা যেকোনো সময়েই শারীরিক পরিশ্রম করাটা উচিত। শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীরের ঘাম ঝরে এবং শরীরের মধ্যে থাকা বজ্র ঘামের সাথে বের হয়ে যায় এটা আমার আম্মু বলে।

ছোটবেলায় অনেক কাজ করতাম কিন্তু বড় হবার পরে আর তেমন একটা কাজ করা হয়নি যার কারণে নিজে থেকেই বুঝতে পারি শরীরটা অনেক বেশি ভারী হয়ে গিয়েছে। ছোটবেলায় আগে প্রতিদিন বিকেলবেলা ফুটবল খেলতাম অনেক দৌড়াদৌড়ি করতাম যার কারণে শরীরটা অনেক বেশি হালকা পাতলা ছিল কিন্তু এখন আর তেমন একটা খেলাধুলা প্লাস বাসার কাজ কর্ম তেমন একটা করা হয়ে ওঠে না যার কারণে খুব অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠি। কিছুদিন আগেই বাসায় এসেছি এবং এখানে এসে একই অবস্থা খুব একটা কাজ নেই সারাদিন বাসায় বসে থাকি বিকেল হলে ভাই ব্রাদারের সঙ্গে বাইকে করে এখান থেকে ওখানে ওখান থেকে এখানে ঘুরাঘুরি করি অনেক রাত অব্দি কাজকর্ম তেমন একটা নেই বললেই চলে।

আজ সকালবেলা হঠাৎ আমার আব্বু বলল মাঠে যেতে হবে কিছু কাজ আছে। যদিও প্রথম অবস্থায় যেতে চাইনি কিন্তু হঠাৎ করেই মনে হল অনেকদিন কাজ কর্ম করা হয় না তাই আর বেশি কথা না বাড়িয়েই রাজি হয়ে যায় মাঠে যাওয়ার জন্য। মূলত এই সময়ে কৃষকেরা মাঠে মটরশুঁটি গম সরিষা এগুলো বপন করে থাকে আমার আব্বু ঠিক তেমনিভাবে আমাদের জমিতে এগুলো বপন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এই জমিগুলো আমাদের বাসা থেকে অনেকটা দূরে তাই সাইকেলে করে এই বিজ জমিতে নিয়ে যেতে হবে,মাঝখানে আবার ছোট্ট একটি নদী আছে যার কারণে একা একা নিয়ে যেতে অনেক বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। যার কারনেই আমার আব্বু আমাকে সাথে করে নিয়ে যেতে চেয়েছে।

এরপরে সাইকেলে মটরশুঁটি সরিষা এবং গম এই তিন প্রকার বীজ সাজিয়ে আমি রওনা করি নিজেদের জমির উদ্দেশ্যে। পথিমধ্যে আব্বুকে বাসায় রেখেই আমি চলে গিয়েছে একা একা যদিও আব্বু অনেকবার বলেছিল যে একা একা যেতে পারবি না, এরপরে আমি আব্বুর কথা না শুনেই দ্রুত সাইকেল চালিয়ে সেই ছোট্ট নদীর কাছে পৌঁছে গিয়েছিলাম।

IMG20231104093242.jpg

IMG20231104093250.jpg

IMG20231104093239.jpg

IMG20231104095320.jpg

নদীর পাশে গিয়ে আমি অপেক্ষা করছিলাম কখন আমার আব্বু এখানে আসবে হঠাৎ আমার আব্বু চলে আসায় দুজন মিলে সাইকেল পার করে ওপরে চলে যাই। নদী পার হওয়ার পরে আমি আবার সাইকেলে উঠে সাইকেল চালিয়ে দ্রুত চেষ্টা করি আমাদের নিজেদের জমিতে যাওয়ার। পথিমধ্যে আমি সাইকেল থামিয়ে কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম সে ফটোগ্রাফি নিচে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। এরপরে আমি আমাদের জমিতে গিয়ে জমির চারদিকে ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম ততক্ষণে আমি ঘেমে একাকার হয়ে গিয়েছি। আমার টি-শার্ট ভিজে ট্রাউজার ভিজে পানি পড়ছে বুঝতেই পারছেন তাহলে কতটা ঘেমে গিয়েছিলাম। যদিও আজকে প্রচন্ড গরম পরছে মাঠে যারা কাজকর্ম করে একমাত্র তারাই বুঝতে পারছে আজকের গরমের তীব্রতা।

এরপরে আমার আব্বু মটরশুটি আমাদের নিজেদের জমিতে বপন করছিল আর আমি কোদাল নিয়ে জমির অয়েল কাঁটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। যদিও আমার আব্বু আমাকে বলেছিল এ কাজ করতে হবে না হাতে ফোসকা পড়ে যাবে কিন্তু আব্বুর কাজ কিছুটা কমিয়ে দেওয়ার জন্য আমি নিজে থেকেই জমির আইল কাটা শুরু করি। মূলত যখন জমিতে বীজ বপন করা হয় তখন চারিদিকের আই ন কেটে সমান করতে হয় আইল সমান থাকলে লাঙ্গল দিয়ে চাষ করলে চাষ অনেক ভালো হয়। এরপরে আমি জমির আইল কাটছিলাম আর আমার আব্বু বীজ বপন করছিল প্রতি মধ্যেই সেখানে চলে আসে লাঙ্গল ওয়ালা, আমাদের জমি চাষ করার জন্য।

ততক্ষণে আমি আরো বেশি ঘেমে গিয়েছি খুব দ্রুতই আইল কাটা শেষ করে আমি বসে ছিলাম। এরপরে লাঙ্গল ওয়ালা লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ করছিল আর আব্বু বীজ বপন করছিল আমি মাঝে মাঝে আব্বুর কাছে সাহায্য করছিলাম, অনেকদিন পরে মাঠের কাজ করে বেশ ভালোই লাগছিল তবে অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম এবং অনেকটা বেশিই হাঁপিয়ে গিয়েছিলাম আজ নিশ্বাস নিতে খুবই কষ্ট হচ্ছিল সেই সময়টাতে।

IMG20231104095349.jpg

IMG_20231104_112604.jpg

IMG20231104101140.jpg

IMG20231104101158.jpg

IMG20231104103331.jpg

IMG20231104103307.jpg

IMG20231104103328.jpg

তৃষ্ণায় আমার গলা একদম শুকিয়ে গিয়েছে, এটা আব্বু অনেক আগেই বুঝতে পেরেছে। যার কারনে বেগে থাকা পানি নিয়ে এসে আমাকে দিয়েছিল, যদিও মাঠে তেমন টিউবওয়েল নেই যার কারণে পানির অনেকটাই সংকট। যদিও আমি পানি খেতে চাইনি কারণ আব্বু এখানে অনেকটা সময় থাকবে যখন তৃষ্ণা লাগবে তখন এই পানি খাবে এটাই ভেবেছিলাম। ভেবেছিলাম বাসায় গিয়েই পানি খাব কিন্তু অনেকটাই তৃষ্ণা লেগেছিল যার কারণে কিছুটা পানি খেয়েছিলাম তখন অনেকটা স্বস্তি লাগছিল।

যেহেতু অনেকটা ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম আর শরীর পুরা ঘেমে গিয়েছিল তাই আব্বু আর বেশিক্ষণ আমাকে মাঠে রাখেনি। বলল সাইকেল নিয়ে দ্রুত বাসায় চলে যেতে আমিও আর বেশিক্ষণ মাঠে থাকিনি। সাইকেল নিয়ে খুব দ্রুতই রওনা করি বাসার উদ্দেশ্যে। বাসায় এসেই আপনাদের মাঝে পুরো ব্যাপারটা তুলে ধরলাম আশা করছি আপনাদের সকলের অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়অনেকদিন পরে শারীরিক পরিশ্রম
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 11 months ago 

ইদানিং আমার মন খুবই খারাপ। হতে পারে আমি একেবারেই কায়িকশ্রম করিনা এটার কারণ এটা। একসময় ফুটবল খেলতাম এখন সেটাও খেলিনা সেজন্যও হতে পারে। তাহলে ভাই অনেকদিন পর চলে গেলেন মাঠে। আপনার আব্বা ঠিকই বুঝতে পেরেছিল আপনার অসুবিধা হবেই। সেজন্যই হয়তো পানি নিয়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে দিয়ে আপনার নতুন একটা অভিজ্ঞতা অর্জন হয়ে গেল।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

সত্যিই আগে ফুটবল খেলা হতো মাঠে গিয়ে কাজ করা হতো শরীরটা খুবই পাতলা ছিল এখন অনেকটাই ভাই হয়ে গিয়েছে, একটু কাজ নাই করতে হাঁপিয়ে উঠি। সেদিন মাঠে গিয়ে একটু কাজ করেছিলাম রাতে ভালো ঘুম হয়েছিল। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

খুবই ভালো লাগলো আপনার সুন্দর এই আজকের পোস্টটা। যেখানে আপনি কৃষি কাজে অংশগ্রহণ করেছেন আপনার আব্বার সহায়তা করার জন্য। আসলে আমাদের উচিত যে কোন মুহূর্তে কৃষিকাজে হাত লাগানো কারণ এতে শরীর ও মন সুস্থ থাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60968.19
ETH 2367.91
USDT 1.00
SBD 2.56