ক্ষণিকের আনন্দ হতে পারে সারাজীবনের কান্না//পর্ব:-০১

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আজ--২০ মাঘ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | শীতকাল|



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে একটা গল্প শেয়ার করব এই গল্পটা আমার খুবই কাছের মানুষকে নিয়ে, গল্পটার মধ্যে আনন্দ ভালোবাসা দুঃখ সবই রয়েছে,আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • ক্ষণিকের আনন্দ হতে পারে সারাজীবনের কান্না
  • আজ-২০ মাঘ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  • শনিবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ বিকেল সবাইকে......!!


আমরা মানুষ, আর মানুষ হিসেবে সব সময় আমাদের মনের মধ্যে আবেগ এবং উত্তেজনা সবসময়ই অনেক বেশি থাকে। যার কারনে আমরা আবেগের বসে হয়তো বা অনেক বেশি উত্তেজিত হয়ে এমন কিছু সিদ্ধান্ত খুব দ্রুতই নিয়ে নেই যে সিদ্ধান্তগুলো হয়তো বা আমাদের জীবনে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো আমরা কোনরকম ভাবনা-চিন্তা ছাড়াই নিয়ে নেই পরবর্তীতে কি হবে আর কি হবে না এটা ভাবার মতো কোনো ক্ষমতা হয়তোবা অনেকেরই থাকে না। কিন্তু যখন সেই আবেগ আমাদের ভেতর থেকে চলে যায় তখন আমরা আসলে বুঝতে পারি যে এইরকম একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া টা আমাদের জীবনের জন্য কতটা যৌক্তিক। সঠিক সিদ্ধান্ত যে কেউ খুব সহজেই নিতে পারেনা সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য কিছুটা সময় নেওয়ার প্রয়োজন কিছুটা ভাবনা চিন্তা করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এমন কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া কখনোই উচিত নয় যে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার ফলে ভবিষ্যতে কষ্ট পেতে হয়, সব সময় ভেবেচিন্তে বুঝে সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত এতে করে ক্ষনিকের কষ্ট হলেও সারা জীবন কান্না করতে হয় না। এই কথাগুলো বলার পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে আর এর পেছনে যে গল্পটা রয়েছে সেই গল্পটাই আমি আপনাদের মাঝে এখন তুলে ধরব।

আমার এক দূর সম্পর্কের খালাতো ভাই আছে। ওদের বাসা আমাদের বাসা থেকে খুব একটা বেশি দূরে নয় হতে পারে ৪০০ থেকে ৫০০ মিটার দূরে। যদিও দূর সম্পর্কের খালাতো ভাই তারপরেও আমরা সবসময়ই একে অপরের সঙ্গে খুব ভালোভাবেই মিশি সেই সাথে পারিবারিকভাবেও সম্পর্কটা অনেক গভীর। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি যে আমার ওই খালাতো ভাই খুব একটা বেশি লেখাপড়া করেনি মাদ্রাসায় পড়তে গিয়েছিল সেখানে গিয়ে কোন একটা ঝামেলায় জড়িয়ে যায় সেখান থেকে মাদ্রাসা লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রিক কোম্পানিতে চাকরি করতো। চাকরি করার বয়স প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর। কিন্তু তার ছোটবেলা থেকে একটাই সমস্যা, সে যেখানেই যায় সেখানে গিয়েই কোন না কোন একটা মেয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তার সঙ্গে সে প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যায়। এটা আমি প্রথম থেকে পরিলক্ষিত করে আসছি একটা কোম্পানি ছেড়ে যখন অন্য আরেকটা কোম্পানির চাকরিতে যায় সেখানে গিয়ে কোন না কোন একটা মেয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয়ে যায় এবং অতি দুঃখের বিষয় সে তখন তাকেই বিয়ে করতে চায়।

এটা আসলে চারিত্রিক সমস্যা কিনা সেটা আমি জানি না তবে সেরকমভাবে কখনো কোন মেয়ের সঙ্গে ঘোরাঘুরি বা সংসার নামক যে পরিকল্পনাটা সেটা কখনোই করেনি। শুধুমাত্র ফোনেই কথা বলতো আমি দেখেছি বাসায় আসার পরেও ফোনে অনেকের সঙ্গে কথা বলতো আসলে কাছে টাকা পয়সা থাকলে যা আর কি হয়। অনেকেই টাকা পয়সা থাকলে টাকা পয়সার মূল্যায়ন করতে জানে না। যাই হোক এরকম ভাবেই চলছিল তার দিন। এ ব্যাপারে আরো অনেক কথা আছে সেগুলো আর না বলি। আমার সেই খালাতো ভাই এর ছোট একটা বোন আছে সে মোটামুটি অনেক ভালো শিক্ষার্থী। মাঝে মাঝে শুনতাম আমার খালাতো ভাই নাকি বলতো যে তার বোনকে বিয়ে দিয়ে দিতে এত লেখাপড়া করিয়ে কি হবে। কিন্তু সেই মেয়েটা লেখাপড়া করতে চেয়েছে কখনোই বিয়ে করতে চায়নি এখন পর্যন্ত লেখাপড়া করছে অনেক সমস্যা উপেক্ষা করেই।

road-sign-273400_1280.jpg

source

বেশ কয়েক বছর জানতাম যে সে নাটোরে কোন একটা জায়গায় একটা মেয়ের সঙ্গে রিলেশন করে এবং তাকে নাকি বিয়ে করতে চায়। এটা জানার পরে আমি ভেবেছিলাম যে এ বয়সে ছেলেরা প্রেম ভালোবাসা করবে এটাই স্বাভাবিক। আমি ভেবেছিলাম সে হয়তোবা এখন পর্যন্ত সেই মেয়েটাকেই ভালবাসে কিন্তু কয়েক মাস আগে জানতে পারি যে সে তাদের বাসার পাশে একটা মেয়েকে ভালবাসে এবং তাকে বিয়ে করতে। এটা জানার পরে আমি তাকে একদিন ফোন দিয়ে বললাম কি ব্যাপার কি শুনছি এসব..?? সে আমাকে বলল যে যা শুনেছিস সেটাই সত্য আমি আমাদের পাশের বাসার ওই মেয়েটাকেই বিয়ে করব। আমি তাকে বললাম তুই না অন্য কোন জায়গায় একটা মেয়েকে ভালবাসতে তার কি অবস্থা। সে আমাকে সোজাসুজি জানিয়ে দিল যে তার সঙ্গে এখন আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই আর আমি এতদিন যা করেছি সবই মিথ্যে ছিল এখন আমি এই মেয়েটাকে সত্যি কারের ভালবাসি এবং আমি তাকেই বিয়ে করতে চাই। কথাটা শুনে রীতিমত অবাক হয়ে গিয়েছিলাম কারণ সে যেই মেয়েটাকে ভালোবাসে তার ফ্যামিলি সম্পর্কে আমি খুব ভালোভাবেই জানি।

আমার সেই খালাতো ভাই যে মেয়েটাকে বিয়ে করতে চায় সেই মেয়ের বাবা খুব একটা ভালো মানুষ ছিল না। সেই সাথে সেই মেয়ের চাচা সহ পরিবারের অন্যান্য মানুষগুলো খুব একটা ভালো ছিল না তারা গ্রামের মধ্যে অন্যরকম উল্টাপাল্টা কাজ করে বেড়াতো সবসময়ই। আমার ছোটবেলা থেকেই একটা বদ অভ্যাস আছে যে আমি সবসময় সবার মুখের উপর কথা বলে দেই বলতে পারেন কিছুটা ঠোঁট কাটা স্বভাবের লোক। এরপর আমি তাকে সাফ জানিয়ে দেই যে ওই মেয়ের ফ্যামিলি তো এরকম ওরকম। এরপরে সেও আমাকে জানিয়ে দেয় আমি ওই মেয়েটাকে বিয়ে করবো তার ফ্যামিলির অন্য কারো না। এটা শোনার পরে বুঝলাম যে সে প্রেমে অন্ধ হয়ে গিয়েছে আবার আমি এটাও মেনে নিলাম যে মানুষের জীবনের সত্যিকারের প্রেম তো আসবে এটাই স্বাভাবিক হয়তোবা এটা তার সত্যিকারের প্রেম বা ভালোবাসা।

decision-1697537_1280.jpg

source

এসব কথা হওয়ার প্রায় দু থেকে তিন মাস পরেই জানতে পারি যে ২ ফ্যামিলি থেকে বিয়ে ঠিক করেছে। এটা শোনার পর আমি তাকে ফোন দিয়ে কনগ্রাচুলেশন জানাই সেই সাথে সে আমাকে জানায় যে আমাকে বাসায় যেতে হবে আমি বললাম ঠিক আছে সমস্যা নেই বিয়ের আগেই চলে যাব। কিন্তু এখানে কথা হচ্ছে যে আমার খালাতো ভাই যে সেই মেয়েটাকে বিয়ে করবে শুধুমাত্র আমার খালাতো ভাই এর আগে ছিল সেই মেয়েটাকে বিয়ে করার জন্য আর আমার খালা খালু, আমার আব্বু আম্মু নানা অন্যান্য সব আত্মীয়-স্বজন কেউই এই বিয়েতে রাজি ছিল না। আমরা কেউই চাইনি যে এরকম একটা পরিবারের সঙ্গে ওর বিয়ে হোক। কারণ আমরা ছোটবেলা থেকেই গ্রামে বড় হয়েছি আর ওই মেয়ের ফ্যামিলি সম্পর্কে আমরা খুব ভালোভাবেই জানি। ওই মেয়ের ফ্যামিলি এমন এমন কিছু কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল যেগুলো আমি এখানে আর প্রকাশ করতে পারবো না আমি অনেক রকম ভাবেই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু সে আমার কোন কথাই শুনেনি এবং বোঝার চেষ্টাও করেনি।

যাই হোক যে বিয়ে করবে তার যদি কোন সমস্যা না থাকে তাহলে অন্য কারো সমস্যা হওয়ার কোন কথা না। অনেক রকম বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে অবশেষে সে তাকে বিয়ে করে ফেলে যদিও এই বিয়েতে আমার নানা আসেনি কারণ সে কোনোভাবেই চায়নি যে তার নাতি এরকম একটা পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করুক। মোটামুটি ভাবে আমিও যেতে চেয়েছিলাম না কিন্তু শুধুমাত্র খালাতো ভাইয়ের দিকটা বিবেচনা করে আমি সেখানে গিয়েছিলাম।খুব একটা বেশি দূরে নয়, বিয়ের দিনে অনেক সুন্দর কিছু ঘটনা রয়েছে যেগুলো আমি পরবর্তী পর্বে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।

আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি আমার সংক্ষিপ্ত পোস্ট, আমি খুব দ্রুতই আপনাদের মাঝে নতুন পর্বটি নিয়ে হাজির হব আশা করছি ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ধৈর্য ধরবেন। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গে থাকে। ধন্যবাদ সকলকে...!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়ক্ষণিকের আনন্দ হতে পারে সারাজীবনের কান্না//পর্ব:-০১
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source


এটাই আমি..!!

IMG-20231204-WA0004-02.jpeg

আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@jibon47



VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 5 months ago 

ভাইয়া আপনার খালাতো ভাই আসলে প্রেমে অন্ধছিল।তা না হলে এমন মেয়ের সাথে কেন রিলেশন করবে। আসলে পরিবারের সবাই সব সময় ভালোই চায়।আসলে কথায় আছে না ভাবিয়া করিও কাজ। যাইহোক যেহেতু বিয়ে পর্যন্ত চলে গেছে দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।

 5 months ago 

আসলেই পরিবারের কেউ তেমন একটা রাজি ছিল না তারপরও সে অনেকটা নিজের ইচ্ছাকৃতভাবেই বিয়েটা করেছে, খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হব। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

 5 months ago 

সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি পড়ে আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে। আসলে আপনার খালাতো ভাই প্রেমে অন্ধ ছিল । তা না হলে পরিবার থেকে সবাই নিষেধ করার পরেও এই মেয়েটিকে তার ভালো লেগেছে। এবং পরবর্তীতে বিয়ে পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। আসলে যে কোন কাজে একটু চিন্তা-ভাবনা করে করা উচিত। এটা ঠিকই বলেছেন ক্ষণিকের আনন্দ সারা জীবনের কান্নাও হয়ে যেতে পারে। যাইহোক পরবর্তীতে কি হল তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

 5 months ago 

আমরা আবেগের বসে মাঝে মাঝে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে সিদ্ধান্তগুলো আমাদের নিজেদের জন্য অনেকটাই খারাপ কিছু বয়ে নিয়ে আসে তারপরও আমরা আবেগ থেকে বের হতে পারি না। সুন্দর একটা মন্তব্য করেছেন পড়ে ভালো লাগলো, পরবর্তী পর্ব নিয়ে হোক শীঘ্রই হাজির হব।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57382.38
ETH 3075.07
USDT 1.00
SBD 2.39