পরীক্ষা শেষ অথচ এসাইনমেন্ট শেষ হয়নি
আজ--০৯ পৌষ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | শীতকাল|
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- পরীক্ষা শেষ অথচ এসাইনমেন্ট শেষ হয়নি
- আজ--০৯ম পৌষ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- রবিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ দুপুর সবাইকে......!!
গত মাসে দ্বিতীয় পর্বের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাটা পুরো এক মাসের বেশি সময় জুড়ে হয়েছিল। একজন শিক্ষার্থীর জন্য পরীক্ষা অনেক বেশি টেনশনের পাশাপাশি মানসিক দিক দিয়ে কিছুটা চাপে থাকতে হয়। এক মাস জুড়ে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরে যেদিন পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছিল সেদিন দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে কিছুটা সময় স্বস্তি পেয়েছিলাম। পরীক্ষা যেহেতু শেষ তাই বাসায় চলে এসেছি কিছুদিন আগেই। বেশ ভালই সময় কাটছিল ঘুরাঘুরি করছি যদিও অনেকেই এখন বাসায় নেই অনেকে ঢাকা এবং ঢাকার বাহিরে রয়েছে তবে খুব শীঘ্রই তারা বাসায় চলে আসবে। প্রতিদিনের মতো সেদিনও সন্ধেবেলায় স্কুলের ফিল্ডে গিয়েছিলাম ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য। ব্যাডমিন্টন খেলেছিলাম প্রায় রাত্রি সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত। এরপর সেখানে বসে কিছুটা সময় গল্প করেছিলাম গল্প করে বাসায় ফিরতে প্রায় সাড়ে বারোটা বেজে গিয়েছিল।
হঠাৎ করে এই হোয়াটসঅ্যাপে একটা মেসেজ চলে আসলো। দেখলাম ভার্সিটির whatsapp গ্রুপ থেকে মেসেজটা এসেছে, প্রথমে ভেবেছিলাম যে পরীক্ষা শেষ হয়েছে রেজাল্ট কবে দেবে এ ব্যাপারটা নিয়েই হয়তো বা কেউ একজন মেসেজ দিয়েছে যার কারণে মেসেজটা প্রথম অবস্থাতে আমি চেক করিনি। যথারীতি মেসেজ চেক না করে আমি শুয়ে পড়েছিলাম। শহরাঞ্চলের শীত না পড়লেও গ্রামাঞ্চলে ভালোই শীত পড়েছে। কম্বলের নিচে গিয়ে কিছুটা স্বস্তি পারছিলাম তারপরেও হাত এবং পা কিছুতেই গরম হচ্ছিল না খুবই ঠান্ডা লাগছিল। ভাবলাম যে ঘুমিয়ে যাব পরক্ষণেই ভাবলাম যেহেতু শুয়ে পড়েছি এখন কিছুটা সময় শুয়ে থাকলে গা গরম হয়ে যাবে, এটা ভাবতেই মনে হল যে ইউটিউবে ভুত এফএম শুনি।
এরপরে মোবাইলের ডাটা কানেকশন অন করে ভাবলাম যে গ্রুপ থেকে কি মেসেজ দিয়েছে সেটা দেখা যাক। গ্রুপের মেসেজ চেক করে আমার চোখ কপালে উঠে গেল এটা আমি কি দেখছি..!!এটা কিভাবে সম্ভব..!! ভার্সিটির স্যার আমাদের সি.আর,কে জানিয়ে দিয়েছে যে এসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। এবং সেটা দুদিনের মধ্যেই সাবমিট করতে হবে google ক্লাসরুমে। একথা শুনে তো আমি খুবই টেনশনে পড়ে গেলাম, হিসেব করে দেখলাম যে আমার কাছে একটা রাত এবং একটা দিন রয়েছে। কিন্তু দিনের বেলা যে আমার লেখাপড়া হবে না এটা আমি ভালো করেই জানি।
দিনের বেলা ঘুরাঘুরি করতেই আমার দিন চলে যায় তাছাড়া ঘুম থেকে উঠতেও অনেকটা দেরি হয়ে যায় যার কারণে দিনের বেলায় অ্যাসাইনমেন্ট লেখার মত সময় আমার নেই। আর আমি যদি দিনের বেলায় না লিখি তাহলে আমার সাবমিট করাটা হয়তো হবেনা। এরপরে গ্রুপে দেখছি অনেকেই অনেক কথা বলেছে কেউ কেউ বলেছে যে এখন আবার কিসের অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষা তো শেষ হয়ে গিয়েছে। যদিও আমি এই গ্রুপে এরকমই একটা কথা বলেছিলাম পরীক্ষা শেষ এখন আবার এসাইনমেন্ট দিতে হবে কেন..!!এটা কোন কথা..!! এরপর আমাদের সিআর বলল যে আমি স্যার কে বলেছিলাম যে স্যার পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে এখন এসাইনমেন্ট জমা দিয়ে কি হবে। একথা বলার পরে স্যার নাকি তাকে বলেছে যে পরীক্ষা খুব একটা ভালো হয়নি কারোরই। অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিলে হয়তো বা কিছুটা মার্ক আসবে অনেকেই পাস করে যাবে।
আমার পরীক্ষা মোটামুটি আলহামদুলিল্লাহ ভালই হয়েছিল আমি এদিক থেকে আশাবাদী যে আমি পাশ করে যাব। কিন্তু স্যার যেহেতু এসাইনমেন্ট চেয়েছে তাই আমাকে তো এসাইনমেন্ট সাবমিট করতেই হবে সেটা যেভাবেই হোক। অনেক ভেবেচিন্তে দেখলাম যে আজকে রাত্রের মধ্যেই আমাকে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হবে। কিন্তু এসাইটমেন্ট লিখতে হলে A4 সাইজের কাগজ লাগবে আর এটা আছে আমার ছোট বোনের রুমে, কিন্তু আমার ছোট বোন তো ঘুমিয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। কি করা যায় এখন তাহলে এটাই ভাবছিলাম। অনেক ভাবনা চিন্তার পরে ভাবলাম যে ওকে ডাক দিয়ে ও রুম থেকে কাগজ নিয়ে আসবো।
যেমন ভাবনা তেমনি কাজ যদিও এই শীতের রাতে ওকে ঘুম থেকে ডেকে তোলার কোন মন মানসিকতা আমার ছিল না। তারপরও এসাইনমেন্ট আমার লিখতে হবে এটা ভেবেই ও-কে কিছুটা সময় ডাকাডাকি করে ঘুম থেকে উঠে ওর রুমে গিয়ে A4 সাইজের কাগজ নিয়ে আমি লেখা করলাম। কিছুতেই লিখতে পারছিলাম না হাতের আঙ্গুল নাড়াতে পারছিলাম না এতটা ঠান্ডা লাগছিল তারপরেও অনেকটা কষ্টে লিখছিলাম বসে বসে। রুমের দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়েছিলাম তারপরও মনে হচ্ছিল রুমের মধ্যে প্রচন্ড বাতাস। আমি এসাইনমেন্ট লিখছিলাম আর ফোনে গান শুনছিলাম বেশ ভালই লাগছিল।
আমি রাত দেড়টার সময় এসাইনমেন্ট লেখা শুরু করেছিলাম আর এসাইনমেন্ট লেখা শেষ হয়েছিল প্রায় সাড়ে চারটার পরে। লিখতে লিখতে প্রায় ১৮ থেকে ২০ পৃষ্ঠা এসাইনমেন্ট লেখা হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে কিছু থিওরি ছিল আর কিছু ছিল ম্যাথমেটিক্স। কিন্তু সত্যি বলতে এই কাজটা আমি সম্পূর্ণই করেছি আমার মনের বিরুদ্ধে এই এসাইনমেন্ট লেখাটা আমার মন একটুও সায় দেয় নি। স্যারকে আগে থেকেই জানানো উচিত ছিল যে পরীক্ষার আগে অথবা পরে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে তাহলে আমরা আগে থেকে সেরকম প্রিপারেশন নিতাম। শেষ পর্যায়ে এসে এরকম এসাইনমেন্ট দেওয়াটা কতটুকু যৌক্তিক..!!
যাইহোক শেষমেষ অ্যাসাইনমেন্ট লেখা শেষ করে ঘুমাতে ঘুমাতে আমার প্রায় পাঁচটা বেজে গিয়েছিল। অনেক রাত অব্দি লেখালেখি করেছিলাম যখন ঘুমাতে যাবো তখন আম্মু আমার রুমে আসে এসে দেখে আমি মাত্র ঘুমাতে যাচ্ছি। আমি ভেবেছি আমি এতক্ষণ ফোন টিপাটিপি করছিলাম আর সারারাত জেগে এখন ঘুমাতে যাচ্ছি। আম্মু আমাকে বলছে যে ফোনের চার্জ এখনো শেষ হয় নাই..?? তখন আমি আম্মুকে বললাম যে আমি আজকে সারারাত অ্যাসাইনমেন্ট লিখলাম মাত্র এসাইনমেন্ট লেখা শেষ হলো এখন ঘুমাতে যাবো। এরপরে আম্মুর সাথে দু একটা কথা বলে আমি ঘুমানোর প্রিপারেশন নিচ্ছিলাম,কারণ আমার চোখে প্রচুর ঘুম ছিল, চোখ দুটো রক্তাক্ত লাল হয়েছিল। তাহলে বুঝতেই পারছেন কতটা ঘুম পাচ্ছিল।
এটাই ছিল আমার আজকের পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | পরীক্ষা শেষ অথচ এসাইনমেন্ট শেষ হয়নি |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
লিখিত পরীক্ষা গুলোতে যা কষ্ট না হয় অ্যাসাইনমেন্ট গুলো লিখতে তার থেকে বেশি কষ্ট হয়।কেননা অনেক লেখা থাকে,এজন্য আপনি ভোর পর্যন্ত লিখেছেন ।এটা আসলে বিরক্তির একটি কাজ।তারপর আপনার আম্মু রুমে এসে ভেবেছেন যে সারা রাত ফোন চালিয়েছেন।আসলে আমরা যা করি গার্ডিয়ান রা তো সেটাই ধারণা করে।কিন্তু দুই একদিন যে কাজের জন্য ও রাত জাগা হয় এটা শুনে তারা অবাক হয়,😁😁।ভালো লাগলো পোস্টটি ।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আসলেই আমারা এমন একটা সময় পার করছি যে যেখানে রাত জেগে লেখাপড়া করলেও মা-বাবা ভাবে যে আমরা ফোন টিপাটিপি করছি। সিস্টেমটা আসলে এমনই হয়ে গিয়েছে, আমার আম্মু তেমনটাই ভেবেছিলাম। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
এসাইনমেন্ট হলো খুবই পীড়াদায়ক একটি কাজ,পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা শেষ হয় কিন্তু এসাইনমেন্ট শেষ হয়না। আপনার কষ্ট আমি বুঝতে পারছি। খুবই বিরক্তিকর একটি সময় পার করছেন। আশা করি এই এসাইনমেন্ট শেষ করে ছুটির বাকিটা সময় ভালো ভাবে উপভোগ করবেন।
আসলেই এসাইনমেন্ট লেখাটা খুবই বিরক্তিকর এর বিরক্তিকর সময়টাই আমি এখন পার করছি মাঝে মাঝে খুবই খারাপ লাগে। শেষ হয়ে গিয়েছে এখন খুবই সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করছি বাসায় এসে। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এই একটা জিনিসের জন্য কত রাত জাগছি হিসাব নেই, সারা মাস ঘুরে ফিরে এবং পরীক্ষার সময় আমি অ্যাসাইনমেন্ট করতে বসতাম, আসলে এই সময়টা এসাইনমেন্ট করতেও খুব কষ্ট লাগে। এতগুলো সাবজেক্ট এতগুলো অ্যাসাইনমেন্ট পড়াশোনা করব নাকি অ্যাসাইনমেন্ট করবা।
আমরা আসলে এমনটাই করি সারা মাস ঘুরে ফিরে যখন পরীক্ষা সামনে আসে তখনই অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে বসি। এটা আসলে আমাদেরই সমস্যা তারপরও কেন জানি আমরা এটাই করি। মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।