গল্প: শিয়াল ও রাজহাঁসের গল্প
গল্পঃ
আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ঘটনা শেয়ার করতে চলেছি। আমি তখন বেশ ছোট ছিলাম। আমাদের বাড়িতে অনেক পাতিহাঁস রাজহাঁস চিনিহাঁস এবং দেশি মুরগি পোষা হতো। বেশ কিছুদিন ধরে শেয়াল গাড়াতে উৎপাত করছে। দিনের বেলায় মুরগি ধরে নিয়ে চলে যায়। একদিন বিকেল বেলায় সমস্ত পশু পাখি গেটের মধ্যে ডেকে আনা হলো। বিকেলের শেষ খাওয়া দিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হলো। মাগরিব হতেই শিয়ালের উৎপাত শুরু হয়ে গেছে। আবু যেয়ে শিয়াল তাড়িয়ে আসলো। এবার রাত হয়ে গেল। আমরা সবাই খাওয়া-দাওয়া লেখাপড়া শেষ করে শুয়ে পড়লাম। হঠাৎ করে ঘরের মধ্যে থেকে শুনতে পারছি আমাদের বাড়ির মোরগ তিনটা বারবার ডেকে উঠছে।
আমরা জানি ফজরের আজান হলে অথবা তার আগে মোরগ ডাক দিতে থাকে। কিন্তু সবে মাত্র রাত দশটা এগারোটা। এই মুহূর্তে মোরগ বাগ না দিয়ে ডাকছে, নিশ্চয়ই কারণ আছে।
হঠাৎ লক্ষ্য করে দেখলাম জোরে জোরে ডেকে উঠছে সব। মুরগির ঘর আর হাঁসের ঘর পাশাপাশি ছিল। আব্বা দ্রুত ঘর থেকে বের হলো। আমিও আম্মার সাথে সাথে ঘরের একটু বাইরের দিকে আসার চেষ্টা করলাম। এর মধ্যে আব্বার টস লাইটের আলোয় লক্ষ্য করে দেখতে পারলাম একটি শেয়াল আমাদের একটি রাজহাঁসের গলা ধরে টানতে টানতে পাঁচিলের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তার এমন সাহস দেখে আমি তো ভয়ে থর থর করে কাঁপছি। আমি রাজহাঁসটিকে অনেক ভালবাসতাম। অন্যান্য রাজহাঁসের মধ্যে সেটা দেখতে অনেকটা সুন্দর এবং সাদা ছিল। তার সারা শরীরের পালক গুলো দেখতে অনেক মানান। তাই আমি ওটাকে বেশি পছন্দ করতাম। কিন্তু শেয়ালি এমন কাজ করবে কে জানে। হাঁসের ঘরটা কাঁটা দিয়ে ঘেরা ছিল। বাঁশের রেলিং ভেঙে এভাবে বের করেছে। হাসির মাথাটা মুখের মধ্যে নিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। আব্বা যতক্ষণে লাঠি নিয়ে দৌড়াতে থাকলো তখনো সে ছাড়ছে না।
এরপর খেয়াল করে দেখলাম আব্বু দৌড়ে সেখানে উপস্থিত হতে রাজহাঁসটিকে টেনে পোয়াল গাদার উপর তুলে ফেলেছে। এরপর কয়েক লাফ দিয়ে ওপারে নিয়ে চলে গেছে। এই মুহূর্তে কিছুই করার ছিল না আমাদের। শিয়ালের গায়ের শক্তি দেখে তো সবাই অবাক। আসলে পাঁচিলের পাশে অনেক কিছু থাকায় বেশ ঝামেলা হয়েছিল তাই সেভাবে সোজাসুজি উপস্থিত হতে না পারায় হাঁসটি নিয়ে চলে গেল। এরপর গেট খুলে বাইরের দিকে গেলেন। আমার অনেক অনেক ভয় লাগছিল তখন। আমার হাত ধরেছিলাম, আম্মাকে বাইরে যেতে মানা করছিলাম। বাড়ির সবার চিল্লা পল্লায় পাশের বাড়ির অনেক মানুষ বের হয়ে আসলো। বাইরে গিয়ে সবাই খোঁজাখুঁজি করতে থাকলো।
কিন্তু ততক্ষণের গেট খুলে বের হতেই শেয়ালটা রাজহাঁস টিকে টেনে বনের মধ্যে নিয়ে কোথায় চলে গেছে। তাই আর রাজহাঁসটিকে পাওয়া গেল না। পাশের বাগানের মধ্যে লক্ষ্য করে দেখা গেল জায়গায় জায়গায় হাঁসের পশম বা পালোক পড়ে রয়েছে। কিন্তু কোনখানে হাঁস খুঁজে পাওয়া গেল না। এরপর ব্যর্থ হয়ে বাড়ির মধ্যে চলে আসলো সব। কিন্তু আরো দেখা গেল হাসির ঘরে আরও দুই একটা হাসের গা ধরে টানাটানি করেছে শিয়ালে। কয়েকটা হাসের ডানা ভেঙে গেছে, গায়ের চামড়া ছিড়ে গেছে। কিন্তু কি আর করার। পরের দিন হাঁসের ঘর ঠিকঠাক করা হলো। ক্ষতিগ্রস্ত হাঁসগুলো জবাই করে খাওয়া হলো। আর এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল হাঁস গুলো।
পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ
বিষয় | গল্প |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei P30 Pro-40mp |
Photo editing | PicsArt app |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
W3w location | source |
দেশ | বাংলাদেশ |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
X-promotion
আজকের কাজ সম্পন্ন
নিজের পোষা প্রাণী কে যদি শেয়াল এভাবে চোখের সামন দিয়ে নিয়ে যায় তাহলে তো অনেক কষ্ট লাগে।আপনার পছন্দের রাজহাঁসকে শেয়াল ধরে নিয়ে যাওয়া দেখে অনেক কষ্ট পেয়েছেন বুঝতে পারছি।ভয়ংকর শেয়াল টি।গ্রামের বাড়িতে শীতের দিনে এভাবে হাঁস মুরগী ধরে নিয়ে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
হ্যাঁ আপু সেদিন বেশি ভয় পেয়েছিলাম এবং খারাপ লেগেছিল।