ইউরো ২০০৪: গ্রিসের শিরোপা জেতার অবিশ্বাস্য গল্প..
Source
ফুটবলে কিছু দল অঘটন ঘটায়, যা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। আজ এরকম একটি দলের গল্প বলবো, যে দলের মূখ্য উদ্দেশ্য ছিলো মেজর কোনো টুর্নামেন্টে শুধুমাত্র একটি ম্যাচ জেতা, কিন্তু তারা মেজর একটি আন্তর্জাতিক ট্রফিই জিতে গেলো।
বলছিলাম গ্রীসের কথা! চলুন জেনে আসি একটি ম্যাচ জেতার উদ্দেশ্য নিয়ে খেলতে নামা দলের শিরোপা জেতার গল্প। ২০০৪ ইউরোর আসর,পর্তুগালে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের আসরটি, অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দূর্বল দলগুলোর মধ্যে একটি গ্রীস, যারা ইতিপূর্বে মাত্র ১টি ফিফা বিশ্বকাপ (১৯৯৪) এবং ১টি ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে (১৯৮০) খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল।কিন্তু দুটো আসরেই একটি ম্যাচ ও জিততে পারেনি তারা, ২০০৪ সালে ইউরো কাপের আসর। তাদের প্রথম ম্যাচটি ছিলো পর্তুগালের বিপক্ষে, অবিশ্বাস্য ভাবে তারা পর্তুগালকে ২-১ গোলে হারিয়ে মেজর কোনো টুর্নামেন্টে তাদের প্রথম জয়লাভ করে। কিন্তু কে জানতো এই জয় দিয়ে তারা ইউরো জেতার মুখোশ উন্মোচন করেছিলো। যেখানে আসর শুরুর আগে কেউ কল্পনাও করেনি তারা গ্রুপ পর্ব পার করতে পারবে। একেরপর এক চমকপ্রদ জয় নিয়ে সেবছর ইউরোর ফাইনালে চলে গেলো কল্পনার বাইরে থাকা এই গ্রীস। ফাইনালে পৌছানোর জন্য গ্রীসকে হারাতে হয়েছিলো শিরোপাধারী ফ্রান্স এবং চেক প্রজাতন্ত্রকে। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ সেই প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ দল পর্তুগাল।
Source
২০০৪ সালের ৪ঠা জুলাই, লিসবনের এস্তাদিও দা লুসে আয়োজিত এই আসরের ফাইনাল ম্যাচ পর্তুগাল বনাম গ্রীসের সাথে। সবাই আগ্রহ নিয়ে বসে আছে ইউরোপ সেরা কোন দল হয় দেখার জন্য। পর্তুগালের তখনকার দলকে সোনালী প্রজন্মের দল বলা হতো। লুইস ফিগো, নুনো গোমেজ, ডেকোদের নিয়ে গড়া দলটা বেশ শক্তিশালী আর তার মাঝে ছিলেন ১৯ বছর বয়সী উঠতি বিস্ময় বালক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পর্তুগালের মানুষ তাদের প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। সবার বিশ্বাস ছিল পর্তুগালের সোনালি প্রজন্ম সত্যিই তাদের আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দিবেন। তরুণ রোনালদো তখন নিজের জাত চেনাতে শুরু করেছেন মাত্র। ড্রিবলিং, স্কিল, ক্ষিপ্র গতি দিয়ে মানুষের মন জয় করতে শুরু করেছিলেম। উইংগার হয়েও ২গোল করেছিলেন। কিক অফের মাধ্যমে খেলা শুরু মুহ মুহ আক্রমণ করছে পর্তুগিজ রা কিন্তু সাফল্য আসছে না। ফিগো, রোনালদোরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পক্ষান্তরে গ্রীক রা যেন গোল না খাওয়ার পন করেছিল তাই ডিফেন্সকে জমাট বরফের মত শক্ত করে রেখেছিল। প্রথম হাফ শেষ হল, কিন্তু ফলাফল 0-0।
Source
দ্বিতীয় হাফ শুরু হতেই আবার জমজমাট আক্রমণ ও জমাট ডিফেন্সের লড়াই। হঠাৎ গ্রীস পাল্টা আক্রমণ করে বসলো ফলশ্রুতিতে কর্নার পেলো গ্রীস। গ্রীসের মাত্র দুইজন প্লেয়ার ছিল পর্তুগালের বক্সে, ওদিকে গোল করার নেশায় পর্তুগিজ রা সবাই তখনও মাঝমাঠে ও গ্রীসের ডিবক্সে। দুইজন গ্রীসের প্লেয়ারের সাথে শুধু দুজন ডিফেন্ডার পাহারা দেয়ার দায়িত্বে আছেন। কর্নার নিলেন গ্রীসের একজন, পারফেক্ট কর্নার যাকে বলে, বল বাক খেয়ে বক্সের টিক সামনে এসে পড়ে, লাফিয়ে উঠে হেড করেন পেছনে থাকা আঙ্গেলোশ খারিস্তেয়াস, গোল, গোল, গোল পুরো স্টেডিয়াম হতবাক। সেই সাথে পুরো বিশ্ববাসী বিস্মিত । সেই গোলের সাথে পর্তুগালের স্বপ্ন মাটিতে মিসে গেলো।অনেক চেষ্ঠা করেও আর কোন গোল হল না। ফিগো ডেকোদের সাথে তরুণ রোনালদোর কান্না জরিত মুখ দেখেছিলো বিশ্ববাসী। শেষমেশ সবাইকে তাক লাগিয়ে শিরোপা নিজেদের ঘরে তুলে নেয় আন্তর্জাতিক আসরে প্রথম একটি ম্যাচ জেতার উদ্দেশ্যে খেলতে নামা গ্রীস।
Buena publicación amigo, esa Eurocopa quedara para el recuerdo, ese equipo demostró de que no todo es un nombre, gracias por compartir y recordar eso momentos magníficos del futbol.