একটি স্বাস্থ্যকর ফলের শরবত
নমস্কার বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। এই দুদিন আমি কাজের ব্যস্ততার কারণে আপনাদের সাথে পোস্ট শেয়ার করতে পারিনি। সময় হয়ে ওঠেনি আর কি। তে আজকে সকাল সকাল চলে এলাম।
প্রতিনিয়ত গরমের তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে। একদম অবিশ্বাস্য। সকলের একটু সাবধানে চলা উচিত। বেশি করে জল খাওয়া উচিত। আর শরবত। ডাবের জলও খেতে পারেন। তবে যেকোনো বাইরের শরবত অর্থাৎ প্যাকেটে পাওয়া জুসের থেকে ফল কিনে জুস খাওয়া ভালো। কোন কিছুই আমার মনে হয় এখনকার দুনিয়ায় টাটকা কিংবা আসল জিনিস পাওয়া যায় না। আর মানুষ ভেজাল টার দিকেই বেশি যায় এবং সেটাই বেশি খায়।
গ্রামাঞ্চলে যাও বা টাটকা পাওয়া যায় সবজি ফল।
যাইহোক, এখন বাজারে যা বিক্রি হয়। বুঝে শুনে কিনে খাওয়া উচিত । আজ আমি আমার পছন্দের একটি শরবত এর রেসিপি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। বেলের শরবত গরমকালে খাওয়া ভীষণ উপকার। এই বেল নামক ফলটি কতটা যে উপকারী, বিশেষ করে গরমকালে এর খাওয়ার গুরুত্ব অনেক।
আমরা বেল পাতার সাথে যতটা পরিচিত। তবে বেল গাছের ফল অনেকেই খায় না। বেল পাতা আমাদের পুজোতে ভীষণ ব্যবহার হয়। কিন্তু এই গাছের ফলটি যে কতটা উপকারী তা আমরা অনেকেই জানিনা।
শোনা গেছে নিয়মিত বেল খেলে শরীর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এটা শরীরের ইমিউনিটি বাড়িয়ে তোলে এবং পাশাপাশি শরীরকে ঠান্ডা রাখে। এছাড়া ডায়রিয়া ,আমাশয়, জন্ডিস, যক্ষা, অপুষ্টিতেও বেল ভীষণ পরিমাণে উপকারী। গরমকালে বেলের শরবত খাওয়া খুব ভালো।
পাকা বেলে যেই ফাইবার আছে তা আলসার উপশমে সাহায্য করে,ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।অর্থাৎ বেল ভীষণ পুষ্টিকর একটা ফল এর অনেক ধরনের ঔষধি গুণ লক্ষ্য করা যায়।
চলুন, তাহলে দেখে নেয়া যাক বেলের শরবত কিভাবে তৈরি করতে হয়।
এখানে আমি একটি বড় বেল নিয়ে নিয়েছি।। আমাদের পরিচিত একজনের বাড়িতে বেলের গাছ থাকায় ,গরমকালে তারাই আমাদের বাড়িতে বেল দিয়ে থাকে। এই গরমে তারা মোটামুটি চার-পাঁচটা বেল দিয়ে দিয়েছে। তবে এই বেলের সাইজটা বেশ বড় ছিল।
বেল নারকেল ফাটানোর মতো কয়েকবার কোন কিছুর সাথে মারলেই ফেটে যায়।
তারপরে এর শাঁসগুলো এইভাবে যেমনভাবে আমি ছবিতে দেখাচ্ছি চামচ দিয়ে তুলে নিচ্ছি একটি পাত্রে।
সমস্ত তুলে নেওয়ার পর, প্রায় চোখের আন্দাজ মত যাতে শাঁস পুরোটা ভিজে থাকে, সেরকম পরিমাণে জল দিতে হবে।
এবার হাত দিয়ে মাখতে হবে। শাঁস থেকে আসল রস বাইরে বের হবে। যতক্ষণ না জলের সাথে শাঁস ভালোভাবে মিশছে ততক্ষণ এরাম ভাবে হাত দিয়ে গুলতে থাকতে হবে। বেলের বীজগুলো আলাদা করে সরিয়ে নিতে হবে।
দেখুন আমি প্রথমে বেল্ অর্ধেক ভেঙে নিয়ে এতক্ষণ ওই অর্ধেক বেলের শাঁস এর সাথে জল মিশিয়ে নিচ্ছিলাম। এখন আবার বাকি অর্ধেক বেল এর শাঁ স বার করে নেব।
জলের সাথে মেশাতে মেশাতে যে ছিবড়ে বার হবে তা কতটা আপনি ছবিতে দেখতে পারছেন।
যখন এইরকম বেশি ঘন অথবা বেশি পাতলাও নয়, এমন অবস্থায় আসবে। তখন আপনি পরবর্তী স্টেপে যেতে পারেন। শরবত কতটা ঘন করবেন অথবা পাতলা সেটা একেবারেই আপনার ব্যাপার। এই অবস্থাতেই আপনাকে সেই পরিমাণ জল দিয়ে শাঁস গুলোর সাথে মিশিয়ে নিতে হবে।
এরপর পরিমাণমতো চিনি এবং বিট লবণ দেবেন। আমার এখানে প্রায় বড় এক গামলার শরবতের জন্য আমি ছোট চামচের দুই চামচ বিট লবণ, এবং বড় চামচের চার চামচ চিনি দিয়েছি। বেল কতটা মিষ্টি হবে তার ওপরও চিনির পরিমাণ ভ্যারি করবে।
নুন চিনি মিশিয়ে দেওয়ার পর, ভালোভাবে যখন শরবতের সাথে মিশে যাবে। আপনি চাইলে কোন ছেকনি দিয়ে ছেঁকেও নিতে পারেন। তবে আমরা বাড়িতে ছেঁকে নিই না। হাত দিয়ে গোলার সময় ছিবড়ে গুলো, বীজগুলো আগেই বার করে রেখেছি। তাই মুখে খাওয়ার সময় বাঁধেও না। ছেকার প্রয়োজন হয় না। আর এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে বেলের শরবত।
যে জল দিয়ে আপনি বেলের শরবত বানাবেন তা ঠান্ডাও ব্যবহার করতে পারেন। অথবা শরবতটা বানানোর পরে কিছুক্ষণ ফ্রিজে ঠান্ডা করে নিন।তারপর যখন খাবেন দেখবেন শরীরে কতটা তৃপ্তি দেবে।অত বড় বেল থেকে প্রায় ২ লিটার মতন বেলে শরবত হয়েছিল। আপনারা চাইলে এই শরবত দুইদিন থেকে তিন দিন মতো ফ্রিজে রাখতে পারেন। তবে বেশিদিন না রাখাই ভালো।
আশা করি আজকের পোস্ট আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে। সকলে গরমে নিজের খেয়াল রাখবেন। আজ এখানেই শেষ করছি।
ঠিক বলেছেন আপু বেল হলো একটি পুষ্টিকর খাবার যার তুলনা হয় এই ফলটি অনেক উপকার এবং অনেক রোগের সমাধান করে বিশেষ করে গরম কালে শরীরকে ঠান্ডা ও সচেষ্টা এবং এনার্জি জোগায়। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি ফল নিয়ে এর উপকারিতা তুলে ধরে আমরা অনেক কিছু জানতে পারলাম।
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন শরীরের যত্ন নেবেন
বেশ কিছুদিন থেকেই মারাত্মক রকমের গরম পড়েছে। আর এই তীব্র গরমে বেলের শরবত অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর একটা পানীয়।
আমাদের বাড়িতে ছোটবেলা থেকে দেখেছি গরমের সময় এই বেলের শরবত তৈরি করতে।
আর এখন আমি আমার নিজের বাড়িতে এই শরবত বানাই।
যদিও আমার কাছে এই শরবতটা বানানো একটা ঝামেলার কাজ বলে মনে হয়।
আপনি যেভাবে বানিয়েছেন মোটামুটি আমিও এভাবেই বানিয়ে থাকি। তবে মাঝে মাঝে খানিকটা গুঁড়ো দুধ দিয়ে থাকি। তাহলে আমার ছেলেরা খেতে চায় না।
এই তীব্র গরমের সময় এই স্বাস্থ্যকর নিয় পানীয়টি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সব সময়।
দিদি বর্তমান সময়ের জন্য বেলের জুস বেশ উপকারি। আপনার লিখায় সেটি স্পষ্ট হয়েছে। এছাড়াও এই গরমে এক গ্লাস বেলের রস যেন অমৃত। আপনি বেলের রস তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ দারুনভাবে দেখিয়েছেন। বেলের রস আমারো খেতে অনেক ভালো লাগে।
ধন্যবাদ দিদি বেলের রস তৈরি স্টেপ বাই স্টেপ দেখানোর জন্য। ভালো থাকবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
বেলের শরবত অনেক ভিটামিন রয়েছে যেটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী ৷ তবে মজার বিষয় হচ্ছে গরমের সময় বেলের শরবত খেলে শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে থাকে ৷ তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি বয়ে আনতে সাহায্য করে ৷
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷