ভাগ্নির বিদায়

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আপনাদের সবার দোয়ায় আমিও ভাল আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

20230120_165159.jpg

বন্ধুরা আজকে শেয়ার করব কন্যা বিদায়ের মুহূর্ত। আসলে এই মুহূর্ত যে কতটা কষ্টকর তা শুধু বাবা-মা এবং যারা মেয়েরা নেয় তারাই ভালো জানে। এতদিন ধরে বাবা-মার বাড়িতে আদর যত্নে বড় হয়ে উঠা সেই মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে বিদায় দেওয়া যে কতটা বেদনাদায়ক এটা আমি নিজেও বুঝি। কদিন ধরে অনেক আনন্দ মজা হচ্ছিল। তার মধ্যে শেষ পর্যায়ে এই বিদায় বেলা আসলে অনেক কষ্টদায়ক।

20230120_165437.jpg

গত দুইদিন ধরে এখানে এসেছি অনেক মজা হচ্ছিল আনন্দ হচ্ছিল গায়ে হলুদ হল গতকাল বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল এবং সন্ধ্যাবেলায় ছিল বিদায় বেলা। আসলে এটা দুটা কষ্ট এক জায়গায় হয়ে গেছে কারণ মেয়ের সাথে সাথে নাতনিকেও বিদায় দিতে হয়েছিল। বাচ্চা হওয়ার পর থেকে এই বাসাতেই ছিলেন। তাই আপু একটু বেশি ইমোশনাল হয়ে পড়েছিলেন এবং কিছুতেই মনকে সান্ত্বনা দিতে পারছিলেন না। আসলে এটা আমাদেরকেও কাঁদাচ্ছিল। কারণ ছোট বাচ্চা নিয়ে শশুর বাড়িতে পাঠাতে চাচ্ছিলো না।

20230120_165222.jpg

কিন্তু মেয়ের শ্বশুর বাড়ি থেকে প্রায়ই মেয়ে আর বাচ্চাকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলতেন তারা। তারপর আমার আপু বাধ্য হয়ে এই শীতের মধ্যে মেয়ে এবং নাতনিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন।আসলে আপু চাচ্ছিলেন বাচ্চাটা আরেকটু বড় হলে তারপরে পাঠাতে কিন্তু সংসারের নিয়ম বড়ই কঠিন আসলে।মেয়ের বিয়ের পর মেয়ের প্রতি জোর দিয়ে কিছু বলা যাবে না বা রাখা যাবেনা।

20230120_165157.jpg

আমরা এতগুলো মানুষজন আছি এজন্য মেয়েও যেতে চাচ্ছিল না। ও চাচ্ছিল আজকে রাত্রে আমাদের সঙ্গে থাকবে কিন্তু ওর স্বামী গাড়ি নিয়ে চলে এসেছিলেন ওকে নেওয়ার জন্য। তাই আমরা ওকে আর আটকাতে পারিনি। অবশ্য সবারই আমাদের চোখ ভিজে গিয়েছিল তার জন্য। আর সেও ভীষণ কান্নাকাটি করছিল। এতদিন ধরে সে বাবা বাড়িতে ছিল আর সে খুবই আদরের মেয়ে ছিল।

যাই হোক শেষমেষ তাকে গাড়িতে তুলে বিদায় দিয়ে এসেছিলাম। বাড়িতে এসে প্রায় সবাই কান্নাকাটি করছিল এবং আপু আর নানা ভাই তো বেশ ভেঙ্গে পড়েছিল। তাদের আদরের মেয়ে তার শ্বশুরবাড়িতে কি করবে না করবে ছোট বাচ্চা কে নিয়ে এ জন্য তারা আরও বেশি টেনশন করছিল। তো তাদেরকে আমরা শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম।

তো এই ছিল আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করা আমার ভাগ্নির বিদায়ের মুহূর্ত। আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর চিরসত্য এটাই যত ভালোবাসারই আদরের মেয়ে হোক না কেন অন্যের ঘরে পাঠাতেই হয়। তো বন্ধুরা সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তীতে।

Sort:  
 2 years ago 

আসলে আপু মেয়ে হয়ে জন্মগ্রহণ করলে পরের ঘরে যেতে হবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তবে এটা সত্যি বিয়ের পরে আর বাবা মার জোর করার কিছুই নেই। আর আপু যার মেয়ে তার কাছে অতি আদরে থাকে।তবে আপু বুঝলাম না, মেয়ে আর নাতনি এক সাথে বিদায় , এই কি প্রথম বিদায় দিচ্ছে? এর আগে আর শশুর বাড়ি যায়নি? যাইহোক আপু বিদায়ের বেলা অনেক কষ্টের থাকে ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

হ্যাঁ আপু এটাই প্রথম বিদায় ছিল। কারণ হঠাৎ করে বিয়েটা হয়ে গিয়েছিল তাই সবাই ভেবেছিল যে পরে অনুষ্ঠান করে অনুষ্ঠান করে পাঠাবে কিন্তু বিয়ের এক মাস পর মেয়ে কনসিভ করেছিল তাই আর শ্বশুর বাড়িতে পাঠায়নি। ভেবেছিল একবারে বাচ্চা হয়ে গেলে তারপর পাঠাবে।

 2 years ago 

আপু মেয়েদের জীবনে এই কান্না থাকবেই একটা সময় নিজ বাবার বাড়িতে কিন্তু আবার একটা প্রাপ্ত বয়সে যেতে বাড়ি স্বামীর বাড়ি ৷ আর এটাই জগৎ সংসারে নিয়ম ৷ আর সত্যি বলতে গেলে এই বিদায় মূহুর্ত গুলো আমিও দেখতে পারি না ৷ চোখের কোনে জল আপনা-আপনি চলে আসে ৷

 2 years ago 

জ্বী ভাইয়া এটাই জগতের নিয়ম কিন্তু কেন জানি না মানতে খুব কষ্ট হয়। আসলে একটা মেয়ে বাবার বাড়িতে যেমন আদর যত্নে থাকে শ্বশুরবাড়িতে চাইলেও অনেক কিছুই করতে পারে না। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আসলে সব মেয়েকে একদিন না একদিন পরের ঘরে যেতে হবে। মেয়েকে এভাবে বিদায় দেওয়ার সময় সবাই কান্না করে। এই বিদায়ের মুহূর্তে সবাই নিজের বাবার বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় খুবই কষ্ট পেয়ে থাকে। আপনার ভাগ্নির বিদায়ের মুহূর্ত পড়ে এমনিতে খুবই ভালো লেগেছে। আপনি ঠিক বলেছেন সবাই আসলে সবাই থাকলে কোথাও যেতৈ ইচ্ছে করে না তাই ও যেতে চাইনি।

 2 years ago 

জ্বী আপু অনেক আত্মীয়-স্বজন ছিল ও ভেবেছিল সেদিনটাও আমাদের সাথে কাটাতে কিন্তু ওর শ্বশুর বাড়ি থেকে কিছুতেই রাজি ছিল না। তাই ওকে যেতে হয়েছিল। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

একদিন না একদিন তো সব মেয়েকেই তার শশুর বাড়ি যেতে হবে। সত্যি সবাই কিন্তু অনেক কান্নাকাটি করে সে সময়টাতে। বুঝতেই পারছি আপনারা অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন আপনার ভাগ্নি চলে যাওয়াতে। এরকম মুহূর্তে চোখের কোণে আপনা-আপনি জল চলে আসে। এরকম একটা মুহূর্তের পোস্ট সবার মাঝে খুব সুন্দর ভাবে ভাগ করে নিয়েছেন এটা দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে আমার কাছে।

 2 years ago 

জ্বী আপু এই মুহূর্তে কান্না আটকে রাখা খুব কঠিন। সবাইকে শান্তনা দিচ্ছিলাম কিন্তু নিজেই কখন কেঁদে দিয়েছি বুঝতেই পারেনি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আসলে মেয়েগুলো ছোটকাল থেকে বাবার বাড়িতে বড় হয়। তাই বিয়ের পর সবাই যখন স্বামীর বাড়িতে যায় তখন তাদের অনেক কষ্ট হয়। যখন বউ কান্নাকাটি করে তখন আত্মীয়-স্বজনে ও কান্নাকাটি করে তা দেখে। তবে কয়েকদিন ধরে আপনারা খুব মজা করেছেন বিয়ের অনুষ্ঠানে। তবে শেষ মুহূর্তে যখন আসে তখন অনেক খারাপ লাগে। খুব সুন্দর করে ভাগ্নির বিয়ের অনুষ্ঠানে কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে করে শেয়ার করেছেন।

 2 years ago 

জ্বী ভাইয়া কয়দিন বেশ মজা করেছি কিন্তু যাওয়ার দিনে বিদায়ের সময় খুব খারাপ লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আপু মেয়েদের সব থেকে বড় কষ্টের একটি দিন হলো এই দিনটি। কারণ এই দিনে তাদের বাবার বাড়িকে ছেড়ে দিয়ে নতুন একটি বাড়িকে আপন করে নিতে হয়। বাবা মায়েদের অনেক কষ্ট হলেও বিদায়তো দিতেই হয়। ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাইয়া ঠিক বলেছেন এটা আসলেই অনেক কষ্টের একটি দিন। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58757.77
ETH 2554.49
USDT 1.00
SBD 2.52