দুঃখের জীবনে ক্ষনিকের সুখ || প্রথম পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগlast year

sadness-3218845_1280.jpg
সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম সুখ দুঃখ নিয়ে আমাদের জীবন। কখনো আমরা দুঃখের পর সুখের মুখ দেখি আবার সুখ কাটিয়ে উঠতে না উঠতে দুঃখের সাগরে ভেসে যাই।আবার কখনো দুঃখের জীবনে দুঃখই থেকে যায়। তেমনি একটি বাস্তব ঘটনা আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি আমার আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো গল্প আকারে আপনাদের সাথে শেয়ার করার। এই ঘটনাটাও আমার চোখের সামনে ঘটে যেতে দেখেছি এবং এখনো দেখছি। বেশ অনেক বছর পর ঘটনাটা মনে পড়লো তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

শান্তি গরীব ঘরের মেয়ে। নানা নানীর কাছে বড় হয়েছে।শান্তি তার মা এবং তার বাবার খুবই সুখের একটি সংসার ছিল।শান্তির যখন দু-তিন বছর বয়স তখন তার বাবা মারা যান। এরপর থেকে শান্তির জীবনে দুঃখের ছায়া নেমে আসে। শান্তির মা শান্তিকে নিয়ে তার বাবার বাড়িতে যায়।যেহেতু শান্তির মায়ের বয়স খুব একটা বেশি ছিল না তাই সেখানে দু এক বছর থাকার পর শান্তির নানা শান্তির মাকে আবারও বিয়ে দিয়ে দেন। শান্তির মায়ের ইচ্ছা থাকলেও দ্বিতীয় স্বামীর জন্য শান্তিতে কাছে রাখতে পারেননি সে। তখন থেকে শান্তি নানা-নানীর কাছেই বড় হচ্ছে।

শান্তির নানা-নানীর বয়স হয়ে গেছে। তারা কোনভাবে শান্তির খরচ বা নিজেদের খরচ কিছুতে চালাতে পারছিল না। এদিকে শান্তির মাও কোন সাহায্য করতে পারত না তার দ্বিতীয় স্বামীর জন্য। একদিন শান্তি বাহিরে একটা ছোট বাচ্চার সঙ্গে খেলা করছিল। বাচ্চাটা খুবই ধনী পরিবারের এবং সে তার বাবা মায়ের সাথে এখানে ঘুরতে এসেছিল কোন এক আত্মীয়ের বাড়িতে। বাচ্চাটির বাবা-মা দুজনে চাকরি করে। বাচ্চাটির মা তার ছেলের সঙ্গে শান্তি কে খেলতে দেখে খুবই খুশি হয় এবং শান্তির নানা নানির সঙ্গে কথা বলে যে তারা শান্তিতে তাদের সাথে নিয়ে যেতে চাই। তাকে দিয়ে কোন কাজ করাবে না শুধু বাবুর সঙ্গে খেলাধুলা করবে। তার খাওয়া দাওয়া ভরণ পোষণ সবকিছুই তারাই দিবে এবং মাস শেষে কিছু টাকাও তাদের পরিবারের জন্য দেয়া হবে।

শান্তির পরিবারের এতই করুন অবস্থা যে তারা দুবার চিন্তা না করে তাদের কথায় রাজি হয়ে যায়। এরপর শান্তি কে নিয়ে ওই বাচ্চাটির বাবা-মা তাদের বাড়িতে চলে যায়। সেখানে যাওয়ার পর শান্তির মন খারাপ করত কিন্তু তারপর বাচ্চাটার সঙ্গে খেলতে খেলতে তাদের পরিবারের একজন হয়ে উঠেছিল।বাড়ির সবাই শান্তিকে খুবই ভালোবাসতো এবং তাদের পরিবারের একজন মনে করত। শান্তি যখন একটু বড় হতে লাগল তখন শান্তিকে স্কুলে ভর্তি করানো হলো।স্কুল থেকে আসার পর এবং যাওয়ার আগে যতটুকু সময় পেতো সে বাচ্চাটার সঙ্গে খেলাধুলা করতো এবং নিজের মতই চলাফেরা করতো। এদিকে সময় মতো তার গ্রামের বাড়িতে টাকাও পাঠানো হতো।

এরপর প্রায় কয়েক বছর কেটে যায় সে এখন মেট্রিক পাশ করেছে। বাচ্চাগুলো বড় হয়ে গেছে বিধায় তাদের সঙ্গে খুব একটা সময় কাটাতে হয় না সে নিজের মতো করে সময় কাটায়।এবার শান্তির মা নানা শান্তির বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগে। তখন ওনারা (বাচ্চাটির বাবা-মা) বলেন যে শান্তিতে তারাই ভালো দেখে শুনে বিয়ে দেবেন কিন্তু শান্তির মা নানা সে কথা কিছুতেই মানতে রাজি ছিল না। কি আর করার তারা চাইলেও ধরে রাখতে পারবে না যেহেতু তাদের কোন অধিকার নেই। এরপর তারা শান্তি কে আবারো সেই গরিব ঘরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেয়। বিয়ের যত খরচ সবকিছু এতদিন যারা শান্তিকে বড় করেছে তারাই দিয়েছেন।

(চলবে)

কিন্তু আদৌ কি শান্তি সুখী হবে এটা জানার জন্য পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আশা করছি প্রথম পর্ব টা ভাল লেগেছে দ্বিতীয় পর্ব ভালো লাগবে। দেখা হবে পরবর্তী সময়ে নতুন কোন বিষয় নিয়ে আজ এখানেই শেষ করছি।

সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1EmYRYsQvFLAH72WL1voB5Qv1bAb8AZSXixgFjhiMWAnz2UA9cMfriUVJ7ctL7...nSLVWX5o43xBXmLDdwhihbXiBhaPqShV2SFRHcKYd8CXKMs5RdPFoVngFzUPZy735MKSBrn82U6bCmY9F8MzT3ucNgZ2hGFcSdZg7fSmWifdcnibPP7TB2AbsL.png

E8fRY4dhuR5sTLZsFHQGy2Dnv1izoNa9kDDwNf6SWjwUiExjDZXA9b63NAwrwLXd8Ct7t1ZtdVLLXWaLZw5onyjbiCRPr6s2tz1kz75iSS...xFU9EXxXdabqMHBsc9mJ817a2SuVogJxMBkzsHNyMz11NQwmvwuEWHWA5F82zgRf2rtHDE85bAj4sRhY9U82BY2NqNXEu8caQc9HGJHwF7D2FoRAiQKCNDCinS.png

Xaey6XUsuMsULyX7cP1nbTWJzYmPAgo7FUiwufHRk6Jy2gyG1Db2Jf3F8zDR4enXrGJXJVY8zjUpsz8r7ybb4LRV5UxeCYiYK1QPL3cJGf...AYxpdPLKDUL7U8qu4Pikt2pYsm5FijpvHVGxLifJJPzqmZNKMNA2z45a46JW8rG61eode8Q5PXFhQEQKZCgnKP8ynSwFBAExhqvJUM7KDLc3AeqHmeUQyR5QSZ.gif

Sort:  
 last year 

দুঃখের জীবনে ক্ষণিকের সুখ গল্পটার প্রথম পর্ব আপনি অনেক সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন। শান্তির বাবা দেখছি অনেক আগেই মারা গিয়েছিল, আর শান্তির মাকেও ওর নানা নানু ২য় বার বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল। আর ওই বাচ্চাটির বাবা মা দেখছি অনেক ভালো ছিল, শান্তি কেও একেবারে নিজের ফ্যামিলির সদস্য মনে করত। তারা যদি দেখেশুনে একটা বিয়ে দিতো, তাহলে হয়তো শান্তি খুব ভালো একটা পরিবারে যেতে পারতো। কিন্তু তার মা এবং নানা নানু এটা দেয়নি করতে। দেখা যাক শান্তি পরবর্তীতে সুখী হয় কিনা।

 last year 

গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। পরের পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।

 last year 

আপু দুঃখের জীবনের ক্ষণিকের সুখ গল্পটির প্রথম পর্ব পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে আপু সুখ দুখ নিয়েই মানুষের জীবন। সত্যি শান্তি অনেক ভালোই ছিল। আসলে কথায় আছে না সুখে থাকলে ভুতে কিলায়। শান্তিকে এনে বিয়ে দিয়ে ভুল করেছে।আর উনার চাইলে ও শান্তি রাখতে পারবে না এটা সত্যি। দেখা যাক বিয়ের পরে শান্তির জীবন কেমন হয়।পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

 last year 

শান্তি যদি ঐ লোকের বাসায় থাকত তাহলে ভালো থাকতো কিন্তু তার নানা এবং মা সেখান থেকে এনে খুব গরীব ঘরে শান্তির বিয়ে দেয় এবং সেখান থেকে শান্তির জীবনে অশান্তি শুরু হবে। যেটা আমি পরবর্তী পর্বে শেয়ার করব। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপু।

 last year 

এরকম গল্প গুলো পড়লে অনেক বেশি খারাপ লাগে। আপনি সবসময় বাস্তবিক টপিক নিয়ে গল্প লিখে থাকেন দেখে আমি একটু বেশি পছন্দ করি। শান্তি ছোটবেলায় তার বাবাকে হারিয়েছিল, আর তার মায়ের অন্য এক লোকের সাথে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল সেখানেও সে যেতে পারেনি। পরবর্তীতে ওই বাচ্চাটির বাবা-মা তাকে তাদের বাসায় নিয়ে এসেছিল এবং নিজেদের সন্তানের মত করে বড় করেছিল, আর তার মা এবং নানু আবার তাকে নিয়ে গিয়েছিল আর গরিব ঘরের বিয়ে দিয়েছিল এটা দেখে খারাপ লাগলো। শেষ পর্যন্ত কি হয় এটাই দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

 last year 

জ্বি আপু আমার আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো গল্প আকারে লিখে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করি।সুন্দর মন্তব্যের জন্য এবং পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকার জন্য ধন্যবাদ আপু।

 last year 

আপু আপনার মতো আমিও আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা গল্প আকারে শেয়ার করার চেষ্টা করি। যাই হোক আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। মেয়েদের অল্প বয়সে স্বামী মারা গেলে তাদের সন্তান থাকলেও অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয়। কারণ এভাবে তো সারাজীবন কাটানো সম্ভব নয়। শান্তির জীবন কাহিনী পড়ে ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দেখা যাক শান্তির জীবনে সুখ আসে কিনা।

 last year 

আমার মনে হয় গল্প বানিয়ে লেখার থেকে যদি আমরা আমাদের আশেপাশের ঘটনাগুলো লিখি তাহলে লিখে শেষ করা যাবে না এক একটা ঘটনা। যাইহোক গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 last year 

এমন বাস্তব ঘটনা পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। শান্তির বাবা মারা যাওয়ার পর শান্তির মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে হয় এবং শান্তির মায়ের দ্বিতীয় স্বামী শান্তিকে তাদের কাছে রাখতে চায়নি ঠিক আছে, কিন্তু শান্তি তো সেই বাচ্চাদের বাসায় বেশ ভালোই ছিলো। পড়াশোনা করছিল এবং তারা যেহেতু বলেছিল শান্তির বিয়ে দিবে দেখে শুনে, শান্তির মা এবং নানার উচিত ছিলো তাদের উপর ভরসা করা। কারণ তারা ভালো মানুষ না হলে শান্তিকে পড়াশোনা করাতো না এবং এতো ভালো রাখতো না। শান্তির নানা এবং মায়ের ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই শান্তিকে অনেক কষ্ট করতে হবে মনে হচ্ছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

শান্তির নানা এবং শান্তির মায়ের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে শান্তিকে অনেক কষ্ট পেতে হবে যেটা আমি পরের পর্বে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 79169.45
ETH 3182.99
USDT 1.00
SBD 2.63