এঁচোড়ের তরকারি || নিরামিষ মাংস
"হ্যালো",
সবাইকে আমার নতুন একটি রেসিপি ব্লগে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব এঁচোড়ের রেসিপি। আমরা অনেক ফল আছে যেগুলো সবজি হিসেবে খাই আবার ফল হিসেবেও খাই। সেগুলো হচ্ছে কাঁঠাল, পেঁপে, কলা ইত্যাদি। গত পোস্টে আমি আপনাদেরকে বলেছিলাম আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলাম। তো আমাদের গ্রামের বাড়িতে অনেক কাঁঠালের গাছ আছে। সেখানে এই কচি কাঁঠাল গুলো দেখে আমার বেশ লোভ হচ্ছিল আর যেহেতু আমার কাঁঠাল এর তরকারি খেতে বেশ ভালো লাগে তাই আমি গাছ থেকে দুই তিনটা কাঁঠাল নিয়ে এসেছিলাম। আমাদের গ্রাম এলাকায় এটাকে আমরা বাঘের মাংস বলে থাকি।
ছোটবেলায় যখন মা বাসায় কাঁঠাল রান্না করত, যখন কেউ জিজ্ঞেস করত কি দিয়ে ভাত রান্না করেছে? তখন আমরা বলতাম বাঘের মাংস দিয়ে ভাত রান্না করেছে। আর আমার মনে হয় এটাকে গরিবের মাংস বলা যেতে পারে। আর গরিব কেন আমাদের মত মধ্যবিত্তের মত মানুষদেরও এখন মাংস কিনে খাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে যায়। যদি দুবেলা মাংস দিয়ে ভাত খেতে যাই তাহলে সারা মাস খুব কষ্ট করে চলতে হবে এই ভেবে আমাদের সবদিক তাল মিলিয়ে চলতে হয়।
তো যাইহোক বন্ধুরা অনেক কথাই বললাম এবার রেসিপি শুরু করা যাক।
| উপকরনসমূহঃ |
|---|
| এঁচোড়/ কাঁঠাল |
| পেঁয়াজ কুচি |
| ফালি করে কাঁটা কাঁচামরিচ |
| আদা-রসুন বাটা |
| জিরা-ধনিয়ার গুঁড়া |
| শুকনা মরিচের গুঁড়া |
| হলুদ গুঁড়া |
| গোটা গরম মসলা |
| লবণ |
| তেল |
ধাপ-১
প্রথমে কাঁঠালটা ভালোভাবে কেটে পিস পিস করে নিয়ে হলুদ দিয়ে কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। যাতে আঁঠা এবং কসগুলো বের হয়ে যায়।
ধাপ-২
এরপর কাঁঠাল গুলো ভালোভাবে ধুয়ে পানি দিয়ে এবং সামান্য হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। সেদ্ধ হয়ে গেলে একটা প্লাস্টিকের ডালায় ঢেলে পানি ভালোভাবে ছেঁকে নিতে হবে।
ধাপ-৩
এবার রান্নার জন্য চুলায় একটি বড় সসপ্যান বসিয়েছি। এরপর তেল দিয়েছি তেল গরম হয়ে গেলে গোটা গরম মসলা দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে চেড়ে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নেড়েচেড়ে বাদামি করে ভেজে নিয়েছি।
ধাপ-৪
পেঁয়াজ বাদামি করে ভাজা হয়ে গেলে একে একে গুঁড়া মসলা বাটা মশলা এবং কাঁচামরিচ ফালি দিয়ে ভালোভাবে সামান্য পানি দিয়ে মসলাটা কিছুক্ষণ কষিয়ে নিয়েছি।
ধাপ-৫
মসলা ভালোভাবে কষানো হয়ে গেলে আগে থেকে সেদ্ধ করে রাখা কাঁঠালের টুকরোগুলো দিয়ে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে প্রায় ১০ মিনিটের মতো কষিয়ে রান্না করে নিয়েছি।
ধাপ-৬
১০ মিনিটের মত রান্না করার পর পরিমাণ মতো গরম পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে আরও ১৫ মিনিটের মতো রান্না করে নিয়েছি। এরপর ঝোল যখন প্রায়ই গায়ে মাখা হয়ে গেছে তখন আমি তরকারিটা নামিয়ে নিয়েছি ভাজা জিরার গুঁড়া ছিটিয়ে।
❤️পরিবেশন❤️
রান্না হওয়ার পর তরকারিটা একটু ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পর আমি একটা বাটিতে তুলে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করেছি।
বছরের প্রথম বার এঁচোড়ের তরকারি খেলাম আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে খেতে। আর এভাবে রান্না করলে খুব ভালো লাগে। অনেকে মাংস দিয়ে রান্না করে কিংবা চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করে। তবে আমার কাছে কেন জানি এঁচোড়ের তরকারিটা এমনি এমনি রান্না করলে বেশি ভালো লাগে। তবে হ্যাঁ চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করে খেতে একটু বেশি ভালো লাগে।
আজকে এই পর্যন্তই। কেমন লেগেছে রেসিপিটা অবশ্যই আপনাদের সুন্দর মতামতের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন রেসিপি নিয়ে। সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।














হঠাৎ করেই এই খাবারটি অনেক পরিচিত হয়ে গিয়েছে সবার কাছে তবে যাই হোক খেতে কিন্তু ভালই লাগে।।
আমি গতবার একবার খেয়েছিলাম এবার আর খাওয়া হয়নি তবে আজ আপনার প্রস্তুত করা দেখে খুব লোভ হচ্ছে খেতে নিশ্চয়ই খুব মজা হয়েছিল।।
জ্বী ভাইয়া কাঁচা কাঁঠালের তরকারি অনেকেরই প্রিয় খাবার। আপনার দাওয়াত রইলো বাসায় আসবেন।রান্না করে খাওয়াবো।
প্রথমে আমি বুঝতে পারননি এচোড় মানে কি, পরে দেখতে পেলাম এচোড় মানে কাঠাল, এবার আমার মা বাড়িতে কাঠালের তরকারি রান্না করেছিলেন কিন্তু তেমন মজা হয়নি।কিন্তু আপনার কাঠালের তরকারি দেখে মনে হচ্ছে অনেক মজাদার একটি নিরামিষ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। উউপস্থাপনা ছিল অসাধারণ। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আন্টিকে এই রেসিপিটা দেখাবেন এবং এভাবে রান্না করতে বললেন আশা করছি আপনার কাছে রেসিপিটা ভালো লাগবে খেতে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
এঁচোড় আমার অনেক প্রিয় আর আজকে আপনি এঁচোড়ের রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সেটি দেখে খুব লোভ হচ্ছে আপু। ধন্যবাদ আপনাকে প্রিয় একটা রেসিপি উপহার দেওয়ার জন্য ভালো থাকবেন।
আমি নিজেও এঁচোড়ের রেসিপি খেতে ভীষণ পছন্দ করি। এঁচোড় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করা যায়। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
এই নামটি প্রথম শুনে বুঝতে পারেনি। ছোট কাঁচা কাঁঠালকে আপনারা বাঘের মাংস বলেন। তবে কাঁচা কাঁঠাল রান্না করলে খেতে অনেক মজাই লাগে। ছোটকাল থেকে এভাবে কাঁচা কাঁঠাল রান্না অনেকবার খেয়েছি। আপনার এঁচোড়ের তরকারির রেসিপি সত্যি অসাধারণ হয়েছে। রেসিপিটি দেখে আমার জিভে জল এসে গেল। অনেক সুন্দর করে রেসিপিটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
আমাদের গ্রামবাংলায় এটাকে বাঘের মাংস বলা হয়। আমরা তো ছোটবেলা থেকে এটাই জেনেছি। যাইহোক আপু আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটা মন্তব্যের জন্য।
খুবই মজাদার এবং লোভনীয় একটি রেসিপি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। এঁচোড় খেতে বরাবরই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে আমি যদিও দু-একবার খেয়েছি।
এই অংশটুকু পড়ে আমি অনেকটাই হেসেছি,ছোটবেলায় এরকম কত যে স্মৃতি রয়েছে বলে হয়তো শেষ করা যাবে না।
আসলে ভাইয়া ছোটবেলায় আমাদের অনেক স্মৃতি রয়েছে। আমি জানিনা কেন ছোটবেলা থেকে সবাই এটাকে বাঘের মাংস বলেছ। আমি এখনো জানিনা তবে এটা এখনো আমাদের এলাকায় বাঘের মাংস হিসেবে পরিচিত।
এঁচোড়ের তরকারি শুধু শুনেই গেলাম।কখনও রান্না করা হয়নি আর খাওয়া তো দূরেরই কথা।আসলে আমাদের অঞ্চলে এই তরকারি খাওয়ার প্রচলন নেই।নয়ত কোথাও না কোথাও খাওয়া যেত।যাক আপু আপনার রেসিপিটি বেশ লোভনীয় হয়েছে। এটা নাকি মাংসের চাইতেও মজার হয় খেতে। আপনি রান্নার ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
কখনো কাঁচা কাঁঠালের তরকারি খাননি এটা জেনে খুব অবাক হলাম আপু। তবে একবার খেয়ে দেখবেন এটা খেতে খুবই সুস্বাদু হয় এবং খুব মজা লাগে। আসলে আপু এটা মাংসের চাইতে অনেক মজার হয় খেতে। অবশ্যই একদিন রান্না করে খেয়ে দেখবেন।
হ্যাঁ অনেক কিছু তরকারি আছে যেগুলো পাকাও যায় আবার কাঁচা সবজি করে খাওয়া যায় বেশ ভালো দিক। কাঁচা কলা সবজি খেয়েছি এবং কাঁচা পেঁপের সবজি খেয়েছি কিন্তু কাঁচা কাঁঠাল কখনো সবজি করে খাওয়া হয়নি। প্রথমে এঁচোড়ে যখন বলছেন খুব চিন্তা করছিলাম এটা কি জিনিস আবার পুরো রেসিপি দেখে বুঝতে পারলাম কাঁচা কাঁঠালের তরকারি রান্না করছেন। দেখে মনে হচ্ছে অনেক মজার হবে। তবে একদিন তৈরি করে খেয়ে দেখতে হবে।
জ্বী আপু অনেক ফলই আছে যেগুলো আমরা সবজি হিসেবে খাই আবার ফল হিসেবে খাই। আপনি একবার কাঁচা কাঁঠালের তরকারি এমন ভাবে রান্না করে খেয়ে দেখবেন। এখন বাজারে কাঁঠাল কিনতে পেয়ে যাবেন। অবশ্যই রেসিপিটা তৈরি করে খেয়ে দেখবেন এটা খেতে বেশ ভালো লাগে।
এঁচোড়ের তরকারি আমি একবার খেয়েছিলাম আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আপনার গ্রাম্য ভাষায় এটাকে বাঘের মাংস বলা হয় জেনে ভালো লাগলো। আসলে যে খাবারগুলো আমাদের পছন্দের হয় আমরা সেগুলোর সুন্দর সুন্দর নাম দিয়ে থাকি। আপনার তৈরি করা রেসিপি দারুন হয়েছে আপু। আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে।
রেসিপিটা আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুবই খুশি হলাম আপু। ঠিকই বলেছেন আপু আমাদের পছন্দের খাবার গুলোর আমরা আরো সুন্দর সুন্দর নাম দিয়ে থাকি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
কাঁচা কাঁঠাল গুলো রান্না করলে খেতে অনেক মজাই লাগে।এঁচোড়ের তরকারি নাম শুনে বুঝতে পারেনি। তবে কাঁঠাল এভাবে রান্না করে অনেক খেয়েছি। আমার মা অনেকবার রান্না করেছে। তবে আপনাদের ওখানে ছোটকালে আপনারা বাঘের মাংস বলতেন। আমাদের এইখানে আমরা অন্য একটি নাম বলি। আপনার রেসিপি দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে অনেক মজাই হয়েছে। অনেক সুন্দর করে রেসিপিটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
আসলে ভাইয়া আমরা জায়গা ভেদে বিভিন্ন জিনিসকে একেক ভাবে ডেকে থাকি।আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখেছি যে সবাই এটাকে বাঘের মাংসের বলে আমার এলাকায়। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।