প্রতিদান

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

20220906_181034-01.jpeg

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

আজকে আমি একটা বাস্তব ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। আশা করছি ভালো লাগবে। আমার শাশুড়িরা তিন ভাই তিন বোন। আমার শাশুড়ি সবার বড় এবং তিনি প্রাইমারির প্রধান শিক্ষিকা। আমার নানা শ্বশুর সবকটা ছেলে মেয়েকে পড়াশোনা করিয়েছেন।সবাই ভালো ভালো চাকরি করেন। এরপর আমার নানা শ্বশুর গত হন। তারপর থেকে সংসারের যত সিদ্ধান্ত আমার শাশুড়ি নিতেন যেহেতু তিনি বড়। ওই যে বলে না সব ভালোর মধ্যেও কিছুনা কিছু একটা খারাপ থাকেই।আমার ছোট খালা শাশুড়ি প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। তিনিও ভালো একটা চাকরি করতে একটা এঞ্জিওতে। কিন্তু বিয়ের পর তার শ্বশুর বাড়ি থেকে চাকরি করতে দেয়নি।

এভাবে বসে থেকে খেতে খেতে একটা সময় তাদের সংসারে অভাব দেখা দেয়। তখন সে সংসারের হাল ধরেন আমার শাশুড়ি। তার মেয়েদের পড়া থেকে শুরু করে সব খরচ আমার শাশুড়ি চালাতেন। এভাবে চলতে চলতে আমার শাশুড়ির বোন জামাই এক পর্যায়ে লোভী হয়ে পড়েন।তিনি মনে করেন আমি বসে থেকেই তো সবকিছু পাচ্ছি তাহলে কাজকর্ম করার দরকার নেই। আমার শাশুড়িও জেনেও না জানার ভান করেও সবকিছু বহন করতেন। কেননা ছোট বোন কষ্টে থাকবেন এটা তিনি কিছুতেই মানতে পারেন না। একটা সময় গিয়ে সেটা চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তাদের চাহিদা দিন দিন বাড়তেই থাকে।

আমার হাজবেন্ড এবং তার ভাই রা মিলে আমার শাশুড়িকে অনেক বোঝানোর চেস্টা করেছেন যে তাদেরকে একটু কর্মে ঢোকানোর চেষ্টা করেন এভাবে আর কত দিন।তখন আমার শাশুড়ি আমার হাজবেন্ড এবং অন্য ছেলের সঙ্গে রাগারাগি করতো। যে তাদেরকে সে কিছুতেই ছাড়বে না।আমরা সব সময় আমার শাশুড়িকে বোঝাতে চেষ্টা করতাম যে স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে এরা আপনাকে আর ভালোবাসবে না। কিন্তু উনি কখনো বোঝার চেষ্টাই করতেন না। যাইহোক এর মধ্যেই আমার নারী শাশুড়ি মারা যান। অমনি শুরু হয়ে যায় জমিজমা ভাগাভাগির বিষয় নিয়ে। বিশেষ করে আমার ছোট খালা শাশুড়ি চাচ্ছিলেন জমির ভাগ নিতে।তার স্বামী তাকে বেশ চাপ দিচ্ছিলেন।

কিন্তু আমার শাশুড়ির কথা ছিলো জমি জায়গা এখন ভাগ হবে না আমরা যেভাবে আছি এভাবেই চলবো। বাবা-মা নেই তো হয়েছে আমরা ভাই বোনরা এক সঙ্গে থাকবো সারা জীবন। এই নিয়ে আমার শাশুড়ির সাথে আমার ছোট খালা শাশুড়ির দুটো কথা কাটাকাটি হয়। তখন থেকে তারা আমার শাশুড়ির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।আমার শাশুড়ি এখনো মাঝেমধ্যেই তাদের কথা ভাবেন এবং আমাদেরকে বলেন তোমারাই ঠিক বলতে আমার তোমাদের কথা আগে শোনা উচিত ছিল। তাহলে এখন এতটা কষ্ট হতো না।

সত্যি কথা বলতে আমার শাশুড়ি তাদেরকে এতই ভালবাসতেন যে যদি কেউ তাদের নামে কোন কিছু বলতেন তিনি একদম সহ্যই করতে পারতেন না। আর তারাই যদি এভাবে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তাহলে তো কষ্ট হবেই। আমার শাশুড়ির মেয়ে ছিল না কিন্তু আমার খালা শাশুড়ির দুটো মেয়ে ছিল আমার শাশুড়ি সব সময় বলতেন যে আমার দুইটা মেয়ে আছে।আজ তারাও খোঁজখবর নেয় না। আমার শাশুড়িকে মাঝেমধ্যেই কান্না করতে দেখি তাদের জন্য।

সবশেষে একটা কথাই বলব আমাদের কাউকে বা কোন কিছুকে ৫০% ভালোবাসা দিতে হবে আর ৫০% নিজের জন্য রাখতে হবে। যাতে করে পরবর্তীতে আমাদের কষ্ট পেতে না হয়। তো যাই হোক আজ এ পর্যন্তই। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1EmYRYsQvFLAH72WL1voB5Qv1bAb8AZSXixgFjhiMWAnz2UA9cMfriUVJ7ctL7...nSLVWX5o43xBXmLDdwhihbXiBhaPqShV2SFRHcKYd8CXKMs5RdPFoVngFzUPZy735MKSBrn82U6bCmY9F8MzT3ucNgZ2hGFcSdZg7fSmWifdcnibPP7TB2AbsL.png

E8fRY4dhuR5sTLZsFHQGy2Dnv1izoNa9kDDwNf6SWjwUiExjDZXA9b63NAwrwLXd8Ct7t1ZtdVLLXWaLZw5onyjbiCRPr6s2tz1kz75iSS...xFU9EXxXdabqMHBsc9mJ817a2SuVogJxMBkzsHNyMz11NQwmvwuEWHWA5F82zgRf2rtHDE85bAj4sRhY9U82BY2NqNXEu8caQc9HGJHwF7D2FoRAiQKCNDCinS.png

Xaey6XUsuMsULyX7cP1nbTWJzYmPAgo7FUiwufHRk6Jy2gyG1Db2Jf3F8zDR4enXrGJXJVY8zjUpsz8r7ybb4LRV5UxeCYiYK1QPL3cJGf...AYxpdPLKDUL7U8qu4Pikt2pYsm5FijpvHVGxLifJJPzqmZNKMNA2z45a46JW8rG61eode8Q5PXFhQEQKZCgnKP8ynSwFBAExhqvJUM7KDLc3AeqHmeUQyR5QSZ.gif

Sort:  
 2 years ago 

আপু আপনার শাশুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন এটা জেনে আমার খুবই ভালো লাগলো। আর বসে বসে খেলে জমিদারের জমিদারও চলে যায়। যাহোক আপনার হাজব্যান্ড এবং তার ভাইরা মিলে আপনার শাশুড়িকে বোঝানোর বিষয়টি সত্যিই একটি মঙ্গল জনক উদ্যোগ ছিল। তবে আপনার শাশুড়ির ভালোবাসা দেওয়াটা অনেক বেশি হয়েছিল তাই এখন তাকে কাঁদতে হচ্ছে। আপনার পোস্টটি আমাদের সকলের জন্য একটি শিক্ষামূলক পোস্ট বলে আমি মনে করি।

 2 years ago 

আমার শাশুড়ি এখনো চাকরি করেন ভাইয়া। ওনার চাকরি এখনো শেষ হয়নি। যাইহোক সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

পৃথিবীতে সবাই স্বার্থপর।যতদিন স্বার্থ থাকে ততদিন ভালোবাসা থাকে,যখন স্বার্থ ফুরিয়ে যায় তখন ভালোবাসাও শেষ হয়ে যায়।আন্টিকে যতটুকু চিনি উনি খুবই দানশীল একজন মানুষ।অন্যের কষ্ট একদম সহ্য করতে পারেন না যতটুকু পারেন সবাইকে সাহায্য করেন।আন্টি মানুষ কে খুবই ভালোবাসে তাই দিনশেষে তাকে চোখের জল ফেলে কাটাতে হয় এটাই পৃথিবীর নিয়ম।এখনো সময় আছে আন্টি এগুলো থেকে বিরত থাকা দরকার তা না হলে তিনি আরও অনেক কষ্ট পাবেন।দাদী ও নাতীকে একসাথে দেখতে খুবই মিষ্টি লাগছে।দু'জনের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।♥️♥️

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন বৌদি স্বার্থ যতদিন ভালোবাসা ততদিন। স্বার্থ শেষ হয়ে যাবে ভালোবাসা ফুরিয়ে যাবে। সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ বৌদি।

 2 years ago 

আপনার শাশুড়ি তার বোনকে বেশি ভালোবেসে ছিল এবং এবং বোনের মেয়েদেরকে নিজের মেয়ে মনে করে ছিল বিধায় বেশি কষ্ট পেয়েছে। আসলে পৃথিবীতে সবাই স্বার্থপর নিজের স্বার্থটাই সে ভালো বুঝে। এই পোস্ট পড়ে শিক্ষা নেওয়া দরকার। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

জ্বি আপু আমার শাশুড়ি কখনোই মনে করতো না ওরা উনার বোনের মেয়ে। সব সময় বলতো তার মেয়ে। কি আর করার পৃথিবীটাই তো স্বার্থপর। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

ছোট বোনের সুখের কথা ভেবে আপনার শাশুড়ি তাদের সাহায্য করেছেন। কিন্তু শেষে সেই বোন কষ্ট দিল। আসলে কাছের মানুষরা কষ্ট দিলে সত্যি অনেক খারাপ লাগে। জীবনের বাস্তবতা সত্যিই অনেক কঠিন। যাইহোক আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

 2 years ago 

আসলে আপু জীবনের বাস্তবতা বড়ই কঠিন। একেক সময় একেক রূপ দেখা যায় মানুষের। যা মেনে নেওয়া খুবই কষ্টকর। যেটা আমার শাশুড়ি এখন ভোগ করছেন।

 2 years ago 

প্রত্যেক সংসারে এমন কিছু কিছু ভেজাল থাকেন যারা একনাগারে ভোগ করতে থাকেন অন্যের সম্পদ কিংবা টাকা। কিন্তু আপনার শাশুড়িকে আপনারা বুঝাতে চেয়েও উনি বুঝেন নি। অবশেষে কোন না কোন বিষয় নিয়ে তর্ক বিতর্কের কারনে ভুল বোঝাবুঝি হলে তখন বুঝতে পারেন কোথায় ভুল আর কোথায় সঠিক। বেশ ভালো লেগেছে আপনি পারিবারিক সুন্দর একটি বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করলেন অনেক ভালো লাগলো। তবে আপনার খালা শাশুড়ি খুব স্বার্থপর একজন মানুষ।

 2 years ago 

অবশ্যই সে একজন স্বার্থপর মানুষ। তা না হলে কখনোই মায়ের মত বড় বোনকে এভাবে আঘাত দিতে পারতো না। সত্যি বলতে অনেক সময় পারিবারিক এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা শেয়ার না করে থাকা যায়না।সত্যি বলতে সামনাসামনি তো আর কিছু বলতে পারি না তাই লিখে মনের ভাব প্রকাশ করছি আর কি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

খুব কষ্ট পেলাম আপু পোস্টটি পড়ে। তবে এটা জানি জায়গা সম্পত্তি মানুষের সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়।তবে তারা তো আগে থেকেই লোভী হয়ে উঠেছিল।বোন হয়ে অন্তত বোনের খবর নেয়া উচিত ছিল।মেয়ে দুটোও পারতো আপনার শাশুড়ীর সাথে যোগাযোগ রাখার।যে মানুষটা এতো করলো তার নূন্যতম কৃতজ্ঞতা তাদের একজনেরও নেই।ব্যাপারটা সত্যি পীড়াদায়ক।

 2 years ago 

জ্বি আপু এই ভেবে আজকের গল্পটা লেখা। আসলে আমার শাশুড়িকে তাদেরকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসতে দেখেছি। আর হঠাৎ করে তারাই তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। আমার শাশুড়ির এই কষ্টটা কিছুতেই সহ্য করতে পারছিলাম না। তাকে অনেক সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.14
TRX 0.35
JST 0.034
BTC 117256.80
ETH 4606.91
SBD 0.89