রাজিয়ার জীবন কাহিনী || পর্ব-১
"হ্যালো",
আজকে আমি একটি মেয়ের জীবন কাহিনী আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আমার প্রতিবেশী এবং আমার সাথেই পড়াশোনা করতো। একটা অল্প বয়সী মেয়ের সাথে যে এত কিছু ঘটে যেতে পারে তা আপনারা না জানলে বিশ্বাসই করবেন না। চলুন জেনে নেওয়া যাক একটি অল্প বয়সি মেয়ের জীবন কাহিনী।
রাজিয়া গরিব পরিবারের মেয়ে। চার ভাই এক বোন এবং বাবা মা নিয়ে তাদের সংসার। বাবা এবং বড় ভাই দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাত। কিন্তু তাদের সংসারে তার মায়ের কথাই শেষ কথা ছিল। এজন্য তাদের সংসারের প্রায় অশান্তি লেগেই থাকতো। রাজিয়া তখন ক্লাস ফাইভে পড়ে। এরমধ্যে তার মা উঠে পড়ে লাগে তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য। একটা মেয়ে ক্লাস ফাইভে পড়ে তার বয়সী বা কতটুকু হতে পারে। ১০-১১ হবে। আমরা সবাই তখন গ্রামের একটা ব্রাক স্কুলে পড়াশোনা করতাম। তো সেই স্কুলের ম্যাডাম অনেক কাহিনী করে এই বিয়ের ব্যাপারটা আটকে রাখে। কিন্তু তার মা তারপরও থেমে থাকে নি। প্রতিদিনই এখান থেকে ওখান থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে তার জন্য সম্বন্ধ আনতো। অনেক দিন এমনও হয়েছে ওকে স্কুলেও আসতে দিত না।
এভাবে একটা বছর কেটে যায় তখন আমরা সবাই ফাইভের পরীক্ষা দিয়ে হাইস্কুলে ভর্তি হয়।রাজিয়ার পড়াশোনার প্রতি খুবই মনোযোগ ছিল এবং সে খুবই চেষ্টা করতো স্কুলে নিয়মিত হওয়ার।চলতে চলতে হঠাৎ একদিন রাতে রাজিয়ার বিয়ে হয়ে যায়। রাজিয়ার মা বিয়ে দিয়েছিল রাজিয়াকে একজন বখাটে ছেলের সাথে। অন্য একটা এলাকার মেম্বারের ছেলে ছিল এবং সামান্য একটা পাঁকা ইটের বাড়ি দেখে রাজিয়ার মা ভেবেছিল অনেক বড়লোক মানুষ।উনি আগে পিছে না ভেবে রাজিয়ার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিল এবং হঠাৎ একদিন রাতে তার বিয়েটা হয়ে গিয়েছিল।
বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতে রাজিয়ার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় এবং সে তার শ্বশুরবাড়িতে চলে যায়। কিছুদিন পর তার স্বামীকে একটা মামলায় জেলে ঢোকানো হয়। তখন রাজিয়া বাড়িতে এসে বলে যে সে তার স্বামীর সংসার করতে চায় না। কারণ তার স্বামী প্রায় দিনই তাকে মারধর করে এবং নেশা করে বাসায় ঢুকে। এটাতে তার শ্বশুর-শাশুড়িও কোন প্রতিবাদ করে না। তখন তার পরিবারের লোকজন তাকে বোঝায় যে বিয়ে মানুষের জীবনে একবারই হয় তোমাকে এখানেই মানিয়ে নিয়ে চলতে হবে।
বেশ কয়েক মাস পর তার স্বামী জেল থেকে ছাড়া পায়। এবং সে রাজিয়াকে নিতে আসে বলে সে ভালো হয়ে যাবে। এই বলে তাকে আবারও তার শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যায়। এভাবে রোজগার অশান্তি এবং মারপিট এভাবেই চলতে চলতে বেশ কয়েকটি বছর কেটে যায়। এরমধ্যে রাজিয়া একটা ছেলে সন্তানের মা ও হয়ে যায়। তারপর শুরু হয় তার জীবনে আবারও নতুন ঝড়।
তার জীবনের ঘটনাটা এত বড় যে এক পর্বে বলা সম্ভব নয়। তাই পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমি আশা করছি আপনারা সবাই অপেক্ষা করবেন। এরপর রাজিয়ার জীবনে কি নতুন ঝড় আসলো বা তার শেষ পরিণতি কি সেটা জানার জন্য আগ্রহ থাকলে অবশ্যই সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন।




আসলে ফাইভে করা একটা মেয়ে কতটুকু বা হতে পারে । এই বয়সে বিয়ে সত্যিই চরম বোকামি করেছে রাজিয়ার মা । যার মূল্য দিতে হচ্ছে রাজিয়াকে । পড়ালেখার আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও পড়ালেখাটা চালিয়ে যেতে পারলো না ।তারপরেও ভালো ঘরে বিয়ে হলে একটা কথা ছিল । যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু । ধন্যবাদ ।
খুব ভালো লাগলো আপু গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন। তাই হোক পরবর্তী পর্ব খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করবো।
কিছু কিছু মায়েদের জন্য মেয়েদের জীবন নষ্ট হয়ে যায়। যেমন রাজিয়ার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেল অল্প বয়সে বখাটে ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে। তাছাড়া বিয়ের পর কিছু মেয়ের ফ্যামিলি থেকে সাপোর্ট না পাওয়ার কারণে সারা জীবন এরকম অশান্তির পরিবেশ বেছে নিতে হয়। রাজিয়ার ক্ষেত্রেও ঠিক সেরকম মনে হচ্ছে। বেশ ভালো লিখেছেন গল্পটি। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ঠিক বলেছেন আপু বিয়ের পর কিছু মেয়ের ফ্যামিলি থেকে সাপোর্ট না পাওয়ায় অনেক মেয়ে সারা জীবন অশান্তিতে সংসার করছে। সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করছে।সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
এরকম মায়েদের জন্য অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যায়। মাত্র ক্লাস ফাইভে পড়া একটি মেয়ের কত বছরই বা বয়স হয়েছে। ওই মেয়েটাকে তার মা জোর করে বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল। এখন কি যার সাথে বিয়ে দিয়েছিল সেই ছিল একটা বখাটে ছেলে ছিল এবং মেয়েটাকে প্রত্যেকদিন মারধর করত বাড়িতে নেশা করে এসে। মেয়েটার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে তার মা। আমার তো মনে হয় এরকম মা থাকার চেয়ে না থাকাই অনেক ভালো। যাইহোক রাজিয়ার ছেলে সন্তান হওয়ার পরে তার জীবনে নতুন করে কী ঝড় এসেছে তা জানার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবেন।
প্রথম পর্বটি আপনাদের সবার কাছে ভালো লেগেছে। আশা করছি পরের পর্বটাও ভালো লাগবে। খুব শীঘ্রই শেয়ার করার চেষ্টা করব আপু। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
রাজিয়ার জীবনটা তার মা নষ্ট করে দিয়েছে। আসলে এরকম মায়ের ব্যাপারে পড়লে আমার কাছে অনেক ঘেন্না লাগে। এরকম মায়েদের জন্য অনেক ছেলে মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যায়। আসলে তারা তাদের পাপের শাস্তি অবশ্যই পাবে। মাত্র ক্লাস ফাইভে পড়া একটি মেয়েকে বিয়ে দিয়ে তার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে তার মা। আপনি রাজিয়ার বিষয়টা আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন দ্বিতীয় পর্বে কি হবে তা জানার একটু বেশি আগ্রহ। তাই অপেক্ষায় থাকলাম রাজিয়ার জীবনে কি ঝড় আসতে চলেছে আসবে তা জানার।
ধন্যবাদ ভাইয়া পুরো গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য। রাজিয়ার জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনা দ্বিতীয় পর্ব টি খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করব।
সুন্দর লিখেছেন আপু গল্পটি। গল্পটির মধ্যে অনেক কিছু শিক্ষনীয় আছে। আমাদের গ্রামের মধ্যে এমন অনেক ঘটনা আছে যারা মেয়েদেরকে অপ্ল বয়সে বিয়ে দিয়ে দিছে। কিন্তু এর পরিণতি তেমন ভালো হয়নি। বিশেষ করে যারা দিনমজুর কিংবা অশিক্ষিত পরিবার তারাই এরকম ঘটনা গুলো ঘটায়। তবে যতটুকু মনে হচ্ছে রাজিয়ার শেষ ফলাফল তেমন ভালো হবে না। একটা অল্প বয়সের ছোট মেয়েকে এভাবে শেষ করে দিল তার সব গুলো স্বপ্ন।
জ্বি আপু আমাদের প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে এই ঘটনাগুলো অহরহ। যদিও এই ঘটনাটি আমার চোখের সামনে ঘটে গিয়েছে। তারপরও সেখান থেকে অনেকেই শিক্ষা নিয়েছে আবার অনেকেও এখনো সেই ভুলগুলো করে চলেছে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।