দুঃখের জীবনে ক্ষনিকের সুখ || দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগlast year

sadness-3218845_1280.jpg

সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।দুঃখের জীবনে ক্ষনিকের সুখ গল্পটির প্রথম পর্ব আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আজকে সেই গল্পের দ্বিতীয় এবং শেষ পর্বটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।আশা করছি ভালো লাগবে।

এরপর প্রায় কয়েক বছর কেটে যায় সে এখন মেট্রিক পাশ করেছে। বাচ্চাগুলো বড় হয়ে গেছে বিধায় তাদের সঙ্গে খুব একটা সময় কাটাতে হয় না সে নিজের মতো করে সময় কাটায়।এবার শান্তির মা নানা শান্তির বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগে। তখন ওনারা (বাচ্চাটির বাবা-মা) বলেন যে শান্তিতে তারাই ভালো দেখে শুনে বিয়ে দেবেন কিন্তু শান্তির মা নানা সে কথা কিছুতেই মানতে রাজি ছিল না। কি আর করার তারা চাইলেও ধরে রাখতে পারবে না যেহেতু তাদের কোন অধিকার নেই। এরপর তারা শান্তি কে আবারো সেই গরিব ঘরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেয়। বিয়ের যত খরচ সবকিছু এতদিন যারা শান্তিকে বড় করেছে তারাই দিয়েছেন।

নতুন পরিবারে গিয়ে শান্তির সংসার জীবন শুরু হয়। শান্তির সংসার জীবন কিছুদিন ভালো থাকার পর তার সংসারে অশান্তির ছায়া নেমে আসে। তার শ্বশুরবাড়ির প্রত্যেকটা লোক শান্তিকে অনেক অসম্মান করে অত্যাচার করে। শুধুমাত্র তার স্বামী তাকে ভালোবাসতো। কিন্তু সে সব সময় বাড়িতে থাকতো না বিধায় এসব বিষয়ে শান্তিও তাকে খুব একটা জানত না। তবে এভাবে অন্যায় অত্যাচার সহ্য করতে করতে শান্তি অনেকটা হাঁপিয়ে উঠেছিল। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে সে তার স্বামীকে সব বিষয়ে জানায়।এরপর থেকে যখনই তার সঙ্গে কোন অন্যায় হতো তার স্বামী প্রতিবাদ করতো।

অনেক ভেবেচিন্তে শান্তি এবং তার স্বামী আলাদা খেতে শুরু করে। বাজারের ছোট্ট একটা দোকান করে যেটার পণ্য বিক্রি করে তারা খুব ভালোভাবে সংসার চালাত। এতে তার শাশুড়ি যেন আরো বেশি ক্ষেপে যায় শান্তির প্রতি।একদিন তুমুল ঝগড়া বেঁধে যায় বাড়িতে।ওই সময়ে শান্তির স্বামীও দোকান থেকে দুপুর বেলা খাওয়ার জন্য বাসায় আসে। শান্তি বলে অনেক সহ্য করেছি আর না এই বলে সে রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে। গাড়িতে উঠে মাঝ পথে না যেতেই হঠাৎ একটি নাম্বারে ফোন আসে। এবং তাকে জানানো হয় তার স্বামী আর বেঁচে নেই। শান্তি যখন রেগে বাসা থেকে চলে যায় তখন তার মা এবং পরিবারের লোকজন অনেক বকাবকি করে শান্তির স্বামীকে। শান্তির চলে যাওয়া এবং পরিবারের লোকজনের কথা তার স্বামী নিতে পারেনি তাই সে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

শান্তি ছুটে চলে আসে তার স্বামীর বাড়িতে। এসে দেখে বাড়ি ভর্তি লোকজন। সে স্বামীর অকাল মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। যাইহোক স্বামী মারা যাওয়ার পর শান্তি শ্বশুরবাড়িতে কিছুদিন থাকার পর আর সেখানে থাকতে পারেনি তার শ্বশুর বাড়ির লোকের অত্যাচারে। এখন সে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করে। সে জানে না তার ভবিষ্যত কি।তবে সে যে লোকের বাসায় থাকতো ছোটবেলায় সেখানে যদি থাকতো আরো কিছু বছর তাহলে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারতো। হয়তো আজ তার এই পরিণতি হত না। এখন শান্তির মা নানা না খুব আফসোস করেন কিন্তু কি লাভ করে যা হবার তা তো হয়েই গেছে। শান্তি যে বাসায় থাকত সে বাসার লোকেরা এখনো শান্তির খোঁজখবর নেয়।বাসায় যেতে বলে।

তো বন্ধুরা এই ছিল আমার আজকের গল্পটির শেষ পর্ব। আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আসলে আমাদের যে কোন কাজই অনেকবার ভেবে করা উচিত। তা না হলে শান্তির মতো যে কোন মেয়ের জীবন নিমিষেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।যাইহোক আজকে এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে পরবর্তী সময়ে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।

সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1EmYRYsQvFLAH72WL1voB5Qv1bAb8AZSXixgFjhiMWAnz2UA9cMfriUVJ7ctL7...nSLVWX5o43xBXmLDdwhihbXiBhaPqShV2SFRHcKYd8CXKMs5RdPFoVngFzUPZy735MKSBrn82U6bCmY9F8MzT3ucNgZ2hGFcSdZg7fSmWifdcnibPP7TB2AbsL.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPoodq7ohHzgKQKDmTRgamvrYaPc7Ny9oprPnjvKn4VVe31vKbu8vULt4CSQiq...cEsB7YzR4dFY16BsyLqmXyeeZ2dhcb9AiCRGv2QxRYEMWZK3MDWeaSUjuhffVgn2MrpTTHy4GCQWsyHzxiX6fnrryY4Qy1KBvyqWRwNXsKgUJjVhnUhL1YukxN.png

Xaey6XUsuMsULyX7cP1nbTWJzYmPAgo7FUiwufHRk6Jy2gyG1Db2Jf3F8zDR4enXrGJXJVY8zjUpsz8r7ybb4LRV5UxeCYiYK1QPL3cJGf...AYxpdPLKDUL7U8qu4Pikt2pYsm5FijpvHVGxLifJJPzqmZNKMNA2z45a46JW8rG61eode8Q5PXFhQEQKZCgnKP8ynSwFBAExhqvJUM7KDLc3AeqHmeUQyR5QSZ.gif

Sort:  
 last year 

দুঃখের জীবনে ক্ষনিকের সুখ গল্পটার প্রথম পর্ব আমার পড়া হয়েছিল ‌। আজকে দ্বিতীয় এবং শেষ পর্বটা পড়ে আমার কাছে আরো বেশি ভালো লেগেছে। আসলে যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের ভেবে চিনতে তারপরে ওই সিদ্ধান্তটা নেওয়া উচিত। ভুল একটা সিদ্ধান্তের কারণে শান্তির জীবনটা এখন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যদি ওই বাচ্চাটির ফ্যামিলির কাছে শান্তি থাকতো তাহলে সে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারতো।

 last year 

আমার কাছেও তেমনটাই মনে হয় আপু, যে কোন কিছু করার আগে অবশ্যই একবার হলেও ভাবা উচিত।

 last year 

আসলে যে সিদ্ধান্তই মানুষ নিক না কেন, ভেবেচিন্তে তা না হওয়া উচিত। কারণ তাদেরকে মাথায় এটাও রাখতেই হবে যে, আমরা পরবর্তীতে এই বিষয়টা নিয়ে আফসোস করবো নাকি করবো না। এখন শান্তির মা নানা নানু সবাই আফসোস করছে তাদের কাজের জন্য। তারা যদি ওই বাচ্চাটির বাবা-মায়ের কাছ থেকে শান্তিকে না নিয়ে আসতো, তাহলে হয়তো শান্তির জীবনে এরকম কিছু হতো না। সে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ভালো কিছু করতে পারতো।

 last year 

জীবন আসলে জায়গাভেদে একেক রকম রূপ নেয়, তাই যেকোনো কাজ করার আগে একটু ভেবেচিন্তে এগিয়ে যাওয়াই উত্তম।

 last year 

একটি মেয়ে নিজের বাড়ি ছেড়ে স্বামীর বাড়িতে যায়। স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার পর স্বামী বা পরিবারের অন্য কেউ, যদি সেই মেয়েটাকে এতো অত্যাচার করে, তাহলে সেই মেয়েটি একেবারে অসহায় হয়ে যায়। তবে শান্তির স্বামী ভালো ছিলো বলে, শান্তির পক্ষে ছিলো এবং প্রতিবাদ করেছে। শান্তির স্বামী আত্মহত্যা না করে যদি শান্তিকে নিয়ে অন্য কোথাও চলে যেতো, তাহলে খুব ভালো হতো। যাইহোক শান্তির দুঃখের দিন আর শেষ হলো না। দুই পর্বের এই গল্পটি পড়ে খুব ভালো লেগেছে আপু। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আসলে ঘটনাচক্রে কখন কি ঘটে যায়, তা তো বলা মুশকিল ভাই৷

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 79169.45
ETH 3182.99
USDT 1.00
SBD 2.63