সুখের পরিবারে শোকের ছায়া

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

"হ্যালো",

doll-1551633_1280.jpg
source

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে জেনারেল একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি মাঝেমধ্যে বিভিন্ন সত্য ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করি। আজকে আমি তেমন একটি ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। যেটা কিছু বছর আগে আমার পাশের বাসায় একটি পরিবারের সঙ্গে ঘটেছিল। আশা করছি ঘটনা থেকে আপনারা কিছুটা শিক্ষা নিতে পারবেন। বিশেষ করে যাদের ছোট বাচ্চা আছে তারা।আমার নিজেরও ছোট বাবু আছে এজন্য ভাবলাম আজকে আপনাদের সাথে বিষয়টা শেয়ার করি।

স্ত্রী এবং দুটো ছেলে সন্তান নিয়ে দুলু মিয়ার সংসার। তার সংসারে কোন কিছুরই অভাব নেই। কিন্তু দুলু মিয়া এবং তার স্ত্রীর যেহেতু দুটো ছেলে তাই তারা ভীষণ করে চায় তাদের ঘরে একটি মেয়ে সন্তান আসুক।তাহলে তাদের সংসারটা পরিপূর্ণ হবে। আল্লাহর রহমতে তাদের মনের আশাটা পূর্ণ হয়। তাদের ঘর আলো করে ফুটফুটে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। এবার তারা খুবই খুশী এবং তাদের তিন সন্তান নিয়ে তারা সুখে শান্তিতে ঘর করছিল। দেখতে দেখতে মেয়েটা বছরে পা দিয়েছে। টুকটাক করে হাঁটতে শিখেছে।আধো আধো কথা বলা শিখেছে।

বেশ হাসি খুশি সংসারে শোকের ছায়া নামে। একদিন সকালবেলা দুলু মিয়ার বউ সকালের রান্নাবান্না করছিল। ছেলে দুটো মায়ের কাছেই মাদুর পেরে পড়তে বসেছে। মেয়েটা ও চোখের সামনেই খেলা করছিল।মা রান্নার কাজে মনোযোগী হয়ে পড়ে এবং ভাইয়েরা পড়াশোনায় মনোযোগী হয়ে পড়ে। মেয়েটা খেলতে খেলতে কখন বাড়ির বাহিরে চলে এসেছে তারা বুঝতেই পারেনি। বাড়ির সামনে ছোট্ট একটি গর্ত ছিল যেখান থেকে মাটি তুলে ঘরের কাজ করা হয়েছিল। খেলতে খেলতে মেয়েটা সেখানে পড়ে যায় এবং মারা যায়। এরপর রান্না করতেই মা মেয়েকে না পেয়ে ভাইদেরকে বলে দেখতে যে মেয়ে কোথায় গেল। এরপর দুই ভাই আশপাশ খোঁজার বোনকে খুঁজে না পেয়ে মাকে গিয়ে বলে তারা বোনকে পায়নি। তখন গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে সেই খবর এবং যে যার মত করে খুঁজতে শুরু করে। কে জানে মেয়েটা বাড়ির সামনে একটা গর্তে পড়ে আছে। হঠাৎ করে মেয়েটির বাবার চোখে সেই লোমহর্ষক চিত্রটি ফুটে ওঠে। একঝাপে দুলু মিয়া গর্ত থেকে মেয়েকে তুলে আনে কিন্তু ততক্ষণে মেয়েটা আর বেঁচে নেই।

আমি এই ঘটনাটা আমার চোখের সামনে দেখেছি এবং একটা পরিবারে তখন কি অবস্থা হয় সেটাও দেখেছি। আমার মা আমার বাবু যখন বসতে শিখেছিল তখন থেকে আমাকে নিষেধ করেছিল যেন কোথাও এতটুকু পানি আমি না রাখি। আমার সেই কথাটা এখনো মনে আছে। আমি বাথরুমের দরজা কখনো খোলা রাখি না কোন পাত্রে আমি এতোটুকু পানিও ভরে রাখি না যা দিয়ে আমার সন্তানের বিপদ হতে পারে। সেদিন দুলুমিয়ার স্ত্রী যদি একটু মনোযোগ দিতো তার মেয়ের দিকে হয়তো এত বড় বিপদ ঘটতো না।

যাইহোক কি আর করার।তাদের কপালে হয়তো মেয়ে সুখ নাই। ঘটনাটা অনেক বছর হয়ে গিয়েছে। এখন দুলু মিয়ার দুই ছেলে অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তারা আদৌ কি তার মেয়ের কথা কখনো ভুলতে পেরেছে বা পারবে।সবশেষে একটা কথাযই বলবো যাদের ছোট বাচ্চা আছে তারা খুবই সাবধানে থাকবেন এবং চেষ্টা করবেন বাচ্চাদের সবসময় চোখের সামনে রাখার আপনি যতই ব্যস্ততায় থাকুন।

আজ এ পর্যন্তই। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 2 years ago 

খুব খারাপ লাগলো আপু ঘটনাটা পড়ে। আর আপনি নিজের চোখে দেখেছেন।আহারে,খুব হৃদয়বিদারক ঘটনা। দুলুর মিয়ার পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এলো।আসলে ছোট বাচ্চা ঘরে থাকলে মায়েদের চোখ মাথার চারিপাশে থাকতে হয়।ধন্যবাদ আপু আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

হ্যাঁ আপু আমরা শত কাজে ব্যস্ত থাকলেও ছোট বাচ্চাদের প্রতি আলাদাভাবে খেয়াল রাখা উচিত।তা না হলে এরকম ঘটনা ঘটতেই পারে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

বাচ্চারা যখন একটু হামাগুড়ি দিতে শিখে বা হাঁটতে শিখে তখন খুব বেশি নজরে রাখতে হয়। কারণ তারা তখন দৌড়াদৌড়ি করতে বেশি ব্যস্ত থাকে। ঠিকই বলেছেন দুলুমিয়ার বউ যদি আরেকটু নজরে রাখত তাহলে বাচ্চাটি হয়তো এ বিপদ থেকে বেঁচে যেত। এত ছোট বাচ্চাকে এভাবে হারিয়ে বাবা-মায়ের যে কি অবস্থা তা অনেকটা বুঝতে পারছি। আমাদের সকলের উচিত বাচ্চাদেরকে অনেক সাবধানে রাখা।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

জ্বি আপু সেদিন দুলুমিয়ার বউ যদি আরেকটু সতর্ক হতেন তাহলে হয়তো মেয়েটা আজ পৃথিবীতে বেঁচে থাকত।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আসলে ছোট বাচ্চাদের দিকে একটু বেশি খেয়াল রাখা দরকার। আমার মেয়েটা তো অনেক দুষ্টু। আর তাকে সব সময় চোখে চোখে রাখতে হয়। একটু যদি চোখের আড়াল হয় তাহলে মনের ভিতর অন্যরকম লাগে। আর পরিবারের সবাই চেষ্টা করি তাকে চোখের আড়াল না করার। ঘরের মধ্যে খেলতে দি এবং কোনরকম বিপদ হতে পারে এরকম কিছুই ঘরে রাখা হয় না। বুড়ো মেয়ের স্ত্রী যদি মেয়েটার দিকে একটু খেয়াল রাখতে তাহলে এরকম অবস্থা হতো না মনে হয়।

 2 years ago 

আমার ছেলেও আপু ভীষণ দুষ্ট। আমি তো ওর বাবা ছাড়া কারো সঙ্গে কোথাও যেতেভ দেই না। আমি কাউকে ভরসাই করি না বলতে পারেন। সেটা আমার যতই কাছের লোক হোক না কেন। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

গ্রামে এমন ঘটনা অহরহ আছে যা বাচ্চারা পানিতে পড়ে মারা যায় কিংবা বালতির পানিতে ডুবে মারা গেছে। কিন্তু বাচ্চাদেরকে এমন অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া ভালো নয় খুব সাবধানে রাখতে হয়। আপনি খুব সতর্কমূলক একটি পোস্ট শেয়ার করলে পড়ে অনেক ভালো লাগলো। অবশেষে অনেক খারাপ লেগেছে একটি সুখের পরিবারে শোকের ছাঁয়া নেমে আসলো।

 2 years ago 

জ্বি আপু এটা ঠিক বলেছেন এই ঘটনাগুলো গ্রামেই বেশিরভাগ ঘটে থাকে। আমি গ্রামে গেলে বাবুকে খুবই সাবধানে রাখি। পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

যখন ছোট বাচ্চাদের এরকম মৃত্যু হয় তখন তা মেনে নেওয়া একেবারেই যায় না। সুখের পরিবারে এরকম সুখের ছায়া নেমে আসলে সত্যি অনেক বেশি খারাপ লাগে। ছোট মেয়েটা গর্তের মধ্যে পড়ে মারা গিয়েছিল এটা ভাবতেই আমার কাছে খুবই কষ্ট লাগতেছে। একটা মাত্র মেয়ে ছিল পরিবারের। তাও খুবই ছোট। যদি তার মা একটু খেয়াল রাখত তাহলে এখন মেয়েটি বেঁচে থাকতো। আমাদের সবার বাচ্চাদের দিকে খেয়াল রাখা দরকার। আমি তো আমার মেয়ের দিকে সারাক্ষণ খেয়াল রাখার চেষ্টা করি। এরপর থেকে আরো ভালো করে খেয়াল রাখবো। আপনিও আপনার বাচ্চা দিকে খেয়াল রাখবেন।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাইয়া অবশ্যই আমাদের ছোট বাচ্চাদের দিকে বেশি করে খেয়াল রাখা উচিত। কারণ তারা কিছুই বোঝে না কোনটা তাদের জন্য ভালো এবং কোনটা তাদের জন্য বিপদ। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

অনেক সময় হাসি খুশি সংসারে কখন যে বিপদ আসে বলা যায় না। আসলে মা বাবা তিনটি ছেলেমেয়ে নিয়ে খুব সুখেই ছিল। একমাত্র মেয়েটি যখন গর্তে পড়ে মরে গেল তখন মা বাবার কাছে কেমন যে লাগলো। আসলে আপু আপনি ঠিক বলেছেন ছোট বাচ্চা থাকলে কোন জায়গা পানি রাখা ঠিক না। আপনি ঠিক করছেন বাথরুমে দরজা বন্ধ রেখে এবং বালতির মধ্যে পানি না রেখে। আল্লাহ সবাইকে আপত বিপদ থেকে রক্ষা করুক। সত্যি আপনার পোষ্টটি পড়ে অনেক খারাপ লাগলো।

 2 years ago 

শহরে আছি আমাদের বাচ্চাদের বিপদ হবে না এটা বলা যাবে না। তাইতো আমিও সবসময় বাথরুমের দরজা বন্ধ রাখি। বালটিতে বা গামলায় কোনভাবেই এতোটুকু পানি জমে রাখি না। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। এবং পরিবারটির জন্য খুব কষ্ট লাগতেছে। দুটি ছেলে একটি মেয়েকে নিয়ে পরিবারকে অনেক সুখেই ছিল মনে হয়। আসলে বাচ্চা মেয়েটির অকাল মৃত্যুতে তাদের পরিবারের সোগের ছায়া নেমে আসলো। ছোট বাচ্চা থাকলে ঘরের সামনে পানি এবং আগুন বিভিন্ন দিকে খেয়াল রাখতে হয় পরিবারের লোক গুলোকে। ছোট বাচ্চাগুলো আপদ বিপদগুলো থেকে রক্ষা করুক। এই অকাল মৃত্যু টি আপনি সামনে থেকে দেখেছেন। আপনার কাছে তো অনেক খারাপ লাগলো।

 2 years ago 

জ্বি ভাইয়া এই ঘটনাটা আমি সামনে থেকে দেখেছি এবং আমার পাশের বাসার ঘটনা।হঠাৎ করে এসে ঘটনাটা মনে করলো তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.33
JST 0.034
BTC 111096.42
ETH 4298.17
USDT 1.00
SBD 0.83