কুসন্তানের থেকে নিঃসন্তান থাকা ভালো || জেনারেল রাইটিং

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

love-2583943_1280.jpg
সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আজকে আমি একটি বাস্তব ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব।যখন দুজন ছেলে মেয়ের বিয়ে হয় সংসার হয় তখন সেই সংসারে সন্তান হওয়ার পর সেটি একটি সুখী সংসার হিসেবে গড়ে ওঠে। আবার সেই সন্তান যদি কুসন্তান হয় তাহলে সেই সংসারটা যেন না হওয়াই ভালো ছিল।তেমনি একটি গল্প আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব যেটি আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি।

রহিম মিয়া বেশ বড়লোক মানুষ এবং চাকরি করেন। স্ত্রী দুই মেয়ে এবং এক ছেলে নিয়ে তার সুখের সংসার। বড় মেয়ের লেখাপড়া শেষ হলে ভালো একটি ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেন।রহিমের ইচ্ছা ছেলেকে ভালোভাবে মানুষ করবে এবং অনেক অনেক পড়াশোনা শিখাবে। ছোট মেয়েটা খুবই ছোট প্রাইমারিতে পড়ছে। রহিম মিয়া একদিন তার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে একটি ভালো স্কুলের খবর পান। এবং বাড়িতে এসে স্ত্রীর সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেন ছেলেকে সেখানে ভর্তি করাবেন। যেই ভাবা সেই কাজ ছেলেকে সেখানে ভর্তি করিয়ে হোস্টেলে রেখে আসে। ছেলেও বেশ ভালই পড়াশুনা করছে ছাত্র ভালো রেজাল্টও ভালো।

অনেকটা বছর গড়িয়ে যায় ছোট মেয়েটা এখন কলেজে পড়ছে। ছেলেটা পড়াশোনা শেষ করে বাসায় এসেছে। আর ঠিক তখনই রহিম মিয়া তার ছেলের মধ্যে অনেক বাজে আচরণ দেখতে পায়। যেটা দেখে সে রীতিমত অবাক হয়ে যায়। তার ছেলে প্রতিনিয়ত অনেক রাত করে বাসায় ফিরছে। আজেবাজে ছেলেদের সঙ্গে ঘোরাফেরা করছে। যেটা রহিম মিয়া কোনভাবেই থামাতে পারছে না। যতই দিন বাড়ে ততই ছেলের অত্যাচারও বাড়ে।

এভাবে প্রতিনিয়ত দিন গড়িয়ে যাচ্ছিল ছেলের অত্যাচার ও বাড়ছিল। রহিম মিয়া অনেক চেষ্টা করে তাকে বিয়ে দিয়ে ভালো করার কিন্তু ছেলে বিয়েতেও রাজি হচ্ছিল না।প্রত্যেকদিন অনেক অনেক টাকা নিয়ে গিয়ে নষ্ট করত। প্রতিনিয়ত টাকার জন্য বাসায় বাবা-মার উপরে অত্যাচার করত। কখনো গায়ে হাত তুলত না কিন্তু অনেক মানসিক অত্যাচার করত। রহিম মিয়া এবং তার স্ত্রীর বয়স হয়েছে। তারা কি করবে কিছুতেই ভেবে উঠতে পারছে না।

দিন দিন তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। না সহ্য করতে পারছে না কাউকে বলতে পারছে না ছেলেকে সঠিক পথে আনতে পারছে। তারা যেন তার ছেলের কাছে বন্দি হয়ে আছে। তারা ভেবেছিল তাদের সুখের সংসার হয়তো খুব ভালোভাবেই কাটবে কিন্তু একটি কুসন্তান যে তাদের সংসারটা এভাবে নষ্ট করে দেবে তারা বুঝতেই পারেনি। রহিম মিয়া খুব আফসোস করে বলেন তার যদি আরও একটি মেয়ে থাকতো তাহলে খুব ভালো হতো। অন্তত মেয়েদেরকে বিয়ে দিয়ে একা খুব সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করা যেত।

এত কিছুদিন আগেও শুনতে পেলাম রহিম মিয়ার ছেলের প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মত ধার দেনা হয়েছে।যেগুলো শোধ করতে রহিম মিয়াকে জমি বিক্রি করতে হচ্ছে।হয়তো ছেলের জন্য একদিন তাকে নিঃস্ব হতে হবে। এভাবেই হয়তো বাকি জীবনটা তাদের কাটবে ছেলের কাছে জিম্মি হয়ে।

পরিশেষে একটি কথাই বলবো সন্তানকে শুধু মানুষ করার জন্য বা উচ্চ শিক্ষা দেওয়ার জন্য বড় বড় প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করালেই হবে না তারা যেন সুশিক্ষিত হয় সেই দিকটাতে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। আর সত্যিই এমন সন্তান থাকার থেকে না থাকাই ভালো। যাইহোক বন্ধুরা আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।

সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1EmYRYsQvFLAH72WL1voB5Qv1bAb8AZSXixgFjhiMWAnz2UA9cMfriUVJ7ctL7...nSLVWX5o43xBXmLDdwhihbXiBhaPqShV2SFRHcKYd8CXKMs5RdPFoVngFzUPZy735MKSBrn82U6bCmY9F8MzT3ucNgZ2hGFcSdZg7fSmWifdcnibPP7TB2AbsL.png

rd3GVFgaNqfa5weVZtxxbjKtDyTEHjfxPPPJvmPbgZ2G7pL6CvtSE5hy2br8XMSLKQjggTDT9dnZnYJupZM3bE9EMptuNvwQ2hwzoB25vf...UfGWJsmL5WHRq3WCUtTYe3KuZwiwVWXjmcT4nR7Sp38QJcEKsECc5HkaDsrUqeJnKLKD88mQATt9SKpEEaMFtxZgahKHjxRb3MydeP5LoDjkQnmc2YmxygubZF.gif

Xaey6XUsuMsULyX7cP1nbTWJzYmPAgo7FUiwufHRk6Jy2gyG1Db2Jf3F8zDR4enXrGJXJVY8zjUpsz8r7ybb4LRV5UxeCYiYK1QPL3cJGf...AYxpdPLKDUL7U8qu4Pikt2pYsm5FijpvHVGxLifJJPzqmZNKMNA2z45a46JW8rG61eode8Q5PXFhQEQKZCgnKP8ynSwFBAExhqvJUM7KDLc3AeqHmeUQyR5QSZ.gif

Sort:  
 11 months ago 

পোস্ট টি খুব মনযোগ দিয়ে পড়লাম এবং রহিম মিয়ার জন্য কষ্ট হচ্ছে। রহিম মিয়া চাকুড়ি করেন বড়োলোক মানুষ কিন্তুু ওনার ছেলে অসৎসঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে। খুব দুঃখজনক ঘটনা এটি।ছেলের ঋণের টাকা শোধ করতে হয় তো রহিম মিয়ার কষ্টে গড়া ধন সম্পাদ সব শেষ হয়ে যাবে।একদম ঠিক বলেছেন বাচ্চাদের শুধু শিক্ষত নয় সুশিক্ষিত গড়ে তুলতে হবে।ধন্যবাদ পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

আসলে আপু আপনার পোস্ট পড়ে রহিম মিয়া জন্য অনেক খারাপ লাগলো। সত্যি আপু কুস্তানের চেয়ে নিঃসন্তান ভালো। সত্যি এই সস্তানের জন্য একদিন রহিম মিয়া কঠিন বিপদের সম্মুখীন হবে।ধন্যবাদ আপু।

 11 months ago 

জ্বী আপু রহিম মিয়ার জন্য আবারও খুব খারাপ লাগে। যাইহোক কি আর করার। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

সন্তানদেরকে অবশ্যই চোখে চোখে রাখা উচিত। সন্তানরা কখন যে বিপদের পথে চলে যায় তা বাবা-মা বুঝতেই পারে না। কিন্তু যখন বুঝতে পারে তখন খুব দেরি হয়ে যায়। রহিমের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটি হয়েছে। হয়তো সন্তানের বিভিন্ন ধরনের দেনা শোধ করতে করতে তার সম্পত্তি ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাবে। এজন্য ওই সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা আসলেই খুব জরুরী।

 11 months ago 

ঠিক বলেছেন আপু সন্তানদের সব সময় চোখে চোখে রাখা উচিত। তারা কার সঙ্গে মিশছে কোথায় মিশছে ভালো কিছু শিখছে কিনা সব বিষয়ে খেয়াল রাখা দরকার।সময় মতো যদি রহিম মিয়া খেয়াল রাখত তাহলে হয়তো পরিণতিটা এমন হতো না। সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।

 11 months ago 

আসলেই এরকম সন্তান থাকার চেয়ে সন্তান একেবারে না থাকাই ভালো। রহিম মিয়া তার ছেলে কে সবকিছুই দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এবং কি তাকে ভালো স্কুলেও ভর্তি করিয়েছে যেন ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারে। আর পড়াশোনা শেষে যখন সে বাড়িতে ফিরে ছিল, তখন তার আসল রূপ তার বাবা মা দেখতে পেয়েছিল। সে এতটাই খারাপ ছিল যে বাবা-মায়ের উপর অনেক অত্যাচার করেছে। আসলে নিজের সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা অনেক বেশি প্রয়োজন। আপনি পুরোটা অনেক সুন্দর করে লিখেছেন, যা আমার খুব ভালো লেগেছে।

 11 months ago 

অনেক সময় বড় প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করালেই সন্তানরা ভালো মানুষ হয় না। যেমনটা রহিম মিয়ার ছেলে হয়েছে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

একদম ঠিক কথা। সন্তান হলে লাভ কি। যদি সেই সন্তান জীবন দর্শায় কোন কাজেই না আসে। আমি তো মনে করে এর চেয়ে সারা জীবন নিঃসন্তানই থাকা ভালো। দারুন সুন্দর করে আপনি আমাদের মাঝে একটি গল্প তুলে ধরেছেন। আপনার আজকের গল্পটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

ঠিক বলেছেন আপু এমন সন্তান থাকার থেকে নিঃসন্তান হয়ে থাকা ভালো। ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

এরকম কুসন্তান গুলোর কারণে বাবা মায়ের জীবনে দুঃখ কষ্ট নেমে আসে। আর এরকম কুসন্তান না থেকে নিঃসন্তান থাকাই অনেক বেশি ভালো। রহিম মিয়া এবং তার স্ত্রী নিজের ছেলেকে ভালোভাবে মানুষ করতে চেয়েছিলেন। তাকে ভালো একটা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো হলেও সে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারেনি। সন্তান বড় হয় যদি এরকম রূপ ধারণ করে, তাহলে এই সন্তান না থাকাও ভালো রয়েছে। এরকম সন্তান থেকে আর কি লাভ হয় বাবা মায়ের। রহিম মিয়া এবং তার স্ত্রীর জন্য অনেক খারাপ লাগতেছে এখন।

 11 months ago 

রহিম মিয়ার ছেলে প্রতিনিয়ত বাসায় খুব অশান্তি করে বাবা মায়ের সঙ্গে। যেটা তাদের কখনো প্রাপ্য ছিল না। সন্তানকে শিক্ষিত করার জন্য বাহিরে পড়াশোনা করিয়েছিল কিন্তু ছেলে দিনশেষে অমানুষ হয়ে ফিরেছে। এতে অবশ্য তাদের কোন দোষ নেই। তবে আরো বিশেষভাবে খেয়াল রাখা উচিত ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। রহিম এর ছেলের মতো অনেকেই আছে যারা পিতা-মাতাকে নিঃস্ব করে দিচ্ছে। তাই সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করার জন্য অবশ্যই তাদের সবসময় খোঁজ খবর নিতে হবে এবং সন্তানদের দিকে সব সময় নজর দিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, কোনো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করতে পারে না। একমাত্র অভিভাবকের সচেতনতাই পারে সন্তানদের সঠিক পথ দেখাতে। চমৎকার একটি শিক্ষামূলক পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 11 months ago 

এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া আমাদের আশেপাশে এরকম ঘটনাগুলো এখন প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। যেগুলোর আসলে কোন সমাধান নেই বা থাকলেও হয়তোবা বাবা মা লোক লজ্জার ভয়ে কিছু বলতে পারছে না।

 11 months ago 

অবশ্যই এমন কুসন্তান থাকার চেয়ে নিঃসন্তান থাকা খুব ভালো। কারণ এমন কুসন্তান যেকোনো পরিবারে একজন থাকলেই পুরো সংসার একেবারে তছনছ করে দেয়। এজন্য ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করালেই হয় না, বরং ছোট থেকেই অভাব অনটন দেখাতে হয়। যখন যেটা আবদার করে সেটা সাথে সাথে না দেওয়া ই ভালো। পড়াশোনার পাশাপাশি দ্বীনের শিক্ষাও দিতে হয়। যাইহোক এমন কুসন্তান যেন কাউকে না দেয় আল্লাহ তায়ালা সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76024.68
ETH 2926.23
USDT 1.00
SBD 2.60