আমার বাপের অনেক টাকা [১০% লাজুক খ্যাকের জন্য ]
07-02-2022
২৫ মাঘ,১৪২৮ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | আমার বাপের অনেক টাকা |
---|---|
রচনা | গোলাম সারোয়ার অনিক। |
পরিচালনা | এম আই জুয়েল। |
প্রযোজক | মোরশেদ খান হিমেল |
অভিনয়ে | ফারহান আহমেদ জোভান, তাসনিয়া ফারিন,তানজিম হাসান অনিক,মনিরা মিঠু,আব্দুল্লাহ রানা। |
দৈর্ঘ্য | ৪১ মিনিট। |
মুক্তির তারিখ | ২৬ জুলাই, ২০২১ |
ধরন | সামাজিক,ড্রামা,কাল্পনিক |
ভাষা | বাংলা। |
দেশ | বাংলাদেশ |
কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায় সাখাওয়াত সবাইকে টাকা দিতে থাকে। আজকের নাটকটি মূলত তাকে ঘিরেই। সাখাওয়াত তার বাবার একমাত্র ছেলে। পুরান ঢাকার মধ্যে তার বাবা বড় একটি আড়তের ব্যবসা করে। তার বাবাকে হাজী লিয়াকত আলী বলেই চিনে সবাইকে। বাবার টাকা পেয়ে সাখাওয়াত সবাইকে টাকা দিতে থাকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই। বিপদে পরলে কেউ যখন তার কাছে টাকা চাইতে আসে সে টাকা দিয়ে দেয়। কারন তার কাছে টাকা কিছুই না! কিন্তু সাখাওয়াত এর মা সাখাওয়াত ও তার বাবার এসব কর্মকাণ্ড মোটেও পছন্দ করেনা। সাখাওয়াত এর মা চাই সে বিয়ে করে বাবার ব্যবসা দেখভাল করুক আর এইভাবে অযথা টাকা নষ্ট না করুক। কিন্তু কে শুনে কার কথা! বাবাই যেখানে প্রশ্রয় দিয়েছে টাকা অযথা নষ্ট করার সেখানে মা কতটুকুই বা পারে।
একদিন পাড়ার গলিতে তার একমাত্র বন্ধু মিন্টুর সাথে আড্ডা দিচ্ছিল। ঠিক সেই সময়ে খেয়াল করলো কে যেন সিএনজি ভাড়া নিয়ে ঝগড়া করছে গাড়ির চালকের সাথে। গাড়ির চালক মেয়েটির কাছ থেকে ভাড়া হিসেবে ৫০০ টাকা দাবি করে কিন্তু মেয়েটি ৫০০ টাকা দিতে নারাজ। কারণ সে গুগল করে জানতে পারে যে পুরান ঢাকা পর্যন্ত ভাড়া দাড়ায় ৩৫০ টাকা। মেয়েটি গাড়ির চালককে ১০০০ টাকা দিলে। গাড়ির চালকের কাছে বাংতি না থাকায় মেয়েটি সাখাওয়াত ও তার বন্ধুকে ডাক দিয়ে কাছে নেয়। তারপর সাখাওয়াত এর বন্ধু ৩৫০ টাকার ভাড়া দিয়ে দেয়। এদিকে সাখাওয়াত মেয়েটিকে প্রথম দেখাতেই পছন্দ করে ফেলে। তাই সে ভাড়া না দিতে কোনো অপারগ প্রকাশ করেনি। সাখাওয়াত বেখেয়ালিভাবে টাকা নষ্ট করে কিন্তু তার বন্ধু মিন্টু সবসময় চেষ্টা করে যেন সে অযথা টাকা নষ্ট না করে। এবার মেয়েটির পরিচয় দেয়া যাক। মেয়েটি হচ্ছে লিজা। সাখাওয়াতদের বাসার পাশেই তাদের বাসা। সবেমাত্র বিবিএ পাশ করে এসেছে বাসায়। সাখাওয়াত এই লিজার সাথে ছোটবেলায় অনেক খেলাধুলা করেছে একসাথে। লিজা ছোটবেলায় একটু মোটা ছিল। এখন সে আগের মতো নেই এজন্য সাখাওয়াত তাকে চিনতে পারেনি। যায়হোক অবশেষে লিজা টাকা না দিয়েই চলে যায়। সে বলেছিল বাসা থেকে টাকা নিয়ে যেতে।
কিন্তু মেয়েটি টাকা ফেরত দেয়নি । আর সাখাওয়াতের কাছে এই টাকার পরিমাণ অতি সামান্য। কারণ তার বাপের অনেক টাকা। তার বন্ধুর একটাই কষ্ট যে মেয়েটি দিনে দুপুরে টাকা চিনতাই করে নিয়ে চলে গেছে। তো অবশেষে সিদ্ধান্ত নেয় সাখাওয়াত মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে টাকা নিয়ে আসবে। সাখাওয়াত বিয়ের সাজে তাদের বাড়িতে যায়। দেখে বুঝার উপায় ছিল না যে সে টাকা নিতে আসছে লিজার কাছ থেকে। উল্টো তাদের বাড়িতে এসে ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে যায় ফ্যান,ফ্রিজ ও সোফা কিনার জন্য। এসব কর্মকাণ্ড দেখে তার বন্ধু রীতিমত হতবাক হয়ে যায়। টাকা সংগ্রহ করতে এসে উল্টো টাকা দিয়ে দিছে সাখাওয়াত।
পরের দিন ছাদে আচার শুকাতে এসে সাখাওয়াতের মায়ের সাথে দেখা হয় লিজার। সাখাওয়াতের মা প্রথমে লিজাকে চিনতে পারেনি। কারণ অনেক বছর পর পড়াশোনা শেষ করে বাসায় এসেছে লিজা। লিজা ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিতেই চিনে ফেলে সাখাওয়াতের মা। সাখাওয়াতের মা লিজার পড়াশোনার খবর শুনে খুব খুশি হয়।
অবশেষে সাখাওয়াত ও লিজার সম্পর্ক আরও গভীর হতে থাকে। লিজা সাখাওয়াতের টাকা নষ্ট করার এই কাজ মোটেও পছন্দ করেনি। তাই সে প্লেন করে টাকা সাখাওয়াতের কাছ থেকে নিয়ে তার কাছে জমা করে রাখতে থাকে। এদিকে সাখাওয়াতের মা চিন্তা করে তার ছেলেকে লিজার সাথে বিয়ে দিবে। কিন্তু সাখাওয়াতের বাবা এখনি সাখাওয়াতকে বিয়ে দিতে রাজি না। সাখাওয়াতের বাবা চাই তার ছেলে আরও বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিক। সময় হলে নিজেই বিয়ে করে ফাইনালি বাবার ব্যবসার হালও ধরবে।
কথাই থাকেনা টাকার গরম বেশিদিন থাকেনা। অবশেষে এমনটাই হলো। সাখাওয়াতের বাবার আড়তে আগুন লেগে সব পুড়ে যায়। সাখাওয়াতের পরিবার একদম নিঃস্ব হয়ে পড়ে। এই চিন্তায় সাখাওয়াতের বাবা একদম ভেঙ্গে পড়ে। ফাইনালি সাখাওয়াতের বাবা স্ট্রোক করে। হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার বলে যে তার বাবার ইমার্জেন্সি অপারেশন করাতে হবে। আর অপারেশন করার জন্য ডাক্তার বললো চার থেকে পাচঁ লাখ টাকা লাগবে। এজন্য সাখাওয়াত এতোদিন যাদেরকে অযথা টাকা দিয়েছে তাদেরকে ফোন দিয়ে টাকা চাইলো কিন্তু তারা সবাই টাকা দিতে না করে দিল।
তারপর তার একমাত্র বন্ধু মিন্টু হাসপাতালে এসে দেখে এখনো টাকা মেনেজ হয়নি। মিন্টু বললো এখন কই তারা যাদেরকে এভাবে এতোদিন টাকা দেয়া হলো। বিপদের সময় কেউ কারো পাশে থাকেনা। মিন্টু তার মায়ের রেখে যাওয়ার শেষ সম্বল ডিপিএস ভেঙে লাখ টাকার মতো নিয়ে আসে। আর এদিকে এতোদিন লিজাকে যে টাকা দেয়া হয়েছিল লিজা সে টাকাগুলো তাদের বিয়ের জন্য জমিয়ে রেখেছিল। কারণ লিজা জানতো এ টাকাগুলো সাখাওয়াতের কাছে থাকলে খরচ করে ফেলবে। লিজার কাছে জমানো কিছু টাকা দিলো তার বাবার অপারেশনের জন্য। এভাবেই মূলত নাটকের সমাপ্তি হয়।
নাটকটি থেকে শিক্ষা
নাটকটি অনেক শিক্ষণীয় ছিল। নাটক থেকে কিছু শিক্ষা পেয়েছি। কখনো টাকার গরম দেখাতে নেই কারণ এটা বেশিদিন স্থায়ী থাকেনা। আর আপনার কাছে যতদিন টাকা থাকবে ততদিন সবাই আপনাকে ভাই ভাই বলবে। আরেকটি শিক্ষা পেয়েছি বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু মিন্টু তার সুন্দর উদাহরণ দিয়েছে। অবশেষে ভালোবাসার মানুষটিও ছেড়ে যায়নি। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
ব্যক্তিগত মতামত
আমার বাপের অনেক টাকা নাটকের প্রথমদিকে আমার কাছে বিরক্ত লাগছিল খুব। কারণ অযথা এভাবে টাকা নষ্ট করা! বাপের টাকা থাকলেই যে অযথা নষ্ট করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তবে নাটকটি খুবই ভালো ছিল। পরিচালক খুব সুন্দর করে নাটকের মাধ্যমে আমাদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। জোভান, অনিক ও তাসনিয়া ফারিন খুব সুন্দর করে নাটকটিতে অভিনয় করে দেখিয়েছেন। বাস্তব জীবনে আসলে এভাবে টাকা নষ্ট করতে দেখিনি। তবে যারা করে তাদের জন্য ভালো একটি উদাহরণ এই নাটকটি।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকটির লিংক
আশা করি নাটকটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। নাটকটি দেখে না থাকলে লিংকে প্রবেশ করে দেখতে পারেন। আমি চেষ্টা করেছি মূল কাহিনীটা শেয়ার করার জন্য। আশা করি বুঝেছেন। সকলের সু্স্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share link
আমার বাপের অনেক টাকা নাটকের রিভিউ দেখে খুব ভালো লেগেছে ভাইয়া। আমি দেখেছি নাটক টা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।তবে ভাইয়া বাস্তব জীবনে কেউ এভাবে টাকা কখনোই নষ্ট করে না।ভাইয়া আমিও কিন্তু একদম নষ্ট করি না একদম কিপটা হি হি হি🤭।
ধন্যবাদ ভাইয়া নাটকের রিভিউ পড়ে ভালো লেগেছে। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু নাটকের রিভিউটি পড়ে খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ❤️ ।
বাংলা নাটক কম দেখলেও জোভানের নাটক আমার কাছে অনেক ভালো লাগে যদিও এই নাটকটা এখনো দেখা হয় নাই। তবে আপনার রিভিউ পড়ে আমার নাটকের কাহিনী অনেক ভালো লাগছে। কিছু দিনের মধ্যেই দেখবো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর রিভিউ এর জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার একটি মন্তব্য করার জন্য ❤️
কি নাম রে বাবা নাটকের। তবে সুন্দর রিভিউ ছিল আপনার। রিভিউ টি বেশ ভালই লাগলো আমার কাছে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি নাটকের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ❤️
আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ❤️