বিষন্ন বিকেলে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত
18-05-2022
৪ জৈষ্ঠ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
শুভ অপরাহ্ণ,
কেমন আছেন তাহলে? আশা করছি ভালোই আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। কাল রাতে ভেবেছিলাম পোস্টটি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। কিন্তু তা আর হলো কই? নেটওয়ার্ক সমস্যা খুবই ডিস্টার্ব করছে কয়েকদিন ধরে। গ্রামে তো একদিকে লোডশেডিং তা উপরে আবার নেটওয়ার্ক সমস্যা। আর নেটওয়ার্ক সমস্যা হওয়ারই তো কথা! কারণ বাংলালিংক এ কিনেছি ডাটা প্যাক। আর বাংলালিংক সার্ভিস যেন গ্রামে কম। নেটওয়ার্ক ৪জি থেকে এইস+ বা ২জি তে চলে আসে। ছবি আপলোড দিলেও বারবার ক্যানসেল হয়ে যাচ্ছিল। তাই এখন লিখতে বসলাম। বাড়ির বাইরে গেলে অবশ্য নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় ভালো।
এখন প্রায় দুপুর হয়ে গেছে। বাহিরে প্রচন্ড রোদ আজ। তবে জৈষ্ঠ মাসে কখন আকাশ কালো হয়ে যায় বলা মুশকিল। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ এখন ধান শুকানো নিয়ে ব্যস্ত। কারন জৈষ্ঠ মাসের পরেই তো বর্ষাকাল। আর তখন অনেক বৃষ্টি হয়ে থাকে। এখন ভালোই ভালো ধান শুকিয়ে ঘরে তুলতে পারলেই ভালো। কৃষকেরা সারা বছর এতো কষ্ট করার পর যখন তারাঁ ধান ঘরে তুলে তখন তাদের মুখে আনন্দের হাসি ফুটে উঠে। আমাদের দেশের খাদ্যের চাহিদা তারাই পূরণ করে থাকে। মনে পরে গেল বিখ্যাত একটি কবিতা রাজিয়া খাতুনের চাষী কবিতা। তিনি লিখেছেন -
সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা,
দেশ মাতারই মুক্তিকামী, দেশের সে যে আশা।
দধীচি কি তাহার চেয়ে সাধক ছিল বড়?
পুণ্য অত হবে নাক সব করিলে জড়।
চাষী বা কৃষকরাই আমাদের দেশের বড় সম্পদ। তাদের কাছে আমরা আজীবন ঋণী।
যায়হোক, অনেক কিছুই বলে ফেললাম। গতকাল আকাশটা সকাল থেকে বৃষ্টি নামবে নামবে এমন ভাব ছিল। ভাবছিলাম বাহিরে যাবো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিবো। কিন্তু তা আর হলোনা। ব্যস্ততা আসলে বন্ধুত্বের দূরত্বটা যেন বাড়িয়েই দিচ্ছে। বাড়িতে আসলে যেসব বন্ধুদের সাথে কথা হয় এখন ভার্সিটি খোলে দেয়ার কারণে সবাই চলে গেছে। তবুও কয়েকজন বন্ধু বাড়িতে কাম কাজ নিয়ে ব্যস্ত । বাহিরেও বের হতে পারবেনা। আমার অবশ্য মন খারাপ হয়ে গেল। আমাকে যখনই কোনো বন্ধু ডেকেছে আমি তখনই তাদের সাথে দেখা করার চেষ্টা করেছি। দশটায় উপস্থিত থাকতে বলা হলে আমি নয়টার দিকেই সেখানে হাজির। আমি আগেবাগেই চলে যায়। আমার দায়িত্বের জায়গা থেকে মনে হয় আগে চলে যাওয়াই ভালো। অথচ আমি গিয়ে দেখি তাদেরই কোনো খোজঁখবর থাকে না। আসলে কাউকে আসতে বলা হলে যথাসময়ে না আসলে খারাপ লাগে আবার যখন আমি আগে চলে যায় তখন না আসে তখনও খারাপ লাগে। বাঙালি তো তাই হয়তো। ফোনে কথা বললে যখন কেউ বলে বাড়িতে আছি অনেকেই বলে আদৌ কি সে বাড়িতে! ত্রিশ মিনিটের রাস্তা যখন বলে এক মিনিটের মধ্যেই আসতেছি আদৌ কি এটা সম্ভব হয়! হাহাহা! কিছু করার নেই।
এরকম একটা ওয়েদারে ঘরের ভিতরে বসে থাকা আসলেই বোকামি! এদিকে আমার মনটাও খারাপ ছিল। ঠিক তখন আমার ফুফাতো ভাই মোবাশ্বির এলো আমাদের বাড়িতে। আসলে মোবাশ্বির এর নানুর বাড়ি হলো আমাদের বাড়ি। তো মামার বাড়িতে নরমালি আসে আম জাম ফল খেতে। আমাদের গাছে ভালো আম হয়েছে এবার। তবে বাতাসে রাতে পড়ে যাচ্ছে আবার দেখলাম বাদুড় ও আম খেয়ে খেয়ে ফেলে। তারপর কিছু আম সংগ্রহ করা ছিল। মোবাশ্বিরকে বললাম এখান থেকে নিয়ে খেয়ে ফেলতে। খাওয়া শেষ হলে বললাম আমি সাইকেল দিয়ে ঘুরে আসি। কিন্তু সেও আমার সাথে ঘুরতে যাবে বায়না ধরে বসলো। কি আর করা! তাকেও সাথে করে চললাম অজানা উদ্দেশ্যে। সাইকেল চালাতে থাকলাম আর এদিকে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকলাম। বাহিরে হাওয়া ছিল এজন্য সাইকেল চালাতেও ভালো লাগছিল। আমরা জামতলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে দিলাম। এদিকটায় ওয়েদারটা উপভোগ করা যাবে। আর অনেকদিন হলো যাওয়া হয়না। রাস্তার পাশে খড় শুকানোর জন্য লাড়া ছিল। বৃষ্টি আসবে দেখে হয়তো খড় রাস্তার পাশে সরিয়ে রেখেছে। যখনই রোদ আসবে তখনই আবার রাস্তায় শুকানোর জন্য দিয়ে দিবে। গ্রাম বাংলার এ দৃশ্যগুলো আপনাকেও মুগ্ধ করবে। রাস্তা প্রায় ফাকাঁ ছিল। সাইকেল চালাতেও ভালোই লাগছিল। মনে হচ্ছিল এ বুঝি বৃষ্টি নামবে! তখন সাইকেল থেকে নেমে আমি কিছু প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি তুলে নিলাম। সাড়ি সাড়ি খড়ের স্তূপ ছিল আর আকাশটা মনে হচ্ছিল মেঘে ভারী হয়ে যাচ্ছে।
আমরা দুজন সাইকেল থেকে নেমে কিছুক্ষণ খড়ের স্তূপের উপর বসে পড়লাম। আর বসে বসে আশে পাশে সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকলাম। মনটা কিছুক্ষণ আগেও ভালো ছিল না। এমন ওয়েদারে এসে মনটা নিমিষেই ভালো হয়ে গেল। এদিকে তখন সন্ধ্যাও হয়ে যাচ্ছে। তাই আর বেশিক্ষণ সেখানে থাকলাম না। আবার সাইকেল চালিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিয়ে দিলাম। মোবাশ্বিরকে নিয়ে বিকালে ভালোই একটি সময় কাটিয়েছি। আপনাদেরও যদি কখনও মন খারাপ হয়ে পড়ে তাহলে বেরিয়ে পরুন কোনো এক জায়গার উদ্দেশ্যে। যেখানে গেলে আপনার মনটা ভালো হয়ে যায়। জীবন সুন্দর তাই উপভোগ করার চেষ্টা করাই ভালো।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | W3w |
Date | 17 May,2022 |
আশা করি আমার পোস্টটি পড়েছেন। আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। সকলের জন্য দোয়া ও ভালোবাসা রইল।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
আসলে বন্ধুদের সাথে বিকেল মুহূর্তে ঘুরতে খুবই মজা লাগে আমার কাছে। আপনার ঘোরাঘুরি গল্পটা সুন্দর ছিল। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
বিষণ্ণ বিকেলে আপনি অসাধারণ একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মনে হচ্ছে এই দিনের আবহাওয়া অনেক সুন্দর ছিল। বিকেলের হালকা বাতাস গায়ে লাগল সত্যিই অসম্ভব সুন্দর লাগে প্রানজুরিয়েযায় যেন এক মনোমুগ্ধকর একটি আবহাওয়া থাকে বিকেল বেলা। এত সুন্দর একটি অনুমতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এই সময়টাই বিকালে বেশি মেঘাচ্ছন্ন থাকে আকাশটা। ঘুরতেও ভালো লাগে তখন। আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া
বিষণ্ণ বিকেলে আপনি খুব সুন্দর মুহূর্ত পার করলেন। বিকেলে এরকম মুহূর্ত উপভোগ করতে সবাই পছন্দ করে। কাটানো মুহূর্ত অসাধারণ ছিল।
জি ভাই আপনি একদম ঠিক বলেছেন।
গ্রামে এটাই বড় সমস্যা কারেন্ট থাকে আবার নেট থাকে না,তা ছাড়া সব দিকেই ভরপুর। তবে আমাদের গ্রামে এখন লোডশেডিং অনেক কমে গেছে।কিন্তু নেটওয়ার্ক সমস্যা কমে নায়।ধন্যবাদ সুন্দর ব্লগ তৈরী করে শেয়ার করার জন্য
আমাদের গ্রামেও এখন লোডশেডিং কম হয়। ঝড়-বৃষ্টির সময় কারেন্ট একটু বেশিই আপ-ডাউন করে।
আপনার ফুফাতো ভাই এর সাথে ভালো সময় পার করেছেন দেখছি।আসলে গ্রামে গ্রামীণ নেট এই চলে না তারউপর আপনি নিছেন বাংলালিংক চলবে কেমনে🤪।মেসে চলে আসেন ওয়াইফাই চালাতে পারবেন😁
বাংলালিংক এর নেট এর যে অবস্থারে ভাই 🙂। মেসে চলে যাবো কয়েকদিন এর ভিতরে
আসলে বিকেলবেলায় চারদিকের পরিবেশ খুবই শান্ত থাকে। খুবই অসাধারণ মুহূর্ত কাটিয়েছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুবই মনমুগ্ধকর ছিল। বিকেল বেলার ঘোরাঘুরি অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।