হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। যদি সত্যিটা শুনতে চান তাহলে সত্যিটাই বলছি আমি আসলেই ভালো নেই, খুব সমস্যার মাঝ দিয়ে যাচ্ছি এবং মাথায় প্রচন্ড পরিমানে লোড নিতে অসুবিধা হচ্ছে। আমার সমস্যা হলো আমি খুব বেশী পরিমানে লোড নিতে পারি না, আসলে সেই ছোট বেলা হতেই মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি, আজকাল আর চাপ সামলাতে পারি না, মনে হচ্ছে দিন দিন দুর্বল হয়ে যাচ্ছি। মনে চাচ্ছে যদি এই রকম করা যেতো সব কিছু হতে কিছু দিনের জন্য ছুটি নিতে পারতাম, একটু অজানা পরিবেশে নিজেকে কিছু দিনের জন্য লুকিয়ে রাখতে পারতাম, তাহলে হয়তো কিছুটা চাপমুক্ত থাকতে পারতাম।
কিন্তু বাস্তবতা সত্যি ভিন্ন, কিছু কিছু মানুষ থাকে আমার মতো, যাদের পুরো জীবনটাই থাকে চাপের মাঝে, প্রচন্ডরকম প্রেসার থাকে পুরো লাইফজুড়ে। মাঝে মাঝে আমি নিজের উপর নিজে হতাশ হয়ে যাই, মাঝে মাঝে সব কিছু হতে মুক্ত হতে চাই, সত্যি বলছি। সেদিন অফিসে বসের রুমে গিয়ে সরাসরি বলে দিয়েছি স্যার, আমি একটু মানসিক চাপের মাঝে আছি এবং সেটা আর সহ্য করতে পারছি না। তারপর অফিসের অনাাকংখিত বাড়তি প্রেসার, আমার আউটপুট কিন্তু জিরো হয়ে যাচ্ছে। সত্যি ঠিক এইভাবেই বলেছি বস আমার দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলো। আমি জানতাম কোন সমাধান কিংবা সুযোগ আসবে না, কারনটাও আমার জানা, আমার চারপাশের মানুষগুলো সর্বদাই আমার উপর একটু বেশী ভরসা করেন, ভরসার জায়গাটা হালকা হতে দিতে চান না।
কিন্তু আমিও তো মানুষ, সবাই নিজের বিষয়টি ঠিক সময় মতো বুঝে নেন কিন্তু পারি না শুধু আমি। দিন দিন নিজের কাছেই নিজে বন্দি হয়ে যাচ্ছি। একটা মানসিক শিকলের মাঝে নিজেকে বেধে রাখতে বাধ্য হচ্ছি, জানি না সেটা কতদিন ঠিক থাকবে, জানি না নিজের অবস্থান কিংবা জায়গাটা কতদিন ধরে রাখতে পারবো? কারন আমি জানি যেদিন মানুষগুলোর ভরসার জায়গাটা হালকা হয়ে যাবে, সেদিন সবাই আমাকেও ছুড়ে ফেলবেন, আমার কন্ট্রিবিউশনের কথাও বেমালুম ভুলে যাবেন, এটাই প্রকৃত সত্য। আর আমি সত্যটা মেনে নিয়েই সকলের জন্য, সকলের ভরসার মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আসলেই আমি আমার মতো, নিজের কাছে সার্থহীন কিন্তু ভরসা করা মানুষগুলোর সার্থ সর্বদা ঠিক রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। হয়তো এটাই আমার জন্য মঙ্গলজনক, হয়তো এটাই আমার ভাগ্যের লিখন।
যাইহোক, আজ সকালেই গ্রামের বাড়ীর দিকে রওয়ানা হয়েছি, একটু প্রশান্তির আশায়। পৃথিবীতে একটা জায়গা রয়েছে প্রশান্তির আর সেটা হলো মায়ের আচল। নিজের কিছু দুঃখের অনুভূতি মায়ের সাথে শেয়ার করবো এবং তার মমতা মাখা হাতটাকে একটু মাথায় বুলিয়ে দেয়ার আবেদন জানাবো, মানসিকভাবে হয়তো চাপমুক্ত হতে পারবো না কিন্তু নিশ্চিতভাবে একটা প্রশান্তির ছায়া মাথার উপর অবশ্যই আসবে। দোয়া করি সবাই ভালো থাকুন এবং চাপমুক্ত জীবন যাপন করার সুযোগ পান। চলুন আজকে ভিন্ন অনুভূতির একটা কবিতা পড়ি-
সম্পর্কগুলোকে মাঝে মাঝে বোঝা মনে হয়
সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হলেই তার মর্ম বোঝা যায়,
কাছে থাকা প্রিয় মানুষের গুরুত্ব বুঝে না হৃদয়
হারিয়ে তাকে ফ্যাকাসে কান্নাই কেবল ভেসে রয়।
তুমি হয়তো বুঝতে চাইছো না আমায়
তাইতে সময়ে অসময়ে যাও এড়িয়ে
তুমি হয়তো অন্য কিছুতে ছুটছো পিছু
হারিয়ে গেলে আমি ফিরবো আর কভু।
সম্পর্কগুলো কেন এমন হয় বলতে পারো
কাছে থাকলে কারো মর্ম বুঝে আসেনা কেন?
দূরে থাকার যন্ত্রণাগুলোকে আগলে রেখে
কেন বুঝাতে পারি না ভালোবাসি কত তাকে?
মানুষের বৈশিষ্ট্যটাই এমন, অযথা ভাঙ্গে মন
কষ্টটা সহজেই বুঝে না, আড়ালের নিঃসঙ্গ যাপন
বুঝে না সে, থাকে সর্বদা শুধু অবুঝ
হারিয়ে বুঝে সে, কে ছিলো তার আপন।
আমি নিঃশব্দে পাহাড়ে হাঁটি ভাঙ্গা হৃদয়ে
নিস্তব্দ পাহাড়ের কান্নায় শীতল করি দেহ
আমি সম্পর্কহীন হৃদয়ের কষ্ট রাখি আড়ালে
বিস্তীর্ণ আকাশের মাঝে অন্ধকারাচ্ছন্ন মেঘে।
আমি অন্ধকারে হারিয়ে ভুলতে চাই নিঃসঙ্গতা
আমি সবুজ পাহাড়ে লুকিয়ে রাখি নীল যন্ত্রণা
সম্পর্কগুলোর নির্মম ক্ষত যায়না তবু মুছা
হারিয়ে তাকে কিভাবে যায় বল বাঁচা?
Image taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
পৃথিবীর ইতিহাসটা তো এমনই হয়ে থাকে ভাই।আপনি যা করছেন তা আপনার পরিবারের জন্য কিন্তু পৃথিবীর নিয়তির খেলায় একদিন এরাই আপনাকে ছেড়ে চলে যাবে।একদিন সবাই ভুলেও যাবে। যাইহোক বাস্তবতাকে মেনে নিতে পারলে জীবনের চলাটা অনেক সহজ হয়।কবিতাটি অনেক সুন্দর হয়েছে।একটা কথা খুব ভালো লেগেছে,মানুষ দূরে গেলে তার মর্ম বোঝে,আর কাছে থাকলে তার মর্মটা বোঝে না।এই কবিতার মধ্যে অনেক বাস্তবতাকে আপনি সবার সামনে তুলে ধরেছেন।কবিতাটি পড়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়।
আসলেই এটা বাস্তব সত্য আমরা মানতে পারি আর নাই পারি, কিন্তু কি জানেন মাঝে মাঝে সবকিছুই মানতে বেশ কষ্ট হয়।
এত চাপে থাকার কি দরকার, কিছু লোড তো বাসার আলমারিতেও রাখতে পারেন🤣।যাই হোক পৃথিবী টা এমনই, যখন কিছু দিতে পারবেন তখন আপনাকে মনে রাখবে,যখন কিছু দিতে পারবেন না,তখন ছুড়ে ফেলে দিবে এটাই স্বাভাবিক। এত চাপে থাকেন বিদায় মনে হয়,চাপের ঠ্যালায় কবিতা বের হয়,আমি যদি চাপ নিয়ে কবিতা লিখতে পারতাম 🤣।
লাইনগুলো বেশি সুন্দর। ধন্যবাদ
আরে এভাবে তো কখনো চিন্তা করি নাই, আচ্ছা আলমারিতে রাখার আগে সেগুলোকে পলিথিনে ভরবো নাকি চটের বস্তায়?
আরে না,ঐগুলাতে রাখলে নষ্ট হয়ে যাবে,তারচেয়ে কাঁচের জারে রাখিয়েন।😂
আসলে বর্তমান পরিস্থিতিটাই এই রকম, বাস্তবতার বিষয়গুলো কমবেশী আমাদের সকলের জীবনের সাথে মিলে যায়।
মানসিক চাপ আজকাল কম বেশি সবার মধ্যেই আসলে দেখা যায়। ভাইয়া, আপনি নিজেই বললেন, পরিবারের মানুষ আপনার উপর খুব বেশি ভরসা করে।একটু ভেবে দেখেন তো, আপনি কি সবার উপর ভরসা করতে পারেন? উত্তর হচ্ছে না, পারেন না। সবাই আপনার উপর ভরসা করতে পারে, এটা কিন্তু একটা বড় প্রাপ্তি আপনার জন্য। হয়ত মানসিক চাপে আমরা প্রাপ্তিগুলো সেভাবে দেখতে পাই না।তবে আপনার এত চাপ দেখে কষ্টই লাগছে। ভাইয়া যদি পারেন দূরে কোথাও না হোক গ্রামে প্রকৃতির মাঝে দুটো দিন ঘুরে আসুন,ভাল লাগবে।সবশেষে আবেগের কবিতা "সম্পর্ক" আবেগেই ভরপুর ছিল। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
খুব সুন্দর রেসপন্স করেছেন আপনি, সত্যি আমরা কিন্তু এভাবে চিন্তা করে দেখি না আর এটাও আমাদের জন্য দারুন একটা প্রাপ্তি। ধন্যবাদ
সত্যিই তাই,আসলেই আপনার উপর প্রেসার পরছেন বেশ।সেটা আমরাও বুঝতে পারছি।তবে কি করার?ভরসার জায়গাটা এমন যে চাইলেও ছাড়তে পারবেন না আপনি।গ্রামে গিয়ে একটু শান্তিতে নিশ্বাস নিতে পারবেন।
মর্ম মানুষ কখনোই বুঝতে চায়না,হয়তো কখনো না কখনো আমরাও বুঝি না,এটাই সত্যি।
আসলেই ভরসার জায়গাটা এমন যে আমরা চাইলেও সেখান হতে পালিয়ে যেতে পারি না, বাস্তবতা আমাদের অনেক বেশী কঠিন হতে শেখায়।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
মানুষকে বেশী নিজের উপর ডিপেন্ডেন্ট হতে দেবেন না। আপনাও মানুষ সেটা আপনাকে ঘিরে থাকা মানুগুলোকে বুঝতে দিন। একটু ভরসাতে ঢিলে পড়ুক। চারপাশের মানুষগুলো পরনির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠে নিজেরাও আপনার জন্য কিছু করুক। দিয়ে যাবেন শুধু? কিছুই কি পাওয়ার নেই? আর এটা তো ঠিকই মায়ের আঁচল ছাড়া এই পৃথিবীতে শান্তির জায়গা আর কী বা আছে?
আর সম্পর্কগুলো এমনই হয়! যত আঁকড়ে ধরা যায় বালির মত হাত ফসকে বেড়িয়ে যায়। অনেক আশা করে মুঠো খুললে দেখা যায় হাত ফাঁকা। আমরা যা দি তার সাকি ভাগও ফেরত পাই না একটা সম্পর্ক থেকে। যেটা ভীষণ হৃদয় বিদারক। আসলে আমাদের মত মানুষগুলো কোথাও একটা টেকেন ফর গ্যান্টেড। অনেকেই বুঝে গেছে এ হয়তো যাবে না। কিন্তু সত্যিই যদি একদিন চলে যাই, আর কি ফিরব? 🙂
মানসিকভাবে শান্তি না পেলে কোনো কাজে মন বসে না। এটা বাস্তব সত্য। তার উপর আপনি লোড নিয়ে ফেলেছেন বেশি। একটু বিশ্রাম নিলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কিছুটা দিন মায়ের হাতে গরম গরম ডাল ভাত খেয়ে মানসিকভাবে শক্ত হয়ে যান, হিহিহি 😁। যাক, আপনার মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আজকের কবিতাটিও চমৎকার হয়েছে! সম্পর্কগুলো আসলে এমনই হয়। হাজার চাপা কষ্ট থাকার পরেও সম্পর্কগুলো ছেড়ে যাওয়া যায়না 💟