হৃদয়ের গভীরে থাকে মায়া || জীবনের গল্প

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। ভালো থাকার ক্ষেত্রে আমাদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে মায়া নামক অনুভূতি। না এই মায়া মানে আবার সেই মায়া না বরং আমাদের হৃদয়ের গভীরে আবেগের সাথে মিশে থাকা একটা নরম অনুভূতি। আপনারা না চিনলেও আমি এক মায়াকে চিনতাম, মানে আগে চিনতাম এখন চিনি না (নিজের নিরাপত্তা বজায় রাখার চেষ্টা করলাম) হি হি হি। আসলে জীবনে অনেক কিছু যেমন চিনতে হয় আবার ইচ্ছে করে অনেক কিছুই ভুলে যেতে হয়। এটা আমাদের জীবনে এক চরম বাস্তবতা। ইচ্ছে করলেই অনেক কিছু যেমন এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না, ঠিক তেমনি ইচ্ছে করলেও অনেকের সাথে নিজের পরিচিতি ধরে রাখা সম্ভব হয় না। সময়ের সাথে সাথে আমরা এবং আমাদের পাল্টে যেতে হয়। ঠিক তেমনি অনেক ক্ষেত্রে পাল্টে যাওয়ার অভিনয় করতে হয়।

একটু চিন্তা করে দেখুন তো, কখনো এমন পরিস্থিতিতে আপনি পড়েছেন কিংবা এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। খুব পরিচিত কিংবা ভালো মুখ আপনার সম্মুখে রয়েছে, আপনি তাকে চিনতে পারছেন কিন্তু তবুও নিজের পরিচয় দিতে পারছেন না কিংবা বাধ্য হয়ে এড়িয়ে যেতে হচ্ছে? এটা কম বেশী আমাদের সকলের জীবনে ঘটে থাকে, হয়তো কেউ অকপটে স্বীকার করি আবার কেউ ভেতরে ভেতরে ঢোক গিলে সবটা অস্বীকার করার চেষ্টা করি। বাস্তবতা আমাদের কঠিন কিছু মুর্হুতের সম্মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়, আমরা না পারি সেটাকে সাদরে গ্রহণ করতে আবার না পারি সেটাকে উপেক্ষা করতে। এক অদ্ভুত সমাজ নীতির মাঝে আমাদের বসবাস, নিজেকে উপেক্ষা করে, হৃদয়ের আবেগ কে ত্যাগ করে, সমাজের চিন্তা করে সবটাকে অস্বীকার করার চেষ্টা করি।

যাইহোক, কথা প্রসঙ্গে অনেক দূরে চলে আসছি অবশ্য মূল প্রসঙ্গ কিন্তু ছেড়ে যাই নাই। জীবনের গল্পের এই সিরিজে শুধুমাত্র জীবনের গল্পগুলোই থাকবে, থাকবে তার সাথে হৃদয়ের আকুতি এবং নিরবে বসবাস করা কিছু স্মৃতি। আমি অবশ্য আমার জীবনের বাস্তবতাগুলোই এখানে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো, হয়তো একটা ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলবো, বুঝেন না ক্যাঁ ভাই নিরাপত্তা সবার আগে, হা হা হা। হ্যা, আজকের শুরুটা যে বিষয়কে সাথে নিয়ে করেছি সেটা হলো মায়া, হৃদয়ের গভীরে কারো ছায়া কিংবা কারো মায়া আমাদের মাঝে সব সময় থাকে। হয়তো কারোটা একটু বেশী স্পষ্ট আবার কারোটা একটু বেশী ঝাঁপসা। কিন্তু নেই এটা কেউ বলতে পারবে না।

তো হৃদয়ের মায়া বাদে অন্য মায়াকে আমি কিভাবে চিনতাম? আমার বড় মামার বাড়িতে খুব বেশী যাতায়াত ছিলো ছোটবেলা, কারন মামা আমাদের দুই ভাইকে ভীষণ আদর করতেন। তাই সেখানে আমাদের যাতায়াতটা একটু বেশী ছিলো। আমার মামীর এক বান্ধবি ছিলো আর তার এক ছোট বোন ছিলো, যে দেখতে ভীষণ সুন্দর এবং কিউট ছিলো। না শুধু কিউট বললে ভুল হবে বলতে পারেন কিউটের ডিব্বা। আমার কাছে তাকে খুবই মায়াবী মনো হতো এবং তার নামটা যথার্থ মনে হতো। কিন্তু কখনো কথা বলার সাহস পাই নাই, কারন তাদের বাড়িতে একজন ছিলো বেশ রাগী, যাকে দেখলেই আমি ভয় পেতাম এবং দৌড় দিতে ইচ্ছে করতো।

না, এখন আর সেই মায়া আর মায়া নেই হয়তো কারো ঘরের গৃহিনী হয়ে আছেন। যাক সেসব স্মৃতি এখন বাদ থাক। আসল কথা ফিরে আসি, এই মায়ার বিষয়টি সত্যি অদ্ভুত। আমাদের সকলের মাঝে আবেগের সাথে একটা মায়া বসবাস করে। আমাদের সম্পর্ক, আমাদের বন্ধন এবং পারিবারিক অবস্থান, এই সব কিছুর সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করে এই মায়া। যদি মায়া না থাকতো তাহলে আমরা সবাই সম্পর্কহীন এবং বন্ধনহীন হয়ে যেতাম। একটু চিন্তা করে দেখুন, মায়া আছে বলেই আমরা অনেক কিছু উপেক্ষা করে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখি, মায়া জাগ্রত থাকে বলে আমরা ভিন্নভাবে সংগ্রামী হয়ে উঠি এবং মায়া কার্যকর থাকে বলে আমরা অনেক কিছু নিরবে সহ্য করি। হ্যা, মায়াকে আপনি নিজের কিংবা হৃদয়ের দুর্বলতাও বলতে পারেন। মায়াহীন জীবন সত্যি বড্ড বেশী দুর্বিষহ, যে হৃদয়ে মায়া নেই সেই হৃদয়ে ভালোবাসা নেই। মায়ার সাথে-হৃদয়ের আবেগে-সযত্নে থাকুক সকলের মায়াগুলো।