আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ হযবরল অনুভূতি ]
হ্যালো বন্ধুরা,
আশা করছি সবাই ভালো আছেন, আমিও চেষ্টা করছি ভালো থাকার। কারন এখন গরমের মাত্রা কিছুটা কমলেও বিদ্যুতের লোডশেডিং এর মাত্রা কিছুটা বেড়ে গিয়েছে। গতকাল অফিসের ওয়ার্কিং সময় ৮ ঘন্টার মাঝে ৪ ঘন্টাই বিদ্যুৎ ছিলো না, বুঝেন এবার কততা চাপের মাঝে আছি। কারন বিদ্যুৎ থাকুক আর নাই থাকুক আমাদের কাজগুলো কিন্তু সঠিক এবং নির্দিষ্ট সময়ের মাঝেই করতে হয়, এখন বিদ্যুতের উপস্থিতি ছাড়া অনেক কিছুই ঠিক মতো সম্পন্ন করার সম্ভব হচ্ছে না। যার কারনে একটু বাড়তি চাপে থাকলে হচ্ছে, জানি না পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। আসলে শ্রী লংকার পরিস্থিতি দেখে কিছুটা ভয়ের মাঝে আছি আমরা।
তবুও আশা করছি পরিস্থিতি হয়তো স্বাভাবিক হয়ে যাবে এবং জীবনের গতি আগের মতো গতিশীলতা ফিরে পাবে। আসলে আমরা যখন কোন উপায় খুঁজে পাই না কিংবা বিকল্প কোন উপায় থাকে না, তখন চোখ বন্ধ করে একটা কাজ করি আর সেটা হলো ভাগ্যের উপর সব ছেড়ে দেই। হা হা হা হা এই বিষয়টা আমার কাছে বড়ই অদ্ভুত এবং হাস্যকর মনে হয়, কারন আমরা একমাত্র নিরুপায় হলে গেলেই ভাগ্যের উপর সব ছেড়ে দেই কিন্তু তার পূর্বে ভুলেও এটা করতে চাই না। অনেকটা বিশ্বস্ত কর্মচারীর মতো, মানে চুরি করার উপায় নেই বলে সে বিশ্বস্ত আর তা না হলেও সেও পাক্কা চোর হতো। আসলে বাস্তবতাটাই এই রকম।
একটা গল্প আমরা ছোট বেলা হতেই শুনে আসছি, আর সেটা ছিলো চোরের গল্প। প্রতিদিন প্রচুর মাইর খায় পাবলিকের কিন্তু তবুও চুরি করা ছাড়ে না। তো এক বয়স্ক লোক একদিন তাকে জিজ্ঞেস করলো, আচ্ছা তুই এতো মার খাস তোর কষ্ট হয় না আর এতো মার হজম করস কিভাবে? চোর সাবলিল ভাষায় উত্তর দেয়, হাত পা বেঁধে তোমাকে দিলেও তুমি হজম করতে পারবে। সত্যি এখানে হজম করা ছাড়া তার আর কোন উপায় নেই, যার কারনে এতো মাইর হজম করে নেয়। বাস্তবতা সত্যি অনেক নিষ্ঠুর এবং নির্মম। কিন্তু আমরা সেটা দেখি, বুঝি তবে অনুধাবন করি না, যার কারনে সেই প্রভাবটা আমাদের বিবেককে নাড়া দেয় না। আর এই কারনে আমরা সব কিছু নিরব দর্শকের মতো উপভোগ করি, কিন্তু বিষয়টি যখন নিজের উপর পতিত হয়, তখন চিৎকার চেচামেচি শুরু করে দেই।
যে কথা বলতেছিলাম, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা এতোটা নাজুক হওয়ার পিছনে হয়তো অনেক কারণ রয়েছে, আবার তা ঠিক পর্যায়ে নিয়ে আসার হয়তো অনেক যুক্তি রয়েছে, কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি আমরা সেদিকে যাবো না। কারণ আমাদের স্বভাবটা হলো সঠিক সময়ে, সঠিক ভাবে কোন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করা। অনেকটা সেই গাঁধার মতো, পানি খাবো কিন্তু যতক্ষন পর্যন্ত সেটা ঘোলা না হবে ততোক্ষণ পর্যন্ত না। সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিবো, কিন্তু যতোক্ষণ পর্যন্ত না সেটা আয়ত্বের বাহিরে চলে যায়। আসলে প্রতিটি জিনিষের বা বিষয়ের একটা নির্দিষ্ট সীমা থাকে, যখন সে সীমাটা অতিক্রম করে যায়, তখন সেটা আর আয়ত্বের মাঝে থাকে না। আর আমরা বাঙালীরা সর্বদা এই কাজটাই করি, সময় পার হয়ে যাওয়ার পর সেটা নিয়ে হুলুস্থুল কান্ড বাঁধিয়ে ফেলি।
যাইহোক, এসব নিয়ে হয়তো খুব বেশী কথা বলা যাবে না, কারণ আমি আবার ছোট মানুষ, যে কোন বিষয়ে ছোট মুখে বড় কথা বলতে চাই না। অবশ্য এই ব্যাপারেও একটা প্রবাদ বাক্য প্রচলিত রয়েছে, হয়তো একটু পর আপনারাই সেটা আমাকে শুনিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন। আদা বেপারী জাহাজের খবর নিয়ে কি লাভ? সত্যি এখানে আমার কোন লাভ নেই কিন্তু লস আছে কিছুটা, কষ্ট আছে কিছুটা তাই অনুভূতিগুলো একটু প্রকাশ করার চেষ্টা করলাম। আজকালতো কোথায়ও গণতন্ত্রের চর্চা হয় না, কারন মানুষ মুখে মুখে গণতন্ত্র বিশ্বাস করার কথা বললেও ভিতরে ভিতরে সেই স্বৈরাচারী মনোভাব পোষণ করে এবং কোন ব্যাপারে কারো কাছে জবাবদিহি করতে পছন্দ করে না। তাই এই ব্যাপারে আমিও অপছন্দনীয় কিছু বলে টার্গেট এর স্বীকার হতে চাই না, নিরীহ মানুষতো ভাই, বুঝেন না ক্যা, সর্বদা শান্তি চুক্তিতে বিশ্বাস করি আমি, হি হি হি।
তবে আজকের অনুভূতিগুলো হযবরল বা বিচ্ছিন্নভাবে উপস্থাপন করলেও, কথাগুলো কিন্তু অবাস্তব ছিলো না, বরং সবগুলোই বাস্তব এবং চিন্তা করার বিষয়। যদিও আমরা ততোক্ষণ পর্যন্ত সেই বিষয়ে কোন চিন্তা ফিকির করতে রাজি না, যতোক্ষন পর্যন্ত সে বিষয়ে আমরা নিজেরা আক্রান্ত হই। আমি এই বিষয়টি একদমই পছন্দ করি না, বরং আজকে যে বিষয়ে বা সে সমস্যায় আমার প্রতিবেশী আক্রান্ত হয়েছে, হতে পারে আমি আগামীকাল সে বিষয়ে বা সমস্যায় আক্রান্ত হবো, তাই অন্যের সমস্যায় নিরব দর্শকের ভূমিকায় না থেকে আমাদের সকলের উচিত, যার যার অবস্থান হতে সামান্য হলেও চেষ্টা করা এবং অন্যের সমস্যায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া। তবেই হয়তো, আমরা সবাই যার যার অবস্থানে কিছুটা হলেও নিরাপদভাবে থাকতে পারবো, এটা আমার ভাবনা হয়তো আপনাদের মাঝে ভিন্ন ভাবনা থাকলেও থাকতে পারে।
যাইহোক, আর কথা বাড়াবো না আজকে, কখন আবার লোডশেডিং শুরু হয়ে যায় বলাতো যায় না, দেখা যাবে পরে লেখা শেষ করেছি কিন্তু পোষ্ট করার পূর্বেই লোডশেডিং এসে সব অন্ধকার করে দিলো, ব্যস আমি ও আমার লেখা তখন অন্ধকারে ঝুলতে থাকবে, আর তা দেখে হয়তো বানরও মিটিমিটি হাসতে থাকবে। আচ্ছা বলে রাখি আমার অফিস এলাকায় কিন্তু প্রচুর বানর রয়েছে, মাঝে মাঝে দল বেঁধে হামলাও করে খাবার না পেলে, মজার সাথে আতংকও রয়েছে এখানে। আশা করছি আজকের অনুভূতির সাথে আমাদের গ্রামের সবুজ প্রকৃতির দৃশ্যগুলো আপনারা উপভোগ করেছেন।
তারিখঃ জুলাই ১৫, ২০২২ইং।
লোকেশনঃ সিঙ্গাইর, মানিকগঞ্জ।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
আপনার অফিসে ৮ ঘন্টার ৪ ঘন্টাই লোডশেডিং শুনে তো আমি থো হয়ে গেলাম। এ তুলনায় আমার বাসায় সুখে আছি। দিনে-রাতে ১ ঘন্টার জন্য ২ বার যায়। বানর কাছ তেকে আসলে ওভাবে দেখা হয়নি। আপনার ওখানে দলবেঁধে হামলা ও করে আমি হলে ভয়ে আর ২য় বার যেতে পারতাম না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাই বিদ্যুৎতের আবস্থার কারনে জীবন শুধু আবলতাবল হচ্ছে না জীবন্টা কিছুটা তেজ পাতার মতও লাগছে ,যা তরকারিতে ব্যবহার করার পর চুষে খেয়ে ফেলে দেওয়া মত হয়েছে।ঠিক বলেছেন ভাই আমরা সবাই দর্শক মাত্র ,এ ছাড়া আমাদের কিবা করনিয় ।আপনার কিছু চোরের গল্পটি অনেক মজা লেগেছে পড়ে। আর হজম করার বিষয়টা। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য এবং শুভকামনা
সত্যি ভাই খুব একটা বাজে সময় পার করছি, অফিসের কাজ কর্ম ঠিক মতো করতে পারছি না। জানি না সামনে কি আছে আমাদের কপালে।
আপনি ছোট মানুষ হলে বড় মানুষ কেডা😉😉? বানরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ভাই, আজকে রান্না ঘরের জালানা দিয়ে এসে আম নিয়ে গেছে।তাকের উপর সব জিনিস পএ ফেলে গেছে।😂😂।যাই হোক
শ্রীলংকার মত হতে খুব বেশি সময় লাগবে না মনে হয়।ধন্যবাদ
কি বলেন আপু, বানর পাইলেন কই!!! আমাদের এলাকায় আসল বানর না থাকলেও মনুষ্য বানরের অভাব নেই।
আরে,গাছ থেকে পেরে আনা হয়েছিলো বানর নিয়ে যাবে দেখে,ছেলের জন্য রেখেছিলাম একটু পাঁকলে দিব,আজকে একেবারে ঘর থেকে নিয়ে গেলো।
জ্বী মহাখালী ডিও এইচ এস এর মতো পুরান ঢাকায়ও প্রচুর বানর রয়েছে, তাও সব আগ্রাসী টাইপের বানর, ছাদে গেলে দা সাথে করে নিয়ে যেতে হয়, না হলে ওরা ভয় পায় না।
কি বলেন আপু! আপনার ওখানেও বানর আছে।
হুম,,ভাই, একদিন তো আমার ফ্রিজ খুলে ডিম নিয়ে গিয়েছে।ছাঁদে গাছগুলো লন্ডভন্ড করে দিয়ে যায়।
জাতি হিসেবে আমরা বড় অদ্ভুত। আপনি একেবারে ঠিক বলেছেন, যখন আমরা একেবারে নিরুপায় হয়ে যাই তখনই কেবলমাত্র হাত-পা গুটিয়ে ভাগ্যের উপর ভরসা করে বসে থাকি। আর বর্তমানে আমাদের সহ্য শক্তি বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে কোন কিছুতেই আমাদের আর কোন কিছু হয় না। হয়তো এক সময় আমরা এই লোডশেডিং এও অভ্যস্ত হয়ে যাব। তবে আপনার মত আমাদের সবার প্রত্যাশা দেশটার আসলেই একদিন উন্নতি হবে।
এটা সত্য, প্রতিনিয়ত আমরা সেটার প্রমান পাচ্ছি, বড়ই অদ্ভুত জাতি আমরা। একদমই হয়তো লোডশেডিং এর বিষয়টি নিয়ে আমাদের মাঝে এই অস্থিরতাটাও এক সময় হারিয়ে যাবে।
আমাদের হয়েছে সেই চোরের মত অবস্থা। হাত-পা বেঁধে দিলে সবকিছুই হজম করতে আমরা বাধ্য। সেটা গরম হোক কিংবা নির্মম অত্যাচার। আসলে আমরা বাস্তবতার নির্মমতার কাছে বড় অসহায়। সবকিছু বুঝি কিন্তু কিছু করতে পারি না। কারণ আমাদের হাত-পা অদৃশ্য শিকলের মাঝে বাধা। জানিনা এই বিদ্যুৎ বিভ্রান্তি থেকে আমরা কবে মুক্তি পাব এবং শান্তিতে বসবাস করতে পারব। প্রতিজ্ঞা করা ছাড়া কোন উপায় নেই। অনেক সুন্দর ভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা গুলো এবং আপনার অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। ❤️❤️
কি বলছেন হাফিজ দা!! আপনাদের ওদিকে বিদ্যুৎতের অবস্থা তো খুবই খারাপ দেখছি। তাছাড়া যেটা আমাকে বেশি অবাক করছে সেটা হলো পরিস্থিতি ঠিক করতে সরকারের গা ছাড়া মনোভাব ও দুদর্শিতার অভাব দেখে। বিদ্যুৎতের অবস্থা তো কয়েকদিনের মধ্যেই খারাপ হতে পারেনা, ধীরে ধীরে আজকের পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। ধরে নিয়েই চলুন সামনে আরো খারাপ দিন আসছে। 😥
সত্যি ভাই অবস্থা খুবই খারাপ, আজ আমার নতুন বাড়ীর জন্য আইপিএর দরদাম করলাম, তিনটি ফ্যান আর তিনটি লাইটের ব্যাকআপের জন্য 29000 টাকা চাইছে, বুঝেন তাহলে কি অবস্থায় আছি।
বর্তমানে লোডশেডিং এর অবস্থা দেখলে মনে হয় অন্য কোন গ্রহে চলে এসেছি। সব কাজ আগের মতই আছে শুধু মাঝখান থেকে আমাদের ভোগান্তি বেড়ে গেছে। আপনার গল্পের চোরের মতই হয়েছে আমাদের অবস্থা। সবকিছুই সহ্য করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। আপনার অফিস এলাকায় যেহেতু অনেক বানর আছে তাই লোডশেডিং এর সময় একটু বানর নাচ দেখে আসবেন। তাহলে মন ভালো হয়ে যাবে।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে এই জন্য যে আপনি বর্তমান পরিস্থিতি টা খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থা জনজীবন একেবারেই অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে কিন্তু কিছু করার নেই সবকিছুই মেনে নিতে হবে। আর ঐ যে বলছেন যখন আমরা কিছু করতে পারিনা তখন সব ভাগ্যের উপরে ছেড়ে দেই তাই এই মুহূর্তে এটা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। শুধু ঈশ্বরের কাছে এতটুকু প্রার্থনা করি আপনি যেটা আশংকা করছেন শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি যেন আমাদের না হয়। ধন্যবাদ ভাইয়া।