হ্যালো বন্ধুরা,
আশা করছি সবাই ভালো আছো। জ্বী আমি এখন মোটামোটি সুস্থ্য, বেশ ভালো আছি। তবে একটা বিষয় অবশ্যই বলতে চাই আর সেটা হলো আমরা ঠান্ডা জাতীয় কোন সমস্যা হলে খুব দ্রুত ভালো হয় না, এটা সেই শুরু থেকেই মানে যখন থেকে বোঝ হয়েছে তখন। কিন্তু এবার একটু দ্রুত সুস্থ্য হলাম তবে এর পেছনে একটা বিষয় বেশ দারুণ কাজ করেছে সেটাই আজকে আলোচনা করবো। ঠান্ডা লাগার বিষয়টি নিয়ে একদিন ডিসকর্ডে আলোচনা করেছিলাম সেদিন কে যেন বলেছিলো আমাকে কালোজিরার ভর্তা খেতে। সত্যি বলতে বাড়ীতে নিয়মিত কালোজিরার ভর্তা তৈরী হয় কিন্তু কেন জানি আমার সেটা ভালো লাগে না। আর কালো জিরার উপকারের কথাও বেশ জানি, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য তবুও খুব একটা খেতে চাই না। হাদীসে বলা হয়েছে, একমাত্র মৃত্যুবাদে পৃথিবীতে যত ধরনের রোগ আছে বা আসবে তার ঔষধ রয়েছে কালোজিরার মাঝে। কিন্তু আমরা কয়জনে সেটা মানি বা বিশ্বাস করি?
সে যাইহোক অন্য প্রসঙ্গে যাওয়া যাবে না আজ, তো এবার আমি নিজ হতেই বাড়ীতে বলে দিয়েছি কালোজিরার ভর্তা করার জন্য এবং অবশ্যই তাতে যেন খুব বেশী ঝাল দেয়া না হয়। এছাড়া আরো একটা বিষয়ের কথাও আমি বলেছি সেটা হলো সরিষা ভর্তা, তবে আপনাদের ভাবী মানে আমার বউ সেটা না করে অন্য একটা বুদ্ধি বের করলো, সরিষা দিয়ে টেংরা মাছ ভুনা। হুম আইডিয়াটা আমার কাছে বেশ লেগেছে, কারন সরিষা ইলিশ খেয়েছি, সরিষা পাবদাও খেয়েছি সেগুলো যেহেতু দারুণ স্বাদের হয়েছিলো তাহলে টেংরা মাছ দিয়ে নয় কেন। আর একটা কথা বলে দিচ্ছি টেংরা মাছ কিন্তু আমার বেশ প্রিয়, আসলে দেশীয় জাতের সকল মাছকে আমি খুব বেশী প্রধান্য দিয়ে থাকি, যতটা সুযোগ পাই। তো যা বলছিলাম এই সরিষা টেংরা আর কালোজিরার ভর্তা সত্যি এবার বেশ দারুন ফল দিয়েছে খুব দ্রুত নাকের তালা খোলে যাওয়া সহ ঠান্ডার আত্মীয় স্বজন দ্রুত বাড়ী ছেড়ে পালিয়েছে, হি হি হি না না ভাড়ার টাকাও চায় নাই কিন্তু। আমরা সত্যি যে কোন সমস্যায় প্রকৃতি হতে দূরে সরে যাই কিন্তু আমাদের সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান লুকিয়ে রয়েছে প্রকৃতির নানা উপকরণের মাঝে, আফসুস আমরা সেই প্রকৃতিকে ধ্বংস করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন আজ আমি আপনাদের সাথে কোন রেসিপিটি শেয়ার করবো, না না কালোজিরার ভর্তা না। জ্বী সরিষা দিয়ে টেংরা মাছের ভুনা। আসলেই স্বাদটা ভালো হয়েছিলো, তার অবশ্য আরো একটা কারণ ছিলো সেটা হলো তাজা টেংরা মাছ এবং দুই পদের সরিষা দিয়েছিলাম। সত্যি মাঝে মাঝে এই রকম আনকমন কিছু তৈরী করে সেটার স্বাদ চেক করার চেষ্টা করবেন, দেখবেন বেশ দারুণ স্বাদ লাগে। চেয়েই দেখুন না আজকের বিশেষ রেসিপিটি, একদম জিবে জল চলে আসবে, হি হি হি। আচ্ছা তাহলে চলুন রেসিপিটি দেখি-
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- টেংরা মাছ
- সরিষা (সাদা এবং কালো)
- পেঁয়াজ
- কাঁচা মরিচ
- হলুদ গুড়া
- মরিচ গুড়া
- ধনিয়া গুড়া
- আদা রসুন পেষ্ট
- লবন
- সরিষার তেল।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
প্রথমে মাছগুলোকে পরিস্কার করে তারপর হলুদ, মরিচ ও লবন দিয়ে মাখিয়ে নিয়েছি। বরাবরের মতো মাছ কুটার কাজটা আপনাদের ভাবী করে দিয়েছে।
তারপর একটা প্যান চুলায় বসিয়ে তেল গরম করেছি এবং মসলা মাখানো মাছগুলোকে ভেজে নিয়েছি।
এরপর দুই পদের সরিষার সাথে কিছু কাঁচা মরিচ নিয়ে সুন্দর করে ব্লেন্ডার করেছি। আরে ভাই আমিতো আর পাটা-পুতা নিয়ে লড়াই করতে পারি না, তাই সহজ উপায়ে করে নিয়েছি হি হি হি।
এরপর প্যানে আরো একটু তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি করে দিয়ে একটু ভাজা ভাজা করে নিয়েছি।
পেঁয়াজগুলো ভাজা ভাজা হয়ে আসলে তার সাথে হলুদ, মরিচ, ধনিয়া গুড়া এবং লবন দিয়ে একটু মাখিয়ে নিয়েছি।
এরপর হালকা পানি দিয়ে একটু ভুনা ভুনা করার চেষ্টা করেছি, অন্য সময় হলে হয়তো ভালো করে কষা করতাম কিন্তু আজ সেটা করি নাই।
তারপর সরিষা পেষ্টগুলো দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছি।
তারপর পুনরায় হালকা একটু পানি দিয়ে ভালোভাবে জ্বাল দিয়ে নিয়েছি।
এবার একটু বেশী পরিমানে পানি দিয়ে তারপর উপর ভেজে রাখা মাছগুলো দিয়েছি, তারপর বেশ কিছুটা সময় রান্না করেছি।
তারপর কিছু কাঁচা মরিচ আনাম দিয়েছি, তার সাথে হালকা কাঁচা সরিষার তেল মিলিয়েছি এবং আর কিছুটা সময় রান্না করে নামিয়ে নিয়েছি।
দেখুন হয়ে গেলো আমাদের বিশেষ রেসিপি, টেংরা মাছ রান্না সরিষা দিয়ে। এভাবে রান্না করলে সরিষা যতই পুরান হোক না কেন একটু ঝাল এবং ঝাঁঝ দুটোই দারুণভাবে পাওয়া যায়। ঠান্ডা যতই গভীরে থাকুক না কেন, দরজা খুলে পালাতে বাধ্য হবে, হি হি হি। রেসিপি সত্যি আমার কাছে দারুণ লেগেছে, আপনারা চাইলে চেক করে দেখতে পারেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
আমি সরষে ইলিশ,সরষে পার্শে মাছ খেয়েছি তবে টেংরা মাছ দিয়ে কখনো খাওয়া হয় নি।যাইহোক কালো জিরা আমার কাছে কেমন মশা মশা গন্ধ লাগে তাই শুধুমাত্র ঝোল তরকারিতে দিলেই খেতে পারি।কিন্তু ভর্তা কখনো করে খাওয়া হয় নি।সরিষা দিয়ে টেংরা মাছ ভুনা রেসিপিটি খুব সুন্দর হয়েছে ভাইয়া।টেংরা মাছ ভাজি খেতে সেই টেস্ট।অনেক উপকারী কথা বলেছেন, ধন্যবাদ ভাইয়া।
হুম সেগুলো আমিও খেয়েছি সরষে ইলিশ তো সেই বিখ্যাত রেসিপি, তবে সরিষা টেংরা কিন্তু দারুন স্বাদের হয়েছিলো।
সরিষা দিয়ে টেংরা মাছের ভুনা সত্যি খুব চমৎকার একটি রেসিপি তৈরি করেছেন আপনি। আর টেংরা মাছ এমনিতেও খুবই সুস্বাদু আমাকে তো খুব ভালো লাগে। খুবই চমৎকার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
হুম ভাই চমৎকার মানে স্বাদের ক্ষেত্রে অতুলনীয় ছিলো, হি হি হি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আজ দুপুরে আমাদের বাসাতেও টেংরা মাছ রান্না হচ্ছে। আমার কাছে টেংরা মাছ ভুনা থেকে টেংরা মাছের ঝোল রান্না বেশি ভালো লাগে। একটু পরেই খাবো। আহ কি মজা। নদীর টাটকা টেংরা মাছের ঝোল।
হুম নদীর টেংরা মানেই আসল স্বাদ, সত্যি বেশ দারুণ স্বাদের একটা মাছ, যেভাবেই রান্না করা হোক না কেন খেতে বেশ লাগে।
আসলে ভাইয়া আপনি সত্যি বলেছেন, কালোজিরা এমন একটা মহৌষধ যা মৃত্যু ব্যতিত সকল রোগের জন্য খুবই উপকারী। তবে আপনার আজকের রেসিপি টা একটু বেশি আকর্ষণীয় ছিল। সাধারণত সরিষা বাটা দিয়ে ইলিশ মাছ বেশি খেয়ে থাকি। তবে আপনার আজকের সরষে বাটা দিয়ে টেংরা মাছের রেসিপি টা দারুন লাগছে। আপনার আজকের এই পোস্ট থেকে আমিও উপকৃত হবো, কারণ হঠাৎ করে জ্বর সর্দি তে ভুগতে হচ্ছে আমাকে। দেশি মাছ আমারও খুব পছন্দ, হাতের কাছে পাওয়া যায় না। তবে আপনার রেসিপিটা দেখে একটু খেয়ে স্বাদ টা উপভোগ করতে ইচ্ছে করছে। ইউনিক এবং খুব দারুণ একটা রেসিপি সেই সাথে আপনার ঠান্ডা ও চলে গেল সত্যিই অনেক মজার ছিল। আমাদের সাথে এত সুন্দর করে মনের ভাবগুলো শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম।
হ্যা, যারা নিয়মিত কালো জিরা খেতে পারেন তাদের শারীরিক সক্ষমতা অনেক বেশী থাকে।
কালোজিরা হলো সর্ব রোগের ঔষধ। কালোজিরা খাওয়া সত্যিই অনেক উপকারী। বিশেষ করে ঠাণ্ডা সমস্যার সমাধানের জন্য কালোজিরা অনেক উপকারী। আমি মাঝে মাঝেই কালোজিরা ভর্তা খাই। কালোজিরা ভর্তা ও সরিষা দিয়ে টেংরা মাছের রেসিপি খেয়ে আপনার ঠান্ডার সমস্যা সমাধান হয়েছে জেনে অনেক ভালো লাগলো। সরিষা ইলিশ খেয়েছি অনেক তবে আজকে আপনার কাছে নতুন একটি রেসিপি শিখলাম। ভাবি দারুন একটি ইউনিক রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার শেয়ার করা এই রেসিপি দেখে বোঝা যাচ্ছে আমাদের প্রিয় ভাবির রান্নার হাত বেশ ভালো। লোভনীয় এই রেসিপি তৈরির পদ্ধতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য। ❤️❤️❤️
হ্যা, হালকা পাতলা মাঝে মাঝে আমিও খেতাম, তবে এবার একটু মোটা তাজা করে খেয়েছি হা হা হা। সরিষা টেংরা সত্যি দারুণ একটা রেসিপি।
এই কালোজিরার ভর্তাতে আমার ও সমস্যা।কখনো খাইনি কারণ মনে হয় বারবার যে মজা হবেনা।
আর তাও ভালো শেষমেষ তালা খুললো।আমিও খাইনি এই রেসিপি।
হুম এখন একদম পুরো ক্লিয়ার, দুটো দরজাই খোলা হা হা হা।
কালোজিরা আমাদের জন্য আসলেই খুবই উপকারী।সব রোগের ঔষধ কালোজিরা।এ সবকিছু জানা সত্বেও আমরা কালোজিরা খাইনা। এটা খুবই দুঃখজনক।
সরিষা তেল দিয়ে তরকারি খেতে আমি অভ্যস্ত নয়। ছোট থেকে সোয়াবিন তেল খেতে খেতে সরিষা তেল আর মুখে ধরে না। আজকে আপনি সরিষার তেল দিয়ে বড় বড় টেংরা মাছ রান্না করেছেন। বড় বড় টেংরা মাছ গুলো দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে।যাহোক এত সুন্দর একটি মজাদার রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
জ্বী ভাই এটা আমরা সবাই জানি কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে একদমই মানি না। তবে এবার খেয়ে বেশ উপকার পেয়েছি আমি।
ভাইয়া কালোজিরা ভর্তা আমার খুবই প্রিয়। কালোজিরা ভর্তা একটু অল্প অল্প ঝাল এবং রসুন বেশি দিয়ে এই ভর্তা খেতে খুবই মজাদার লাগে। তবে আজকে আপনার রেসিপি আমার কাছে অনেক নতুন মনে হয়েছে, কারণ সরিষা দিয়ে ইলিশ খেয়েছি কিন্তু সরিষা দিয়ে কখনো টেংরা মাছের রেসিপি তৈরি করা হয়নি। ভাবি আজকে খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করেছে, উপস্থাপন দেখে ভালোভাবে শিখে নিলাম। পরবর্তীতে তৈরি করবে ইনশাল্লাহ।
আমি খুব একটা খেতে পারি না, কেমন জানি লাগে। তবে এবার খেয়ে দারুণ উপকার পেয়েছি এটা সত্য।
সরিষা আপনি অনেক সুস্বাদু ও লোভনীয় টেংরা মাছের রেসিপি তৈরি করেছেন ভাইয়া। দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। টেংরা মাছের এত সুন্দর রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল