"মহিলা মাছ বিক্রেতা"

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago (edited)

নমস্কার

বন্ধুরা,কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আজ আমি আবারো হাজির হলাম একটি ভিন্নধর্মী ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে।আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের কাছে পোস্টটি।যাইহোক তো আর কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক----

মহিলা মাছ বিক্রেতা:

IMG_20231006_113454.jpg
আমাদের বাঙালি সমাজ পুরুষতান্ত্রিক হলেও নারীরা কোনো অংশে কম নয়।একথা বারবার প্রমান করে দেয় তাদের কর্মে।আমি মনে করি,সৎ কাজের জন্য লজ্জিত নয় বরং সম্মান দ্বিগুণ বেড়ে যায়।আসলে পূর্বে নারীরা ঘরবন্দি জীবনযাপন করতো কিন্তু এখন তারাই নিজেদের সংসার চালাতে রাস্তায় নেমে পড়েছে শক্ত হাতে কোনো কাজের দায়িত্ব সামলাতে।যদিও সব পেশা সম্মানজনক, কোনো পেশায় অসম্মানের নয়।

কয়েক দিন থেকেই প্রচুর পরিমানে বৃষ্টি হচ্ছে।আবহাওয়া খুবই অস্বস্তিদায়ক।এমতাবস্থায় বন্ধুরা, উপরের ছবি দেখে নিশ্চয়ই কিছুটা ধারণা করতে পারছেন। একজন মাছ বিক্রেতা সকালে তার প্রতিদিনের মতো নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত।যিনি তার পেশাকে নিজ হাতে সামলাচ্ছেন সব পরিস্থিতিকে পিছনে ফেলে নারী হয়েও।তবে আদিবাসী সমাজ কিছুটা নারীতান্ত্রিক বলে মনে হয় আমার।কারণ অধিকাংশ পুরুষ মদ্য পান করে ঘরে পড়ে থাকলেও বা ঘরের দুই একটি কাজ করলেও এদের মহিলারা হয় বেশ কর্মঠ।প্রত্যেক ব্যবসা কিংবা মাঠের কাজে নারীরাই প্রতিনিয়ত বাইরে বের হয় এবং বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত থেকে সংসার চালায়।বর্ধমানে আসার পর এই বিষয়টি বেশি লক্ষ্যণীয়,যে নারীরা কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই বরং সৎভাবে তারা উপার্জন করছে।যেমন এই মহিলা মাছ বিক্রেতা,সকালে গলা হেঁকে হেঁকে মাছ বিক্রি করছেন।এখানে আবহাওয়া তার কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নি।

আজ সকালে যখন আমাদের স্টেশনে পৌঁছালাম তখন চোখে পড়লো দৃশ্যটি।এই মহিলা মাছ বিক্রেতা রাস্তায়, পাড়ার অলিতে গলিতে গিয়ে মাছ বিক্রি করে হেঁকে হেঁকে।যদিও এখানে বাজার গুলিতে অনেক মহিলা বসে সবজি ও মাছ বিক্রয়ের ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন।তবুও মাথায় ঝুড়িতে মাছ আর ওজন করার পাল্লা নিয়ে হেঁটে হেঁটে মাছ বিক্রি করাটা একজন নারীর জন্য অনেক কঠিন কাজ।

কয়েকদিন আগে টোটোতে এক বৃদ্ধ মহিলা দুটি ঝুড়ি নিয়ে উঠেছিল।আমি শুধু তাদের দেখছিলাম আর শুনছিলাম কথাগুলো।বৃদ্ধা মহিলার ঝুড়ি খালি ছিল কারণ সে একজন শাক বিক্রেতা।তার কথা অনুযায়ী -তার বয়স 70 বছরের বেশি।সে রোজ সকালে টোটো ও ট্রেনে করে প্রায় 17 কিলোমিটার দূরে বর্ধমান শহরে শাক বিক্রি করতে যায়।এভাবেই সে তার জীবন চালায়।ফলে সব টোটোওয়ালা তাকে চেনে, সে শাক বিক্রি শেষ করে দুপুরের দিকে বাড়ি ফেরে।তারপর দিনে একবেলা রান্না করে খেয়ে বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে চলে যায় মাঠে।সেখান থেকে সাঞ্চি,হেলেঞ্জা, শুশনি শাক,কলমি শাক তুলে এনে ছোট ছোট আটি তৈরি করে রাখেন।যাতে সেই দুই ঝুড়ি নিয়ে পরদিন খুব ভোরে রওয়ানা হওয়া যায়।বৃদ্ধা এই বয়সে এতটা পরিশ্রম করছে যেটা আমার কাছে আসলেই বেশ অবাক করার মতো বিষয়।

আশা করি আপনাদের কাছেও অনেক ভালো লাগবে আমার আজকের পোস্টটি।সকলে ভালো থাকবেন ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।আমি অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

IMG_20230822_061108.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 10 months ago 

৭০ বছর বয়স কিন্তু সে এখনো নিজের জীবনের তাগিদে লড়াই করে যাচ্ছে এটা আমাদের অনেকের অনুপ্রেরণা হতে পারে। এইরকম অসংখ্য মহিলা আছে যারা নিজের সংসার সামলাই নিজের হাতে। যেমন এই মাছ বিক্রেতা মহিলা গুলো। সুন্দর একটা বিষয়ে পোস্ট করেছেন আপু।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

কিছু বিষয় থেকে আমরা অনুপ্রেরণার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাও নিতে পারি।ধন্যবাদ ভাইয়া।

 10 months ago 

একদম ঠিক বলছেন আপু বর্তমান সমাজে কিন্তু নারীরা ও কোন কম নেই। পুরুষের পাশাপাশি নারীরা ও আর্থিক উপার্জনে অনেক বেশি এগিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি অসৎ উপায়ে অর্থ পার্জন না করে সৎভাবে যেকোন ইনকাম সকলের জন্যই ভালো। সৎ ভাবে উপার্জন সম্মানজনক। কারো কাছে হাত না পেতে যদি পরিশ্রম করে খাওয়া যায় তাহলে অনেক ভালো। মহিলাটি আসলে খুবই কষ্ট করতেছে অলিতে গলিতে যেয়ে মাছ বিক্রি করতেছে। পেটের দায় হচ্ছে বড় দায় কখন কাকে কি করতে হয় সেটা ঠিক ঠিকানা নেই।

 10 months ago 

আমি আপনার কথায় সহমত পোষণ করছি।জীবনের গতি যখন তখন পরিবর্তন হতে পারে।কাল কি হবে তা আজ কেউ জানে না, ধন্যবাদ আপু।

Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.

Manually curated by @jasonmunapasee

r2cornell_curation_banner.png

 10 months ago 

Thank you so much my friend.💝

 10 months ago 

এখনকার সময়ে নারীরা অনেক এগিয়েছে। তারা আগে যেমন ঘরবন্দি জীবন যাপন করতো এখন তারা জীবিকার সন্ধানে বাহিরেও বের হচ্ছে।নিজের কাজের ব্যবস্থা নিজেই করছে। সবচেয়ে অবাক হলাম, ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধ মহিলার কাজ শুনে! এ বয়সে এসেও এতো দূরে গিয়ে প্রতিদিন শাক বিক্রি করে আসে!! এটা অবাক করার মতোই দিদি

 10 months ago 

আমিও প্রথম এমন অবাক হয়েছিলাম ভাইয়া, তবে নিজের জীবন চালাতে তাকে এত পরিশ্রম করতে হচ্ছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

বর্তমানে নারীরা পুরুষদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তারা পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। অবশ্যই প্রতিটি কাজ সম্মানের। মহিলারা বাজারে সবজি,মাছ বিক্রি করে এখন,এটা খুবই ভালো কাজ। কারণ দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে যে পুরুষেরা দিন আনে দিন খায়, তাদের একার পক্ষে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়ে যায়। তাই সেসব পরিবারের মহিলারা যদি কাজ করে, তাহলে তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হবে না। বাহিরের দেশের ৭০/৮০ বছর বয়সের বৃদ্ধ মহিলা এবং পুরুষেরা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। যাইহোক চমৎকার লিখেছেন আপু। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 10 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া, কঠিন সময় পার করতে সংসারে নারী ও পুরুষ দুজনেরই সহযোগিতা প্রয়োজন সেইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ।ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59907.23
ETH 2647.48
USDT 1.00
SBD 2.43