"দূর্গা বাড়ির পূজা ও বলিদানের কিছু দৃশ্য"
নমস্কার
দূর্গা বাড়ির পূজা ও বলিদানের কিছু দৃশ্য:
পৃথিবীতে যখন অরাজকতা,অধর্ম,অশান্তি ও হিংসা বিরাজ করে এবং চারিদিকে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে হাহাকার ধ্বনি হয় তখনই মা দেবী দুর্গার আবির্ভাব হয় মর্ত্যলোকে।পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে মাত্র কয়েকটি দিনের জন্য তিনি তার বাহন সিংহ ও সন্তানদেরকে নিয়ে মর্ত্যলোকে আবির্ভূত হন শত্রুদের বিনাশ করতে।
দূর্গা বাড়ি হলো আগেকার দিনের জমিদার বাড়ি।এই জমিদার বাড়ির ভিতরেই দেবীমা দুর্গার পূজা করা হয়।ফলে আমরা দ্বিতীয় ঠাকুর দেখার পর জমিদার বাড়ির মধ্যে যেখানে পূজা হচ্ছিল সেই পূজা দেখতে গিয়েছিলাম।সেখানে অবশ্য অনেকটা সময় ছিলাম।কারন অনেকগুলো পুরোহিত সেখানে একসঙ্গে মন্ত্র পাঠ করছিলেন ,সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা শুনছিলেন।তাই আমরাও যোগ দিলাম তাদের দলে।অনেক মানুষের ভিড়ের সামনে কিছুটা জায়গা ফাঁকা রাখা ছিল।আর চারিদিকে দড়ি টানানো ছিল, সেই দড়ির চারিদিকে বিভিন্ন ফল বেঁধে রাখা হয়েছিল।যেমন-নারিকেল, আপেল ,শসা ইত্যাদি।একজন চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে সময় বলে যাচ্ছিল মাঝে মাঝেই, কারন পূজা সবসময় নির্দিষ্ট নিয়মবিধি মেনেই সেই অনুযায়ী সম্পন্ন করা হয়।তাই সঠিক সময়ে বলিদানের মুহূর্ত চলে আসলো।
প্রথমত আমরা বুঝতে পারিনি কিন্তু পরে বুঝলাম একজন মানুষ খাড়া নিয়ে আসছেন ফাঁকা স্থানে সঙ্গে আরেকজন সিঁদুর দেওয়া চাল কুমড়া হাতে।আরেকজন একগুচ্ছ আখ এবং শসা হাতে।সবগুলো ফল-ই একে একে বলি দেওয়া হবে।যেহেতু অষ্টমীর দিনে আমরা আগে কখনো এই দৃশ্যগুলি দেখিনি তাই সুযোগটা কাজে লাগালাম।নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো জিনিসই খাড়ার এক কোপে কাটতে হয়।প্রথমে চাল কুমড়া, তারপর শসা ও একগুচ্ছ আখ বলি দেওয়া হলো।সবই ভালোভাবে খাড়ার এক কোপে সম্পন্ন করা হলো সময় ধরেই।সবাই সেই আনন্দে নেচে উঠলো আর চারিদিকে টানানো ফল ছিড়ে লুটে নিল।কারণ বলিদানের পর ওগুলো প্রসাদ হিসেবে যেকেউ নিতে পারবে।
এরপর চারিদিকের দড়ি খুলে দেওয়ার পর আমরা মন্দিরের উপরে উঠে দেবী মায়ের দর্শন করলাম।যেহেতু সন্ধ্যার সময় তাই পুরোহিতের আনাগোনা লেগেই থাকে মন্দিরের ভিতরে।কোনো কোনো পুরোহিত আবার অনেক ধাপের বিশাল বড় প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করছিলেন।দূর্গা বাড়ির ঝাড়বাতিগুলি অনেক সুন্দর দেখতে লাগছিলো।বাড়ির মধ্যে প্রত্যেক জায়গায় দেওয়ালের কোণে বারান্দায় অনেকগুলো ঝাড়বাতি ছিল।এভাবে সন্ধ্যেতে বলিদানের মুহূর্তগুলি উপভোগ করে ভালোই লাগছিলো।এরপর কয়েকটি ছবি তুলে আমরা বাড়ির দিকে পুনরায় রওয়ানা দিলাম।তো এটাই ছিল আমার দূর্গা বাড়ির অষ্টমীপূজা ও বলিদানের কিছু দৃশ্য দেখার মুহূর্তগুলি।
আশা করি আপনাদের কাছেও অনেক ভালো লাগবে আমার আজকের পোষ্টটি।সকলে ভালো থাকবেন ও সুস্থ থাকবেন।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
ফটোগ্রাফার | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান,পালসিট |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
দূর্গাবাড়ির পূজা ও বলিদানের বেশকিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করলেন দিদি।দূর্গা বাড়ি হলো আগেকার দিনের জমিদার বাড়ি।বেশ ভালোই লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে। সন্ধ্যা হওয়াতে প্রদীপ আর ঝাড়বাতির আলোতে বেশ সুন্দর সময় উপভোগ করেছেন দিদি।ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু,আপনার সুন্দর মতামত জানানোর জন্য।
দুর্গা বাড়ির পূজো ও বলিদানের মুহুর্ত গুলো খুব ভালো হয়েছে। কুমড়ো,আখ,শশা এগুলো বলি দেয়ার ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে। ভালোই কাটিয়েছেন পূজার সময় গুলো তা আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম।
দিদি, যদিও ভিড়ের কারনে রাত্রে ছবিগুলো ভালো তুলতে পারিনি।যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে।