শৈশবের গল্প: "বড়শি বিঁধলো কপালে"

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

নমস্কার

বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই?আশা করি ঈশ্বরের কৃপায় সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।আমিও মোটামুটি ভালোই আছি।

বড়শি বিঁধলো কপালে:

বন্ধুরা,প্রতিনিয়ত আমি ভিন্ন ভিন্ন পোষ্ট করতে ভালোবাসি।তাই আজ আমি আপনাদের সামনে আবারো উপস্থিত হয়েছি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি আপনাদের সঙ্গে একটি মজার গল্প/স্মৃতি শেয়ার করবো।যেটি কিছুটা বিপদেরও,ছোটবেলায় আমাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া একটি স্মৃতি মনে পড়ে গেল।আমি এটি অবশ্য এবিবি ফ্যানে শেয়ার করেছিলাম,কিন্তু সেটা খুবই সংক্ষেপে।তাই আজ বিস্তারিত তুলে ধরতে চাই এই গল্পের মধ্যে দিয়ে।আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

free-photo-of-fresh-fish-on-hook.jpeg
সোর্স

বন্ধুরা,টাইটেল দেখেই আপনারা নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন এটি মাছ ধরার ঘটনা নিয়ে।আসলে শৈশবে মাছ ধরার গল্প কমবেশি সবারই জীবনে রয়েছে।তবে এটা বেশ মজার হলেও আবার ঝুঁকিপূর্ণও বটে।এমন অনেক বাস্তব ঘটনাই আমার দেখা, জানা এবং অন্যের মুখ থেকে শোনা।এমনকি মাছ ধরতে গিয়ে অনেকের প্রাণ চলে যাওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও ঘটে।যেটি আসলেই খুবই দুঃখজনক হলেও সত্য।তাই আজ আমি শেয়ার করবো আমাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া একটি ছোট্ট ঘটনা।তো চলুন সেই মাছ ধরার গল্পটি শুরু করা যাক------

শরৎকালের মাঝামাঝি সময়ের এক বিকেল।সাধারণত শরৎকালে মাঝে মাঝেই আকাশ গম্ভীর হলে বৃষ্টি দেখা দিলেও সেদিন বৃষ্টির বিন্দুমাত্র আভাস ছিল না।রোদেলা আবহাওয়ায় বিকেলে বসন্তের মতো ছোঁয়ার অনুভূতি অনুভব হচ্ছিল হৃদয় আঙ্গিনায়।ফুরফুরে বাতাস এসে ঠান্ডা করে দিচ্ছিল শরীরকে।এমন এক দিনে বড় জেঠুর পুকুরপাড়ে উপস্থিত হলাম। গিয়েই দেখলাম সেখানে বড় জেঠুর ছোট মেয়ে ও কাকার মেয়ে রয়েছে।বড় জেঠিমা বড়শি দিয়ে মাছ ধরছে।যদিও কাকার মেয়ে আমার এক বছরের বড় আর বড় জেঠুর ছোট মেয়ে আমার সাত মাসের বড় ছিল।আমি বাড়িতে মেয়েদের মধ্যে সবার থেকে ছোট ছিলাম।

হঠাৎ বড় জেঠিমা বললো-- তোরা বড়শি দিয়ে মাছ ধর,আমি একটু অন্য কাজ করে আসি।যেহেতু আমি পরে গিয়েছি তাই বড়শি নিয়ে মাছ ধরার প্রশ্নই আসে না।একটি বড়শি নিয়ে কাকার মেয়ে ও জেঠুর মেয়ের সঙ্গে মাছ ধরা নিয়ে ঝগড়া বাধলো।কে আগে বড়শি দিয়ে মাছ ধরবে সেটার জন্য, এখন মাছ ধরার পালা।প্রথমেই জেঠুর মেয়ে কিছুক্ষণ ট্রাই করলো কিন্তু কোনো মাছ ধরতে পারলো না।এরপর কাকার মেয়ে বড়শি নিয়ে মাছ ধরার জন্য বসলো, যেই মাছ বড়শিতে ঠোকর দিল।ওমনি ছিপ পিছন দিকে সজোরে দিল টান আর পিছনে দাঁড়িয়ে ছিল বড় জেঠুর মেয়ে।তাই বড়শি গিয়ে সোজা বাধলো জেঠুর মেয়ের কপালে।জেঠুর মেয়ে তো হাউমাউ করে কান্না করতে শুরু করে দিল।

কান্নার শব্দ শুনে জেঠিমা --কি হলো রে,বলে ছুটে আসলো।যদিও কাকার মেয়ে ও আমি সেটা কপাল থেকে বের করার চেষ্টা করছিলাম।কিন্তু পারছিলাম না তারপর জেঠিমা এসে কপাল থেকে বড়শি ছাড়িয়ে দিল।আমি অবশ্য পাশে বসেছিলাম তাছাড়া বড়শি দিয়ে মাছ ধরার নিয়ম খুব ভালোভাবেই আমার জানা।কখনো বড়শি উপরের দিকে টান দিতে নেই তাতে বিপদের আশঙ্কা থাকে।যাইহোক কাকার মেয়েকে বলার পরও সে আমার কথাই গুরুত্ব দেয়নি।তাই বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে অন্যের কপাল ধরলো সেটা দেখে বেশ মজা লাগছিল।আবার কিছুটা ভয় পেলুম কারন চোখে বিঁধলে হয়তো সে অন্ধও হতে পারতো।আসলে যেকোনো কাজেই ঝুঁকি রয়েছে তাই সাবধানে করা উচিত।

আশা করি আমার আজকের শৈশবের স্মৃতিটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোস্ট বিবরণ:

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
বিষয়শৈশবের গল্প: "বড়শি বিঁধলো কপালে"
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।আমি অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

IMG_20230822_061108.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 10 months ago 

আপনার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত পোস্টটি পড়ে আমার ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেল। আমিও বরশি দিয়ে অনেক মাছ ধরেছি, গাছে কয়েকবার বরশি আটকে গেছে কিন্তু কখনো কপালে এসে বাঁধেনি। যাইহোক এটা অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনা, তবে চোখে বিধলে খারাপ কিছু হয়ে যেতো।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া,আমার হাত দিয়েও কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি।ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

দিদি আপনি বাড়ির সবার ছোট মেয়ে বলে আদর একটু বেশিই পেতেন মনে হয়। আপনার শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত ঘটনাটি সম্পূর্ণই পড়লাম। এরকম দুর্ঘটনা মাছ মারার সময় আমারও একাধিকবার ঘটেছে। নিজের হাতে অনেক বার বসে গেঁথে গিয়েছে আবার সেটা নিজেই বের করে ফেলেছি যদিও একটু কষ্ট হয়েছে। আসলে শৈশবে যখন মাছ মারতাম বরশি দিয়ে তখন সাবধানতা অবলম্বন করার কথা আমাদের মাথায় থাকতো না। যাইহোক সেদিন আপনার জেঠুর মেয়ের খুব একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি এটাই অনেক। অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 10 months ago 

অন্যের কাছ থেকে আদর বেশি পেতাম এটা ঠিক বলা যাবে না, কারন সব কাকা-জেঠুরই ছেলেমেয়ে ছিল।যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

চোখে লাগলে অন্যরকম হয়ে যেত ব্যাপারটা! ছোটবেলায় আমার একবার হাতে লেগেছিল বড়শি। তবে এমন ভুল আর হয়নি। যাক, বড়শি দিয়ে মাছ ধরার মজার একটি স্টরি জানতে পারলাম। আপনার কাকার মেয়ে আপনাদের কথায় গুরুত্ব না দেয়াতেই এমনটা হয়েছে।

 10 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া, ছোটবেলায় এমন মজার ঘটনা সবারই জীবনে রয়েছে কমবেশি।ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59991.95
ETH 2664.96
USDT 1.00
SBD 2.45