শৈশবের স্মৃতিতে: "একটি চিতা"
নমস্কার
শৈশবের স্মৃতিতে: "একটি চিতা"
আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।আবার কিছু মিষ্টি স্মৃতি ফিরে পেতে চাই বারেবারে।আবার কিছু স্মৃতি সাময়িক সময়ের জন্য আনন্দ দেয়,আবার কিছু স্মৃতি ভয়ভীতু করে তোলে।তেমনি একটি ভীতু শৈশবের স্মৃতি আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।তো আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট্ট অনুভূতিখানি।তো চলুন শুরু করা যাক----
শীতের ছুটি,তাই মায়ের সঙ্গে মামাবাড়ি যাওয়া হলো।যখনই মায়ের সঙ্গে আমার বাড়ি যেতাম হয় ভ্যানে চড়ে নয়তো পায়ে হেঁটে।গ্রামের রাস্তা প্রকৃতি দেখতে দেখতে মায়ের সঙ্গে নানান প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে করতে চলে যেতাম 7-8 কিলোমিটার।আমাদের বাড়ি থেকে মামা বাড়ির দূরত্ব প্রায় 7-8 কিলোমিটার দূরে অর্থাৎ 5-6 টি গ্রাম পেরিয়ে।বেশ মজাই হতো,যদিও আমাদের অত বড় বাড়ির কাজ সামলে মা বাঁধাধরা সময় বের করতেন মাত্র দুই-একদিনের। বাড়িতে গরু ,মুরগি ছিল কে দেখবে!তাছাড়া আরো কাজ তাই বেড়ানোর সময়-ই পাওয়া মুশকিল ছিল।সবসময় কাজ যেন লেগেই থাকতো,আর আমার মা প্রচন্ড সংসারী ও কঠোর পরিশ্রমী একজন মানুষ।
শীতের দিন তাই মামাবাড়ি সেবার পিঠা বানিয়েছিল। দুই একদিনের বেড়ানো শেষ করে বাড়ি ফেরার পালা,তাই বাবার জন্য প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে পিঠা দিয়ে দিয়েছেন আমার দিদিমা।সারাপথ বেশ মজা করেই হাঁটতে হাঁটতে আসলাম মায়ের সঙ্গে,তখন প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।
যখন আমরা আমাদের গ্রামের রাস্তায় ঢুকলাম।দূর থেকে দেখলাম, অনেক মানুষের ভিড় লেগে আছে।ঠিকভাবে বুঝতে পারলাম না,একটু কাছে এগোতেই কানে ভেসে আসছে মহিলাদের কান্নার আওয়াজ।আবছা সন্ধ্যায় মিশে যাচ্ছে কুন্ডলী পাকানো কালো ধোঁয়াগুলো উপরে উঠে।আর নীচে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে,লাল আগুনের একটি চিতা।দূর থেকে নাকে ভেসে আসছে মানুষ পোড়ার গন্ধ।বুঝতে এক মুহূর্ত বাকি রইলো না যে,আমাদের গ্রামের একজন পটল তুলেছে।
মনে মনে ভয় হচ্ছিলো,মা এবং আমাদের।কারন সন্ধ্যা হয়ে গেছে তার উপরে মানুষ মরার চিতা পড়েছে সামনে, সঙ্গে আবার রয়েছে দিদিমার প্যাকিং করা পিঠা।তখনও প্রায় হাফ কিলোমিটার বাকি আমাদের বাড়ি যেতে।গ্রামের রাস্তা,কারেন্ট নেই,অন্ধকার।আমাদের হাতে লাইট নেই,ফোন নেই।তাছাড়া মাঝে মাঝেই দুই একটি মোটরসাইকেল চলে যাওয়ার সময় যেটুকু আলো চোখে পড়ছে ওটাই সম্বল।ভয় হচ্ছিলো ভুত আমাদের না ধরে বসে।বাড়ির সামনে রাস্তায় গিয়েই দেখি বাবা দাঁড়িয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
এরপর বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে আগে খোলা হলো পিঠার ব্যাগ।দিদিমা বুদ্ধি করে তাতে তেল-হলুদ দিয়ে দিয়েছিলো।এটি দেওয়া থাকলে নাকি আর ভুতে ধরে না,এমন বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে গ্রামের মানুষের মধ্যে।তবুও মনে এক অস্থির ভয় কাজ করতে লাগলো।।
আশা করি আমার আজকের লেখা শৈশবের গল্পটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন। |
---|
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
টাস্ক প্রুফ:
কমেন্টস লিংক--
https://x.com/green0156/status/1968588699689467912?t=8jTow00-e32Q2SFjEIWCMQ&s=19
https://x.com/green0156/status/1968589104301351394?t=cbv1EXsFjwvTDgMPzGUXjA&s=19
টুইটার লিংক