"হঠাৎ গর্তের সম্মুখীন"(10% বেনিফেসিয়ারী লাজুক খ্যাককে)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার

কেমন আছেন বন্ধুরা?আশা করি সবাই শীতের মাঝে বেশ আছেন।আমিও মোটামুটি ভালোই আছি।তবে বেশ ব্যস্ততা চলছে।সামনেই ফাইনাল এক্সাম আছে অনার্স থার্ড সেমিস্টারের, তাই চিন্তারও শেষ নেই।যাইহোক আজকে আমার মজার একটি সুন্দর মুহূর্ত নিয়ে হাজির হলাম আপনাদের মাঝে।আশা করি ভালোই লাগবে আপনাদের কাছে ।তো চলুন শুরু করা যাক----

হঠাৎ গর্তের সম্মুখীন

আমাদের সন্ধ্যা হয় একদল পাতিশিয়াল ও একঝাঁক উড়ে যাওয়া পাখির ডাকে।আজ পাখিগুলো চোখে পড়লো না।সবে প্রকৃতিতে সন্ধ্যা নামবে নামবে অবস্থা। তখনই আমাদের মিনি ছুটলো মেঠো রাস্তা ধরে।মিনি কে অনেকেই জানেন।আর যারা জানেন না তাদেরকে বলি -মিনি হচ্ছে আমাদের বাড়ির দেশি মেয়ে বিড়াল।বেশ দুস্টু ও মিষ্টি স্বভাবের ও হালকা ইমোশনাল জেদি।কোনো কারনে বকাঝকা করলেই কান্নাকাটি শুরু করে দেয় তা তার চোখ দেখলেই বোঝা যায়।যাইহোক আমাদের পরিবারের সবাই বেশ যত্ন করি আমাদের বিড়ালকে।তাছাড়া যেহেতু আমাদের এখানে ফাঁকা বসতি আর পিছনে ধূ ধূ বিস্তীর্ণ মাঠ।তাই বেশ কেয়ার করা লাগে।কারণ পাতিশিয়াল মশাই ও বনবিড়াল সুযোগ পেলেই ধরে নিয়ে চলে যাবে।

IMG_20230119_200432.jpg
(দূরে তিনটি শিয়াল হেঁটে যাচ্ছে)
লোকেশন

প্রকৃতিতে তখন হালকা কুয়াশার চাদর মুরাতে শুরু করেছে। ক্যানেল পাড় দিয়ে হাঁটতে নিয়ে গেলাম আমার সঙ্গে মিনিকে।কিন্তু গন্তব্য বাড়ি থেকে একটুখানি যাওয়া,হঠাৎ মিনির মাথায় কি যেন চাপলো! মিনি ক্যানেল থেকে ছুটতে শুরু করলো মেঠো রাস্তা ধরে।কিছুক্ষণ পরে আবার সেখান থেকেই নেমে পড়লো ক্যানেলের এবরোথেবরো পাড়ে।যতই উঠে আসার জন্য আমি ডাকি পিছু থেকে ততই ছুটতে থাকে।তারপর ক্যানেল পাড় থেকে উঠে আবার রাস্তা ধরে সোজা দৌড়।কোনোমতে আমিও মাঠ দিয়ে ছুটতে ছুটতে মিনির সামনে গিয়ে বাঁধা দিলাম।মিনি সজোরে ফের এক দৌড়ে বড় খেজুর গাছের মাথায় উঠে গেল।সেখান থেকে আমি কাছে আসতেই মিনিকে দিলাম তাড়া।ভাবলাম সোজা দৌড়ে বাড়ি আসবে ।

IMG_20230119_195726.jpg
(আমাদের মিনি)
লোকেশন

কিন্তু তা নয়, মিনি সোজা নেমে গেলো বেনা গাছের মধ্যে।যদিও বেনা ঝোপ অনেকটা পরিষ্কার তবুও মিনি সেখান থেকে সোজা আবার ক্যানেল পাড়ে নেমে গেল।সেখানে কিছু শুকনো কচুরিপানার উপর দিয়ে হাটতে লাগলো কিন্তু পাড় ছোট বলে বেশি দূর এগোতে পারলো না।আমিও পোঁছে গেলাম সেখানে, হালকা অন্ধকার নামতে শুরু হয়েছে।দূরে সদলবলে শিয়াল ডাকতে ডাকতে এগিয়ে আসছে আমাদের এদিকে আর ডাক শোনা যাচ্ছে উচ্চস্বরে।আমি গিয়ে দাঁড়ালাম একটি বড়ো গর্তের পাশে।তারপর চোখে পড়লো গর্তের মুখটি।বেশ ভয় ভয় লাগছিল,এই বুঝি সাপ বেরিয়ে না পড়ে!গর্তটি এতটাই বড়ো যে ছোট শিয়াল কিংবা বড় সাপ অনায়াসেই ঢুকে থাকতে পারবে। তবুও মনে মনে ভয় হচ্ছিল মিনি যেন ঢুকে না পড়ে সেখানে,তাহলে বাইরে বের হওয়ার সাধ্যি নেই।ভাবনাটি সত্যি হলো !মিনি আর সামনে এগোতে না পেরে গর্তে হুড়মুড় করে ঢুকতে গেল।মাথা ঢুকিয়ে দিল গর্তে দ্রুত,ওমনি মিনির পেট ধরে দিলাম বাইরে টান। তারপর কোলে তুলে মায়ের কাছে নিয়ে গেলাম।বাড়ি নিয়ে যেতে যেতে দেখলাম মিনির গায়ে বুনো গাছের থেকে ছোট ছোট অনেকগুলো ফল গায়ে বিঁধে গেছে।তাই মায়ের সাহায্যে ছাড়িয়ে দিলাম সেগুলো।আসলে ওই ফলগুলো আমাদের জামার গায়ে কিংবা প্যান্টের গায়েও ফুটে যায়।যারা গ্রামের দিকে থাকেন তারা এই বিষয়ে অবগত। যাইহোক শেষমেশ মিনিকে খাঁচায় এনে বন্দি করলাম অল্প সময়ের জন্য।

আশা করি আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের সুন্দর মুহূর্তটি ভালো লাগবে।পরের দিন আবারো নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে হাজির হবো।ততক্ষণ সকলে ভালো থাকবেন ও সুস্থ থাকবেন।

🌸ধন্যবাদ সকলকে🌸

ক্যামেরা: poco m2

অভিবাদন্তে: @green015

Sort:  
 2 years ago 

অনেকদিন পর শিয়াল দেখলাম। প্রথমে ত দুজনে মানে আপনি আর মিনি ভালই হাঁটছিলেন। মিনির দুষ্টামির জন্য আজ শিয়ালের আহার হতে পারত। ভাগ্যিস আপনি গর্ত থেকে তুলে এনেছেন। বুনো গাছের এই ফলগুলো আমি চিনি তবে অনেকদিন দেখা হয়নি। ধন্যবাদ দিদি।

 2 years ago 

ভাইয়া,শিয়াল বাড়ির কাছ দিয়েই হেঁটে যাচ্ছিল কিন্তু ঘর থেকে ফোন আনতে আনতেই দূরে চলে গিয়েছে।ফলে ছবিতে ঠিকভাবে বোঝা যাচ্ছে না, ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

মিনি বেশ খাটিয়েছে আপনাকে। মিনির পিছন পিছন অনেক দূর দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে। বেশ দুষ্টু মনে হচ্ছে মিনি। তাছাড়া আপনার বেশ সাহসও দেখছি বুনু শিয়ালের ডাক শুনেও সেখান থেকে তাড়াতাড়ি চলে যাননি। অল্পের জন্য গর্তের মধ্যে ঢুকে যায়নি মিনি। গর্তের মধ্যে ঢুকে গেলে তো আসলেই বেশ মুশকিল হত। একে তো সন্ধ্যার সময় অন্ধকার তার উপরে আবার সাপের ভয়। যাক শেষে কোলে নিয়ে চলে এসে ভালো করেছেন। আর যে ছোট ফলগুলোর কথা বলছেন এগুলো ছোটবেলায় গ্রামের দিকে গেলে দেখতাম যে জামা কাপড়ে খুব লেগে যেত। যাই হোক মিনি দুষ্টুমি করলেও বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন মনে হচ্ছে।

 2 years ago 

গর্তের মধ্যে ঢুকে গেলে তো আসলেই বেশ মুশকিল হত।

ঠিক বলেছেন আপু,তাছাড়া শিয়াল প্রতিদিন সকাল বিকেলে আমাদের বাড়ির পিছনে মাঠে আসে দল বেঁধে আর ডাকে।ভয় মিশিয়ে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছি আপু,ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

মিনি তো দেখছি একেবারেই দুষ্ট। মিনির ব্যাপারে অনেক পোস্ট পড়েছি আপনার। আপনি তো মনে হয় বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন তার পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে। কষ্ট করে হলেও দুইজনে কিন্তু বেশ ভালোই মুহূর্ত কাটিয়েছেন। বুনো গাছের এই ফলগুলো আমাদের এখানেও দেখা যায় কারণ আমরা গ্রাম অঞ্চলে থাকি তাই। যদি গাছের আশেপাশ দিয়ে হাঁটি তাহলে তো পুরো জামা এবং পায়জামায় লেগে যায়। যাই হোক পড়ে বেশ ভালো লাগলো।

 2 years ago 

হ্যাঁ আপু,আসলে মিনিদের নিয়ে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই ।তাই শেয়ার করতে ভালোই লাগে, ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনাদের মিনি তো দেখছি খুবই দুষ্টু সেই সাথে কিন্তু খুবই মিষ্টি দেখতে। আমার অনেক শখ ছিল এরকম একটি বিড়াল ছানা পোষার। অল্পের জন্য মিনি সেই গর্তের ভেতরে ঢুকে যায় নি, না হলে তো আপনাকে অনেক কষ্ট করা লাগতো। আচ্ছা সেই গর্তে যদি কোনো সাপ থাকতো তাহলে আপনি কি করতেন?? বেশ ভালোই লেগেছে পড়তে।

 2 years ago 

আপু ,সাপেরই তো ভয় ছিল।কিন্তু মিনি গর্তে ঢুকে গেলে আর বের করা সম্ভব হতো না।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর প্রশ্ন করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60191.71
ETH 2410.52
USDT 1.00
SBD 2.43