"হরিনাম সংকীর্তনের উদ্দেশ্যে একদিন"
নমস্কার
হরিনাম সংকীর্তনের উদ্দেশ্যে একদিন:
আমাদের এখানে গতকাল ছিল হরিনাম সংকীর্তনের অষ্টম প্রহরের যজ্ঞ।যদিও গরমে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু এই যজ্ঞটি সম্পূর্ণ আমাদের নিজস্বভাবে করা হয়।তাই না গিয়ে পারলাম না।আসলে এখানে বাঙালির সংখ্যা খুবই কম,তাই আমরা বাঙালিরা সবাই মিলে আর্থিক সাহায্য করে এক দিনের হরিনাম সংকীর্তনের আয়োজন করি।বাইরে থেকে প্রচুর মানুষের ভিড় নয়,যদিও সেভাবে গোছানো হয়ে ওঠেনি।কিন্তু ছোটখাটো আয়োজনে বেশ ভালোই হয় একজন দাদার বাড়ির উপরে।সেখানে দুপুরে খিচুড়ি প্রসাদ ও রাতে সাদা ভাতের আয়োজন করা হয়।যদিও তেমন মেলা বসে না কিন্তু আইসক্রিমের দোকান অনেকগুলো বসে।এইবারের আয়োজন নিয়ে মোট ছয় বার যজ্ঞটি সম্পন্ন হয়েছে।যাইহোক মোট চার দল নিয়ে আসা হয়েছিল হরিনাম সংকীর্তনের জন্য।দলগুলো ছিল-মাতৃলীলা সম্প্রদায়,নিতাই গৌর সম্প্রদায়,প্রিয়ংকা সম্প্রদায় আর অন্যটির নাম ঠিক জানা নেই সম্ভবত পথের পাগল সম্প্রদায়।
গরমে অল্প কিছু সাজগোজ করতে গিয়েই জীবন শেষ।যতই মুখে কিছু দিই না কেন ঘামে ভিজে যাচ্ছে তাই সমস্ত মেকআপ গামছা দিয়ে মুছে ঠোঁটে লিপস্টিক আর কপালে সিম্পল টিপ ও টুকিটাকি সাজ করে নিলাম।চুল বাঁধতে গিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে ,কারন আমি খেজুর বেনুনি করেছিলাম।মজার বিষয় হচ্ছে -আমার মা এমন ঘেমে গিয়েছিল যে কপালে মাখা সিঁদুর গাল বেয়ে গলে পড়ছিল গরমে,তাই শেষে লাল টিপ পরে নিলেন।তারপর দাদাকে দিয়ে একটি ছবি তুলেই ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম মায়ের সঙ্গে যজ্ঞ দেখতে।আমাদের বাড়ি থেকে 1 কিলোমিটার দূরে যজ্ঞ দেখতে গেলাম।যজ্ঞ বাড়ি গিয়েই প্রথমে ঠাকুরের মন্দিরে প্রনামি দিয়ে প্রণাম করলাম।এবারে বসে পড়লাম মায়ের সঙ্গে গান শুনতে।ঘন্টা দুয়েক গান শোনার পর আমরা খিচুড়ি প্রসাদ গ্রহন করলাম।যদিও ছবি তুলতে আমি বেশ লজ্জ্বাবোধ করি তাই ওই পরিস্থিতির ছবিটি তুলে ধরতে পারলাম না।গানের ওখানে বেশ কয়েকটি ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।তবুও গরমে সবাই বরফ গোলা জল,পেপসি,আইসক্রিম কিনে কিনে খাচ্ছিল।
যখন আমরা প্রথমে গিয়ে গান শুনছিলাম সেই গানের দলটি ছিল নিতাই গৌর সম্প্রদায়ের।এক একটি দলের দুই ঘন্টা
সময় ধরে গান গাওয়ার জন্য বরাদ্দ ছিল।নিতাই গৌর সম্প্রদায়ের গান শেষ হলে প্রিয়ংকা সম্প্রদায় গান গাইতে এসেছিল।কিন্তু এই দলে কোনো বাঁশি বাজানোর লোক ছিল না।যদিও ভালোই লাগছিল এই মহিলা দলের নাচের তালে তালে গান শুনতে।চারিদিকে তাকিয়ে আমার বেশ নিঃসঙ্গ লাগছিল এত মানুষের ভিড়েও।কারণ আমার বয়সে কোনো মেয়েই ধৈর্য্য ধরে বসে গান শুনছিল না।তবুও এই সম্প্রদায়ের গান অর্ধেক হতেই আমরা বাড়ি আসার জন্য পা বাড়ালাম।কারন সন্ধ্যা হয়ে আসছিল সঙ্গে আমাদের সন্তু ও মিনির চিন্তাও মাথায় ছিল।যাইহোক চারটি বড়ো পেপসির প্যাকেট কিনে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।
আসলে ইচ্ছা ছিল বরফ গোলা জল খাবো নয়তো আইসক্রিম। কিন্তু ভাবলাম বাড়িতে বাবা দাদার জন্য ও নিয়ে যায় ,গরমে ওরা একটু তৃপ্তি পাবে।কিন্তু আইসক্রিম এক কিলোমিটার যেতে যেতে বরফ গলে নষ্ট হয়ে যাবে তাই বড়ো পেপসি নিলাম চারটি।কিন্তু দুঃখের বিষয় খাওয়ার পরেই ছবি তোলার কথা মনে পড়েছিল।তো এটাই ছিল আমার যজ্ঞ দেখার অনুভূতি।
আশা করি আমার আজকের লেখা ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।
আসলে ছোটবেলায় মনে হতো যে এই একই নাম বারবার নিয়ে সারাদিন কীর্তন করছে, লোকে এতে কি মজা পায়। তবে বয়স যত বাড়ছে এই জিনিসের প্রতি কেন জানিনা অন্যরকম ভালোবাসা আর আকর্ষণ কাজ করছে। আমি কিছুদিন আগে বাংলাদেশ গিয়েও একটা মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। এই জায়গাগুলো সত্যিই খুব প্রশান্তি দেয়।
ঠিকই বলেছ,সত্যিই মনকে প্রশান্তি দেয় দাদা।ধন্যবাদ তোমায়।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
Thank you💝.
দিদি বাড়ির পাশে এমন সুন্দর নাম সংকির্তন শুনলে কার ইচ্ছে করবে না ৷ আপনি সেখানে গিয়ে বেশ সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছেন ৷ অনেক ভালো লাগলো
সত্যিই ভালো সময় কাটিয়েছি, ধন্যবাদ দাদা।