হঠাৎ করেই চক্ষু ক্লিনিকে!!
আজ - ২৬ ই, পৌষ ১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | শীতকাল |
নমস্কার - আদাব। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন।
আসলে সময় বয়স কখনো কারো জন্য অপেক্ষা করে থাকে না৷ আর এটাই হল বাস্তবতা এবং কি এটাকে মেনে নিতেই হবে ৷ আপনি আজ যেমন আছেন কাল বা পরশু দিন তা নাও থাকতে পারেন ৷ আসলে বর্তমান সময়ে পরিবর্তন প্রতিক্ষন প্রতি মুহূর্তে৷ কে কখন ভালো থাকবে কখন খারাপ কিংবা কোন বিপদে সে হাজির হবে তা আসলে বলা খুবই মুশকিল ৷ যেটা কখনোই জানা যায় না ৷
বেশ কয়েকদিন ধরেই আমার ঠাকুর দাদা চোখের সমস্যায় আছে৷ অর্থাৎ আমার বাবার বাবা যাকে আমরা ঠাকুর দাদা বলেই ডাকি৷ বয়স ৯৫ প্লাস তবে এখনো বেশ শক্ত পাকাপোক্ত মানুষ বলাই যায় ঐ কারণ নিজেই চলাফেরা খাওয়া-দাওয়া কিংবা নিজের সবকিছু গোসগাছ করতে পারে৷ আসলে পুরনো দিনের মানুষের ভিতর একটা অন্যরকম ফিলিংস কাজ করে ৷ আসলে বসে থাকতে পারে না ৷ আর আমি তো মনে করি সেই আগের মানুষগুলোর শরীরের পার্স গুলো অনেক মজবুত এবং হার্ট ৷
তো প্রায় বেশ কয়েকদিন ধরেই চোখের সমস্যায় ভুগছেন৷ এমনিতেই সাধারণভাবেই ড্রপ কিংবা ওষুধ চলছিল কয়েকদিন ধরেই ৷ কিন্তু তাতে আসলে কোন লাভ হচ্ছে না৷ তো দুইদিন আগেই চক্ষু বিশেষজ্ঞ এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তাতেও আসলে কোন লাভ খুব একটা হচ্ছে না৷ অনেক কিছু করার পর একটা ভালো পরামর্শ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ধরা পড়ে৷ চোখে অনেক ছানি পড়েছে তাতে ঝাপসা যার কারণেই দেখার অনেক প্রবলেম ৷ এমন কি অনেক সমস্যায় ভুগছেন৷
আর মূলত বয়স বেশি হওয়ার কারণেই এই সমস্যা৷
এরপরই ডাক্তার চোখের অপারেশন করার জন্য সাজেশন দিলেন৷ আর কোথায় ভালো অপারেশন হয় সেই ঠিকানা দিলেন৷ ব্যাস আমরাও আজ বিকেল বেলায় রওনা দিলাম৷ সেই ৪০ কিলোটার দিনাজপুর দি ভিসন ডা: শহীদুল ইসলাম খান ৷ মূলত এটা কোন চক্ষু হাসপাতাল নয় ৷ এখানে শুধু অপারেশন করানোই হয়৷
তা যা হোক যাওয়ার আগেই আমাদের সবকিছুই কন্টাক্ট ছিল৷ তাই আমরা মেডিকেলে পৌঁছেই সিরিয়াল পেয়ে গেলাম। তো যাই হোক যদি অপারেশন হবে একটা রাত থাকতে হবে৷ আমরা সেখানেই উপস্থিত হওয়ার পরেই একটি লোক এসে নিচ তলাতে একটি রুম অর্থাৎ যেখানে রোগী থাকবে৷
রুমে প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেস্ট নেওয়ার পরেই আমাদের সিরিয়াল৷ এরপর ডাক্তার আরো ভালোভাবে পরীক্ষা নীরাক্ষা করে তারপর অপারেশন করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল৷
যদিও রুমে রোগীর সাথে একজন ব্যতীত অন্য কোন মানুষ ঢুকতে পারবে না ৷ আর আমার সাথে বাবা ছিল যার কারণে বাবাই ভিতরে যেতে পেরেছিল আমি পারি নি৷
আবার আধা ঘন্টা পরেই অপারেশন সাকসেসফুল অর্থাৎ অপারেশন করা হয়ে গেছে৷ এরপর দাদা কে বাবা আর আমি কলে নিয়ে রুমে আসলাম৷
রুমে এসে বেট এর বিছানা ঠিক করে শুয়ে দিলাম ৷ অপারেশন একটি চোখ হয়েছে৷ আসলে একসাথে দুইটি করা যাবে না ৷ তাই তো একটা করেছে ৷ এরপর রুমে বসে আসি আসলে রুমটি বেশ বড়ই আছে ৷ একটা টেবিল আর একটা চেয়ার অর্থাৎ রোগীর পাশে বসে থাকার জন্য ৷
এরপর একটি লোক এসে সব কিছু দেখাচ্ছে যে কোথায় বাদরুম এবং জল কোথায় এসব কিছু৷ এর পরেই বাবা একটু বাইরে গেলো ৷ আর আমি চেয়ারে বসে আছি ৷ কিন্তু কিছুক্ষন পর আবার এক লোক এসে বললো ৷ রোগীর সাথে একজন ছাড়া কেউ থাকতে পারবে না ৷
তারপর অনেক বললাম যে আমরা তো দুর থেকে আসছি যদি একটু মেনাজ করেন৷ কিন্তু তাতে আসে কোনো লাভ হলো না৷
এরপর বাবা এলো ৷ তো আর কি করার থাকার যেহেতু কোনো অবশন নেই ৷ আর এটা তো সরকারি হাসপাতাল না ক্লিনিক ৷ এক রাত থাকলেই টাকা ৷ আবার যে পরিমান শীত ৷ তারপর বাবা বললো যে আমাকে বাড়ি আসতে আর বাবা একাই পারবে৷ এরপর কম্বল নিয়ে বাবা তার বাবার পাশে বসে থাকলো ৷ আর আমি রওনা দিলাম নিজ গন্তব্যে ৷
রুমের ভিতরে শীত খুব একটা না করলেও বাইরে প্রচুর শীত ৷ তা এরপরেই বাস ধরে চললাম নিজ গন্তব্যে আর বাসে বসে বসে ব্লগটি লেখা ৷ যদিও এখনো বাড়িতে পৌঁছাই নি ৷
আসলে বয়স আমাদের জন্য মাছলি ইম্পোর্টেন্ট ৷ আরাস বয়সের তারতম্য কারণেই আমার ঠাকুরদার এমন পরিস্থিতি৷ আর চোখ হলো এমন একটি শরীরের অঙ্গ যেটা ছাড়া দুনিয়াতে চলা খুবই মুশকিল৷
হয়তো একদিন আমরাও এ পথের পাথেও হবো৷ সেদিন হয়তো বুঝতে পারবো যে এই বৃদ্ধ বয়সের যন্ত্রণাটা কতটুকু ঐ জীবনের সবচেয়ে কষ্টদায়ক এবং কি যন্ত্রদায়ক হচ্ছে এই বৃদ্ধ বয়সে৷ নানা রোগ ব্যাধি এবং কি আরো নানা কিছু শরীরকে আক্রান্ত করে৷ এখন যে শুধু বৃদ্ধ বয়সে তা নয় জীবনের প্রতিটি বয়সের মানুষের এমন ঘটনা ৷ আসলে শরীরের একটি অঙ্গ হানি হলে বোঝা যায় যে আসলে গুরুত্ব কতটা৷
আর এই বৃদ্ধ বয়সেই পরিবারের সন্তানেরাই বাবা-মার পাশে থাকে৷ যদিও আমার আসতে ইচ্ছে করছিল না ৷ কিন্তু কিছু করার ছিল না কারণ সেখানে একজন ব্যতীত থাকার কোন অনুমতি ছিল না৷ তাই বাধ্য হয়েই রাতেই রওনা ৷ জানি আজকে রাতটা বাবারও অনেক কষ্টে যাবে৷ যদি আমি সেখানে থেকে কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পারতাম কিন্তু তার হলো না৷
যাহোক সর্বোপরি আমার ঠাকুর দাদার জন্য সকলের কাছে আমার একটাই মিনতি ৷ আপনারা সবাই আশীর্বাদ এবং যে দোয়া করবেন ৷ তিনি যেন আবার ভালোভাবে সুস্থ হয়ে৷ এ সুন্দর পৃথিবীর প্রতিটি মুহূর্তকে দেখে উপভোগ করতে পারে৷
https://twitter.com/gopiray36436827/status/1612848119838040064?t=QHlLiF5712J-RZdQlKUGew&s=19
চোখ আমাদের অমূল্য সম্পদ। তাই চোখের অবহেলা করা কোনভাবে উচিত নয়। আপনার ঠাকুর দাদা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠে সৃষ্টিকর্তার কাছে এই প্রার্থনা করি। ডাক্তারে পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চোখের যত্ন নিবেন । তাহলে চোখের সমস্যায় ধীরে ধীরে কেটে যাবে। তার তো অনেক বয়স হয়েছে তাই আপনারা সবসময় যত্ন নিবেন। পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে ।
হুম ভাই চোখ হলো অমূল্য সম্পদ৷ আসলে বয়স হলে চোখে ছানি পড়ে ৷ আর বয়স হলে যা হয় ৷ ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ৷
প্রথমে সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক বেশি শুকরিয়া বলতে হয় কারণ আপনার ঠাকুর দাদা অনেক সুন্দর একটি বয়স নিয়ে এখনও সুস্থ আছেন তাই।তবে এই বয়সে চোখে ছানি রোগ প্রায় বয়স্ক লোকেরই এই সমস্যা দেখা দেয়।তবে উনাকে দেখে বোঝা যাচ্ছেন উনি অনেক পরিশ্রমী একজন মানুষ তাই এখনো সুস্থ আছেন।একটা চোখ অপারেশন করিয়েছেন আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে অন্যটাও করাতে পারবেন এবং সুন্দরভাবে চোখে দেখতে পারবেন।আপনার দাদার জন্য অনেক বেশি শুভকামনা রইল যাতে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
হুম আপু বয়স হলে চোখে এরকম সমস্যা হয়ে থাকে ৷ কিছু দিন পর আরেকটি চোখ সেটাও করতে হবে ৷ আর আগের মানুষ তো বসে থাকতে পারে না ৷
যা হোক অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর মতামতের জন্য ৷
আপনার ঠাকুর দাদা এত বয়স পেয়েও নিজে হাঁটাচলা করতে পারেন, ভাল আছেন জেনে ভাল লাগলো। তবে এ বয়সে এসে চোখের ছানির সমস্যা হতেই পারে।তবে একসাথে দুটো চোখের অপারেশন কখনই করেনা। যাক অপারেশন যখন হয়েছে একদিন পর ই ছেড়ে দেবে।এরপর আবার অন্য চোখটিও অপারেশন করতে পারবেন।আর খুব সুন্দর দেখতেও পাবেন তিনি।তার জন্য অনেক শুভকামনা রইল, তিনি যাতে খুব তাড়াতাড়ি সুস্হ হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করেন।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
অপারেশনের একদিন পর রিলিস দিয়েছে ৷ এখন অনেকটা ভালো আছে ৷