নতুন প্রবীণদের নিয়ে আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পর্ব ২৯

in #steemit2 months ago

আরে হ্যাঁ । চোখগুলো একটু বড়ো বড়ো? হ্যাঁ রে বাবা । আর নাকটা একটু বেশি লম্বা? মুখে কি খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি থাকে বেশিরভাগ সময়? সহস্রাব্দী এবার অবাক হয়ে রাদিয়ার মুখের দিকে তাকাল । কিন্তু রাদিয়া অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। তার দৃষ্টি অনুসরণ করে সেদিকে তাকিয়ে সে অবাক হওয়ার শেষ সীমানায় পৌঁছে গেল। তার এই ক্ষুদ্র জীবনে এর চেয়ে বেশি আশ্চর্য সে আর কখনো হয়নি। কারণ রাস্তার ওপাশে উৎপল দাঁড়িয়ে আছে। আর অত দূর থেকেও সে সরাসরি কেবল তার দিকে তাকিয়েই হাসছে। আপনি এখানে? আসলে এখানে এসেছিলাম একটা কাজে। ভাবলাম আপনাদের বাড়ি ঘুরে যাই একবার। কুটুমবাড়ি বলে কথা।

IMG_6617.jpg

কিন্তু ট্রেন থেকে নামার পর আপনাদের বাড়ির ঠিকানাটা কিছুতেই মনে পড়ছিল না। শুধু আপনার কলেজের নামটা মনে ছিল। তাই ভাবলাম এখানে চলে আসি। তাহলে আপনার সাথে আপনার বাড়িতে যাওয়া হয়ে যাবে । এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে তবে উৎপল থামল। যেন অনেকক্ষণ ধরেই সে পুরোটা মুখস্ত করে অনুশীলন করে রেখেছিল। সহস্রাব্দী রাস্তা পার হয়ে এপাশে চলে এসেছে। তার বান্ধবীরা তাকে ঠাট্টাতামাশা করে উৎপলের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে চলে গেছে। তারা এখন সব বুঝে গেছে। এভাবে যে উৎপল হঠাৎ করে চলে আসতে পারে সহস্রাব্দী স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। ইশশ... আগে জানলে একটু পরিপাটি হয়ে আসা যেতো। এই একরঙা সাদা ইউনিফর্মে উশকো খুশকো চুলের দুই বেণীতে তাকে না জানি কেমন লাগছে । অথচ পদ্মফুল কী সুন্দর একটা কালো রঙের শার্ট পরেছে! সহস্রাব্দী হাঁটতে হাঁটতে বলল, আপনার পাশে আমাকে পুরোই বেমানান লাগছে । কলেজ ইউনিফর্মে আমাকে একদমই ভালো দেখায় না । এইযে শুনুন, আপনাকে না আমি আপনার বাড়ির পোশাকে দেখেছি। তাই অত ঢং করবেন না আমার সামনে।

তবেই বাড়ি যায়। আজও সবাই মিলে ঠিক করল মোড়ের সামনের দোকানে ফুচকা খেতে যাবে। সহস্রাব্দীও খুশিমনে রাজী হয়ে গেল। অনেকদিন পর বোধহয় বান্ধবীদের সাথে একটা ভালো সময় কাটতে চলেছে । সহস্রাব্দীদের গার্লস কলেজ। এই কারণে তার তেমন কোনো ছেলে বন্ধু নেই। তবে তার বান্ধবীরা অনেকেই প্রেম করে। আর এদের কয়েকজনের মনে প্রেম ছাড়া অন্যকিছুই যেন ঘুরে না। যেমন ফুচকা খাওয়ার সময় সাবিকুন হঠাৎ বলে বসল, এই তোরা একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিস? আমাদের সহু ইদানীং সবসময় কেমন যেন অন্যমনস্ক থাকে! কীরে সহু, প্রেম ট্রেম করছিস নাকি? সহস্রাব্দী মুচকি হেসে বলল, কেন? আমি প্রেম করতে পারি না? রাদিয়া চোখ বড়ো বড়ো করে বলল, বলিস কীরে!

চাচা যে রাগী! জানলে তোর রক্ষা থাকবে? সহস্রাব্দী আগের মতোই হাসিমুখে বলল, কী করবে বাবা? মেরে ফেলবে আমাকে? সাবিকুন বলল, আরে চাচা জানতে পারলে তবে না মারবে! আমাদের সহু ধরাই পড়বে না। দেখলি না, আমরাই ধরতে পারলাম না ওকে এতদিন! আয়েশা বলল, বল না সহু, ছেলেটা কে? সহস্রাব্দী চাপা হেসে বলল, পদ্মফুল। বান্ধবীরা মাথায় হাত দিল। তারা সহস্রাব্দীকে অনেকদিন ধরে চিনে। তারা খুব ভালো করেই জানে তার পেট থেকে কথা বের করা অত্যন্ত দুষ্কর । সে সবসময়ই সত্যি কথা বলে কিন্তু প্রায়ই এমন সব হেয়ালি করে যার মানে বের করতে গেলে তার বান্ধবীদের লেজে গোবরে হতে হয়। তারা সবাই তাই মনমরা হয়ে ফুচকা খেতে লাগল । রাদিয়া সহস্রাব্দীর একদম পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ সে সহস্রাব্দীকে বলল, আচ্ছা সহু, তুই যেই ছেলেটাকে পছন্দ করিস তার কি মাথাভর্তি ঘন কোঁকড়া চুল? সহস্রাব্দী তার হাতের ফুচকাটা মুখে পুরে দিয়ে বলল, হুমম। রাদিয়া আবার বলল, তার কি জোড়া ভ্রু? হুমম...। গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা?

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 67241.85
ETH 3492.89
USDT 1.00
SBD 2.68